ঢাকা ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আদালতের রায় কার্যকর

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০১:০২ এএম
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আদালতের রায় কার্যকর
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলো সাধারণ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। এতে কোটাসংক্রান্ত ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপনসহ আগের সব পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ ও অনুশাসন বাতিল করা হয়। প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন জারির পর বেলা আড়াইটায় গুলশানে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রজ্ঞাপনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তার সঙ্গে ছিলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. এ আরাফাত, জনপ্রশাসন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার।

সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত সংস্কারের যে রায় দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ প্রতিপালন করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের একটা দাড়ি, কমা, সেমিকোলন বদলানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। যেহেতু সেটা নেই, সেহেতু তারা (আদালত) যে রায় দিয়েছেন সেভাবেই আমরা প্রতিপালন করেছি। এই প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনসহ আগের সব প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের ঘটনায় আগে যে সহিংসতা হয়েছে তা তদন্তের জন্য এক সদস্যবিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি কাজ শুরু করেছেন। পরিস্থিতি একটু শান্ত হলেই তিনি স্পটগুলো ঘুরে দেখবেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যেসব সাধারণ ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার দেখভাল করবে। সাধারণ শিক্ষার্থী যারা কোটাবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে তথ্য পেলে তা প্রত্যাহারের বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব। সরকার শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং সব ছাত্রছাত্রীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে ছিল কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চাওয়া বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের উচিত নিজ নিজ জায়গায় ফিরে গিয়ে পড়াশোনা শুরু করা। এটা তাদের কাছে আমার আহ্বান।’

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব গ্রেডে নিয়োগ: আইনমন্ত্রী বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালত এখানে পরিষ্কারভাবে চারটা ক্যাটাগরিতে সব গ্রেডে নির্ধারিত কোটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন। এটা সর্বোচ্চ আদালতের রায়। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই এবং এর বাইরে যাওয়ার সরকারের কোনো অভিপ্রায়ও নেই। 

বিসিএসসহ অন্যান্য নিয়োগ: আইনমন্ত্রী বলেন, ৩১ জুলাই যে পরীক্ষাটা আছে এবং পরবর্তী সব নিয়োগই এই প্রজ্ঞাপনের আলোকেই বিবেচনা করতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। 

নারী কোটা ও অন্যান্য বিষয়ে ভবিষ্যতে সংশোধন: আইনমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত অত্যন্ত বিচক্ষণ রায় দিয়েছেন। এটা সুদূরপ্রসারী। সর্বোচ্চ আদালত যদি শুধু রায়ের কার্যকারিতা এখানেই শেষ করে দিতেন, তা হলে এটা বদলানোর প্রয়োজন হলে আবার রিভিউ (পুনর্বিবেচনার আবেদন) করতে হতো। কারণ এটা সর্বোচ্চ আদালত। ততদিনে রিভিউয়ের সময়ও শেষ হয়ে যেত। সে জন্য সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের কথাই ওনারা বলেছেন, সেই ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয়, তখন দেখা যাবে। আদালত সরকারের পলিসি ম্যাটারে হাত দিতে চাননি। সরকারের কখনো যদি মনে হয়, এটা বাতিল, পরিবর্তন, কমানো বা বাড়ানো প্রয়োজন তখন সেটা করা যাবে। এ জন্য আর কোর্টে যেতে হবে না। এখন সেটা করা হচ্ছে না তার কারণ হচ্ছে, সর্বোচ্চ আদালত যে রায়টা দিয়েছেন সেটাতে হাত দিলে আইনের শাসনের প্রতি মারাত্মক হাত দেওয়া হবে। সে জন্য এটা আমরা করব না।’ 

প্রজ্ঞাপনের প্রেক্ষাপট বর্ণনায় আইনমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে একটা পরিপত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এই কোটা বাতিল করেন। এর পর মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন সন্তান হাইকোর্টে একটা রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের শুনানি হওয়ার পর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রায় দেন, সেই রায়ে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ও বাতিল করেন। কোটা বাতিলের পক্ষে রায় প্রকাশের পর তিন দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে আপিল করে সরকার। আপিল করার আগেই যদিও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা হাইকোর্টে যখন মামলাটির শুনানি হয় কোনো পক্ষভুক্ত হয়নি। সরকার যখন আপিল করে তখনো তারা পক্ষভুক্ত হয়নি। সেই ক্ষেত্রে যখন আপিলটি আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চে পাঠানো হয় সেইটাকে ‘শুনবে’ বলে একটা তারিখ দেন। তখন আন্দোলনকারীরা এই আপিল শুনানির আগে একটা পক্ষভুক্ত হন। তাদের পক্ষভুক্তের দরখাস্তের ওপরে যখন শুনানি হয় তখন আপিল বিভাগ একটা আদেশ দেন। সেই আদেশে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেন যে, স্ট্যাটাস কো-মেইনটেইন করতে হবে। আরও বলেন যে, হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে কোটা বাতিল করার পরিপত্র বাতিলের যে আদেশ দিয়েছিলেন সেটা অকার্যকর থাকবে, যতদিন পর্যন্ত আপিল বিভাগের এই শুনানি না হবে। তার মানে হচ্ছে, সেই দিন থেকে বাংলাদেশে কোটা ছিল না। এবং তারিখ নির্ধারণ করেন যে, ৭ আগস্ট এই মামলার শুনানি হবে। 

