ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বানভাসি জীবন

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম
আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম
বানভাসি জীবন
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

প্রকৃতিতে বর্ষাকালে আকাশ থাকে অনেক খিটমিটে এবং রোষে,
বলতে গেলে ঘন কালো মেঘের পাহাড় স্বীয় সীমানায় যেন পোষে।
চোখের একটু পলকে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় জলস্ফীতির বর্ষা,
খেটে খাওয়া মানুষের কাছে বন্যা অত্যন্ত এক ধারাল ভীতির বর্শা।

দিনে যেমন রাতেও তেমন অনর্গলভাবে ঠিক বৃষ্টির ধারা ঝরে,
চকচকানো খোলাজলে মাছগুলো আনন্দে সুখে শুধু লাফালাফি করে।
গুড়ুম গুড়ুম ডাকে আকাশটা যেন বাঁধভাঙা জলের বিপদ খেলা,
ঝোড়ো বাতাসে গরিব মানুষের দুলতে থাকে বাঁশ ও টিন ঘরের চালা।

আলোর পৃথিবী কালো হয়ে কান্নার করুণ শব্দে ভরে চারপাশে,
যেদিকে তাকাই জলে থই থই করে- চোখ ফেরাতে যেন জলে বাড়ি ভাসে!
বাঁচার জন্যে অনেকে কোনোমতেই জীবন নিয়েই বেড়িয়ে পড়ে,
জলের ঘূর্ণিপাকেতে মুরগিগুলো কিছুক্ষণ ঝাপটাতে ঝাপটাতে মরে।

জলের স্রোতে ভেসে যায় গ্রামের পুকুরে থাকা নানা জাতের মাছগুলো,
আর হারিয়ে যায় হাঁসের বাচ্চা! মুখ থুবড়েই পড়ে থাকে পাকুড় গাছগুলো।
গরু-ছাগল ভেসে যায় জলে- ভাগ্য পরিহাসে মরে পোয়াতি নারীও,
ঈশ্বর মুখ লুকিয়েই হাসে- মানুষের সাথে ধরেছে নির্দয় আড়িও।

এক নিমিষে বাড়ে জলরাশি! করুণ ভয়ার্তে মানুষ খুব হতবাক,
মরণের শোক সংবাদ যেন মাথার ওপর- কাক পাখির কত ডাক।
বৃদ্ধ কিংবা শিশু মরা মানুষেরা ভাসে জলে- শকুনে খায় ঠুকরে ঠুকরে,
এমন বিমূঢ়ে দৃশ্য দেখে বুকের ভেতরটা কাঁদতে থাকে ডুকরে ডুকরে।

কারও কারও রাত কিংবা দিন কাটছে নৌকায় অথবা কলাগাছের ভেলায়,
কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে ঘরের চালায়- অতিরিক্ত জলের ঠেলায়।
ঘরের শুকনো ধান ভেসে গেছে জলে- কচি চারাসহ ডুবে গেছে ভুঁই,
বন্যার গর্ভে জীবন- জল আয়নায় এত কষ্ট কোথায় লুকিয়ে থুই?

অনাহারি আজ বানভাসি- অভাবে কঙ্কাল দেহে বেঁধেছে রোগের বাসা,
ভিটেমাটি জলে গেছে- থেমে গেছে জীবনের সাজানো রঙিন আশা।
বন্যায় মানবতার জন্যে সরকারি সাহায্য এসেছিল যতটুকু,
পিশাচ নেতাদের কুকৌশলে বানভাসি যারা- তারা পায়নি ততটুকু।

রাস্তাঘাট ডুবে গেছে- সকালের সূর্যটাও ছড়ায় না আলো মোটে,
সহায় হও হে মহান রব- বানভাসি মানুষের মুখে যেন হাসি ফোটে।
‘মানুষ তো মানুষের জন্য, ফের মানবতাও’ এসো তাই পাশে দাঁড়াই,
বানভাসি মানুষগুলোকে সাহায্য সহযোগিতা করে দুটো হাত বাড়াই।

ঘামের গ্রাফিতি

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
ঘামের গ্রাফিতি

ভেতরে বৃষ্টি- বাইরে তুমুল স্রোত
হাওয়াদের অটোক্র্যাটিক পাখনা ভাঙছে বাতাসে-
মৃত্যুর ভেতরে গান! উপড়ানো আঙুলের পাখনায় 
ফুটছে পাখিদের জন্মোৎসব 

