ঢাকা ১২ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১

নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল হকসহ ৯ জন

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম
নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল হকসহ ৯ জন
সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৯ জনকে রাজধানীর ছয় থানার পৃথক আটটি নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত এ নির্দেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক বিমানমন্ত্রী (অব.) লেফট্যানেন্ট কর্নেল ফারুক খান, ঝালকাঠি-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিটু, সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী।

জানা যায়, বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। পরে এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর-১৩র নিউ মডেল কলেজের সামনে রাব্বি মাতবর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আনিসুল হক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জিয়াউল আহসান, ২৩ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর নাসির হোসেন হত্যা মামলায় আনিসুল হক, ২০১৫ সালে রাজধানীর মতিঝিলে মেয়রের নির্বাচনের প্রচারণার সময়ে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পারবেজ মিয়া হত্যা মামলায় শমসের মবিন, এবং রাজধানীর বনানীর মহাখালী কাঁচা বাজার এলাকায় গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় পাঁচ আগস্ট আল আমিন হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিটু, নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় সাবেক সচিব মহিবুল হক ও পিপলস পার্টির বাবুল সরচার চাখারী এবং রাজধানীর কাফরুল থানাধীন পুলিশ স্টাফ কলেজের বিপরীতে পাঁচ আগস্ট আব্দুল হান্নান হত্যায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মাহমুদুল আলম/মেহেদী/এমএ/

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
কক্সবাজারের সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। বাদীর স্বাক্ষর ও নথি জাল করে নিজের নাম কেটে দেওয়ার মামলায় এই পরোয়ানা জারি করা হয়। 

একইসঙ্গে এই কাজে তাকে সহায়তা করার অভিযোগে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ চারজনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। 

অন্য আসামিরা হলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদ।

কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদ এ নির্দেশ দেন।

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আগে জমি অধিগ্রহণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাদীর স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতি করে নাম কেটে দেওয়ার অভিযোগ আসামিদের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. সিরাজ উল্লাহ বলেন, দুদকের দেওয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত গত বৃহস্পতিবার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন গত ১ জুলাই কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হুলিয়া ও ক্রোক-পরোয়ানা জারির আবেদন জানান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন। মামলার পরপরই ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নথিপত্র পাঠান তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার।

কিন্তু মামলা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে কয়েক দিন পর একই আদালতে জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেন বাদী কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী। সেই মামলার তদন্ত শেষে গত ১ জুলাই আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক। নথি জালিয়াতির ঘটনায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করায় সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা জজ ছাড়াও আসামি করা হয়েছে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদকে।

একইসঙ্গে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা দুজন হলেন দুদকের কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহিম ও কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম শাহ হাবিবুর রহমান।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর বাদীর আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী মামলার আরজির সব কাগজ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদ আহমদের কাছে দাখিল করেন। আদালতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রুহুল আমিনসহ ২৮ জনের নামসহ আবেদনটি ওই দিন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের (অনুসন্ধান ও তদন্ত) পরিচালক বরাবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। আবেদনটি দুদকে পাঠানোর জন্য ২০ নভেম্বর সকাল ১০টায় আদালতের কর্মচারী (এমএলএস) সৈয়দ আকবরকে কক্সবাজার ডাকঘরে পাঠানো হয়। 

ডাকঘরে পৌঁছানোর আগে তাকে আবার আদালতে ফিরিয়ে আনা হয়।

এরপর খামটি স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলামের কাছে পাঠানো হয়। 

এরপর নানা কৌশলে কাগজপত্র থেকে জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে দুদক জানায়, ফৌজদারি দরখাস্ত রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধের সময় জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ মোট আসামি ছিলেন ২৮ জন। পরে তিনটি পৃষ্টায় পরিবর্তন করে ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনকে বাদ দিয়ে ২ নম্বর আসামি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। আসামি ২৮ জনের জায়গায় ২৭ জন করা হয়, এতে বাদীর জাল স্বাক্ষর করা হয়। পুরো নথিতে কাটাছেঁড়া ও লেখায় ঘষামাজা করে দুদকে পাঠানো হয়। বাদীর জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।

দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ীতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপভিত্তিক কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য এক হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে চিংড়ি, ঘরবাড়িসহ অবকাঠামোর বিপরীতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। চিংড়ি ক্ষতিপূরণের বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে মনগড়া ২৫টি চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ক্ষতিপূরণের ৪৬ কোটি টাকা থেকে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুরুতে চিংড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ২৩ কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছিল। পরে তিনটি চেক বাতিল করা হয়। এরপর অবশিষ্ট ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার টাকা যারা নিয়েছেন এবং দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।

২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। দুদক দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।

এ মামলায় ২০১৭ সালের ২২ মে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে কারাগারে পাঠান আদালত। এর আগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। একই মামলায় ৯ মে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাফর আলম, ৩ এপ্রিল কক্সবাজার শহর থেকে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার (এলও) সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলাম ও কক্সবাজার আদালতের আইনজীবী নুর মোহাম্মদ সিকদারকে গ্রেপ্তার করে দুদক। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। সূত্র: বাসস

অমিয়/

পঞ্চগড়ে ১৯ বছর পর ২০ একর জমি ফেরত পাচ্ছেন এক বিধবা

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
পঞ্চগড়ে ১৯ বছর পর ২০ একর জমি ফেরত পাচ্ছেন এক বিধবা
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৯ বছর আইনি লড়াইয়ের পর হাইকোর্টের নির্দেশে বেদখল হওয়া ২০ একর জমি ফিরে পাচ্ছেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার আলতাফুন বেগম (৭৮) নামে এক বৃদ্ধা। 

হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি যাবিদ হোসেন গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) যৌথভাবে এ রায় ঘোষণা করেন।

আলতাফুন বেগম পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলারহাট ইউনিয়নের বীরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, আলতাফুন বেগমকে তার স্বামী খামির উদ্দিন প্রধান ১৯৭২ সালে মোহরানা হিসেবে ২০ একর জমি লিখে দেন। ২০০৫ সালে মারা যান খামির উদ্দিন প্রধান। স্বামী মারা যাওয়ার সাত দিন পর আলতাফুনের সতিনের ছেলে (স্বামীর আরেক বিয়ে করা স্ত্রীর ছেলে) রাজিউল ইসলাম প্রধান সেই জমির জাল দলিল ও খতিয়ান তৈরি করে পুরো জমি দখল করে নেন। জমির দখল ফিরে পেতে আলতাফুন বেগম পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাধ্য হয়ে ২০০৭ সালে জমি ফিরে পেতে পঞ্চগড় জেলা আদালতে একটি মামলা করেন। পরে আদালতে রাজিউল ইসলাম জাল সনদ ও খতিয়ান উপস্থাপন করলে আদালত জাল দলিল শনাক্ত করেন। ২০১৩ সালে আদালত আলতাফুনকে জমি ফিরিয়ে দিতে রায় দেন। কিন্তু জমি ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান রাজিউল ইসলাম। জমির দখল না ছেড়ে তিনি বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে জমি ভোগলদখল করতে থাকেন। সেই সঙ্গে জমি দখলে রাখতে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর গত সোমবার বৃদ্ধা আলতাফুনকে জমি ফিরিয়ে দিতে রায় দেন হাইকোর্ট।  

এ মামলায় বৃদ্ধার পক্ষে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান ও বিবাদীপক্ষে রাশেদুজ্জামান বসুনিয়া আইনজীবী হিসেবে লড়াই করেন।  

বিবাদী রাজিউল ইসলাম প্রধান বলেন, ‘আমি এই জমি ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছি। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার সৎমা জানায় আমার বাবা নাকি তাকে এই ২০ একর জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। আমি কারও জমি দখল করিনি। আমার বাবা আমাকে জমি দিয়েছেন, আমি ভোগদখল করে আসছি। পরে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলার রায় তিনি পেলে আমি আপিল করি। হাইকোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, সেই রায়ের বিরুদ্ধে আমি আবারও আপিল করব। আমি কারও জমি দখল করিনি।’ 