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন একদিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা যখন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল এর সুযোগ নিয়ে কিছু মহল এই আন্দোলনকে অন্য দিকে প্রবাহিত করার জন্য সহিংসতা অবলম্বন করেন। একপর্যায়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা বলেন যে, তারা আন্দোলন চালানোর পাশাপাশি আলোচনায় বসতে চান। আমি প্রধানমন্ত্রীর আদেশে বলি যে, যখনই তারা বসতে চায় আমরা রাজি আছি। সেই সংবাদ সম্মেলনে আমি অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলি, কোটাবিরোধী আন্দোলনের যে মামলাটা আপিল বিভাগে ৭ আগস্ট শুনানি আছে, সেটা এগিয়ে আনতে আমরা ব্যবস্থা করব। সেই দিনই অ্যাটর্নি জেনারেল দরখাস্ত করলে আপিল বিভাগ মামলাটা এগিয়ে এনে ২১ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেন। আপিল বিভাগ ২১ জুলাই এই মামলার শুনানি করেন এবং একটা সবিস্তারিত রায় দেন। সেখানে আপিল বিভাগ সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে তারা কোটার ব্যাপারে একটা নির্দেশনাও দেন।’ প্রজ্ঞাপন জারির পর গেজেট নোটিফিকেশন প্রায় হয়ে গেছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, এটা পরিষ্কার হয়েছে- এই আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এতে জঙ্গি, বিএনপি-জামায়াত, ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এক হয়ে এই আন্দোলনে সংযুক্ত হয়ে দেশ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। 

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমস্যা যেহেতু সমাধান করে দিয়েছি, সেহেতু আমাদের বিশ্বাস যে নতুন করে কোনো সমস্যা তৈরি করা হবে না এবং পরিস্থিতির অবনতি হবে না। তবে যদি কোনো অপশক্তি পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে সেটার ব্যাপারে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমরা ধৈর্য ধরেছি, কারণ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা চেয়েছি এবং এখনো চাচ্ছি এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যাক। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার মতো যথেষ্ট সক্ষমতা সরকারের আছে।’ কারফিউ প্রত্যাহার কবে নাগাদ হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এলেই কারফিউ প্রত্যাহার হবে। জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসছে তার ফলশ্রুতিতে কারফিউর বিরতি বাড়ানো হচ্ছে। আস্তে আস্তে যতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসছে, ততই কারফিউর মেয়াদ কমিয়ে আনা হচ্ছে। 

পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীর প্রকৃত সংখ্যা বের করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তথাকথিত আন্দোলনে কতটুকু অংশে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল এবং কোন কোন জায়গায় শিক্ষার্থী ছিলেন, শিক্ষার্থীদের পেছনে কারা ছিলেন সেটা আগে নিরূপণ করতে হবে। আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধার্য করার জন্য আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার পর এবং তার আগেই একটা অ্যাসেসমেন্ট করা হচ্ছে। এখন যেটা দেখছি, সেটা হলো কিছুটা আছে তথ্য, কিছুটা আছে অপতথ্য, আর কিছুটা গুজব। তথ্যের যে বিভ্রাট সেটাকে ব্যবহার করেই জনমনে সার্বক্ষণিক এক ধরনের আবেগ, উত্তেজনা বা সেটাকে ব্যবহার করে নাশকতামূলক কাজগুলোর ক্ষেত্রে জাস্টিফিকেশন করা হচ্ছে। সুতরাং এই পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ার পরেই আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হবে আসলে কারা কারা শিক্ষার্থী ছিলেন এবং শিক্ষার্থী কোন কোন প্রতিষ্ঠানের ছিলেন। সেটা এই মুহূর্তে নিরূপণ করা খুবই কঠিন।’

 

আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পিএম
আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় দণ্ডিত হয়েছিলেন ৫৭ বাংলাদেশি। পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান তাদের বিশেষ ক্ষমা করেন। এদের মধ্যে ১৪ জন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন। 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন।

