ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বর্ষার রোদ বৃষ্টি মেঘ

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ পিএম
বর্ষার রোদ বৃষ্টি মেঘ
অলংকরণ : মেহেদী হাসান

এই বর্ষায় আকাশজুড়ে মেঘ-মেদুরতা। সারা দিন মুষলধারা বইছে। ঝিরিঝিরি বর্ষণের অবিরত ধারায় জলের শীতলা এসে মাঝে মাঝে ঝাঁপটা দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষণিক পর পর মেঘ তার ছন্দায়িত শব্দে আরও বরিষণের জানান দিচ্ছে। তাই বর্ষার জলে নিজেকে আজ সমর্পণ করলাম। বেড়িয়ে পড়লাম বৃষ্টিস্নানে। মাঠ পেরিয়ে বন। মেঠোপথ ধরে ছুটে ছুটে বৃষ্টির ছোঁয়া উপভোগ করলাম। 

বর্ষার জলে অবগাহন করলাম। আর প্রকৃতির রূপছন্দে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম। এখন বর্ষায় উজ্জীবিত গাছেরা। জলের স্নিন্ধ ছোঁয়ায় তার সতেজতা এবং রূপলাবণ্য ফিরে পেয়েছে। প্রকৃতির নৈসর্গিকতা ও মিষ্টতা সর্বত্র বিরাজিত।    

এই বর্ষায় যৈবতীকন্যা তার জানালা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বর্ষার জলে এক ভিন্ন রকম শিহরণ বয়ে যাচ্ছে তার পুরো অবয়বজুড়ে। 

বর্ষার জলের ছিটা তার ভেতরটা শীতল করে দিচ্ছে। চোখ চলে যাচ্ছে দূরে কোথাও। পাশের পদ্মবিলে হাওয়ায় ঝিরিঝিরি ফোটা পড়ে জলে তরঙ্গ সৃষ্টির এক অপরূপ মায়াময় আবহ তৈরি হচ্ছে। তার চোখ সরাতে পারছে না। চোখের দৃষ্টিতে একটি ভেজা কাক দেখতে পেল। কদমের ডালে অনবরত ভিজে চলেছে কালো কাক। 

কদমের মোহময়ী ঘ্রাণের দ্যুতি চারদিকে ছড়িয়ে পাগল করা পরিবেশ তৈরি করেছে। যৈবতীকন্যার মনটাও যেন ছট ফট করছে। ভরা বর্ষায় ভরা যৌবনা মন কী করে ঘরে থাকে। ছুটে যেতে মন চায়। বর্ষার জলে শরীরের সমস্ত অনুভূতি বিলিয়ে দিতে চায়। তবে ঘর ছাড়া হলে যে আর ঘরে ফেরা হবে না যৈবতীকন্যার। দূরে আরও দূরে কোথাও বন-বাদাড়ের সবুজ অরণ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে সে। পাখ-পাখালির সঙ্গে সখ্য গড়বে।

উড়ে যাওয়া বনের পাখির মতো কারও ডানা মেলে দিগ্বিদিক ঘুরবে। পাখি হয়ে খাঁচায় বন্দি হতে তার মন সায় দেয় না। ভরা যৌবনায় বর্ষার জলে নিজেকে বিলিয়ে দিতে মন চায়। অদূরে বর্ষায় বিলের স্বচ্ছ জলে মাছে মাছে জলকেলি করছে। একে অপরের সঙ্গে ভাববিনিময় করছে। জল শূন্যতার খরালিতে পড়ে তৃষিত তিতিক্ষায় বর্ষার জলে এত দিন অপেক্ষায় ছিল যৈবতীকন্যার মতো। এখন জলের ছোঁয়ায় আনন্দ-উল্লাসে জলের তলে একে অপরের সঙ্গী হচ্ছে।

পাতায় পাতায় টুনটুনি পাখি লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। বেগুন গাছের পোকামাকড় ধরে খাচ্ছে। যেখানে বৃষ্টির পানি জমে আছে তাতে একটু শরীরটা ভিজিয়ে নিচ্ছে। অপরূপ এ দৃশ্য শুধু বর্ষার প্রকৃতিতেই মেলে।

মেঘের পসরা আকাশজুড়ে। কালো-সাদা মেঘ পেজো তুলার মতো ছোটাছুটি করছে। বৃষ্টির জলে বাগান ভিজে গিয়ে তার মাটি কাদার সোদামাখা ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে। চারদিক যেন নিস্তব্ধ নির্জনতায় ভরে আছে।

দূরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির প্লাবিত জলে কৈশোরের দল দাপাদাপি করছে। কেউ আবার খরস্রোতা নদীর পাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

আবার পাড়ে উঠে লাফ দিচ্ছে স্বচ্ছ জলের ওপর। আনন্দ-কোলাহল ঘিরে আছে কৈশোরের জল-জলালি। বর্ষার জলে অনেক সৃষ্টি সুখের উল্লাস মেলে। তবে বৃষ্টি হলে পুকুরের পানি নিচ থেকে উষ্ণ হয়ে ওঠে। তাতে শরীরের ভেতর একটা আরাম আরাম রোধ অনুভূতি আসে। বালক-বালিকারা অদম্য সময়ে জীবনের নতুনত্ব খুঁজে পায় বর্ষার জলে।    

