মোবাইল ইন্টারনেটের পর এবার ধীর গতিতে পাওয়া যাচ্ছে দেশের ব্রডব্যান্ড ইটারনেট সেবাও। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৫টার পর থেকে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারে ধীরগতির এ অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাহকপর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপিএবি) এর সভাপতি ইমদাদুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারের পাশে দূযোর্গ ব্যবস্থাপনার ভবনে আগুন লাগায় আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা আমেদের কিছু কেবল পুড়ে গেছে। এর ফলে আমরা ৪০ শতাংশ ডাটা পাচ্ছি না। এ কারণে আমাদেরকে ৬০ শতাংশ ডাটা দিয়ে সার্ভিস দিতে হচ্ছে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যায় পড়ার অভিযোগ করেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এরপর গত বুধবার মধ্যরাত থেকে ফোরজি কাভারেজ সীমিত করায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কার্যত বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল ইন্টারনেট। অনেকে অভিযোগ করেন, তারা ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে প্রবেশ করতে পারছেন না। দীর্ঘচেষ্টায় প্রবেশ করতে পারলেও কোনো বার্তা, ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা যাচ্ছিলো না বলেও অভিযোগ ওঠে। সে সময় বেশ কয়েকটি মোবাইল অপারেটরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন সরকারি নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এ বিষয়ে (কোটা আন্দোলন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে গুজব, মিথ্যা, অপপ্রচার করাটাকে অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে একটি গোষ্ঠী। তাই জাতীয় ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পলক বলেন, ‘শুধু দেশের ভেতর নয়, বাইরে থেকেই কিছু কনটেন্ট পোস্ট করা হচ্ছে। তার মানে টাকা দিয়ে মিথ্যা তথ্যটা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে অপকৌশল বা ষড়যন্ত্র, এটা আমরা যখন দেখছি তথ্য–উপাত্ত, গোয়েন্দা সংস্থার সব বিশ্লেষণ, তখন আমরা মনে করেছি, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের যার যতটুকু করার সক্ষমতা আছে, সেটা করা দরকার। যেমন পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা রক্ষার চেষ্টা করছে, তেমনি আমরা সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইবার প্ল্যাটফর্মে চেষ্টা করছি, জাতীয় নিরাপত্তা ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই।’
‘ইন্টারনেটে গতি কমিয়ে দেওয়া হবে’ এমন ঘোষণা আগে ছিল কী না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তার স্বার্থে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রয়োজনে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতার স্বার্থে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। যত দ্রুত পরিবেশটা নিয়ন্ত্রণে আসবে, আইনশৃঙ্খলা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, আমরা এই আশঙ্কা থেকে মুক্ত হতে পারব।
তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, কোথা থেকে কারা এই অর্থায়ন করছে, কোথা থেকে কারা এই কনটেন্ট তৈরি করছে, তার জন্য আমরা ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থা জোরদার করছি। আমরা আশা করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নয়ন আমরা ঘটাতে পারব।’
তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটার কারণে সাময়িক যে ক্ষতি ও অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সেটা মেনে নিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিথি/এমএ/