ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

গণমাধ্যমের ওপর মানুষ আস্থা হারাননি: জরিপ

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম
গণমাধ্যমের ওপর মানুষ আস্থা হারাননি: জরিপ
অনলাইনে প্রচারিত সংবাদের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেশি

খবরের বাহন হিসাবে মোবাইল ফোনে (অনলাইন) প্রচারিত সংবাদের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেশি। গণমাধ্যমের ওপর মানুষ আস্থা হারাননি, তবে রাজনৈতিক, সরকারি ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তারা।

জুলাই আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের মনোভাব জানার জন্য সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের জন্য জরিপটি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। গণমাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক এ ধরনের জরিপ দেশে এটিই প্রথম।

এতে দেখা গেছে, মানুষ মুদ্রিত খবরের কাগজ কম পড়লেও অনলাইন সংস্করণ পড়ছেন মোবাইলে। জাতীয় দুর্যোগ বা সংকটে তথ্য খোঁজার জন্য এখনো মানুষ চোখ রাখেন টেলিভিশনের পর্দায়। তবে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে রেডিওর প্রাসঙ্গিকতা তলানিতে। জরিপে গণমাধ্যমকে স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে। তবে বেশির ভাগ উত্তরদাতাই মনে করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। 

গণমাধ্যমবিষয়ক জাতীয় এ জনমত জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৩ শতাংশ জানিয়েছেন তারা মুদ্রিত সংবাদপত্র পড়েন না। কারণ হিসেবে ৪৬ ভাগ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, পত্রিকা পড়া প্রয়োজন মনে করেন না তারা। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে এ হার ৫৩ শতাংশের বেশি। তবে জরিপে অংশ নেওয়া ৬৫ ভাগ মানুষ জানিয়েছেন তারা টেলিভিশন দেখেন। 

পরিসংখ্যানে রেডিওর অবস্থা বেশি নাজুক। ৯৪ শতাংশ জানিয়েছেন তারা রেডিও শোনেন না। তাদের ৫৪ শতাংশ বলেছেন তারা রেডিও শোনার প্রয়োজন মনে করেন না। প্রায় ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রেডিও সেটের অপ্রাপ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন। 

এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় ৪৫ হাজার খানা (হাউজহোল্ড) থেকে ১০ বছরের বেশি বয়সের সদস্য থেকে উত্তর সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গণমাধ্যমের বিস্তার, মানুষের সংবাদ গ্রহণের অভ্যাসের পরিবর্তন, গণমাধ্যমের ওপর মানুষের আস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। 

এতে দেখা গেছে, মুদ্রিত পত্রিকা না পড়লেও ৫৯ শতাংশ উত্তরদাতা মোবাইল ফোনে অনলাইন সংস্করণ দেখেন। কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা ট্যাব-এ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ দেখেন বলে জানিয়েছেন আড়াই শতাংশ উত্তরদাতা। 

সামগ্রিকভাবে ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানান, তারা গণমাধ্যমের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহারের হার ৭ শতাংশ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে খবরের জন্য ৩১ শতাংশ উত্তরদাতার আস্থা রয়েছে ফেসবুকে। এরপর ইউটিউবে- আস্থা ১৬.৫ শতাংশের। তবে কোনো কিছু শেখা বা জ্ঞানার্জনের জন্য প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়ে শিক্ষকের ওপরই ভরসা বেশি। এক্ষেত্রে ৪২ শতাংশ উত্তরদাতার কাছে শিক্ষকরাই সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য।

দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ ডিইউজের

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
দৈনিক যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ ডিইউজের
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের লোগো

দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।

বুধবার (১২ মার্চ) ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিলের মধ্যদিয়ে গণমাধ্যমের দুশমন বিগত ফ্যাসিস্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

