ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

বাতাসে দোলে শুভ্র কাশের গুচ্ছ

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
বাতাসে দোলে শুভ্র কাশের গুচ্ছ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলির ছয়বাড়িয়ার মডেল মসজিদের চারপাশে ফুটেছে কাশফুল। ছবি: খবরের কাগজ

গুচ্ছ গুচ্ছ ফুটেছে কাশফুল। দোলে হাওয়া-বাতাসে। আর গাঢ় নীল আকাশে থেকে থেকে উড়ে যায় সাদা মেঘ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলির ছয়বাড়িয়ার মডেল মসজিদ ও জেলা প্রশাসক প্রকল্প এলাকায় যদি বেড়াতে যান, দেখবেন এমন দৃশ্য। সেখানে ঋতুর রানি শরৎকাল সেজেছে কী অপরূপ সাজে। 

কারুকার্যময় মসজিদটির চারপাশে অনেকটা খোলা জায়গা। সেখানে ফুটেছে ধবধবে সাদা কাশফুল। এরপর ধানের খেত, সবুজ ধানগাছ। আরও দূরে গাছগাছালি ছাওয়া ঘরবাড়ি। আর নগরকাননে ফুটেছে শিউলি ফুল। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়বাড়িয়াতে দিনের শুরু কিংবা শেষ বিকেলের মৃদু হাওয়ায় দোলে কাশফুল। যারা নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন, তারা নিত্য উপভোগ করেন প্রকৃতির এই সৌন্দর্য। আসেন আরও অনেকে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও আসেন দলবেঁধে। শিশুসন্তানদের নিয়ে আসেন অনেকে মা-বাবা। শিশুরা কখনো বাবার হাত ধরে ঘুরে বেড়ায়। আবার কখনো তার ভাই কিংবা বোনের সঙ্গে দুষ্টুমিতে মেতে ওঠে। লুকোচুরি খেলে। অথবা কাশফুলের নরম ছোঁয়া নেয়। এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন অনেকে।

সামিয়া জাহান নামের এক কলেজছাত্রী এসেছেন কাশবনে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ঘুরে বেড়ানোর তেমন জায়গা নেই। প্রতিবছর শরৎকালে এই এলাকায় কাশফুল ফোটে। তাই বিকেল বেলা এখানে ঘুরতে আসেন। কখনো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আসেন। কখনো বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসেন। এখানে শেষ বিকেলটা কাটাতে তার বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে কাশফুলের ওপর দিয়ে যখন বাতাস বয়ে যায়, তখন কেমন ঢেউ খেলে। এই দৃশ্য দেখতে তার খুব ভালো লাগে। তা ছাড়া এখানে কোনো কোলাহল নেই। কোনো ব্যস্ততা নেই। এমনিতে মন ভালো হয়ে যায়।

 

শাহিদুল আলম নামের একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের দেশের শরৎকালের তুলনা নেই। এ সময় খুব একটা বৃষ্টি হয় না। আকাশে মেঘ ভেসে বেড়ায়। চরে কিংবা নদীর কিনারে দেখবেন কাশফুল ফুটে আছে। এই ফুলের সুবাস নেই বটে! কিন্তু এর অন্যরকম আকর্ষণ আছে। দেখতে দুধের মতো সাদা। আর ছুঁয়ে দেখবেন কী যে কোমল! তিনি আরও বলেন, ‘এই মডেল মসজিদ এলাকায় অনেকটা জায়গাজুড়ে কাশফুল ফুটেছে। তাই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে এসেছি। ছবি তুলছি। খুব ভালো লাগছে। বিশেষ করে বাচ্চারা খুব মজা পায়। এতে আমরাও খুব খুশি।’

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়বাড়িয়ার এই কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা মানুষ মাঝেমধ্যে বখাটেদের উপদ্রবের শিকার হন। গত বছর এখানে এক নারীকে লাঞ্ছিত করেছিল বখাটেরা। এবারও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। 

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযুষ কান্তি আচার্য বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বসাধারণের সময় কাটানোর মতো তেমন জায়গা নেই। এ কারণে প্রতিবছর এখানে শরৎকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেকে বেড়াতে আসেন। কিছুসংখ্যক বখাটে এখানে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে বলে আমরা জেনেছি। ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটছে।’

