ঢাকা ২৫ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও হত্যা মামলা

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও হত্যা মামলা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকায় এক রিকশাচালককে গুলি করে হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। 

রিকশাচালক মনিরুজ্জামান মনিরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) শেখ হাসিনাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। 

নিহতের বোন নিলুফার ইয়াসমিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে এ মামলা করেন। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করে শাহবাগ থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ।

নিলুফার ইয়াসমিনের আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন মনিরুজ্জামান মনির। তাকে ঢাকা মেডিকেল  কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় এ মামলা করা হয়।

মাহমুদুল আলম/এমএ/

মেনন-ইনু-পলক-শমী-তাপস কারাগারে

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ এএম
মেনন-ইনু-পলক-শমী-তাপস কারাগারে
রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনায়েদ আহমেদ পলক, কৌশিক হোসেন তাপস, শমী কায়সার

ইমন হোসেন গাজী নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত এই আদেশ দেন।

একই দিন ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সার ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গান বাংলার চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপসকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এই আদেশ দেন। 

আদালত সূত্র জানায়, ইমন হোসেন গাজী হত্যা মামলায় গত ২ নভেম্বর আদালত রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও জুনায়েদ আহমেদ পলককে সাত দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ড শেষে গতকাল তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মো. মাহাবুল ইসলাম। পরে তিনি মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ওই তিনজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশ দেন আদালত।

গত ২২ আগস্ট রাশেদ খান মেনন, ২৬ আগস্ট ইনু এবং ১৪ আগস্ট পলককে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার চিটাগাং রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইমন হোসেন গাজী। ওই ঘটনায় তার ভাই আনোয়ার হোসেন এই মামলা করেন।

আদালত সূত্র আরও জানায়, ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গত ৬ নভেম্বর আদালত শমী কায়সার ও কৌশিক হোসেন তাপসের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গতকাল তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার উপপরিদর্শক মৃত্যুঞ্জয় পণ্ডিত মিঠুন। তিনি মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শমী কায়সার ও তাপসকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশ দেন আদালত।

গত ৩ নভেম্বর তাপসকে ও ৫ নভেম্বর শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, হয়, গত ১৮ জুলাই কোট সংস্কার আন্দোলনে ইশতিয়াক মাহমুদসহ অন্যরা অংশ নেন। এ সময় উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাইস্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইশতিয়াকের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এ সময় তার পেটে, পিঠে, হাতে, মাথায় গুলি লাগে। পরে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর ইশতিয়াক মাহমুদ মামলা করেন। 

অন্যদিকে মাহাদী হাসান পান্থ হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মুক্তিযোদ্ধা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহাদ আলী ওরফে পানি আহাদ (৫৫) ও কদমতলী থানা আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকবাল হোসেনকে (৫৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে কদমতলী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

ডিএমপি জানায়, গত ১৯ জুলাই বিকেলে কদমতলী থানার রায়েরবাগ স্বপ্ন সুপার শপের সামনের সড়কে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেন মাহাদী হাসান পান্থ। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় মাহাদী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় গত ৮ নভেম্বর মাহাদীর বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

কুমিল্লায় আ.লীগের ২ নেতা গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ঝাউতলা ও কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহার উদ্দিন বাহারের ভাতিজা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর সাহরীন সায়ের ও কুমিল্লা মহানগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া।

কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে। 

গোপালগঞ্জে আ.লীগ কর্মী গ্রেপ্তার
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় মেহেদী হাসান রাসেল (৩৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে কাশিয়ানী উপজেলার ছোট খাগড়াবাড়িয়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাসেল ওই গ্রামের মৃত বালা মিয়ার ছেলে।

কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফি উদ্দিন খান জানান, দিদার হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি মেহেদী হাসান রাসেল। রাসেল নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। রাসেলের বিরুদ্ধে কাশিয়ানী থানায় একাধিক চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।

হবিগঞ্জে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৯ জনকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় যুবলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রেখাছ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রেখাছ মিয়া বানিয়াচং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, এখন পর্যন্ত ৯ ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গত ৫ আগস্ট বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশের গুলিতে শিশুসহ ৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। এ সংঘর্ষে এক সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্যও প্রাণ হারান। 

২২ আগস্ট নিহত শিশু হাসানের বাবা বাদী হয়ে এই ঘটনায় ১৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলার এক যুগ পর মামলা

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলার এক যুগ পর মামলা
পটুয়াখালীর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালীর কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলার এক যুগ পর মামলা করা  হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালী সদর থানায় মেহেদী হাসান জীবন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুক্তা মিয়াকে প্রধান আসামি করা হয়। সেই সঙ্গে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে হামলার ঘটনায় মেহেদী হাসান জীবন বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।’

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর দলীয় কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে শিয়ালী বাজার এলাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলা করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে  ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকদলের সভাপতি এস এম আব্দুর রব হাওলাদার, ইউনিয়ন যুবদলের সহ- সভাপতি মোহন সিকদার, যুবদলের সদস্য দেলোয়ার হোসেন এবং শফিক টেইলার গুরুতর আহত হন।

মেহেদী হাসান বলেন, ‘২০১৩ সালের হামলায় আমার বাবা গুরুতর আহত হন। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিচার পাওয়া তো দূরের কথা বাবার চিকিৎসাই ঠিকভাবে করাতে পারিনি। ছাত্র জনতার আন্দোলনে পাঁচ আগস্ট সরকার বিতাড়িত হওয়ার পাশাপাশি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আমি মামলা করেছি।’

আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান ওসি।

হাসিবুর রহমান/মেহেদী/সাদিয়া নাহার/

আমুর আইনজীবীকে মারধরের ঘটনা সাজানো: পিপি

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ এএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ এএম
আমুর আইনজীবীকে মারধরের ঘটনা সাজানো: পিপি
মো. ওমর ফারুক

সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর আইনজীবীকে গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আদালত থেকে মেরে বের করে দেওয়ার ঘটনাকে সাজানো বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ওমর ফারুক (ফারুকী)। 

ঘটনার পরদিন শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আদালতে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।

পিপি বলেন, আমির হোসেন আমুর আইনজীবী দাবি করা আইনজীবীকে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আইনজীবী মারধর করেননি। প্রকৃতপক্ষে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমির হোসেন আমুর পক্ষে আদালতে একাধিক ওকালতনামা দেওয়া নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এরপর একটি পক্ষ তাকে আদালত থেকে বের করে দেয়।

ফারুকী বলেন, আইনজীবী দাবি করে কথিত ওই আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছেন, প্রকৃতপক্ষে তিনি আমুর আইনজীবী নন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। দেশবাসীকে ভুল বোঝাতে পরিকল্পিতভাবে এমন ঘটনার সৃষ্টি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিন রেজার আদালতে আমির হোসেন আমুর রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে পিপি শুনানি করেন। তারপর আসামি পক্ষ শুনানি শুরু করে। শুনানিতে আমুর পক্ষের আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী পিপির বক্তব্য ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেন। তখন উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে কয়েকজন তাকে মারধর শুরু করেন। মারধরের ঘটনায় তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান। একপর্যায়ে তাকে লাথি মারা হয়।

এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাকে তুলে আদালত থেকে নিরাপদে বের করে দেন। আদালত থেকে বের হওয়ার পরে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী আইনজীবী।

ঝিনাইদহের সাবেক এমপি তাহজীব ৩ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ পিএম
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
ঝিনাইদহের সাবেক এমপি তাহজীব ৩ দিনের রিমান্ডে
ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি

ঝিনাইদহ-২ (সদর-হরিণাকুন্ডু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমিকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

শুক্রবার ( ৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সিনিয়র চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক রুমানা আফরোজের আদালতে হাজির করা হয়।

এ সময় পুলিশ তিনটি মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালতের বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আবদুস সালাম হত্যার ঘটনায় ১১ বছর পর ২৭ আগস্ট  মামলা করা হয়। ওই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক সংসদ সদস্য তাহজীব আলম। 

এছাড়া তার বিরুদ্ধে গত ৪ আগস্ট জেলা বিএনপি কার্যালয় ও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুটি মামলাসহ ঝিনাইদহ সদর থানায় মোট তিনটি মামলা রয়েছে। এসব ঘটনায় শুক্রবার সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে রাত ১০টার দিকে সমিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪ এর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম অপুসহ আওয়ামী লীগের ২৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মৃত আবদুস সালামের শ্বশুর আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য  নির্বাচিত হন। পরে তিনি ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার বাবা প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছিলেন। 

সাবেক এই সংসদ সদস্য ডরিন পাওয়ার লিমিটেডের মালিক এবং মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ‘মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড’ নামে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিপত্র দেওয়া হয়েছিল সমিকে।

মাহফুজুর রহমান/মাহফুজ/এমএ/

আইনজীবীকে মারধর আমু রিমান্ডে

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ এএম
আইনজীবীকে মারধর আমু রিমান্ডে
আমির হোসেন আমু

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক এক মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়ে  আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে রিমান্ড শুনানির একপর্যায়ে আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরীকে মারধর করে আদালত থেকে বের করে দেন কয়েকজন আইনজীবী।

আদালত সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় গতকাল আমির হোসেন আমুকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ১০ দিন রিমান্ডে চাওয়া আবেদনের শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আসামি আমির হোসেন আমু জড়িত। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

শুনানিতে পিপি বলেন, ‘আমু শেখ হাসিনার বাপকে বিপথে নিয়েছিলেন। একইভাবে শেখ হাসিনাকেও বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি ১৪ দল নিয়ে মিটিং করেন। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেকোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে হবে। তারা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট আর তৈরি না হোক। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। এদের বিচার হলে এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট দল আসবে না।’

এরপর রিমান্ডের বিরোধিতা করে আমুর জামিন চেয়ে আদালতে শুনানি শুরু করেন তার আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী। পিপির বক্তব্যটি ‘রাজনৈতিক’ বলে শুনানিতে মন্তব্য করেন তিনি। তখন একদল আইনজীবী আমুর আইনজীবীকে মারধর শুরু করেন। মারধরের মধ্যে তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান। একপর্যায়ে তাকে লাথি মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাকে তুলে আদালত থেকে বের করে দেন।

এ পর্যায়ে আমু নিজেই আদালতে কথা বলেন। আদালতকে তিনি বলেন, তার আইনজীবীর কথা বলাকে কেন্দ্র করে যে পরিবেশ তিনি দেখলেন, তাতে তিনি কোনো ধরনের কথা বলতে চান না।

তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি। আইনজীবীরা পরস্পর ভাই ভাই। মিলেমিশে থাকা উচিত। এখনকার পরিবেশ কিন্তু সব সময় থাকবে না। যখন পরিবেশ হবে, তখন নিশ্চয়ই কথা বলব। এ সময় ওই আইনজীবীরা আবারও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তখন পিপির ভূমিকায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত।

আদালত থেকে বের হওয়ার পর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে শুনানি চলাকালে আমাকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত কোনো ব্যবস্থা নেননি। এখানে কোনো ন্যায়বিচার নেই। আমি এর বিচার চাই।

গত বুধবার রাজধানী থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।