তারা বলেন, ডিইউজে সবসময় সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তাই সংবাদপত্রবিরোধী বা এর প্রকাশনা বন্ধের মতো কোনো নিষ্ঠুর তৎপরতাকে ইউনিয়ন বরদাশত করে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার প্রধানসহ উপদেষ্টারা একদিকে বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পত্রিকা বন্ধ বা গণমাধ্যমের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করবে না। অন্যদিকে বিশেষ মহলকে সন্তুষ্ট করার জন্য ন্যক্কারজনকভাবে পবিত্র রমজান মাসে ঈদের পূর্ব মুহূর্তে যায়যায়দিন পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করে কয়েকশ সাংবাদিক-কর্মচারীর জীবন জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকারের এহেন অমানবিক কর্মকাণ্ড ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকেও হার মানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যায়যায়দিন পত্রিকার প্রধান কার্যালয় বেদখল হওয়ার পর জেলা প্রশাসন কার্যালয়কে অবহিত করে প্রেস পরিবর্তন করা হয় এবং যথারীতি পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখা হয়। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করার মতো চরম দৃষ্টতা দেখিয়েছে। 

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন অবিলম্বে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

মাহফুজ/

সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ জরুরি: কাদের গনি চৌধুরী
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হলেও, এটি এখন বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনি ও ক্ষমতামূখী সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বড্ড অন্তরায় সৃষ্টি করছে। সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই। এই যখন অবস্থা, তখন সাংবাদিকদের একটি অংশ সেলফ সেন্সরশিপে চলে গিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, সাংবাদিকতা কি অপরাধ? জনস্বার্থে তথ্য অনুসন্ধান এবং তা প্রকাশ করতে গিয়ে কেন সাংবাদিকেরা ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন?’

শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। 

সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদ সদস্য মির্জা সেলিম রেজা, বগুড়া প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক ওয়াসিকুর রহমান বেচাল, সদস্য সচিব সবুর শাহ লোটাস, আবদুল ওয়াদুদ, মমিনুর রশিদ শাইন, আবদুর রহিম, সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, মতিউল ইসলাম সাদি, মাহফুজ মন্ডল মোস্তফা মোগল। 

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সামনে যে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এ পেশার স্বাধীনতা।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে সত্য তুলে ধরা যায় না। আর সত্য লিখা না গেলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকলে পাঠক বা দর্শক প্রত্যাখ্যান করে।

কাদের গনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের বিবেকের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। অপসাংবাদিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা ,তথ্য সন্ত্রাস পরিহার করে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে। সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা। আজকের তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ভুয়া খবর বা প্রোপাগান্ডা খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই প্রকৃত সাংবাদিকতা এবং ভুয়া সংবাদ বিভ্রান্তিতে পড়েন। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে অনেক সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা অনেক সময় নিজেদের কাজের যথার্থতা প্রমাণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। গুজব, মিথ্যা আর চেক অ্যান্ড ব্যালান্স ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য সমাজ তথা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে। তাই সাংবাদিকদের আরও সচেতন হতে হবে।

বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তির কারণে ভয়ভীতি মাথায় রেখে সাংবাদিকদের কাজ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাজনের কারণে সাংবাদিকরা এই ভয়-ভীতি থেকে নিজেদের বের করতে পারেন না। আগে ইউনিয়ন যখন একটা ছিল। চাকরি গেলে বা কোনো চাপের মুখে পড়লে বা প্রতিষ্ঠান পাওনা না দিলে, মালিকদের সঙ্গে দেন দরবারের জন্য, বা অধিকার নিশ্চিত করতে গেলে তার পাশে নেতারা আছেন, এই ভরসাটুকু পেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হয়ে যেতো। এখন অনৈক্যের কারণে ইউনিয়ন সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই সংকট উত্তরণের জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ‘আমরা-ওরা’, এসব বিভাজন আগের সাংবাদিকতায় ছিল না। ইদানিং এটা বড্ড বেড়ে গেছে। এক বলয়ের সাংবাদিকরা অন্য বলয়ের সঙ্গে এক টেবিলে বসেও না। ইদানীং সাংবাদিকদের প্রথমেই একটি জার্সি গায়ে দিতে হয়। অর্থাৎ তুমি সরকারি দলের কিংবা বিরোধী দলের এ রকম কিছু একটা হতে হবে। খুব কম সাংবাদিকই আজকে সাহস করে বলতে পারছেন- ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক নই, আমার গায়ে কোনো জার্সি নেই, আমি কেবল দেশের সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি’। আগেও সাংবাদিকরা রাজনৈতিক মতাদর্শ লালন করতেন, কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে থাকতেন পুরো নিরপেক্ষ। এখন সাংবাদিকদের কেউ কেউ দলদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ।