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে পুলিশের টহল না থাকায় দুর্বৃত্তরা সুযোগ নেবে। এ ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। বছরের মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিন এই এলাকায় কাশফুল দেখতে মানুষের ভিড় জমে। স্থানীয় বাসিন্দারা যদি একটু নজর রাখেন, তাহলে এখানে দুর্বৃত্তরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবে না। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার খবর তার কানেও এসেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুলিশের লোকবল কম। তা ছাড়া পুলিশের যানবাহন নেই বললেই চলে। তাই কাশফুলের এলাকায় পুলিশের টহল দেওয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।

সংসদ সমুখে সাদা পাকুড়

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১০ পিএম
সংসদ সমুখে সাদা পাকুড়
সাদা পাকুড়ের পাতা ও ফল। ছবি: লেখক

জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পাশে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় প্রায়ই গাছটিকে দেখি। কখনো তাকে মনে হয় বট, কখনো পাকুড়। খামারবাড়ি মোড় থেকে আড়ং মোড় পর্যন্ত যাওয়ার সময় প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে সেই গাছটি। অনেক বছর আগে গাছটি যখন ছোট ছিল, তখন তার গোড়ায় একটা শ্বেতপাথরের নামফলক ছিল। তাতে গাছটির পরিচয় লেখা ছিল ‘অচিন বৃক্ষ’। ২০২২ সালের মার্চেও সে ফলকের কিছুটা দেখেছিলাম। কুড়িগ্রামের জনৈক সংসদ সদস্যের নাম লেখা ছিল তাতে রোপণকারী হিসেবে। কালের গর্ভে গাছটির ছাল-বাকলে ঢেকে সে ফলক হারিয়ে গেছে। সেটাই তো প্রকৃতির নিয়ম, ভালো কোনো কাজই টিকে থাকে, কাজটি কে করেছিলেন সেটি বড় কথা না। প্রায় ২০ বছর ধরে গাছটিকে দেখছি, একটু একটু করে বড় হতে হতে গাছটি এখন এক সুন্দর ছাতার মতো গড়নে রূপ নিয়েছে। গোড়ায় লাল মসৃণ ইটে বাঁধানো বেদি, তাতে সে গাছের ছায়ায় বসে গল্প করা যায়। কিন্তু সে গল্পে হয়তো গাছটির কোনো কথা থাকে না। গাছটি আগতদের কাছে অচিন বৃক্ষই থেকে যায়। অবশেষে বাংলাদেশ নেচার স্টাডি সোসাইটির নিসর্গপ্রেমী কাওসার মোস্তফা ভাই গাছটির পরিচয় উদ্ধার করলেন, জানালেন ওটা সাদা পাকুড়। কয়েক দফায় গাছটির বিভিন্ন চেহারার ছবি ল্যাপটপে খুঁজতে শুরু করলাম। ফলগুলোর রং সাদাটে বলেই হয়তো এর নাম হয়েছে সাদা পাকুড়। 

সাদা পাকুড়ের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম (Ficus virens) ও গোত্র মোরেসি। বট বা পাকুড়ের মতো সাদা পাকুড়গাছ বিশাল হয় না, মাঝারি আকারের বৃক্ষ। গাছ ১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, তবে এ দেশে সাধারণত এত বড় সাদা পাকুড়গাছ চোখে পড়ে না। শীতকাল এলে সব পাতা ঝরে ঝাঁকড়া ডালপালা নিয়ে উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু বসন্ত এলেই আবার সেসব গাছ নতুন পাতার পোশাক পরতে শুরু করে। একে কেউ কেউ বলে ‘স্ট্রেঙ্গলার ট্রি’, যার অর্থ ‘গলা টিপে ধরা গাছ’। কেননা এ গাছে ফল হলেও সে ফলের বীজ গজায় অন্য গাছের ওপর। আর যে গাছের ওপর এর চারা জন্মায়, সে গাছকে আশ্রয় করে চারা বড় হতে থাকে। অন্য গাছের ওপর জন্মালেও সাদা পাকুড়েরও তো সাধ হয় মাটি ছুঁতে। তাই সে শিকড় মাটির দিকে নামাতে থাকে। শিকড় নামানোর সময়ই তার দুষ্টুমিটা শুরু হয়। শিকড়কে এমনভাবে ছাড়তে থাকে যে সে আশ্রয়দাতা গাছকে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জালের মতো পেঁচিয়ে ধরে, একবারে গলায় দড়ি দেওয়ার মতো করে। আর তাতে আশ্রয়দাতা গাছটি সেসব শিকড়ের বাঁধনে আটকা পড়ে, কয়েক বছর সেই যন্ত্রণা সহ্য করে আশ্রয়দাতা গাছটি বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে। শেষে একদিন মরে যায়। ততদিনে সেই পাকুড়গাছ হয়ে যায় মহাবনস্পতি। পাকুড়ের চেয়ে অশ্বত্থের এ স্বভাব দেখা যায় আরও প্রকটভাবে। তাই এসব গাছকে বলা হয় স্ট্রেঙ্গলার ট্রি। রূপগঞ্জের জিন্দা পার্কে অবশ্য দুটি তালগাছকে জড়িয়ে-পেঁচিয়ে ধরা অশ্বত্থের সেই মহারূপটি রূপান্তরিত হয়েছে এক অনন্য তরু-স্থাপত্যে। 