মানুষ জেগে গেলে হাওয়ারা খুলে রাখে পায়ের পাতা

রক্তের ভেতরে দৌড়ে আসে জিজ্ঞাসাচিহ্ন-
মুক্তির করতলে ঘামের গ্রাফিতি-
বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মুহূর্তেরা বারুদের ঘ্রাণে
একে যায় নতুন বাংলাদেশ।

সংশোধন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
সংশোধন

কোনো একদিন কাদাময় পথে হাঁটতে গিয়ে
দু-এক ফোঁটা কাদা ছিটকে এসে বসে গেল বুকের ভেতর
সেই থেকে আমি ধোয়া-ধোয়া-ধোয়া
শত ধোয়ার তুলসীপাতা হতে চেয়ে
কতবার শ্রাবণের মেঘে দিয়েছি সাঁতার
কতবার সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
নিজেকে আমূল ঝল্সে নিয়েছি।

কষ্টি পাথর। আমার কষ্টি
এভাবে আর কতকাল নিজেকে পোড়ালে বলো
বিশুদ্ধ মানুষ হব আমি?...

রাধাচূড়া

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
রাধাচূড়া

হরিৎ প্রাচীরে লালচে-হলুদ ফুল 
পাপড়ির ভাঁজে ঝলমলে দ্যুতি ছড়াচ্ছে, 
রাজন্যের তাজ স্বরূপ সূবর্ণ তার কেশর সজ্জা
ডাল যেন মরকত মণি, পাংশুবর্ণ তার কায়া
নিজেতে মগ্ন পথিকে ভাবে অমূলক প্রহসন,
দূষিত নগরীর অভিমুখে রূপচর্চার আয়োজন
বৃক্ষকূলের পাতাঝরা এক অভিসম্পাত; 
চারদিকে যেন ঝলসানো চৈত্রের খরা। 
বিদেশিনী গুল্মের রঙ্গন সমাহারে নেই তৃষ্ণা 
নিজের সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয় অকপটে 
মানুষের হৃদয়ে শুভ্রতা দিতে সে ছাড়িল কানন 
লোকালয়ে এসে গড়েছে সে আশ্রয়,
রূপের লাবণ্যের গড়িমসি নেয় এক চিলতে
কল্পনায় সে কনক কিংবা কৃষ্ণচূড়ার সহোদরা! 
খচিত সেই নগর রূপসীর নাম রাধাচূড়া।

পদচিহ্ন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
পদচিহ্ন

কাগজের মলাটে
    তোমার হৃদয়ের ভাঁজে-ভাঁজে 
থাকে, অনাহত জীবন...

    চোখের মাঝে রক্ত ঝরে
অঝোরে চারপাশে,
     পৃথিবীর বুকে রক্তচোষা দেয়াল...

মাটির ফুল ফুটেছে 
     পরিত্যক্ত অট্টালিকায়
তোমাদের চোখের আড়ালে,
      এই শহরের বুকে রেখে যায়
 কত পদচিহ্ন...
        নিজেরই অজান্তে।

সম্বোধন

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩ পিএম
সম্বোধন

জনাব,
আজ শুক্রবার, আমি তো ছুটিতে,
লইব সময় খানিক ঘুম থেকে উঠিতে!
আপনি কি জেগেছেন নাকি শয্যায়?
কীভাবে যে বলিব কিঞ্চিৎ লজ্জায়!
প্রাতঃকাজ সারিয়া একটু বেলায়
যখন বেরোবেন টানিতে বিড়িখানা,
মুঠোফোনে লইবেন খবর, ঘটিয়াছে কিছু কি-না!
না না তেমন তাড়া নেই, ধীরে লইলেই হইবে
যখন বিষয়টা সবাই সবিস্তারে কইবে!
চঞ্চল করিবেন না মন, কহিলাম বলে কথাটা
বুঝিবেন যেন, এটাই হলো সততা!
জ্ঞানীগুণীরা সবাই চলিয়াছে ধীরে
আমরা কেন হারাইয়া যাইব, বর্তমানের ভিড়ে?
যে বোঝে সে অপেক্ষা করিবে আমার মুখপানে
আমি যে অনন্য, গুণীমান্যিরা তা জানে!
আবারও বলি, ভাইসাব
সময় করিয়া যদি লইতেন খবর
সর্বজনের উপকার হইত জবর!