ঢাকা ৭ ভাদ্র ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪

অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন : ড. কামাল উদ্দিন

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ পিএম
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন : ড. কামাল উদ্দিন
ছবি : সংগৃহীত

অনগ্রসর, অবহেলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভূমি ও বাসস্থানের অধিকার নিশ্চিতপূর্বক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। 

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সভাকক্ষে ‘জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অনগ্রসর অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত কমিটি এবং দলিত, হিজড়া ও অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত থিমেটিক কমিটি’র সভায় তিনি একথা বলেন। 

ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিশেষ করে, দলিত জাতিগোষ্ঠীর ভূমি, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ও জীবন-জীবিকার বিদ্যমান সমস্যা ও জটিলতা দূর করে টেকসই সমাধানে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া তাদের সব ধরনের রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক সুবিধার অভিগম্যতা দ্রুত নিশ্চিত করাও আমাদের কর্তব্য।’  

তিনি বলেন, ‘কোনো সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন নিশ্চিত না করে উচ্ছেদ করা অধিকার হরণের সামিল। সবার আবাসন নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। মিরনজিল্লা ও সুইপার কলোনিসহ অন্যান্যদের বাসস্থানের অধিকার নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ নিতে হবে। ঝিমাইপুঞ্জিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও ভূমি অধিকার সুরক্ষায় কমিশন উক্ত স্থান পরিদর্শন করেছে এবং বাস্তবসম্মত ও যথার্থ পদক্ষেপ নিয়েছে।’ ক্রমাগত ও বহুমুখী প্রচেষ্টায় তা ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসবে বলেও আশা করেন ড. কামাল উদ্দিন। 

সুবিধাবঞ্চিত হিজড়া ও লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর ধারণা দূর করতে হবে এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থার এবং পাঠ্যবইতে এই জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নির্মাণে সহায়ক হবে।’ 

পাঠ্যবইতে হিজড়াদের বিষয়টি বাদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সামাজিক সম্পর্ক, প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এবং একইসঙ্গে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত বাস্তবতার কারণে এ বিষয়টিকে সরলীকরণের কোনো সুযোগ নেই। আবার এ ধরনের পদক্ষেপ কোনো চূড়ান্ত সমাধান হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে কমিশন মনে করে। আপাতত বিষয়টিকে অবদমিত রাখলেও প্রাকৃতিক কারণেই ভবিষ্যতে তা উদ্ভূত হবে। তাই যৌক্তিক কারণেই কমিশন ওই সুপারিশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে।’  

সভায় কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সম্মানিত সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, কংজরী চৌধুরী, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ড. তানিয়া হক উপস্থিত ছিলেন।  

কমিটির সম্মানিত সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং ও অন্য সম্মানিত সদস্যরা। 

তিথি/সালমান/

বন্যাকবলিত এলাকায় ডাক ও টেলিযোগাযোগের সবার ছুটি বাতিল

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০২:৩৯ পিএম
বন্যাকবলিত এলাকায় ডাক ও টেলিযোগাযোগের সবার ছুটি বাতিল

বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে ফেনী, কুমিল্লা অন্যান্য অঞ্চলের জনগণের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ার মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

তাছাড়া বন্যা প্লাবিত ফেনী, কুমিল্লা ও অন্যান্য অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থাসমূহে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। কন্ট্রোলরুমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এছাড়াও বিটিআরসি, বিটিসিএল ‌ও টেলিটক হতে ইমারর্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে, ২২ আগস্ট সকাল আটটার রিপোর্ট অনুযায়ী বন্যা প্লাবিত ১১টি জেলায় মোট ছয় হাজার ৯৮৬টি সাইটের (টাওয়ার) মধ্যে পাঁচ হাজার ৪৭৬টি সাইট সচল আছে। অচল টাওয়ারের হার ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী এবং খাগড়াছড়ির  টাওয়ার। যার শতকরা হার যথাক্রমে ৪২ দশমিক ৪ এবং ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। অচল টাওয়ারগুলো দ্রুত সচল করার ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।

বন্যাকবলিত এলাকার জনগণের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির সহায়তায় ১০টি ভি-সেটে (V-SAT) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তন্মধ্যে ৫টি ভি-সেট ফেনীর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

মোবাইল টাওয়ার সার্বক্ষণিক চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব মোবাইল অপারেটর এবং টাওয়ার শেয়ারিং কোম্পানিদের বিটিআরসি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অপারেটরদের সঙ্গে বিটিআরসি থেকে ভার্চুয়ালি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়।

টেলিকম অপারেটরদের সাইটগুলো সচল রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং বিতরণের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিটিআরসি সমন্বয় করছে।