সাদা পাকুড়ের পাতা সবুজ, উপবৃত্তাকার, অগ্রভাগ সুঁচাল, পাতা পুরু। কচি পাতার রং লালচে-গোলাপি। ফল বটের চেয়ে ছোট, আকার আধা থেকে দেড় সেন্টিমিটার। অনেকটা বড় কাবুলি বুটের দানার মতো। ডালের আগায় ডালের গা ধরে ডুমুরের মতো ফলগুলো ধরে। ফলও ডুমুরের মতো খাওয়া যায়।

সারা বিশ্বে বটজাতীয় প্রায় সাড়ে ৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। বট, অশ্বত্থের সঙ্গে পাকুড়ও ওদের স্বগোত্রীয় বৃক্ষ। মহুয়া, সফেদা, রাবার, বট, অশ্বত্থ ও পাকুড়কে বলা হয় ক্ষীরী বৃক্ষ। কেননা, এসব গাছের ডাল ও পাতা ভাঙলে সাদা দুধের মতো ঘন আঠা বের হয়, যাকে বোটানির ভাষায় বলা হয় তরুক্ষীর বা ল্যাটেক্স। এ দেশে উদ্ভিদবিষয়ক বইগুলোতে পাকুড়ের বেশ কয়েকটি প্রজাতির নাম পাওয়া যায়, যেমন- ফিকাস লেকর, ফিকাস বেঞ্জামিনা, ফিকাস ভাইরেন্স, ফিকাস কোমসা ইত্যাদি। জানা নেই, কোন পাকুড়গাছকে দেখে কবি বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন: ‘চৈত্র মাসে তাদের নীচে কত যে শুকনো পাতা ঝরে পড়তো, হাওয়ায় সেগুলো ঘুরে ঘুরে পাড়াময় যেতো ছড়িয়ে। বৈশাখে তাদের নতুন রূপ, জটে বাঁধা প্রচণ্ড ঝুনো শরীরে কচিপাতা ঠিক যেন মানাতো না।’ বট আমাদের দেশের গাছ হলেও সাদা পাকুড়ের আদি নিবাস শুধু বাংলাদেশ না। আসাম, আন্দামান, বোর্নিও, কম্বোডিয়া, চীন, পূর্ব হিমালয়, জাভা, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি অনেক দেশেই সাদা পাকুড়গাছ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণেও আছে সাদা পাকুড়গাছ। 

পরিযায়ী পাখি খয়রা কাস্তেচরার বাসার সন্ধান

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০২ এএম
খয়রা কাস্তেচরার বাসার সন্ধান
একটি বাঁশঝাড়ে খয়রা কাস্তেচরা পাখির বিচরণ। সম্প্রতি জয়পুরহাটের গৌরীপাড়া এলাকায়। ছবি: খবরের কাগজ

জয়পুরহাট শহর থেকে প্রায় সোয়া কিলোমিটার দূরে গৌরীপাড়া এলাকা। সেখানে একটি বাঁশঝাড়ে এক ঝাঁক পরিযায়ী পাখি বাসা বেঁধেছে। পাখিগুলো দেখতে অনেকটা বকের মতো। কিন্তু এরা বক নয়। এরা হলো খয়রা কাস্তেচরা পাখি। এদের ঠোঁট কাস্তের মতো বাঁকা। তাই এদের বলা হয় কাস্তেচরা।