তিনি বলেন, নিজেদের কারণে অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা মর্যাদা হারাচ্ছেন। যখন কোনো একজন ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, তিনি তখন সে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। কিন্তু যখন কোনো সাংবাদিক কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে মিডিয়ার প্রতিনিধি। আমরা যেন সাংবাদিক থাকি, কর্মচারী হয়ে না যাই। আগে সাংবাদিকরা কাউকে স্যার বলতো না, তোষামোদী করতো না। এখন এই তোষামোদী বেড়ে গেছে। মালিক পক্ষ ও সম্পাদকদের স্যার বলতে বলতে এখন ফেনা তুলে ফেলেন সাংবাদিকরা। অর্থাৎ আমরা মিডিয়া প্রতিনিধি না থেকে কর্মচারী হয়ে যাচ্ছি। সাংবাদিকের কাজ সত্যকে খুঁজে বের করা এবং সে সত্যকে রক্ষা করা। সত্য না থাকলে আস্থা থাকে না; আর আস্থার অভাব হলে গণতন্ত্র থাকে না। ক্ষমতাশালীদের  অপকর্মগুলো সাংবাদিকরা তুলে না ধরলে এসব অপকর্মের লাগাম টানার কাজটি করবেন কী করে। তাহলে তো অপকর্ম বাড়তেই থাকবে। সমাজ ভেঙ্গে পড়বে।

সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা সম্পর্কে কাদের গণি বলেন, এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সাংবাদিকরা দমে যেতে পারেন না। সাংবাদিকদের মোটা বেতন নেই, ঈদ-পূজোয় বোনাসের নিশ্চয়তা নেই, অবসরের পর নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের মতো পেনশন নেই, ক্যালেন্ডারে লাল কালি দিয়ে দাগিয়ে দেওয়া ছুটি তো নেই-ই। কয়েকটা দিন ছুটি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে একটু ঘুরে বেড়ানোরও কোনো সুযোগ নেই। উৎসবের দিনেও সংবাদ সংগ্রহে কিংবা প্রচার-প্রকাশে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও নিরলসভাবে কাজ করে যান সাংবাদিকরা।

তিনি বলেন, ইতিহাসের ছত্রে ছত্রে যেখানেই রাষ্ট্রের দমন-পীড়ন কিংবা অত্যাচার হয়েছে, সেখানেই চিন্তাশীল মানুষদের প্রতিরোধ এসেছে। সাংবাদিকরা এ চিন্তাশীলদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন সমাজের বুকে। তাই তাদের কাজে থাকে সুন্দর আর সত্য সৃষ্টির গভীর উন্মাদনা। পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন কিছু জানার, জানাবার, নতুন কিছু শেখার এবং অন্য কিছু করার ভীষণ রকম তাগিদও আছে সাংবাদিকতায়। সে তাগিদেই সব ঝুঁকি, সব কষ্ট এড়িয়ে দুঃসাহস দেখাতে পারেন সাংবাদিকরা। সত্য অনুসন্ধানে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের অদম্য মানসিকতার সব চাহিদা। এজন্য সাংবাদিকদের বলা হয়, সমাজের ওয়াচডগ।

মাহফুজ

সাংবাদিক মোস্তফা সরদারের জীবনাবসান

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৪ এএম
সাংবাদিক মোস্তফা সরদারের জীবনাবসান
সাংবাদিক মোস্তফা সরদার। ছবি: খবরের কাগজ

