ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সাহিত্যসভার এ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৮ পিএম
আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ পিএম
সাহিত্যসভার এ সপ্তাহের  বিশেষ আয়োজন
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

করোনারি আর্টারি
দ্বীপ সরকার

হৃৎপিণ্ডের চারপাশে ছড়িয়েছে প্রশাখার নদী-
পরাগের কুসুমে হরদম বেলুনের মতো
বিচলিত ফড়িং সশব্দে নাড়ছে ডানা
ধুকপুকিয়ে ওঠা নদীর ঢেউ মাড়িয়ে
কোথায় যায় রক্তের কুসুমনালির মহাসড়কে-
ক্রীয়াশীল বেলুনে
উঠছে নামছে ইসিজির চিকন চিকন দাগ

তাবৎ রক্ত- জটিল ধাঁধার স্রোতে
কখন আটকে যাবে নীল পদ্ম
তখন আমাকেও থেমে যাতে হবে।


একি তুমি
চিরঞ্জীব চ্যাটার্জী

বিকেলের নির্জন সাগর কিনারে হে বিভ্রম হাঙ্গর,
তোমার উচ্চকিত গ্রীবায় আমি বিনোদন খুঁজি...
কিন্তু আমার উদ্ভাসিত চৈতন্যে তখনই ছেদ পড়ে-
যখন পশ্চাতে শুনি, ‘একি তুমি নারী, 
একাকী কেন এই নির্জন সমুদ্রসৈকতে।’


রান্নাবান্না 
সায়্যিদ লুমরান 

তোমারও নিজস্ব একটা পৃথিবী আছে। তবে এর কোনো ভৌগোলিক 
সীমা এবং দ্রাঘিমা নেই।

সেই গ্রহে-
ইচ্ছে হলেই মধ্য দুপুরে সূর্য ডুবিয়ে দিতে পার দীর্ঘ এক ঘুম,
অথবা হতে পার কোনো মৃত বা জীবিতের মুখোমুখি।

ডেকেও আনতে পার শ্রাবণের মাঝামাঝি পৌষকে,
যদি তোমার হঠাৎ শীতের রোদ্দুরকে খুব বেশি মনে পড়ে যায়।

এবং নীলনকশাও আঁকতে পার ঈশ্বরকে হত্যার, আর রূপান্তরের
পর হয়ে উঠতে পার- প্রতিনিধি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী। 


রক্তক্ষরণ
নকুল শর্ম্মা 

গল্প জমে না চায়ের চুমুকে-
রাহুগ্রাসে হারিয়ে গেছে গল্প বলার উপন্যাস, 
ভালোবাসার চোরাগলি বেয়ে হয় না তোমার উপস্থিতি। 
চাঁদের মুখে মেঘের ভিটেবাড়ি-
জোছনার আলো ঢাকা পড়েছে বৃষ্টির ঘন বর্ষায়,
আমার বুকে রৌদ্রতপ্ত চৈত্রের বসবাস।

অপেক্ষার দুয়ারে বৈষম্যের খিলকাটি-
অবেলায় ঝরে পড়ে শরতের স্নিগ্ধ শিউলি, 
ব্যথার পাহাড়ে উল্টো কাঁটার নির্লজ্জ তিরস্কার। 
গান থেমে যায় কণ্ঠের ক্ষত আঘাতে-
হৃদয়ের থরে থরে ভালোবাসার রক্তক্ষরণ, 
নির্বাক চেয়ে থাকা সীমাহীন জিজ্ঞাসায় সমুদ্র পানে।


হলুদিয়া পাখি
ইফতেখার হোসেন সিদ্দিকী

সেই কবে কোন ঠিকানায়
বসেছিল এক হলুদিয়া পাখি
গেয়েছিল শুধু বিরহের গান,
কোন পথ ধরে চলে যায়
নক্ষত্র বীথিকা দূর থেকে দূরে
অঘ্রাণে কেউ তো দিয়েছিল শিস
তবুও দূরে যায়, যায় উড়ে।