সাধারণত শীতকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিল ও হাওরে এসব পাখির উপস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু দেশে এই প্রথম এদের বাসার সন্ধান মিলল। বাসাগুলোতে ডিম ফুটে ছানা বেরিয়েছে। এই কলোনিতে ৫০টির মতো খয়রা কাস্তেচরা পাখি আছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাখিগুলো গৌরীপাড়ার একটি বাঁশঝাড়ে প্রায় সাত বছর ধরে বসবাস করছে। তারা এর নাম জানতেন না। পরে একজন পাখি বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনেছেন এরা খয়রা কস্তেচরা পাখি। 

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ‘পাখিগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমাদের গ্রামের বাঁশঝাড়ে দেখছি। গ্রামের মানুষ পাখিগুলোকে ভালোবাসে। কেউ পাখিগুলোকে উপদ্রব করে না।’ 

মানিক নামের একজন বলেন, ‘পাখিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। এরা দিনের বেলায় খাবার সংগ্রহের জন্য দূরে কোথাও উড়ে যায়। আবার সন্ধ্যার আগে ফিরে আসে। পাখিগুলোর কিচিরমিচির আমাদের খুব ভালো লাগে।’

একই এলাকার রানা নামে একজন বলেন, ‘পাখির প্রজনন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে দেখভালের পাশাপাশি এদের রক্ষায় সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।’ 

এই পাখি কলোনির প্রথম সন্ধান পান আক্কেলপুরের বাসিন্দা বন অধিদপ্তরের পাখি বিশারদ শিবলি সাদিক সাদমান। তিনি বলেন, ‘বিরল পাখি আবিষ্কার নেশায় আমি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়াই। সেই নেশা থেকে ঘুরতে ঘুরতে জয়পুরহাটের গৌরীপাড়ায় এসে খয়রা কাস্তেচরা পাখির সন্ধান পাই। এর আগেও পাখিটি দেখেছি। কিন্তু বাচ্চা তোলা এখানেই প্রথম দেখলাম। পরে ছবি তুলে আমার স্যারকে পাঠাই। তখন স্যার আমাকে জানান, এই পাখি বাংলাদেশে এই প্রথম বাসা বেঁধেছে। ডিম থেকে বাচ্চা হয়েছে। এটি অতি দুর্লভ ঘটনা। কলোনিটি সংরক্ষণের জন্য আমরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম মুনিরুল এইচ খান বলেন, ‘সাদমানের কাছ থেকে আমি খবর পেয়ে গৌরীপাড়া পাখি কলোনি দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে ৫০টির মতো খয়রা কাস্তেচরা পাখি রয়েছে। কয়েকটি বাসা করেছে। ছানাও দেখলাম। কয়েকটি ছানা বেশ বড় হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এই পাখি দেখা গেলেও বাসা বানানোর রেকর্ড এটিই প্রথম। বিলুপ্তপ্রায় পাখিটি সংরক্ষণ জরুরি বলে মনে করছি।’

খয়রা কাস্তেচরা পাখির বৈজ্ঞানিক নাম প্লেগাডিস ফ্যালসিনিলাস। এদের স্থায়ী আবাস পশ্চিম ভারতে। শীত মৌসুমে এরা ঝাঁকে ঝাঁকে বাংলাদেশে আসে। মৌসুম শেষে ফিরে যায়। পাখিটির দৈর্ঘ্য সাধারণত ৪৮ থেকে ৬৬ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এদের ডানা ৮০ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ওজন ৪৮৫ থেকে ৯৭০ গ্রাম হয়। এদের মাথায় পালক থাকে এবং সরু ঠোঁট নিচের দিকে বাঁকানো। খাল, বিল, হ্রদ, নদী, খাড়ি ও লবণাক্ত জলাভূমিতে এরা বিচরণ করে। এরা খাল-বিল-পুকুর আর ফসলের মাঠ থেকে পোকামাকড়, শামুক, কাঁকড়া খেয়ে জীবনধারণ করে।

