ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সাহিত্যসভার এ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম
সাহিত্যসভার এ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

নদী শুকিয়ে যায় 
বাশার মাহফুজ 

বহুগামী দুঃখের ফোয়ারায় চোখের শহরে প্লাবন নামে
তবু, শাবক স্বপ্নের উর্বরতায় ফুটছে জুঁইফুল 
বুকের মানচিত্রে নতুন দ্বীপ নতুন অধ্যায় চাঁদ।
 
প্রিয় জোছনা। প্রিয় জানালায় উপেক্ষিত এই বেঁচে থাকা। 

সবগুলো নদীতে স্বপ্নের নামে পাল ওঠালাম
তবু নদী শুকিয়ে যায়
মৃত্যুর কঙ্কালে জেগে ওঠে অমানবিক চর
বাতাসের কানে ভুল সংগীত বেজে ওঠে। 

ভুলে মাখা এই পথ ফুরাতে চায় না
সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে 
সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে 
এই ভেবে কেটে গেল পুরো একটা জীবন! 

 


কালিদাসের মুখোমুখি 
সায়্যিদ লুমরান 

বড় অভিমান করে আছে মেঘগুলো! এই মুহূর্তেই পত্র প্রস্তুত করো। সম্বোধনের যথাযোগ্য শব্দ পেতে তরুণ কবিকে বসাও কালিদাসের মুখোমুখি।
অতঃপর বিস্তারিত লিখতে সমস্ত বাংলা কবিতা থেকে তুলে আনো অজস্র বর্ষার বাৎসায়নঃ
যে বাতাস যমুনাগামী তার ডানায় ডানায় কদম ফুলের রেণু, সে বাতাস শব্দে সঞ্চারিত করে পত্রে লিপিবদ্ধ করো।
আরও সঞ্চারিত করে দাও বাক্যের আত্মায় বংশীবাদকের বুক থেকে উঠে আসা রাগ- মেঘমল্লার। 
গভীর অরণ্যে নীলাম্বরীর ভাঁজে যে শরীর, তার নৃত্যের ভঙ্গিমার সাথে পত্রের পুনশ্চে এঁকে দাও রাধিকার পদচিহ্ন।
আলবৎ! পত্রের অপর পিঠে অঙ্কন করো বৃষ্টির সিলমোহর।  

বড় অভিমান করে আছে মেঘগুলো! এই মুহূর্তেই পত্র প্রস্তুত করোঃ কবুতর নয়, এ অনাবৃষ্টির কালে পানকৌড়ির পায়ে চিঠি বেঁধেই মেঘকে বার্তা পাঠাও।

 

ইচ্ছে
আহমেদ আশিক

ইচ্ছে আমার আকাশ সমান
ভেবে তো না পাই,
এই যে মাটির দেহখানা
সৃষ্টি মালিক সাঁই। 

প্রেম-পিড়িতের  মাখামাখি-
দেহের মাঝে দমের পাখি
কখন পাখি উড়ে যাবে
ঠিকঠিকানা নাই।

মালিক চালায় বলেই চলি
আমার মাঝে সাঁইকে খুঁজি,
আসলেই কি প্রভুর কাছে
আমার আছে ঠাঁই?

 

অপ্রস্তুত মেঘবালিকা 
মুহাম্মদ রফিক ইসলাম

সকালের খামে ওড়ে দুপুরের চিঠি!
মন খারাপের পাশে মেঘবালিকার 
নীরবতা, ভালো নেই  শ্রাবণ বিকেল।
কদম-কেয়ার বনে সন্ধ্যার বর্ণিল 
আয়োজনে বাদুড়ের রাতকানা চোখ।
নাড়ির টানের মতো আকাশের টান
পৃথিবীর, মৃত্তিকার সোঁদামাখা পথে।
বাতাসের ডানা জানে পাহাড়ের বাড়ি;
প্রণয়ের মানে বোঝে ঝরনার স্রোত!
কদম-কেয়ার বনে সন্ধ্যার পিদিম;
মেঘবালিকার মনে আলো ঢুকে গেলে 
মুছে যায় অন্ধকার, বির্বণ অতীত!

