বহুমাত্রিক জীবন
সারমিন চৌধুরী
স্বপ্নপোড়া জীবনের গল্পে অদৃশ্য সীমানা
সহস্রকাল দরজার পেছনে দাঁড়িয়ে ঠাঁই খুঁজি
তোমার অন্দরমহলে পরিপাটি সংসার,
উঠতি গেরস্তি সুখসমৃদ্ধির ষোলোকলা পূর্ণ;
বসন্ত লুটোপুটি খায় তোমার বাগান বিলাসে-
অনেক মানে এই বহুমাত্রিক জীবন বোধে কিংবা
আমি বুঝতে পারিনি ভিতরকার ছলাকলা!
আমিহীন তোমার বেঁচে থাকা এতটা সহজ?
বহু সময়ের পরিক্রমায় যখন বোধদয়টা হলো
তখন আঘাতের চেয়েও বেশি স্বস্তি পেলাম
কারণ, এখন রোজরোজই মিথ্যা অভিনয়-
চোখের প্রতিবিম্বে প্রদর্শিত হয় না।
ঋণী
হাদিউল ইসলাম
একদা দিয়েছ খুলে পুলকের দ্বার
দিয়েছিলে সেথা প্রবেশাধিকার
তার পর স্বর্গে যেরকম, ছুড়ে দিল বায়বীয়
কাঁটা ও কুসুমে আমার ঈশ্বর
সন্দেহজনক বসন্তবাতাসে আমি বহু উড়িয়েছি
একান্ত রোদ্দুর, অশ্রুকণা দিন মুছেছি পাষাণে-
স্বাদু পৃথিবীর অনেক লবণে আমি ঋণী
যা পেয়েছি, তা আমি মুছে যাওয়া অক্ষরে লিখিনি
হিংসা
মাঈনউদ্দীন আহমেদ মাহী
প্রিয়তা,
তুমি হয়তো জেনে গেছ,
আমাদের মন একটা বোমারু বিমান!
যখন তখন বিস্ফোরিত হতে পারে।
অথচ দেখ, কী আশ্চর্য রকমভাবে
প্রতিদিনই আমি নিকোটিনের ধোঁয়ায়
নিজেকে উড়িয়ে দিচ্ছি ওই আকাশে।
প্রিয়তা, আমরা এখন সভ্যর বদলে
অসভ্য হচ্ছি দিনকে দিন
চিলের ওড়া দেখে আমাদের হিংসা হয়
কেন হিংসা হয় বলতে পারবে?
কালের শিলালিপি
সাকিব জামাল
আদিম যুগের শিলালিপি বীভৎস!
মধ্যযুগের শিলালিপি রক্তরং লাল!
আধুনিক যুগে স্বপ্ন ছিল,
শান্তির রঙে রাঙাবে আসমানি নীলে
উড়বে শাদা পায়রা অবিনাশী মানবতার গানে।
অথচ ক্লান্ত পৃথিবী, ক্লান্ত মানুষের প্রাণ
বারবার দ্যাখে চোখে- রং বদলায়নি তার!
আদিম আর মধ্যযুগেই
ঘুরপাক খায় কালের শিলালিপি
অমানবিক চিত্রকলা খোদাই করা গায়।
কবিতা-নতুন-আঁচলে
প্রদীপ ভট্টাচার্য
সেও ভেসে যায় গড্ডালিকায়,
দুঃখকে দুঃখ দিয়ে ভাসায়;
এমনি দুঃখ-সুধা তার বুকে।
ফেণিল উচ্ছ্বাসে ডোবায় ফসল,
জীবনের যত লেনদেন, বোঝাপড়া;
নিজের মধ্যে নিজেকে।
অবশেষে অদৃশ্য হাতছানি
মনের হাঁড়িতে ফোটে উষ্ণতায়;
জীবন-মরণ খেলায় মেতে ওঠে।
কতিপয় অবুঝ বালকের মিছিলে,
শ্মশান নেমে আসে মৃত্যু ক্ষুধায়;
পুরনো সেই- নতুন আঁচলে।