ঢাকা ১২ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১

স্মৃতিচারণে হুমায়ূন আহমেদ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
স্মৃতিচারণে হুমায়ূন আহমেদ

কোথায় কেমন আছেন বলুনতো মশাই? এইযে এতগুলো হেমন্ত কেটে গেলো আপনাকে ছাড়া, এ শূন্যতা টের পান আপনি? জানেন, পৃথিবীতে কারো চলে যাওয়াতে জীবন থেমে থাকে না, প্রকৃতি থেমে থাকে না। আপনার সেই প্রিয় ফিনিক ফোটা জ্যোৎস্না আজও জেগে ওঠে বিশ্ব চরাচর জুড়ে। টিনের চালে ঝুম বৃষ্টি জীবনের গল্প লেখে। এ শহরে জ্যোৎস্না উৎসব হয়। রূপারা নীল শাড়ি পরে বৃষ্টিতে ভিজে; হিমুদের কাছ থেকে একগুচ্ছ বৃষ্টিভেজা কদমফুল পাবে বলে। কিছুই থেমে নেই বিশ্বাস করুন। মানতে পারছেন আপনি? কষ্ট হচ্ছে না? তবে কী জানেন, আপনার চলে যাওয়াতে হাজার হাজার বইপাগল মানুষের মনে যে শূন্যস্থানটা তৈরি হয়েছে, সে শূন্যস্থান সবাই তৈরি করতে পারে না। আপনি পেরেছেন, সত্যিই পেরেছেন!

আপনি নেই বলে আজও কেউ কেউ নির্জন দুপুরে দখিনের জানালায় চোখ রেখে নীরবে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। মধ্যরাতে আপনার সৃষ্টিকর্ম বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। আপনার সমাধির পাশে রেখে আসে একগুচ্ছ লাল গোলাপ। নীল শাড়ি পরলেই কারো কারো তীব্র মন খারাপ হয়ে যায়। আপনার না থাকাতে কিছু থেমে না গেলেও এলোমেলো হয়ে গেছে অনেককিছুই। এইযে এভাবে তোলপাড় করে সব এলোমেলো করে দিয়ে চলে গেলেন, এত ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই আছে!

আমি আপনার গুণমুগ্ধ কোনো পাঠক নই, কোনোরকম দ্বিধা ছাড়াই বলছি। গন্ডগ্রামে বেড়ে ওঠা আমি ছোটবেলায় সবার আগে আপনার বইয়ের সাথেই পরিচিত হয়েছিলাম। যেহেতু তখন আমার আর কারো বই পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি, আপনার বই'ই মুগ্ধ হয়ে পড়তাম, নাওয়া খাওয়া সব ভুলে পড়তাম, পাঠ্যবইয়ের নিচে লুকিয়ে পড়তাম, লেপের নিচে লাইট জ্বেলে পড়তাম, তবু পড়তাম। অনেক বই পড়েছি আপনার। পরে আমার জগৎটা একটু বড় হলো, আরও অনেক লেখকের লেখনীর সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেলাম। তখন থেকে আমার ভীষণ পছন্দের লেখক হয়ে উঠলো, রবীঠাকুর, শরৎবাবু, সমরেশ, সুনীল'দা, নিমাই এবং আরও কয়েকজন। 

যে লেখাগুলো পড়লে কোথাও একটা হারিয়ে যাওয়া যায়, সে লেখাগুলো ভীষণ টানে আমাকে, যা আপনার লেখার মাঝে কখনোই পাইনি সেভাবে। যতোটা সরলভাবে লিখেন আপনি, ততোটাই অবলীলায় স্বীকার করছি, কোনো অস্বস্তি হচ্ছে না। তবে "আমার ছেলেবেলা" বইটা আমাকে কাঁদিয়েছে। আপনার লেখা এই একটামাত্র বই আমাকে কাঁদিয়েছে!

তবে কী জানেন, আপনার লেখা প্রতিটা গান আমার ভীষণ প্রিয়। একেকটা গান যেন সারাজীবন ধরে শুনে যাওয়া যায়, বুকের খুব গভীরে গেঁথে থাকে, চোখে তোলপাড় করা শ্রাবণ নামায়। আপনার লেখা নাটক, সিনেমাও বেশ। সব মিলিয়ে প্রিয়তার একটা জায়গায় রয়েই গেলেন আপনি। যেদিন পৃথিবী থেকে চলে গেলেন, সেদিন থেকে যেন আপনাকে আরও অনেক বেশি ভালোবেসে ফেললাম; বুকের ভেতরটা এত ফাঁকা লাগছিলো, এত কান্না পাচ্ছিলো। আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যখন সবার এত অভিযোগ, তখন রোজ পত্রিকায় আপনার জীবন সম্পর্কে জেনে আরো মায়ায় পড়ে গেলাম, কী নিবীড় সে মায়া আপনাকে বোঝাতে পারবো না!