এর আগে শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ বিষয়টি জানানো হয়। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ক্ষমা পাওয়াদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে ১২ জন একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন। তারা রাত ১০টায় চট্টগ্রামে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয়। পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে বড় অংশজুড়ে ছিল ৫৭ জনের শাস্তি মওকুফের বিষয়টি। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন।’

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। এর মধ্যে ৩ জনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি ১ জনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

৪৮ নাগরিকের বিবৃতি জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি ধৃষ্টতাপূর্ণ

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি ধৃষ্টতাপূর্ণ
নাগরিক বিবৃতি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পতনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয় সংগীতসহ জনসাধারণের আবেগ ও অনুভূতি নিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৪৮ নাগরিক। 

তারা বলেছেন, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী গত ৩ সেপ্টেম্বর সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সাম্প্রদায়িক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। আমরা তার এ বক্তব্যের নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এমনকি জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তোলার ধৃষ্টতা দেখাতে পরিকল্পিত প্রচার শুরু করেছে। মাত্র কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির জাতিকে অতীতের সবকিছু ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অনুমান করা যায়, অতীত বলতে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সেই সময়ে তার দলের ভূমিকার কথাই বুঝিয়েছেন। তিনি যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই বোঝাতে চেয়েছেন, তা আরও পরিষ্কার হলো জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী গত ৩ সেপ্টেম্বর সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা থেকে। আমরা তার এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সাম্প্রদায়িক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ এই নয়, যেখানে যা খুশি তাই বলা। যে উদ্দেশ্যে তিনি ৩ সেপ্টেম্বরের সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন, এর বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের মূলনীতির প্রতি কটাক্ষ করে তিনি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আবেগের জায়গায় আঘাত করেছেন।

এতে বলা হয়, সবার মনে রাখা দরকার, ১৯৭১ সালে তরুণ, ছাত্র, কৃষক-শ্রমিক-সেনা-পুলিশ সদস্যসহ সর্বস্তরের বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-বর্ণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষ জীবনপণ লড়াইয়ে ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামের আমাদের এই প্রিয় দেশটিকে স্বাধীন করেছিলেন। এর জন্য বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর জামায়াতসহ বিভিন্ন দলীয় ঘাতক বাহিনীর অবর্ণনীয় বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার শিকার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষ নারী-পুরুষ, ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী-লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের অগণিত ব্যক্তি ও পরিবারকে। সেই ইতিহাস এই দেশের প্রজন্মের পর প্রজন্মের মানুষ মনে রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও মনে রাখবে। এই ইতিহাস ভুলে যাওয়ার কথা বলার অধিকার কিংবা দুঃসাহস কারোরই থাকার কথা নয়। আর জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গেয়েই বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনপণ লড়াইয়ের শপথ নিয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন। তাদের অনেকে শহিদ হয়েছেন, অনেকে শারীরিক পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা যে যুদ্ধ করেছেন, জাতীয় সংগীত ছিল তাদের প্রেরণার সার্বক্ষণিক উৎস। তাই জাতীয় সংগীতটি কার্যত যুদ্ধের মধ্য দিয়েই লাখো শহিদের রক্তে নতুনভাবে আমাদের প্রাণের সংগীত হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একে নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা। একে কোনোভাবেই এই দেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা গুমের শিকার হয়ে রাষ্ট্রীয় সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গোপন আটক কেন্দ্র ‘আয়নাঘর’-এ দীর্ঘ আট বছর বন্দি ছিলেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্তিসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন এজেন্সির দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের দাবিতে আমরা বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, এখনো আছি। আমরা চাই সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তাসহ যারা ‘আয়নাঘর’-এ আটক ছিলেন, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা সবাই ন্যায়বিচার যেন পান। আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ন্যায়বিচারের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করবে। কিন্তু তার সঙ্গে জাতীয় সংগীত কিংবা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা নিতান্তই উদ্দেশ্যমূলক। তাই যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কিংবা জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেষ্টা করছেন কিংবা অসত্য তথ্য প্রচার করছেন, তাদের এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আরও বৃহৎ কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।