বৃদ্ধা আলতাফুন বেগম বলেন, ‘জমি ফেরত পেতে আমি পঞ্চগড় আদালতে মামলা করি। নিম্ন আদালতের বিচারক আমাকে জমি ফিরিয়ে দিতে রায় দেন। কিন্তু সেই জমি আমাকে ফেরত না দিয়ে ভোগদখল করেছে রাজিউল। কৌশলে জাল দলিল তৈরির অপবাদ থেকে বাঁচতে তিনি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। দীর্ঘ ১৯ বছর পর আমি জমি ফিরে পেতে যাচ্ছি, তাই আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান বলেন, ‘আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। দীর্ঘ লড়াই শেষে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে জমি ফিরিয়ে দিতে এবং আদালতে বিবাদীপক্ষের জাল দলিল উপস্থাপন করার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’

বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুর অঙ্গহানি, ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৯ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০০ পিএম
বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুর অঙ্গহানি, ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুতায়িত হয়ে ডান হাত ও ডান পা হারানো সাতক্ষীরার শিশু রাকিবুজ্জামানকে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিশুটির চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৩০ দিনের মধ্যে আপাতত এই টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুটির অঙ্গহানির ঘটনায় ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে এই রিট করেন শিশুটির বাবা। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে শিশুটির কী কী চিকিৎসার প্রয়োজন এবং এর সম্ভাব্য ব্যয় জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশ অনুসারে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সেই বছর ৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে সর্বমোট খরচ ধরা হয় ২ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা।

ওই রিটের ধারাবাহিকতায় শিশুটির চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ৫ জানুয়ারি সম্পূরক আবেদন করেন শিশুটির বাবা। তার ওই আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী মুহম্মদ তারিক-উল ইসলাম ও ফরিদ হাসান মেহেদী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

আদালত থেকে বের হওয়ার পর তারিক-উল ইসলাম এসব তথ্য জানান। 

আইনজীবীরা জানান, ২০২১ সালের ৯ মে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার প্রতাপনগরের মো. আবদুর রাজ্জাকের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে নকশাবহির্ভূত বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয় শিশু রাকিবুজ্জামান। ওই ঘটনায় শিশুটির হাড়-মাংস ঝলসে যায়। ওই বছরের ১২ মে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির সম্পূর্ণ ডান হাত এবং ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। ওই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২০২১ সালের ২৫ মে শিশুটির বাবা সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। এতে প্রতিকার না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। 

যৌথ বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
যৌথ বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে রাজধানীর গুলশানে ব্যবসায়ীর বাসা থেকে ডাকাতির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 

আসামিরা হলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম সবুজ (৪২), পটুয়াখালী সদরের টেংরাখালী বন্দরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের হাওলাদারের ছেলে মো. খোকন হাওলাদার সিদ্দিক (৪২) ও লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা থানার দক্ষিণ জাওরানী গ্রামের মো. জহুরুল ইসলামের ছেলে মো. সঙ্গীন মিয়া (১৯)।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা ওই আদেশ দেন। এর আগে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার সময় গুলশান থানাধীন ২৯ নম্বর রোডে খাদ্যদ্রব্য আমদানিকারক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের বাসায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন লোক তিনটি গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে। নিজেদের যৌথ বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়। একজন নিজেকে ডিজিএফআই কর্মকর্তা মেজর মামুন পরিচয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে ডাকাতরা ব্যবসায়ীর কয়েকটি ফ্ল্যাট তল্লাশি করে ১১২ ভরি স্বর্ণ, মূল্যবান তিনটি রোলেক্স ঘড়ি, তিনটি দামি সানগ্লাসসহ সর্বমোট ২ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।

ঘটনার সাত দিন পর গত ১৮ জানুয়ারি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন। উল্লেখ্য, এ মামলা নিতে গড়িমসি করায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাতুল হক খানকে গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ অফিসে ক্লোজড করা হয়েছে।

নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট-ভিলা জব্দের আদেশ

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ের ফ্ল্যাট-ভিলা জব্দের আদেশ
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত

পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মীর আহমেদ আলী সালাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দুদকের উপপরিচালক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল অভিযোগের অনুসন্ধান করছে।’

গত ৭ জানুয়ারি নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ ও তার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থাকা ১৮টি ফ্ল্যাটসহ প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর নাফিজ সরাফাতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

গত বছরের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করতে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে নির্দেশনা পাঠায়। 

দুদকের পক্ষে আদালতকে জানানো হয়েছে, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থ পাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। পাঁচ বেডের একটি ভিলাও রয়েছে তার। 

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থ পাচার করেছেন। তার আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।