গুলতেকিনের জন্য খারাপ লাগে জানেন। মানুষটা ভীষণভাবে ঠকে গেছে। তবু আপনাকে ভুল বুঝতে পারিনি কখনো। আপনাকে যে ব্যক্তিজীবন দিয়ে মাপা ঠিক হবে না, আপনি যে সংসার ধর্মের ঊর্ধ্বে। তবে আপনার জীবনের প্রতিটা কোণায় যে কী ভীষণ মায়া রেখে গেছেন, আপনি নিজেই হয়তো জানেন না। অগণিত মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার ক্ষমতা যে রাখে, তাকে ভালো না বেসে পারা যায় না সত্যিই।
আপনার প্রতিটা সন্তানের জন্য আমার কষ্ট হয়। আমরা কেবল একজন গুণী মানুষ হারিয়েছি, কিন্তু তারা চিরদিনের মতো তাদের মাথার ছাদটাই যে হারিয়ে ফেলেছে! আমাদের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয় জানি, কিন্তু তাদের যেই অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেলো, তার রেশ থেকে যাবে বাকিটা জীবন। তবু জীবন চলছে, সময় থামার জিনিস নয় তাই। ফিনিক ফোটা জ্যোৎস্নারা আপনাকে খুব মিস করে জানেন, বৃষ্টিরা যেন আপনার নামেই ঝরে পড়ে, আর আমরা আপনার না থাকাজুড়েই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখি। ওপারে ভালো থাকা হয় যেন জ্যোৎস্নাপ্রিয় মানুষ।



সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

 

কাঁটাতার
আবির হাসান

পুরোনো মোমের মতো গলে যাচ্ছে 
নিঃসঙ্গ রাত্রি, হাওয়ার আর্তনাদ মাখা 
কোলাহল এড়িয়ে যাচ্ছে চোখ।
দৃষ্টিতে মৃত্যুর নির্মমতা ফুটে ওঠে পালকহীন 
শীর্ণ পাখির মতো!
ভাঙনের যাতনা নিয়ে যে শরীর 
ছটফট করে অন্তহীন!
মৃত্যুর মুখোশেই তার ক্ষয়িষ্ণু মখমলে দিন 
সামান্য আয়ু ফিরে পায়, আর অদৃশ্য কান্নার 
ভেতর খুঁজে পায় হারানো রঙিন দীর্ঘশ্বাস-
অথচ অলীক বঞ্চনার কাঁটাতারে 
রুদ্ধ হয়ে এ জীবন হারিয়ে ফেলেছে 
বেঁচে থাকার প্রশান্তিময় বিশ্বাস।

সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

 

পঞ্চবৃক্ষের যুবতী
অলিউর রহমান ফিরোজ

একটি সম্পর্ক
তাও আবার দুই যুগ পেরোনো
সদ্য কৈশোর ছেড়ে
একটু একটু অনুভূতিশীল
শরীরবৃত্তীয় হালকা শিহরণ
সামান্য জেগে ওঠা
মিষ্টিমুগ্ধতা ছড়ানো 
ফুলের সুবাসিত ঘ্রাণের আকুলতায়
যেন কাউকে কাছে টেনে নেয়
সে রকম ভাবলেশহীন একটা সম্পর্ক।
সদ্য চুলের বিনুনি থেকে
আস্তে আস্তে চুলগুলো খসে যাচ্ছে
বাঁধনে আর মানছে না বাধা
সব বন পেরিয়ে
ডানা মেলে 
এক আকাশ, দু-আকাশ ভেদ করে
পাড়ি দেওয়া একটা অসম প্রেমের উপাখ্যানে
সলিল সমাধি ঘটেছে।

সাহিত্যসভার ছোটগল্প

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম
সাহিত্যসভার ছোটগল্প
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

 

একটি সুগন্ধি ফুলের ঘ্রাণ 
সুশান্ত কুমার দে

বেলকনির জানালার গ্লাসটি সরিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে শিউলি। খুঁজে পেল বহির্জগতের রূপলাবণ্যে ভরা অফুরন্ত সৌন্দর্যের ভাণ্ডার, তার মাঝেই প্রস্ফূটিত এক টুকরো ভালোবাসার উজ্জ্বল ঝকঝকে হীরের টুকরো।
হাজার মানুষের ভিড়ে শিউলির দৃষ্টিটা নিবন্ধিত হয় মিন্টুর দিকে।
হ্যাঁ, মিন্টু এসেছে, প্রতিদিনের মতো গাড়িটা থামিয়ে পাশের দোকান থেকে একটা ঠাণ্ডা কিনে ঢকঢক করে গিলতে লাগল।
না, ওটা নেহাত পানীয় পানের কিংবা খাদ্যের হজমশক্তি বাড়াতে নয়, কিছুটা সময় পার করে শুধু শিউলির রূপলাবণ্য সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। শিউলি ওকে কিছুটা খোলামেলা দেখার সুযোগ করে দেয়। বুকের ওড়নাটা টেবিলের ওপর রেখে দেয়। একটা পাতলা টাইট নীল রঙের কামিজ পরে কপালে একটা রঙিন টিপ দিয়ে বেলকনির জানালার কাচ সরিয়ে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।