একচুল
এস ডি সুব্রত


মরতে মরতেও বেঁচে থাকি
আশ্চর্য তুমুল,
আচমকা প্রবল প্রতাপে কীভাবে জানি
নিমেষেই উড়িয়ে দিই
জীবনের যত দুঃখ যন্ত্রণা ভুল,
কেবল অশরীরী ভালো লাগা পেলে একচুল।


বিভাজনের প্রাচীর 
আলমগীর কবির 


এত কেন বিভেদ চারপাশে। 
বিভেদের স্ফুলিঙ্গ পোড়ায় ভালোবাসার দেয়াল। 
এত ঘৃণা কেন চারপাশে? 
ঘৃণার কাঁটায় রক্তাক্ত হয় মন।

চলতে চলতে থমকে দাঁড়াই!
সামনে দেখি বিভাজনের প্রাচীর! 
এত আঁধার কেন চারদিকে 
একনিমিষে ঢেকে ফেলে চাঁদের হাসি মুখ! 


অথবা অন্য আরও কিছুর জন্য 
আল জাবিরী 

তোমার কাটাছেঁড়া কথাগুলো 
আমি জোড়া লাগিয়ে 
তৈরি করি কবিতা।
আমার কবিতা সরলভাবে চলে 
ঠিক তোমার মতো।
আবার কখনো সখনো 
কবিতার বুক ছিঁড়ে 
গজিয়ে ওঠে সবুজ পাহাড় 
খেয়াল করলেই দেখবে গহিন অরণ্য 
মাঝখানে কলকল করে 
ছুটে চলে 
সুন্দরী ঝরনাধারা।

কবিতা লিখতে গেলে 
বারবার 
তোমার কাছে ফিরে আসতে হয় 
আমাকে।
হয়তো কোনো জুতসই উপমার জন্য 
কিংবা ছন্দের দ্যোতনার জন্য 
অথবা 
অন্য আরও কিছুর জন্য।


অসহ্য স্বাধীনতা
সাজু কবীর 

নাকদড়ি ছেঁড়া ষাঁড় তেড়ে আসে লম্ফঝম্প দিয়ে
তাগড়া ত্রাসে সন্ত্রস্ত পায়রারা উড়াল দেয় নিরুদ্দেশে 
ঘুঘুদল নৃত্য ছেড়ে প্রাণভয়ে দ্রুত লুকোয় সরষে খেতে
তীক্ষ্ণ দাঁতে পয়মাল মাঠের সবুজ ভালোবাসা
এ কেমন ইচ্ছেসুখ! বলো, এ কেমন স্বাধীনতা! 

অরক্ষিত রক্তবিল যেন জলৌকার সুরক্ষিত গোলাবাড়ি
লালপদ্ম নীল হয়, কাণ্ডে তার শুষ্ক মরুভূমি
খলসে নেই, পুঁটি নেই; বক নেই, নির্বাক ডাহুক ডাহুকি
শ্যাওলার দামে দমবন্ধ বিলের জীবনে পরাজয়ের গ্লানি। 

অনুক্ষণ হানা দেয় সংসারের মৌচাকে দুর্বৃত্ত
কাফনমোড়া ইজ্জত মড়িঘরে শুয়ে থাকে নিত্য
বেজন্মা পেশিওয়ালা পাগলা কুকুর হয়ে ছোটে
‘ঘা খাওয়া অধিকার’ প্রতিনিয়ত মাথা কুটে মরে। 

লুটেরা জাগ্রত সদা
তল্লাটে তল্লাটে লুট হয় স্বাধীনতা,
লুট হয় নাগরিক, জ্বালার জলে নগর ভাসে
দস্যুদের হুইসিলে ‘মানবিক বন্দর’ থরথর কাঁপে। 

সভ্য বলে দাবি করি অথচ নিরুদ্দেশ সভ্যতা
কেউ মারে, কেউ মরে; কেউবা নির্বিঘ্ন, কেউবা শৃঙ্খলে বাঁধা
এ কেমন স্বাধীনতা! এ যেন অসহ্য স্বাধীনতা!