ঘামের গ্রাফিতি

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
ঘামের গ্রাফিতি

ভেতরে বৃষ্টি- বাইরে তুমুল স্রোত
হাওয়াদের অটোক্র্যাটিক পাখনা ভাঙছে বাতাসে-
মৃত্যুর ভেতরে গান! উপড়ানো আঙুলের পাখনায় 
ফুটছে পাখিদের জন্মোৎসব 

মানুষ জেগে গেলে হাওয়ারা খুলে রাখে পায়ের পাতা

রক্তের ভেতরে দৌড়ে আসে জিজ্ঞাসাচিহ্ন-
মুক্তির করতলে ঘামের গ্রাফিতি-
বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মুহূর্তেরা বারুদের ঘ্রাণে
একে যায় নতুন বাংলাদেশ।

সংশোধন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
সংশোধন

কোনো একদিন কাদাময় পথে হাঁটতে গিয়ে
দু-এক ফোঁটা কাদা ছিটকে এসে বসে গেল বুকের ভেতর
সেই থেকে আমি ধোয়া-ধোয়া-ধোয়া
শত ধোয়ার তুলসীপাতা হতে চেয়ে
কতবার শ্রাবণের মেঘে দিয়েছি সাঁতার
কতবার সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
নিজেকে আমূল ঝল্সে নিয়েছি।

কষ্টি পাথর। আমার কষ্টি
এভাবে আর কতকাল নিজেকে পোড়ালে বলো
বিশুদ্ধ মানুষ হব আমি?...

রাধাচূড়া

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
রাধাচূড়া

হরিৎ প্রাচীরে লালচে-হলুদ ফুল 
পাপড়ির ভাঁজে ঝলমলে দ্যুতি ছড়াচ্ছে, 
রাজন্যের তাজ স্বরূপ সূবর্ণ তার কেশর সজ্জা
ডাল যেন মরকত মণি, পাংশুবর্ণ তার কায়া
নিজেতে মগ্ন পথিকে ভাবে অমূলক প্রহসন,
দূষিত নগরীর অভিমুখে রূপচর্চার আয়োজন
বৃক্ষকূলের পাতাঝরা এক অভিসম্পাত; 
চারদিকে যেন ঝলসানো চৈত্রের খরা। 
বিদেশিনী গুল্মের রঙ্গন সমাহারে নেই তৃষ্ণা 
নিজের সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয় অকপটে 
মানুষের হৃদয়ে শুভ্রতা দিতে সে ছাড়িল কানন 
লোকালয়ে এসে গড়েছে সে আশ্রয়,
রূপের লাবণ্যের গড়িমসি নেয় এক চিলতে
কল্পনায় সে কনক কিংবা কৃষ্ণচূড়ার সহোদরা! 
খচিত সেই নগর রূপসীর নাম রাধাচূড়া।

পদচিহ্ন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
পদচিহ্ন

কাগজের মলাটে
    তোমার হৃদয়ের ভাঁজে-ভাঁজে 
থাকে, অনাহত জীবন...

    চোখের মাঝে রক্ত ঝরে
অঝোরে চারপাশে,
     পৃথিবীর বুকে রক্তচোষা দেয়াল...

মাটির ফুল ফুটেছে 
     পরিত্যক্ত অট্টালিকায়
তোমাদের চোখের আড়ালে,
      এই শহরের বুকে রেখে যায়
 কত পদচিহ্ন...
        নিজেরই অজান্তে।

সম্বোধন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
সম্বোধন

জনাব,
আজ শুক্রবার, আমি তো ছুটিতে,
লইব সময় খানিক ঘুম থেকে উঠিতে!
আপনি কি জেগেছেন নাকি শয্যায়?
কীভাবে যে বলিব কিঞ্চিৎ লজ্জায়!
প্রাতঃকাজ সারিয়া একটু বেলায়
যখন বেরোবেন টানিতে বিড়িখানা,
মুঠোফোনে লইবেন খবর, ঘটিয়াছে কিছু কি-না!
না না তেমন তাড়া নেই, ধীরে লইলেই হইবে
যখন বিষয়টা সবাই সবিস্তারে কইবে!
চঞ্চল করিবেন না মন, কহিলাম বলে কথাটা
বুঝিবেন যেন, এটাই হলো সততা!
জ্ঞানীগুণীরা সবাই চলিয়াছে ধীরে
আমরা কেন হারাইয়া যাইব, বর্তমানের ভিড়ে?
যে বোঝে সে অপেক্ষা করিবে আমার মুখপানে
আমি যে অনন্য, গুণীমান্যিরা তা জানে!
আবারও বলি, ভাইসাব
সময় করিয়া যদি লইতেন খবর
সর্বজনের উপকার হইত জবর!