মিন্টুকে যতটা সম্ভব খুশি করার চেষ্টা করে। কেননা শিউলি মিন্টুকে অত্যন্ত ভালোবাসে।
মিন্টু শিউলির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, তার সারা শরীর যেন এক মুহূর্তে প্রখর দৃষ্টিতে আটকে যায়।
শিউলিও কিছুটা আবেগের বশে লাজলজ্জা ভুলে দুজনায় মধ্যে চোখাচোখির ভাব বিনিময় করে।
একটু মিষ্টি হেসে কয়েক মুহূর্তের জন্য দুজনার দুকূলে দাঁড়িয়ে কিছুটা প্রেমসাগরে হাবুডুবু খাওয়ার প্রাণবন্ত চেষ্টা। 
মিন্টুর অফিসের সময় হয়ে গেছে, মাত্র মিনিট পাঁচেক সময় হাতে আছে। হাতটা নেড়ে টা টা বাই বাই বলে বিদায় নেয়। শিউলিও একটু হাত নেড়ে মিষ্টি হেসে মিন্টুকে বিদায় জানায়।
এভাবে আর কতদিন চলবে, অন্তরের যে দাবানল ফুঁসে উঠেছে তা বোধহয় স্বয়ং বিধাতাও থামাতে পারে না।
অতি মেধাবী শিউলির ক্রমশই পড়াশোনার অবনতি হচ্ছে। পড়াশোনার ক্ষতি হওয়ার ভয়ে তার মা তাকে একটা মোবাইল ফোন পর্যন্ত দেয়নি।
মা রমনা অত্যন্ত কঠিন শাসনের মধ্যেই মেয়েটিকে রাখেন। ঘরের বাইরে একা একা মেয়েকে কোথাও যেতে দেন না।
সব সময় কড়া নজরেই রাখেন, বাবা নিবারণ বাইরে থাকেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাড়ি ফেরেন। সেই কারণেই মেয়েটার দেখভাল মাকেই কড়া নজরে রাখতে হয়। 
যৌবনের প্রথম যে কুঁড়িটি প্রস্ফূটিত হয় সেই কুঁড়ির অন্তরে লুকায়িত থাকে অজস্র ভালোবাসার ঢেউ।
একটা নতুন অনুভূতির রঙিন স্বপ্ন। যেটা শিউলির অন্তরজুড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চন্দ্রের বিচ্ছুরণ যেন সারা অঙ্গে সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করে, বক্ষযুগল স্ফীত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা মনমাতানো প্রাচীরের শীর্ষ চূড়ায়।
ইতোমধ্যে শিউলি ও মিন্টুর মধ্যে যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তা অনেকের দৃষ্টির গোচরে এসেছে।
রমনার কানে কে বা কারা ফিসফিস করে বলেও দিয়েছে।


রমনা আদৌ বিশ্বাস করতে পারেন না, শিউলির নামে কেউ আজেবাজে কোনো কথা বলুক, তিনি এটা আদৌ মেনে নিতে চান না।
তাছাড়া শিউলির রূপলাবণ্য নিয়ে মা রমনা, গর্ব বোধ করেন। আদরের মেয়েটিকে তো আর যেনতেন ঘরে সম্প্রদান করবেন না।
একটা উচ্চপদস্থ সরকারি চাকরি পাওয়া ছেলের হাতে শিউলিকে তুলে দিতে চান। অথচ শিউলি একটা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষকের পদে সদ্য চাকরি পাওয়া স্বল্প বেতনের মিন্টুকে বিয়ে করতে চায়।


শিউলির সম্প্রতি চঞ্চলতা ও পড়াশোনার প্রতি অনাগ্রহ বেশ লক্ষণীয়।
ইতোমধ্যেই কলেজের অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, টেস্ট পরীক্ষায় শিউলির রেজাল্ট খুবই খারাপ হয়েছে।
অভিভাবক হিসেবে রমনা শিউলিকে সঠিকভাবে পড়াশোনার ব্যাপারে একটু সজাগ থাকতে বললেন।
বিষয়টি নিয়ে রমনা শুক্রবার রাতে স্বামী নিবারণের সঙ্গে সবকিছু খুলে বললেন।
নিবারণ বললেন, মানসম্মান থাকতে থাকতে মেয়েটিকে সুপাত্রের হাতে তুলে দিতে হবে। কেননা, যে বাড়িতে একটা ভালো মেয়ে থাকে, সেই বাড়ির চারপাশের বাতাসে যেন একটা সুগন্ধি ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে।