বান্দরবানের ঘুমধুম করাতকলে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৫ এএম
আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
করাতকলে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের একটি করাতকল। খবরের কাগজ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠেছে নামে-বেনামে অবৈধ করাতকল বা স-মিল। অবৈধ এসব করাতকলের দাপটে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র কিংবা লাইসেন্সও নেই বেশির ভাগ করাতকলের।

উপজেলা বন বিভাগের তথ্যমতে, ২৫টি করাতকল রয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়। এর মধ্যে ১৪টির লাইসেন্স থাকলেও ১১টির কোনো লাইসেন্স নেই।

নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা নঈমুল ইসলাম বলেছেন, ‘বন আইন অনুযায়ী কোনো করাতকলমালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। লাইসেন্স নেওয়ার পর প্রতিবছর নবায়ন করতে হবে। করাতকল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স পাওয়ার পর পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেও ছাড়পত্র নিতে হয়।’ কর্তৃপক্ষকে তিনি বিষয়টি অবহিত করেছেন। 

উপজেলার বিভিন্ন করাতকল ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অনেক করাতকল। এসব করাতকল চত্বরে গেলে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মজুত করে রাখা হয়েছে। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব করাতকলে বিরামহীন চলে কাঠ কাটার কাজ।

জানা গেছে, অবৈধ করাতকলগুলোতে সরকার নির্ধারিত কোনো আইন ও নীতিমালা মানার কোনো বালাই নেই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার লাইসেন্স করতে বলা হলেও প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে অবৈধ করাতকল।

সীমান্তঘেঁষা পাহাড় থেকে শুরু করে সমতল ভূমিতে লাগানো সব ধরনের গাছ কেটে সাফ করছে করাতকলের মালিক ও অসাধু ফড়িয়া কাঠ ব্যবসায়ীরা। এতে করে হুমকির মুখে পড়ছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। কমছে অক্সিজেনের ভারসাম্য। এসব কারণে দ্রুত এসব অবৈধ করাতকল বন্ধের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নজরদারির অভাবে করাতকল স্থাপন করে কাঠের ব্যবসা করছে। 

ঘুমধুমে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘করাতকলে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়ি গাছ। আমিও মনে করি অবৈধ ও লাইন্সেসবিহীন করাতকলগুলো বন্ধ করা হোক।’

এ বিষয়ে নাইক্ষংছড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমত জাহান ইতু বলেন, ‘মানুষের জীবন-জীবিকা ও পরিবেশ এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বন, বন্যপ্রাণী ও বনভূমি সংরক্ষণ অপরিহার্য। অবৈধ করাতকলের মালিকদের দ্রুত লাইসেন্স করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স না করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টাঙ্গাইলে নতুন পর্যটন স্পট মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ এএম
আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ পিএম
মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা
টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকায় শাপলা বিল। খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে বিলের শত শত একর জমিতে ফুটে থাকা শাপলা মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। লাল শাপলার ফুল ফুটে তাই খ্যাতি পাচ্ছে লাল শাপলার বিল নামে। রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের সূর্য উঠার আগেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন নানা প্রান্তের মানুষ। তবে বিলে নৌকা না থাকায় দর্শনার্থীদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়।

ফুটে থাকা কাঁশফুল জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষা শেষে শরতের আগমন। তবুও বর্ষার স্নিগ্ধতার রেশ প্রকৃতিতে এখনো রয়েছে। খালে-বিলের থৈ থৈ জলে ফুটে আছে শাপলা। শরতের সকালে হালকা কুয়াশায় সূর্যের কিরণ পড়ে শাপলার সবুজ পাতা আর লাল পাপড়িতে জমে থাকা শিশির মুক্তার মতো চিকমিক করছে। এমন অপূর্ব নান্দনিক ক্ষণের সাক্ষী হতে ছুটে এসেছেন টাঙ্গাইলের সরকারি সা’দত কলেজের লামিয়া ফারজানা ও নাহিদা ইসলাম তন্নি।

লামিয়া ফারজানা বলেন, ‘টাঙ্গাইল শহর থেকে ভোর সকালে বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে শাপলা বিলে এসেছি। এসে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের টাঙ্গাইলেও এত সুন্দর শাপলা বিল আছে, জানতাম না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গার শাপলা ঝিলের ছবি ও ভিডিও দেখি। আমাদের টাঙ্গাইলে যে এত সুন্দর শাপলা বিল আছে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করতাম না।’