 


ফুডব্লগাররা কেন এত জনপ্রিয়
মেহেদী ইকবাল 

খিদে নিয়ে জন্মেছে মানুষ
অন্য প্রাণীর মতো
তবে তারা শৌখিন
কত শত রেসিপি আর মসলার ঘ্রাণ
বৈচিত্র্য আর চমকে ভরা খাবার টেবিল তাদের।

যদিও আছে অনিয়ম
বণ্টনে বঞ্চিত যারা থাকে তারা অনাহারে
আছে অপচয় আর জঘন্য কাড়াকাড়ি উচ্ছিষ্ট নিয়ে।

মানুষের লোভী চোখ খোঁজে রেসিপি শুধু
অনাহারে থাকে যারা
তাদেরও চোখ খাবারের দিকে।

মানুষ খেতে ভালোবাসে
আর লোভী কিংবা ক্ষুধার্ত চোখে
ভালোবাসে দেখতে

খাবার প্লেটভর্তি! 

 


মূল্যহ্রাস
দালান জাহান 

এই এলাকায় কোনো শিল্পী নেই 
অথচ রোজ রাতে কে যেন 
তিনটি মুমূর্ষু মহাদেশ এঁকে যায় কৃষ্ণঠোঁটে। 

এই এলাকায় কোনো জ্যোতির্বিদ নেই 
অথচ কম্পমান চোখের পাতায়
টেলিস্কোপ নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে 
নিঃশ্বাস বেয়ে নিউরনে ওঠা ঠাণ্ডা সুতি সাপ। 

এই এলাকায় কোনো ঈশ্বর নেই 
নক্ষত্র নেই শত্রু নেই 
অথচ মূল্যহ্রাসের মায়াবাজারে 
দীর্ঘ হচ্ছে তোমার শাড়ির দাম।

 


ইন্দ্রজাল 
সাঈদুর রহমান লিটন 

আবার কোনো প্রজাপতি উড়ে আসে 
মনের বেখেয়ালে ঠাঁয় নেয় অন্তরে 
মমতা জন্ম নেয় মন-মননে। 
তার পরশ মন ছুঁয়ে যায়
দাগ কেটে যায় অন্তরে।
তার ডানার আদর আর অকৃত্রিম সৌন্দর্যে 
এক ইন্দ্রজাল তৈরি করে যায়
সেই প্রজাপতির উড়ে যাওয়া, ছুঁয়ে যাওয়া
সব কিছু ভালো লাগে।

 


শোকার্ত দুচোখ
পবিত্র মহন্ত জীবন 

অঝোরে কাঁদে শোকার্ত দুচোখ-
অধীর গতি, বিকর্ষ বিক্ষোভ মিছিল
হৃদ-গগনে সহস্র কষ্টের আবরণ 
তীব্র ক্ষোভ, অসহ্য যন্ত্রণা
জীর্ণ কাচের নল ক্ষতবিক্ষত 
ব্যথা, কাতরে ওঠে বুকের ভিতর,
নিন্দন ঘৃণা, অমীমাংসিত, তাচ্ছিল্য
কালো মেঘের আনাগোনা, শোকার্ত চোখ
অঝরে কাঁদে পাহাড়-পর্বত, ঝরনাধারা 
দুঃখের তরীতে ভাসে ভূমি সমতল;
সমুদ্র কোলাহল।

 

সেসব অবোধগম্যতা
গাজী গিয়াস উদ্দিন 

সহস্র রহস্যের জগতে আমাদের অদৃষ্ট বিচরণ!

লাগসই ভাষা কই সেসব অবোধগম্যতা নিয়ে খেলে 
মার্জার ছানারাও অবাক দূরত্বে অপরিচিত পরিবেশে 
পরম স্বজনের মনোভাব কেন মুশকিলে ফেলে?

