
বিদ্যুতায়িত হয়ে ডান হাত ও ডান পা হারানো সাতক্ষীরার শিশু রাকিবুজ্জামানকে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিশুটির চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৩০ দিনের মধ্যে আপাতত এই টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিদ্যুতায়িত হয়ে শিশুটির অঙ্গহানির ঘটনায় ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে এই রিট করেন শিশুটির বাবা। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে শিশুটির কী কী চিকিৎসার প্রয়োজন এবং এর সম্ভাব্য ব্যয় জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশ অনুসারে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সেই বছর ৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে সর্বমোট খরচ ধরা হয় ২ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা।
ওই রিটের ধারাবাহিকতায় শিশুটির চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ৫ জানুয়ারি সম্পূরক আবেদন করেন শিশুটির বাবা। তার ওই আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী মুহম্মদ তারিক-উল ইসলাম ও ফরিদ হাসান মেহেদী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
আদালত থেকে বের হওয়ার পর তারিক-উল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
আইনজীবীরা জানান, ২০২১ সালের ৯ মে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার প্রতাপনগরের মো. আবদুর রাজ্জাকের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে নকশাবহির্ভূত বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয় শিশু রাকিবুজ্জামান। ওই ঘটনায় শিশুটির হাড়-মাংস ঝলসে যায়। ওই বছরের ১২ মে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির সম্পূর্ণ ডান হাত এবং ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। ওই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২০২১ সালের ২৫ মে শিশুটির বাবা সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। এতে প্রতিকার না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।