নাহিদা ইসলাম তন্নী বলেন, ‘বান্ধবীদের এখানে আসতে দেখেছি। তাই নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না। সকালে ভাইকে নিয়ে ঘুরতে চলে এসেছি। এসে ছবি উঠলাম। খুবই ভালো লাগল। চারিদিকে শুধু লাল শাপলা। এ এক অপরূপ সৌন্দর্য। শাপলা ফুলের মায়ায় মন আটকে গেছে।’

তবে শুধু লাল শাপলাই নয়, এরই মাঝে নান্দনিক হয়ে ধরা দিচ্ছে সাদা শাপলা। সবুজ পাতার ফাঁকে মাথা উঁচু করে ভেসে বেড়াচ্ছে ব্যাঙ, বাতাসে চঞ্চল ফড়িংয়ের উড়াউড়ি। প্রকৃতির এসব সহচরী দর্শনার্থীদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুণ। তাই সদ্য খ্যাতি পাওয়া লাল শাপলার বিলে দিন দিন দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়ছে।

তবে কেবল সৌন্দর্য উপভোগই নয়, এই লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এখান থেকে প্রতিদিন আহরণ করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শালুক। শাপলা আহরণকারী মাজেদা বেগম বলেন, ‘পানি এলে এই শাপলা তুলে বিক্রি করি। কয়েক দিন ভালোই সংসার চালাই। পানি যে কয়েক দিন আছে, ভালো টাকা কামাই করতে পারব।’

আগামী মৌসুমে নৌকাসহ পর্যটন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা গেলে এই শাপলা বিলকে কেন্দ্র করে তৈরি হতে পারে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ, এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

কালো-পা কিডিওয়েকের প্রেম!

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
কালো-পা কিডিওয়েকের প্রেম!
সাগরে কালো-পা কিডিওয়েক। ছবি: লেখক

মেরু সাগরের নীল জল। সাদা ও হালকা ধূসর পালকের একটি পাখি তার ঠোঁট জলে ডুবিয়ে, মাথা নত করে ডেকে ডেকে আরেকটি পাখির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। এই আবেদন নিরন্তর। তারপর দেখলাম ওই ঝাঁকের আরও কিছু পাখি একই ধরনের আচরণ করছে। আর কিছু পাখি চুপচাপ তা দেখছে। একপর্যায়ে একটি পাখি অন্য একটি পাখির আবেদনে সাড়া দিল। এতে দুটি পাখির মেলবন্ধন হয়ে গেল। এরপর ওদের প্রেম পর্বের কিছু অংশ পর্যবেক্ষণের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল উত্তর নরওয়ের নানান বসতিতে ১২ দিনের এক সমুদ্র অভিযাত্রায়। জোড়া বাঁধার পর তাদের অফুরন্ত ডাকাডাকি ও ভালোবাসার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। খুব কাছে গিয়েছি। ওরা উড়ে যায়নি। 

মূলত এই পাখি সাগরের কাছে পর্বতের খাঁজে বাসা বানায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জনবসতির কাছাকাছি বাসা বাঁধার প্রবণতা বেড়েছে। নরওয়ের সুদূর উত্তরের শহরগুলো এবং ট্রমসো শহরের মানুষের কাঠামোতে এ পাখির বাসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার কারণ হিসেবে গবেষকরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত প্রজনন ব্যর্থতা এবং প্রাকৃতিক শিকারিদের অনুপস্থিতির কারণে তাদের ছানাদের বড় করার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ উপহার দেয় উত্তর নরওয়ের উপকূলীয় শহরগুলো। 

প্রতিবছরই বাংলাদেশে নতুন প্রজাতির পাখির দেখা মিলছে। দেশের পরিযায়ী পাখির তালিকায় ২০১৬ সালে যোগ হয়েছিল আর্কটিক মহাসাগর, উত্তর আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার পাখি কালো-পা কিডিওয়েক। প্রসঙ্গত, কিছু পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশে খুবই অনিয়মিত। এমন হতে পারে, এক শ বছরে মাত্র একবার দেখা যেতে পারে কোনো প্রজাতির পাখির। পথভুলে কিংবা সাগর-মহাসাগরে ঝড় হলে সাগরচারী পাখিরা নিরাপদ আবাসের খোঁজে চলে আসে। ঝোড়ো বাতাসের গতিও তাদের দিক পরিবর্তন করে অন্যত্র উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া ঠাণ্ডার প্রকোপে অনেক পাখি উষ্ণ এলাকায় পাড়ি জমায়।