অথচ জলবায়ুর স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয় বায়ুবিদ
প্রণয়পুষ্পের সন্ধানেও মৌমাছির কাছে হই নাকাল 
রোবট ও রমণীর সুষম মিথস্ক্রিয়া এ আইয়ের ধ্রুব জয়-জাল,
শিশুর অভিমান ভাঙতেও হিমশিম অভিজ্ঞ মনোবিদ!

তবু চলে ঠিকঠাক সেলাইয়ের সব চটকল,
শত রহস্য বিফল এ কোন ম্যাজিক- কোন মিরাকল! 

তনুমন শুশ্রূষা- ঘুরপ্যাঁচ মৃত্যুর চতুর্ভুজ সমীকরণ! 

 


দিন কাটছে বেশ
সাদেকুর রহমান সাদিক

ফসল নাকি উদ্বৃত্ত
খাদ্যে গুদাম ভরা,
বিদেশ থেকে চাল না এলে
দেশের বাজার চড়া।

ঋণখেলাপির পকেট ভারী
বাড়ছে ক্রয়ক্ষমতা,
আমলা আর সাধারণে
আকাশ-পাতাল সমতা।

গিন্নি যখন সকালবেলা
হাতে ধরায় থলি-
পকেটে মোর ঘুঘু নাচে
কেমন করে বলি।

আয় বাড়েনি আমজনতার
তবু মধ্যবিত্ত দেশ,
ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে
দিন কাটছে বেশ।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

বিনিময়
সাত্ত্বিক দাস

আকাশজুড়ে ধুধু মাঠ,
ওই, আকাশে নক্ষত্রের নাচ, ও পাড়ার বারোয়ারি তলায়।
নির্ঘুম পেঁচার দল, ঘুম চোখে মাথা নাড়ে নিঃসংকোচে
নক্ষত্রের আলোয়, আমার মাথার ভিড়।
পোড়া ভাতের গন্ধে, একাকী ছায়ামূর্তি,
নিরুপায় চোখে চেয়ে আছে, সম্মুখ পানে
কী দেবে বিনিময়ে?
দুই মুঠো ভাত, 
প্রেম, ভালোবাসা, আদুরে হাত।
না কি, মৃত্যু যন্ত্রণা।।

 


দগ্ধ হৃদয়ের খোঁজ
সুমনা আফরিন

তার কোথাও একটা শূন্যতা ছিল
হয়তো শূন্যতায় ভরা কুঠরি ছিল
হয়তো তাতে
নিচ্ছিদ্র যন্ত্রণায় ভরা কোনো দুঃখবাক্স ছিল।

তার বাক্সে হয়তো কালো ও নীল কলম ছিল
কলমে কালি ছিল কম
হৃদয়ে কথার গুরুভার থাকলেও
সব কথা হস্তাক্ষর পায়নি।

তার জন্য সংরক্ষিত সবুজ কালির
সতর্কতার লাল কালির 
বল পেনের কোনো কমতি ছিল না।

তার চোখ বলত
ফাউন্টেন পেনের
অভিলাষ তার নেই।
বাসনা কেবল একটা শূন্য ডাকবাক্সের
শূন্য খাতার অধিকারী
একজন দগ্ধ মানুষের।

তার চোখে খোঁজ ছিল
কোনো পোড়া চোখের
পোড়া চোখের দগ্ধ হৃদয়ই পারে
পৌরহিত্যে করে
বুকের জগদ্দল পাথর নামাতে
দগ্ধ জনের অসীম শূন্যতা ঘোঁচাতে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ এএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

ফেরারি নারী
মোহামেদ সাইফুল হাসান

কৃত্তিকা তারার আবির্ভাব হেমন্তের পশ্চিমাকাশে
মৃদুমন্দ শীত নীরবতার গহিন অন্ধ রাতে,
বাঁশির সকরুণ আওয়াজ বাউল গানের সুরে 
টিনের চালে বেদনাতুর শিশির ঝরার শব্দ 
ছাতিমের গন্ধে অতীতের উঁকি তৃষিত অন্তরে,
পুরো একটি বছরের দূরত্ব, হলো দেড় কোটি সমান
অতিথি পাখিরাও চলে এল আপন দেশ ছেড়ে
শুধু ফেরারিদের ফিরে আসার নাম নেই!