পুড়েছে তো বাংলাদেশের হৃদয়
ইদরিস আলী মধু

মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো যায় না মাথার ওপর ধোঁয়ার উত্তাপ
সম্মুখে যাওয়া যায় না কাঁটার দেয়াল
টাঙানো
পেছনে ফেরা যায় না দাউদাউ আগুনসন্ত্রাস ঘিরে নেমেছে।

কারা আগুন দিল
কারা মেতে উঠল এমন ঘৃণ্য ধ্বংসলীলায়।

কোনো অগ্নিদাতা জানে কি বত্রিশ নম্বর, জানে কি মুজিব
জানে কি মুক্তিযুদ্ধ
জানে কি বাংলাদেশের ইতিহাস?

বাঙালির প্রাণ, স্বাধীনতার রোপিত স্বপ্ন- বীজ, সৌর্য- বীর্য আর কতক্ষণ জীবিত থাকতে পারে।

দেখতে দেখতে পিতার খাট, আলনা, আলমেরা, চশমা, পাঞ্জাবি, প্রিয় পাইপ, জুতা, সিঁড়িতে রক্তের দাগ পুড়ে ছাই।

কে বলেছে বত্রিশ নম্বর পুড়েছে
পুড়েছে তো বাংলাদেশের হৃদয়।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

বিনিময়
সাত্ত্বিক দাস

আকাশজুড়ে ধুধু মাঠ,
ওই, আকাশে নক্ষত্রের নাচ, ও পাড়ার বারোয়ারি তলায়।
নির্ঘুম পেঁচার দল, ঘুম চোখে মাথা নাড়ে নিঃসংকোচে
নক্ষত্রের আলোয়, আমার মাথার ভিড়।
পোড়া ভাতের গন্ধে, একাকী ছায়ামূর্তি,
নিরুপায় চোখে চেয়ে আছে, সম্মুখ পানে
কী দেবে বিনিময়ে?
দুই মুঠো ভাত, 
প্রেম, ভালোবাসা, আদুরে হাত।
না কি, মৃত্যু যন্ত্রণা।।

 


দগ্ধ হৃদয়ের খোঁজ
সুমনা আফরিন

তার কোথাও একটা শূন্যতা ছিল
হয়তো শূন্যতায় ভরা কুঠরি ছিল
হয়তো তাতে
নিচ্ছিদ্র যন্ত্রণায় ভরা কোনো দুঃখবাক্স ছিল।

তার বাক্সে হয়তো কালো ও নীল কলম ছিল
কলমে কালি ছিল কম
হৃদয়ে কথার গুরুভার থাকলেও
সব কথা হস্তাক্ষর পায়নি।

তার জন্য সংরক্ষিত সবুজ কালির
সতর্কতার লাল কালির 
বল পেনের কোনো কমতি ছিল না।

তার চোখ বলত
ফাউন্টেন পেনের
অভিলাষ তার নেই।
বাসনা কেবল একটা শূন্য ডাকবাক্সের
শূন্য খাতার অধিকারী
একজন দগ্ধ মানুষের।

তার চোখে খোঁজ ছিল
কোনো পোড়া চোখের
পোড়া চোখের দগ্ধ হৃদয়ই পারে
পৌরহিত্যে করে
বুকের জগদ্দল পাথর নামাতে
দগ্ধ জনের অসীম শূন্যতা ঘোঁচাতে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ এএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

ফেরারি নারী
মোহামেদ সাইফুল হাসান

কৃত্তিকা তারার আবির্ভাব হেমন্তের পশ্চিমাকাশে
মৃদুমন্দ শীত নীরবতার গহিন অন্ধ রাতে,
বাঁশির সকরুণ আওয়াজ বাউল গানের সুরে 
টিনের চালে বেদনাতুর শিশির ঝরার শব্দ 
ছাতিমের গন্ধে অতীতের উঁকি তৃষিত অন্তরে,
পুরো একটি বছরের দূরত্ব, হলো দেড় কোটি সমান
অতিথি পাখিরাও চলে এল আপন দেশ ছেড়ে
শুধু ফেরারিদের ফিরে আসার নাম নেই!