২০১৬ সালে বাংলাদেশে কালো-পা কিডিওয়েক ভোলার নদীর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় প্রথম দেখা যায়। ২০১৬ সালের পর পাখিটি আর দেখা গেছে কি না আমার জানা নেই। তবে সম্প্রতি উত্তর নরওয়ের আর্কটিক মহাসাগর এলাকায় গিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে কালো-পা কিডিওয়েকের দেখা পেয়েছি। মূলত উত্তর নরওয়ের উপকূলবর্তী এলাকার পোতাশ্রয়, নৌবন্দর এবং বন্দর এলাকার জনবসতির কাছাকাছি এদের দেখেছি। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি তখন জোড়া বেঁধে বাসা বানানোর জন্য নৌবন্দরের কাছে এবং মানববসতির কাছে জড়ো হয়েছে। খুব ডাকাডাকি করছে। সাগরে গিয়ে পুরুষ পাখিটি মাছ ধরে নিয়ে এসে মেয়ে পাখিকে দেয়। 

এ পাখির ইংরেজি নাম The black-legged kittiwake (Rissa tridactyla)। এরা গাঙচিল পরিবারের পাখি। এরা বেশির ভাগ সময় সাগরে বসবাস করে এবং সামুদ্রিক এলাকার খোলা পর্বতে বাসা বানায়। এ পাখি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কোরিয়া, জাপান, নরওয়ে, কানাডা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে দেখা যায়। তবে মাঝে মাঝে এরা অন্যান্য গাঙচিলের সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশের উপকূলে চলে আসে। ২০০৫ ও ২০১২ সালে এটি ভারতের কেরালা ও মহারাষ্ট্রের সৈকত এলাকায় এবং আসামের মাজুলি দ্বীপে দেখা গিয়েছিল। 

এ পাখি সাধারণত নিজেদের ঝাঁকে থাকে। তবে কখনো অন্য সামুদ্রিক পাখির সঙ্গে যোগ দেয়। খাবার তালিকায় আছে মাছ, স্কুইড, চিংড়ি, পাখির ডিম, সামুদ্রিক শৈবাল ইত্যাদি। প্রজননকালে এরা উপনিবেশ তৈরি করে বসবাস করে এবং সমুদ্র উপকূলের পর্বতে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। একটি উপনিবেশে এক লাখ কিডিওয়েক পাখি থাকতে পারে। পাখির পালক ও সামুদ্রিক আগাছা দিয়ে উভয় পাখি মিলেমিশে বাসা বানায়। মেয়ে পাখি এক-তিনটি ডিম পাড়ে। পালা করে ডিমে তা দেয়। ২৪-২৮ দিনে ডিম ফেটে ছানা বের হয়ে আসে। ছানা উড়তে শিখে বাসা ছাড়ে প্রায় ৩৪-৫৮ দিনে। প্রজননের পর এরা সাগরে ফিরে যায়। নবাগতরা প্রায় তিন-পাঁচ বছর একটানা সমুদ্রে কাটায়। তারপর ডিম পাড়তে আগের জায়গায় ফিরে আসে। এরা সাধারণত সমুদ্রের যে অংশে ঢেউ ও পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে সেদিকে খাবার খোঁজে। একটি পাখি প্রায় ১৩ বছর বাঁচে। শিকার, ডিম সংগ্রহ ও সমুদ্র তেলদূষণের কারণে এ পাখির সংখ্যা কমে যেতে শুরু করেছে। সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান পর্যবেক্ষণের জন্য কিডিওয়েক একটি নির্দেশক পাখি হিসেবে বিশ্বে ও পরিবেশবিদদের কাছে বিবেচিত।

প্রকৃতিবিষয়ক লেখক ও পরিবেশবিদ, জার্মান অ্যরোস্পেস সেন্টার