টেলিকম অপারেটরদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অটুট রেখে পর্যাপ্ত পাওয়ার ব্যাকআপসহ (ব্যাটারি ব্যাকআপ, ডিজেল জেনারেটর, পোর্টেবল জেনারেটর ইত্যাদি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের সহায়তায় বন্যাকবলিত এলাকার মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য ৫০০ মেগাবাইট ডেটা ফ্রি করা হয়েছে।

অমিয়/

অনির্দিষ্টকালের জন্য কক্সবাজার থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০২:১৩ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
অনির্দিষ্টকালের জন্য কক্সবাজার থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ
কক্সবাজারে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সবাজার জেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের মানুষ জোয়ারের পানি আর পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ক্রমাগত বন্যা পরিস্থিতি অবনতির ফলে বিভিন্ন জায়গায় রেললাইনের ওপর পানি উঠে যাওয়ায় সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আইকনিক রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানী।

তিনি বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের রেলপথে বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। যার কারণে কক্সবাজার থেকে সব ধরণের ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, এই রুটে পর্যটক এক্সপ্রেস, কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও বিশেষ ট্রেন চলাচল করে। সকালের ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ঈদগাঁও, চকরিয়া-পেকুয়া আর রামুতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। নিরাপদ আশ্রয় ছুটছে এসব উপজেলার শতাধিক গ্রামের মানুষ।

রামু উপজেলার গর্জনিয়ার ক্যাজরবিল, ডেঙ্গারচর, পশ্চিমবোমাংখিল, জুমপাড়া, পাতালবরপাড়া, রাজঘাট, জাউচপাড়া, মরিচ্যাচার, জুমছড়ি, পূর্বজুমছড়ি, মইন্যাকাটা, পূর্ববোমাংখিল, বোমাংখিল ও মাঝিরকাটার একাংশের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন গর্জনিয়ার বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী। 

তিনি জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে শুকনাে খাবার দরকার। বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় মানুষজনকে নেওয়া হচ্ছে। 

ঈঁদগাও উপজেলার ইসলামাবাদ, পোকখালী ও ইসলামপুর এলাকার মানুষও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভেসে গেছে মাছের ঘের, গবাদিপশুর খামার। এসব এলাকায় জরুরি সহায়তা চেয়েছেন উপজেলা যুব রেড ক্রিসেন্টের টিম লিডার আজিজুল ইসলাম আরজু।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, সাধারণ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সবার উচিত তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো। আমরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছি।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

বসুন্ধরার চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০১:২৯ পিএম
বসুন্ধরার চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের নাম থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে ও গতকাল বুধবার রাজধানীর বাড্ডা থানায় তাদের নামে তিনটি মামলা হয়েছে।

হয়রানিমূলক এসব মামলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেশের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত।

নিহত হাফিজুল শিকদারের (২৮) বাবা আবু বকর শিকদার যে মামলা করেছেন, তার এজাহারে তিনি বলেন, ‘গত ২০ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে আমার ছেলে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। মেরুল বাড্ডার প্রগতি সরণিতে আসামাত্র আসামিদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে আমার ছেলে হাফিজুল শিকদারকে হত্যা করা হয়।’ 

আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে দেরি এবং থানার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তিনি।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বুধবার সন্ধ্যায় বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার এসআই ওয়ালিউর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কখন, কবে মামলাটি করা হয়েছে আমার জানা নেই। ঊর্ধ্বতন স্যাররা বলতে পারবেন।’ 

পরে এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও পরিদর্শকের (তদন্ত) মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি।

পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রিয়াজুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’

ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
ঘটনার সময় দেশেই ছিলেন না বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। এমন হয়রানিমূলক মামলায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

তারা বলেন, ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। তাদের ওপর দমন-পীড়ন করা হলে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কখনো ধরে রাখা যাবে না। দেশে বিনিয়োগ বাড়বে না। বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে না। তাই সরকারকে এখন জরুরি ভিত্তিতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা উন্নত করা এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়া দরকার।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘১৫ বছরের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যখন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সব ব্যবসায়ী এক হয়ে কাজ করছেন, এ সময় দেশের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখে এমন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হামলা ও মামলা করা হলে পুরো ব্যবসায়ী সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি স্থবির হবে। তদন্ত ছাড়া এ রকম মামলা ও হয়রানি দেশের কল্যাণে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে না। একই সঙ্গে ছাত্র-জনতার অনেক ত্যাগের বিনিময়ে যে আন্দোলন তার সুফল থেকে বঞ্চিত হবে দেশের সাধারণ মানুষ।’