 


শক্তি
রজব বকশী 

প্রতিটি মানুষ এক একটি প্রদীপ 
হোক না সে অন্ধ কিংবা অন্ধকারে একা 
তথাপি জ্বলতে থাকে 
দৃশ্য-দৃশ্যান্তর

এই শক্তির প্রাচীন ব্যবহারে পড়ে থাকে কেউ 
কেউবা নতুন করে পথ খুঁজে ফেরে 
কেবলি নিজের জন্য নয় 
সামগ্রিক চৈতন্যের বিদ্যুৎপ্রবাহ নিয়ে ভাবতে শেখায় 

এই জেগে থাকা আর জাগানোর গান
আপন সত্তায় প্রতিস্থাপনের টেকনিক স্বপ্ন টাওয়ার
অন্যরকম বোধের আকরিক সংকেত পাঠায়
মানবিক মূল্যবোধে মেধা প্রতিভার এক একটি নক্ষত্র 

এই সভ্যতার আলোকিত মনিটরে ভেসে ওঠে 
ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে যে পাওয়াগুলো জয়ধ্বনি করে
সেই আলোয় নিজেকে নতবৃক্ষ হতে দেখা যায়
তারই ইতিহাস পাঠে মনোযোগী আমাদের সময়ের ঢেউ 

 


ক্লিওপেট্রার রোমাঞ্চকর প্রেম 
সাগর আহমেদ 

ক্লিওপেট্রার হাতে সোমরসে শরাব পাত্র 
গলায় প্যাঁচানো সদন্তে সাপ,

তার খিলখিল হাসিতে ছলনার রং 
দেশ, মহাদেশ পেরিয়ে জুলিয়াস সিজার 
পেল তবে পাপ?

এল গৃহযুদ্ধ, এল বিদেশি শক্তি, বিশ্বাসঘাতকতা 
হারেমের দেয়ালে তবু প্রেম আলপনা,
ক্লিওপেট্রার এক হাতে প্রেম, অন্য হাতে যুদ্ধ 
ফণীমনসার রাতে দারুণ উন্মাদনা।

প্রেম, বিরহ, ছলনায় ক্লিওপেট্রা, জুলিয়াস সিজার 
স্থিত যুগে যুগে,
সে এক রোমাঞ্চ কাব্য
উন্মাতাল সর্বগ্রাসী যৌবন সম্ভোগে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৬ পিএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

আমার ধ্যান শুধুই তোমার মুখ 
মিনহাজ উদ্দিন শপথ 

রোদের হ্যাঙ্গারে শুকাই 
গত রাতের ভেজা চোখ 
স্যাঁতস্যাঁতে স্বপ্নের পর্দা
তোমার কাছ থেকে ফিরে আসার পর মনে হলো 
বাগানের ফুলগুলো আজ
অযথাই সৌরভে সারাৎসার। 

অন্ধের কাছে সব ইন্দ্রিয় দক্ষতার কথা 
জানতে চেয়ো না কখনো আর
আমার ধ্যান শুধুই তোমার মুখ

 

 