বরিশালের বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এ টি এম মোস্তফা সরদার (৬৩) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি তার স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মোস্তফা সরদারের ছোট ভাই ও সাবেক কাউন্সিলর মো. জাহিদ হোসেন সরদার জানান, মোস্তফা সরদার উচ্চ রক্তচাপ অনুভব করায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার  দুপুরে তিনি মারা যান।

মোস্তফা সরদার নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের বানারীপাড়া উপজেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার বানারীপাড়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। মোস্তফা সরদার বানারীপাড়া উপজেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন মেয়াদে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নতুনমুখ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খেলাঘর আসরের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা প্রণয়ন

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা প্রণয়ন
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যুর বিদ্যমান নীতিমালা যুগোপযোগী করে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

এ নীতিমালা ‘প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা, ২০২৫’ নামে অভিহিত হবে। এ নীতিমালা সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ বা প্রচারের কাজে নিয়োজিত দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে (আজ থেকে) কার্যকর হবে। 

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রদানের নিয়মাবলিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকদের অনুকূলে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু, নবায়নের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রদানে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও সিলসহ নাম ও পদবি উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে প্রধান তথ্য অফিসার বরাবর আবেদন পাঠাতে হবে। 

প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রাপ্তির জন্য তথ্য অধিদপ্তর নির্ধারিত আবেদন ফরমের সংশ্লিষ্ট স্থানে এতদুদ্দেশ্যে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত কর্মকর্তার সুপারিশকৃত হতে হবে। গণমাধ্যম এতদুদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ সুপারিশ করলে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের আবেদন বিবেচনা করা হবে না। আবেদন করার সময় আবেদনকারীকে ন্যূনতম পাঁচ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি মিডিয়ায় প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রথম প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে তথ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত আবেদন ফরমে সুপারিশের স্থানে আবেদনকারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন থাকতে হবে। এ ছাড়া নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অফিশিয়াল প্রত্যয়ন/নিয়োগপত্র নিয়োগকারীর অফিশিয়াল ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। এ ধরনের কার্ড নবায়নের ক্ষেত্রেও কার্ড ইস্যুর অনুরূপ শর্তাবলি পূরণ করতে হবে। অন্যথায় কার্ড নবায়ন করা হবে না। অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কমিটি প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু, নবায়ন অথবা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যেকোনো সময় আবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যেকোনো তথ্য চাইতে পারবে। অ্যাক্রিডিটেশন কমিটি প্রয়োজন মনে করলে নিরাপত্তা প্রশ্নে পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে পারবে। প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড হারিয়ে গেলে নিকটবর্তী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে এবং এর অনুলিপি সংযুক্ত করে পুনরায় কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পুনরায় কার্ড ইস্যুর বিষয়টি প্রধান তথ্য অফিসার বিবেচনা করবেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার এক মাসের মধ্যে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড আবশ্যিকভাবে তথ্য অধিদপ্তরে জমা দিতে হবে। সময়ের ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট কার্ডধারীর অনুকূলে কোনো প্রকার প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু বা নবায়ন করা হবে না। সূত্র: বাসস

সাংবাদিক মোস্তফা কাজল আর নেই

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম
সাংবাদিক মোস্তফা কাজল আর নেই
মোস্তফা কাজল

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কাজল আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন।

বাদ আসর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে মোস্তফা কাজলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ মাগরিব মরহুমের কর্মস্থল বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাদ এশা মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তৃতীয় দফা জানাজা শেষে সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।

সাংবাদিক মোস্তফা কাজল ২০১৪ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) আপ্যায়ন সম্পাদক ও ২০২০-২১ সালে বিটভিত্তিক সংগঠন ‘রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক)’-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) স্থায়ী সদস্য ছিলেন। 

১৯৯৬ সালে আজকের কাগজ পত্রিকা দিয়ে মোস্তফা কাজলের সাংবাদিকতা শুরু। পরে দৈনিক মানবজমিন ও দৈনিক ভোরের ডাকে কাজ করেন। 

মোস্তফা কাজলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এ ছাড়া ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ, র‌্যাকের সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক ক্র্যাবের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।