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি চাপে রয়েছে। দেশের শিল্প-কারখানায় লাখ লাখ মানুষ চাকরি করে। যদি ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা চালু রাখতে না পারেন, তাহলে অর্থনীতিতে সংকট বাড়বে। আমাদের আবেদন, সরকার এই মুহূর্তে ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের হয়রানি যেন না করে।’

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘মামলা দিতে হলে তার মেরিট থাকতে হবে। কোনো মেরিট নেই, গণহারে মামলা দিয়ে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের ধরতে গিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব ব্যবসায়ী দেশের বাইরে টাকা পাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা এ ধরনের কাজ করেননি তাদের যেন হয়রানি না করা হয়।’

ফারুক হাসান বলেন, ‘ইকোনমি চালু রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও শক্ত হতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে সাপ্লাই চেইনটা ঠিক রাখতে পারেন, তার জন্য পুলিশ সিকিউরিটি, সেফটি দিতে হবে। যেকোনো আন্দোলন হলে যেন সামাল দিতে পারে সেই সক্ষমতা থাকতে হবে।’

দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী বলেন, ‘যারা ব্যবসা করছেন তাদের দেশেই পাওয়া যাচ্ছে, আর যারা লুট করছেন তারা পালিয়েছেন। লুটপাটকারীদের চাপটা ব্যবসায়ীদের ওপর আসছে, এটা হতে পারে না। এভাবে ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারবেন না। তখন ব্যবসা ছেড়ে দেবেন। ফলে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।’

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম হায়দার বলেন, ‘প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা আমরা আশা করি না। যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হোক এবং বিচার হোক। না হলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।’

অমিয়/

জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের ৩ সদস্য ঢাকায়

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪৩ পিএম
জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের ৩ সদস্য ঢাকায়
প্রতিনিধি দলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন। ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। 

বুধবার (২১ আগস্ট) মধ্যরাতে ঢাকা এসেছে দলটি। প্রাথমিক কারিগরি দলটি বাংলাদেশে প্রায় এক সপ্তাহের সফর করার কথা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটির বৈঠক করার কথা রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে সহকারী পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে কাজ করছেন।

প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানের বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘের হাইকমিশনার দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে তিন সদস্য ঢাকায় আসেন। 

তারা ঢাকায় অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজের ধারা, প্রক্রিয়া, শর্তসহ সব বিষয় চূড়ান্ত করবেন।

ফলে ঢাকায় যে দলটি এসেছে, সেটিই যে জাতিসংঘের মূল তথ্যানুসন্ধানী দল, এটা এখনো বলার সময় আসেনি। 

এ নিয়ে গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, জাতিসংঘের দলটি উপদেষ্টাদের সঙ্গেও দেখা করবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে প্রথমে জাতিসংঘের কারিগরি নাকি তদন্ত দল আসবে তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বিষয়টি এখনো জাতিসংঘ থেকে আমাদের জানানো হয়নি। আশা করছি প্রাথমিক দল হিসেবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দলটি আলোচনা করবে। মূলত বাংলাদেশের কোন কোন ক্ষেত্রে সহযোগিতা লাগবে ও একই সঙ্গে জাতিসংঘের দলটি বাংলাদেশে এলে তাদের কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে।’

ইসরাত চৈতী/অমিয়/

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: চার জেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: চার জেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে দেশের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। ছবি: খবরের কাগজ

ফেনী, সুনামগঞ্জ, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর মধ্যে ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সেখানকার তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একইভাবে লক্ষ্মীপুরে দুই লাখ, কুমিল্লায় ৮০ হাজার ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আমদানি-রপ্তানিসহ ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। এ ছাড়া আখাউড়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ফেনীতে বানের পানিতে ভেসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। ঘের ও পুকুরের কোটি কোটি টাকার মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে। 

এদিকে বুধবার (২১ আগস্ট) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান খবরের কাগজকে বলেন, এটা স্বল্পমেয়াদি বন্যা, আকস্মিক বন্যা। মৌসুমি লঘুচাপের কারণে উপকূলজুড়ে বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে পানি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে সময়বিশেষে বাড়তে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। 

ফেনীতে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি, একজনের মৃত্যু
ফেনী: ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলায় আড়াই শ গ্রামের প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বানের পানিতে ভেসে একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া ভূঁইয়া। সীমান্ত এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতের ত্রিপুরায় ব্যাপক বৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে। ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট রয়েছে, যা ডম্বুর গেট নামে পরিচিত। বন্যার পানি কমার জন্য প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে। তাই উজান থেকে নেমে আসা পানিতে বাংলাদেশের বিস্তৃত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ২০ আগস্ট রাতে ফুলগাজীতে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ভেসে রাজু মোহাম্মদ রাজু নামে একজনের মৃত্যু হয়। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৭টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। জরুরি ভিত্তিতে গতকাল দুপুর থেকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবিসহ ফেনীর শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্ধারকাজ করছে। 