জখমিপ্রেম
মোজাম্মেল সুমন

অতঃপর তুমি
নির্বিঘ্নে পবিত্র হৃদয়ের ভূমি
থেকে হারিয়ে যাওয়াতে
শূন্যতার হাওয়াতে
একাকিত্বের ছায়া জমতে জমতে
ভালো থাকা কমতে কমতে
আমার নিগড়ে পড়ার
চোখের অশ্রুজল বিগড়ে মরার
প্রতিধ্বনিতে বরফ
হয়ে নিশ্চুপ থাকলেও আমার তরফ
থেকে এখনো কিঞ্চিৎ লুকাইনি
অথবা শুকাইনি
বলে প্রতিনিয়ত বোবাকষ্ট প্রপাতের
দৃশ্য বেদনার প্রভাতের
মতো ফোটে
আর জীবনে জোটে
জখমিপ্রেমের অসহ্য ভগ্নাংশ
কিংবা নিষ্পেষিত অহেতুক স্বপ্নাংশ
যার প্রকৃত মানে
বেঁচে থাকা ক্রমাগত জীবন্মৃতের পানে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

ঐশ্বর্য সুখ-হেমন্তকাল 
পবিত্র মহন্ত জীবন 

সাদারঙে মেঘবালিকা ভেসে বেড়ায় আকাশে...
শীতের সকাল, উল্টো হেমন্তের খোলাহাওয়া 
হিমায়িত কুয়াশায় চাদরে ঢেকে যায় রোদ্দুর।
বাঁশপাতার ফাঁকে টুপটাপ শিশির জলফোঁটা...
সোনা মাটির সবুজবীথি, ফসলের মৌ সুগন্ধ
হেমন্তের আগমন নবান্ন সুখ, ক্যানভাসে ভাসে।
ফড়িংভেজা সকাল চুঁইয়ে চুঁইয়ে টুপটুপ বৃষ্টি
দূর্বাঘাসের ডগায় শিশিরের টলোমলো 
হলুদ রং ছোঁয়াতে বসে ঐশ্বর্য সুখ, আনন্দকাল...
মৌমাছি ফুলে ফুলে মধুভরা হেমন্তকাল
কাঁচাপাকা ফসিল মাঠ, কাজে ব্যস্ত কৃষাণ
গ্রামবাংলার কাদামাটির হাঁড়ি বানায় পাল...
শিল্পের সাবলীল জলছবি হেমন্তকাল।

 

 

রোদের ডাকপিওন
মতিউর রহমান

মৃত সকালের চৌকাঠে পা রেখে দেখি…
শীত আর কুয়াশায় লেখা চিঠি হাতে ডাকপিওন
চিঠির খাম খুলি
কিছু কান্না আর দীর্ঘশ্বাসের শব্দ
অস্ফুটে গোঙায়
প্রেমিকার চুলে সূর্যাস্তের রং মুছে
যে দিন গত হয়েছিল
ফিরে ফিরে আসে
আমি শীত-কুয়াশা উপেক্ষা করে
দিনরাত সেলাই করি আলুথালু জীবন, যাপনের ছেঁড়া জামা
একটু একটু করে পুবালি আকাশ হলুদ হয়
দূরে দেখি, রোদের ডাকপিওন
পায়ে পায়ে হেঁটে আসে আমার আঙিনায়।

তবু কেউ নেই

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
তবু কেউ নেই

কেউ ছিল না এমন তো নয়
কেউ তো ছিল।
তবু কেউ নেই, কেউ কোথাও নেই!
ওই সুদূরে ভেসে ওঠে খুব চেনামুখ
তবু মনে হয় অচেনা, ভীষণ অচেনা!
জীবনের গল্পগুলো মায়ায় আচ্ছন্ন
এক ধূসর কালো বিরহী উপসংহার।
গোধূলির রং ছুঁয়ে নেমে আসা রাত
নির্ঘুম জোনাকির মতো আলো জ্বেলে
অপেক্ষায় থাকা নিবিড় উষ্ণ অনুভব
বাতাসের বুকে হাস্নাহেনার সৌরভ।
ওই নগ্ন আঁধার ভুলে গেছে প্রতিশ্রুতি
ফিরে আসে নীল খামে বিরহ চিরকুট।
বুকের যত কথা নির্বাক অপাঙ্‌ক্তেয়
ব্যথার অসুখে ক্ষত হয় হৃৎঅন্তঃপুর।