 


শক্তি
রজব বকশী 

প্রতিটি মানুষ এক একটি প্রদীপ 
হোক না সে অন্ধ কিংবা অন্ধকারে একা 
তথাপি জ্বলতে থাকে 
দৃশ্য-দৃশ্যান্তর

এই শক্তির প্রাচীন ব্যবহারে পড়ে থাকে কেউ 
কেউবা নতুন করে পথ খুঁজে ফেরে 
কেবলি নিজের জন্য নয় 
সামগ্রিক চৈতন্যের বিদ্যুৎপ্রবাহ নিয়ে ভাবতে শেখায় 

এই জেগে থাকা আর জাগানোর গান
আপন সত্তায় প্রতিস্থাপনের টেকনিক স্বপ্ন টাওয়ার
অন্যরকম বোধের আকরিক সংকেত পাঠায়
মানবিক মূল্যবোধে মেধা প্রতিভার এক একটি নক্ষত্র 

এই সভ্যতার আলোকিত মনিটরে ভেসে ওঠে 
ভাঙাগড়ার ভেতর দিয়ে যে পাওয়াগুলো জয়ধ্বনি করে
সেই আলোয় নিজেকে নতবৃক্ষ হতে দেখা যায়
তারই ইতিহাস পাঠে মনোযোগী আমাদের সময়ের ঢেউ 

 


ক্লিওপেট্রার রোমাঞ্চকর প্রেম 
সাগর আহমেদ 

ক্লিওপেট্রার হাতে সোমরসে শরাব পাত্র 
গলায় প্যাঁচানো সদন্তে সাপ,

তার খিলখিল হাসিতে ছলনার রং 
দেশ, মহাদেশ পেরিয়ে জুলিয়াস সিজার 
পেল তবে পাপ?

এল গৃহযুদ্ধ, এল বিদেশি শক্তি, বিশ্বাসঘাতকতা 
হারেমের দেয়ালে তবু প্রেম আলপনা,
ক্লিওপেট্রার এক হাতে প্রেম, অন্য হাতে যুদ্ধ 
ফণীমনসার রাতে দারুণ উন্মাদনা।

প্রেম, বিরহ, ছলনায় ক্লিওপেট্রা, জুলিয়াস সিজার 
স্থিত যুগে যুগে,
সে এক রোমাঞ্চ কাব্য
উন্মাতাল সর্বগ্রাসী যৌবন সম্ভোগে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৬ পিএম
আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ পিএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

আমার ধ্যান শুধুই তোমার মুখ 
মিনহাজ উদ্দিন শপথ 

রোদের হ্যাঙ্গারে শুকাই 
গত রাতের ভেজা চোখ 
স্যাঁতস্যাঁতে স্বপ্নের পর্দা
তোমার কাছ থেকে ফিরে আসার পর মনে হলো 
বাগানের ফুলগুলো আজ
অযথাই সৌরভে সারাৎসার। 

অন্ধের কাছে সব ইন্দ্রিয় দক্ষতার কথা 
জানতে চেয়ো না কখনো আর
আমার ধ্যান শুধুই তোমার মুখ

 

 