তলিয়ে গেছে আখাউড়া স্থলবন্দর, অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু 
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর তলিয়ে গেছে। ইমিগ্রেশন ভবনের ভেতর পর্যন্ত পানি ঢুকে যায়। ইলেকট্রিক সার্কিটের ভেতরও পানি ঢুকেছে। তাই আপাতত ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পানি উঠেছে আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামেও। পানির তোড়ে একটি অস্থায়ী সেতু ভেঙে আখাউড়া-আগরতলা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বসতঘরে ঢুকে পড়া ঢলের পানিতে পড়ে সুবর্ণা বেগম (৪০) নামে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত সুবর্ণা উপজেলার বীরচন্দ্রপুর গ্রামের পারভেজ মিয়ার স্ত্রী। স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসন সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। গতকাল সকাল থেকে বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। একপর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ১০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। 

লক্ষ্মীপুরে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, দুই লাখ পরিবার পানিবন্দি
লক্ষ্মীপুর: ভারী বর্ষণে লক্ষ্মীপুরের অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক ও নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দুই লাখ পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার রামগতি ও কমলনগর, রায়পুর ও সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। এই উপজেলাগুলোতে ভারী বর্ষণের পাশাপাশি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ারে তলিয়ে গেছে উপকূলীয় মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি এবং রাস্তাঘাট। এ ছাড়া পুরো জেলার সর্বত্র পুকুর ও মৎস্য খামারের পাড় ভেসে বেরিয়ে গেছে হাজার হাজার পুকুরের কয়েক কোটি টাকার মাছ।

কুমিল্লার তিন উপজেলার ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি 
কুমিল্লা: পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কুমিল্লার তিন উপজেলার ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে জেলার চৌদ্দগ্রামেই অন্তত ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া নাঙ্গলকোট উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। অন্যদিকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। ফলে নদীর চরের সব অঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছে চার শতাধিক পরিবার। 

সীতাকুণ্ডে বেড়িবাঁধ ভেঙে ঝুঁকিতে কয়েক হাজার মানুষ 
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এতে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল সকালে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার স্লুইস গেটসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ে। প্রতিটি এলাকায় ফসলি জমি ও মৎস্য প্রজেক্টের লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাটও। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত ৫-৬ বছর ধরে বিপজ্জনক বাঁধটি ধসে পড়ছে। গত বছর ভাঙনের জায়গায় বালুর বস্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এটা স্থায়ী সংস্কার করা হয়নি। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের কোনো তৎপরতা ছিল না। বর্ষা এলেই ভাঙন আরও বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে বেড়িবাঁধের স্থায়ী মেরামত না করার জন্য চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীরকে দায়ী করেন তারা। চার মেয়াদে চেয়ারম্যান থাকলেও এলাকার উন্নয়নে তার ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
চট্টগ্রাম: ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম নগর ও আশপাশের উপজেলায় অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধান, আমনের বীজতলা ও শরৎকালীন সবজির খেত। গত ছয় দিনে টানা ভারী বর্ষণে ১২ হাজার ৮৯ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অন্যদিকে মিরসরাইয়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলায় ৮৪১ হেক্টর আউশ ধান, ৬৪৯ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৯ হাজার ৯৩৯ হেক্টর আবাদ করা আমন ধান ও ৬৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা সবজির খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলা মিলে ১২ হাজার ৮৯ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সন্দ্বীপ, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আবাদ করা আমন ধান বেশি নষ্ট হয়েছে। 

মিরসরাইয়ে পানিবন্দি অর্ধলক্ষাধিক মানুষ
মিরসরাই: মিরসরাইয়ে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে বিভিন্ন সড়ক। এ ছাড়া ভেসে গেছে বিভিন্ন ঘেরের কোটি টাকার মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পোলট্রি ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, ইছাখালী, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মিঠানালা, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর, ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

সীতাকুণ্ডে ডুবল ১০ গ্রাম, মাছচাষিদের কপালে হাত
সীতাকুণ্ড: সীতাকুণ্ডে ডুবে গেছে উত্তর ইদিলপুর, দক্ষিণ ইদিলপুর, শিবপুর, ভাটরেখীল, কেদারখীল, বশরতনগরসহ অন্তত ১০টি গ্রাম। এতে মানুষের বাড়িঘর, স্কুল, মাদ্রাসা, ধর্মীয় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, চাষের পুকুর, ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে গবাদিপশু, শিশু, বৃদ্ধদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা।