নওগাঁর মান্দায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষক আজিমুদ্দিন হত্যা মামলায় ২৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মোখলেছুর রহমান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জন আসামির মধ্যে ২২ জনকে আদালতে আনা হয়। তারা হলেন মান্দা উপজেলার ভরট্ট শিবনগর গ্রামের মনছুর আলী, আলতাব হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ফজের আলী, ফজলুর রহমান, কাদের আলী, জবেদ আলী, কাজেমুদ্দিন, অহিদুল ইসলাম, আছিব উদ্দিন, মোখলেছার রহমান, কাশেম আলী, লিয়াকত আলী, জালাল, শাহজাহান আলী, ছাইদুর রহমান, বুলু, আজাদ আলী, আশরাফুল মৃধা, কলিমুদ্দিন, পরশ উল্যা ও গুল মাসুদ।
সাজাপ্রাপ্ত পলাতক চার আসামি হলেন ভরট্ট শিবনগর গ্রামের এনামুল হক, আনিছুর রহমান, মোখলেছুর রহমান ও মোজাহার আলী। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আদালত ও মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, মান্দার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভরট্ট শিবনগর গ্রামের মসজিদের নামে থাকা জমি লিজ নিয়ে ভোগদখল করতেন কৃষক আজিমুদ্দিন। সেই জমি নিয়ে আজিমুদ্দিনের সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা মনসুর আলী, শাহজাহান আলী ও আলতাব হোসেনের বিরোধ চলছিল। ১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর সকালে তারা আজিমুদ্দিনের ভোগদখল করা সেই জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যান। এ সময় আজিমুদ্দিন তাদের বাধা দিলে মনসুর আলী, শাহজাহান আলী, আলতাব হোসেন ও তাদের সহযোগীরা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হন আজিমুদ্দিন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক দিন পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আজিমুদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মান্দা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৯৯৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ৮ আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের নাম মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলমান থাকে। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে দীর্ঘ ২৬ বছর পর সোমবার দুপুরে মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়।