সেই সুযোগে মৌমাছিদের আনাগোনা বেড়ে যায়।
ওদিকে মিন্টু ও শিউলির ঘটনা বহুদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে।
শিউলি তার বাবা, মায়ের পরিকল্পনাগুলো বুঝতে পারল।
আগামীকাল কলেজ যাওয়ার সময় বিষয়টি নিয়ে মিন্টুকে সবিস্তারে জানাতে হবে। প্রয়োজনে পালিয়ে বিয়েটা করাই শ্রেয়।
চারদিক নিস্তব্ধতা ভেঙে শিউলি খুব ভোরে মিন্টুদের বাড়ি হাজির হলো।
মধুলোভী মৌমাছিরা ফ্যালফ্যাল করে শিউলির দিকে তাকিয়ে আছে। এমন সুগন্ধযুক্ত ফুলের নির্যাস পেতে কে না চায়। মিন্টু খবরটি পেয়ে শিউলির দিকে এগিয়ে এল।
শিউলি বলল, মিন্টু দা এখুনি একটা উপায় কর। ততক্ষণে শিউলির মা, বাবাসহ প্রতিবেশীর বেশ কিছু লোক এসে হাজির হলো।
রমনা, শিউলির সাহসিকতার কাছে পরাজয় বরণ করল। দুই পক্ষের লোকজন একত্রে জড়ো হলো। সবার মুখে মুখে শিউলি ও মিন্টুর কুকীর্তিটা ফাঁস হয়ে গেল। 
রমনা শিউলিকে বাড়ি ফিরে আসতে অনুরোধ করল; শিউলি মায়ের সব অনুরোধ নাকচ করে দিয়ে মিন্টুকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল। এ দৃশ্য দেখে রমনার দুচোখ বেয়ে দরদর করে জল গড়িয়ে পড়ল।


পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা সমাধান চাই।
সবশেষে অতি শিগগিরই শিউলি ও মিন্টুর বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। হঠাৎ করে মিন্টুর ছোট ভাই পলাশ দৌড়াতে দৌড়াতে একখানা পঞ্জিকা নিয়ে রমনার হাতে ধরিয়ে দিল। মুহূর্তেই চারপাশের নিস্তব্ধতা ভেঙে উঠোন ভর্তি মানুষ ফ্যালফ্যাল করে রমনার দিকে তাকিয়ে রইল।

সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪০ পিএম
আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪০ পিএম
সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

 

জন্মান্তর পেরিয়ে
নকুল শর্ম্মা

জন্মান্তর পেরিয়ে বারবার আমি আসব-
রাতের নীরব অবসানে যেভাবে দিন আসে,
নীরবতার দোর ভেঙে আমি তোমার কাছেই আসব। 
রামধনুর পথ বেয়ে তোমার ছবি আঁকব
গ্রহ-নক্ষত্রের নিয়মের বিপরীতে হবে আমার অবস্থান, 
নীল আকাশে সাদা মেঘ হয়ে আমি আসব।
খোলা প্রান্তরে মকমলে কোমল ঘাস মাড়িয়ে
দু’হাতে জড়িয়ে ধরব তোমাকে,
বাতাসে তোমার গায়ের মিষ্টি গন্ধ ছড়াবে,
আমি বুক ভরে নেব তৃপ্তির নিঃশ্বাস। 
নিঃশব্দে হাত বুলিয়ে দেব তোমার কালো চুলে
মেঘের জানালায় তোমাকে খুঁজে নেব,
ভালোবাসার বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বলব-
ভালোবাসি, ভালোবাসি অনন্ত রথের 
তুমিই আমার একমাত্র সারথি। 
গত জনমের অভিশাপ মুছে ফেলে আমরা হব
ছুটে চলা উন্মত্ত নদী-
ঢেউয়ের মিলন স্রোতে বয়ে যাব অজানার পানে
যেখানে নীল সমুদ্র মন্থনে উঠে আসে অমৃত বারি।

সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৮ এএম
আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
সাহিত্যসভার মুক্ত কবিতা
অলংকরণ: মেহেদী হাসান

 

সুদিন
হাফিজুর রহমান

তুমি এসো
আমার জন্যেই আসবে, 
আসতেই হবে একসময়- একদিন;
না-হলেও ভালোবেসে!
আশাহত, হতে দিও না আমাকে।

ছোট হতে দিও না
হতে দিও না কখনো অপমান,
বাঁচতে দিও সম্মানটুকুই নিয়ে-
মানুষ হিসেবে ধরে রাখতে মর্যাদা;
উপভোগ করাতে এ জীবনটাকে।