এতে বলা হয়, শত শত শিক্ষার্থী, শিশু, কিশোরী-কিশোর ও জনতার প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতন্ত্রের যে বিজয় অর্জিত হলো, তাকে সংকীর্ণ দলীয় ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলের জন্য কোনো সাম্প্রদায়িক অথবা অন্য গোষ্ঠী যাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য আমাদের সবাইকে সদা সতর্ক, সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি উপাচার্য পারভীন হাসান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসেন, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ঈশানী চক্রবর্তী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহা মির্জা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ল্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. সাদাফ নুর, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ড. নূর মোহম্মদ তালুকদার, নতুন দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম বাবলা, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি এ এস এম কামালউদ্দিন, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিদুর রহমান লাল্টু, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, এমএসএফের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহদাত আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এম খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজিজুল্লাহ ইমন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রিন্স আল মাসুদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শায়লা শারমীন, মানবাধিকার কর্মী তাপসী রাবেয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আজমীর হোসেন, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, মানবাধিকার কর্মী ও সংগীতশিল্পী বাপ্পী মাশেকুর রহমান, আদিবাসী অধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, সাঙ্গাত’র কোর গ্রুপ মুক্তাশ্রী চাকমা ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।

 

সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল, টার্মিনাল কাউন্টার, লঞ্চের পন্টুন এবং ওয়াইজঘাট-সিমসনঘাটের খেয়াঘাট পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এসব পরিদর্শন করেন তিনি। 

এ সময় বন্দর কর্মকর্তা কবীর হোসেন ঢাকা নদীবন্দরের বিভিন্ন কাজের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে তুলে ধরেন। 

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ঢাকা নদীবন্দরের ঘাটের রাজস্ব বাড়াতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে তাগিদ দেন। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত রাজস্ব আদায় কার্যক্রম সচল করার উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দেন। প্রতিটি ঘাট-পয়েন্টে সরকার নির্ধারিত রেট চার্ট দৃশ্যমান স্থানে স্থাপনের জন্যও নির্দেশনা দেন। এ প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা আগামী সাত দিনের মধ্যে রেট চার্ট স্থাপন করা হবে বলে জানান। 

ঢাকা নদীবন্দরের সার্বিক কার্যক্রম দেখে নৌপরিবহন উপদেষ্টা সন্তুোষ প্রকাশ করে বন্দরের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থেকে নৌ-সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় নিয়মাগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে এবং লঞ্চের  রুট পারমিট ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআইডব্লিউটিকে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন।

এ সময় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং ঢাকা নদীবন্দরের বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

লুট হওয়া ৫৩ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২৫

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পিএম
লুট হওয়া ৫৩ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২৫
পুলিশ সদর দপ্তর

সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ৫৩টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশসহ যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে এই অস্ত্র উদ্ধার করেছে। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো হলো রিভলবার ২টি, পিস্তল ১৮টি, রাইফেল ২টি, শটগান ১১টি, পাইপগান ১টি, শুটারগান ৬টি, এলজি ৩টি, বন্দুক ৩টি, একে ৪৭ ১টি, গ্যাসগান ১টি, চায়নিজ রাইফেল ১টি, এয়ারগান ১টি ও এসবিবিএল ৩টিসহ মোট ৫৩টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এ সময় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। যাদের কাছে চোরাই অস্ত্র পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

রাঘববোয়ালদের ধরতে কঠোর অবস্থানে সরকার : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
রাঘববোয়ালদের ধরতে কঠোর অবস্থানে সরকার : অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আর্থিক খাতের রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা আরও দৃশ্যমান হবে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (বিআইজিএম) এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এটা প্রাথমিক উদ্যোগ। এর পরে এ নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে দোষ পেলে তাদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দ্রুততম সময়ে এসব কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি কালোটাকা সাদা করার সুযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করার সুযোগ না থাকায় এনবিআর অর্থ লোপাটকারীদের সহজে ধরে ফেলবে। যাদেরই অপ্রদর্শিত আয় আছে, তাদের ধরবে।’

বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা 

বাজারে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চ দাম নিয়ে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দাম যে একেবারে কমেনি, তা নয়। চট করে তো সমাধান হবে না। আস্তে আস্তে কমে আসবে। ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আলু ও পেঁয়াজের শুল্ক কমানো হয়েছে। বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার জন্য। আশা করি, চাঁদাবাজ কমলে নিত্যপণ্যের দাম কমবে। দাম শুধু কারওয়ান বাজারে দেখলে হবে না, অন্য বাজার দেখতে হবে। কারওয়ান বাজারে চারবার হাতবদল হয়, এটা বন্ধ করা হবে। এ জন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হবে। তবে পণ্যের উৎপাদনকারীরা যেন ন্যায্যমূল্য পান, তা দেখা প্রয়োজন।’

বিভিন্ন তৈরি পোশাকশিল্প কারখানায় কয়েক দিন ধরে অস্থিরতা চলছে। শিল্প-কারখানা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘পোশাক খাতের অস্থিরতা কমাতে মালিক, শ্রমিক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত এটা সমাধান হবে।’ 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা ইউনিট আগে চালু হোক। এরপরে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু হবে।’