জখমিপ্রেম
মোজাম্মেল সুমন

অতঃপর তুমি
নির্বিঘ্নে পবিত্র হৃদয়ের ভূমি
থেকে হারিয়ে যাওয়াতে
শূন্যতার হাওয়াতে
একাকিত্বের ছায়া জমতে জমতে
ভালো থাকা কমতে কমতে
আমার নিগড়ে পড়ার
চোখের অশ্রুজল বিগড়ে মরার
প্রতিধ্বনিতে বরফ
হয়ে নিশ্চুপ থাকলেও আমার তরফ
থেকে এখনো কিঞ্চিৎ লুকাইনি
অথবা শুকাইনি
বলে প্রতিনিয়ত বোবাকষ্ট প্রপাতের
দৃশ্য বেদনার প্রভাতের
মতো ফোটে
আর জীবনে জোটে
জখমিপ্রেমের অসহ্য ভগ্নাংশ
কিংবা নিষ্পেষিত অহেতুক স্বপ্নাংশ
যার প্রকৃত মানে
বেঁচে থাকা ক্রমাগত জীবন্মৃতের পানে।

সাহিত্যসভার কবিতা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
সাহিত্যসভার কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

ঐশ্বর্য সুখ-হেমন্তকাল 
পবিত্র মহন্ত জীবন 

সাদারঙে মেঘবালিকা ভেসে বেড়ায় আকাশে...
শীতের সকাল, উল্টো হেমন্তের খোলাহাওয়া 
হিমায়িত কুয়াশায় চাদরে ঢেকে যায় রোদ্দুর।
বাঁশপাতার ফাঁকে টুপটাপ শিশির জলফোঁটা...
সোনা মাটির সবুজবীথি, ফসলের মৌ সুগন্ধ
হেমন্তের আগমন নবান্ন সুখ, ক্যানভাসে ভাসে।
ফড়িংভেজা সকাল চুঁইয়ে চুঁইয়ে টুপটুপ বৃষ্টি
দূর্বাঘাসের ডগায় শিশিরের টলোমলো 
হলুদ রং ছোঁয়াতে বসে ঐশ্বর্য সুখ, আনন্দকাল...
মৌমাছি ফুলে ফুলে মধুভরা হেমন্তকাল
কাঁচাপাকা ফসিল মাঠ, কাজে ব্যস্ত কৃষাণ
গ্রামবাংলার কাদামাটির হাঁড়ি বানায় পাল...
শিল্পের সাবলীল জলছবি হেমন্তকাল।

 

 

রোদের ডাকপিওন
মতিউর রহমান

মৃত সকালের চৌকাঠে পা রেখে দেখি…
শীত আর কুয়াশায় লেখা চিঠি হাতে ডাকপিওন
চিঠির খাম খুলি
কিছু কান্না আর দীর্ঘশ্বাসের শব্দ
অস্ফুটে গোঙায়
প্রেমিকার চুলে সূর্যাস্তের রং মুছে
যে দিন গত হয়েছিল
ফিরে ফিরে আসে
আমি শীত-কুয়াশা উপেক্ষা করে
দিনরাত সেলাই করি আলুথালু জীবন, যাপনের ছেঁড়া জামা
একটু একটু করে পুবালি আকাশ হলুদ হয়
দূরে দেখি, রোদের ডাকপিওন
পায়ে পায়ে হেঁটে আসে আমার আঙিনায়।

তবু কেউ নেই

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
তবু কেউ নেই

কেউ ছিল না এমন তো নয়
কেউ তো ছিল।
তবু কেউ নেই, কেউ কোথাও নেই!
ওই সুদূরে ভেসে ওঠে খুব চেনামুখ
তবু মনে হয় অচেনা, ভীষণ অচেনা!
জীবনের গল্পগুলো মায়ায় আচ্ছন্ন
এক ধূসর কালো বিরহী উপসংহার।
গোধূলির রং ছুঁয়ে নেমে আসা রাত
নির্ঘুম জোনাকির মতো আলো জ্বেলে
অপেক্ষায় থাকা নিবিড় উষ্ণ অনুভব
বাতাসের বুকে হাস্নাহেনার সৌরভ।
ওই নগ্ন আঁধার ভুলে গেছে প্রতিশ্রুতি
ফিরে আসে নীল খামে বিরহ চিরকুট।
বুকের যত কথা নির্বাক অপাঙ্‌ক্তেয়
ব্যথার অসুখে ক্ষত হয় হৃৎঅন্তঃপুর।