কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ, সহিংসতা আর প্রাণহানির ঘটনায় রাজনৈতিক দলগুলোর দায় রয়েছে কি না? এই প্রশ্ন তুলেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। দেশের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিলে বাংলাদেশের লোকসান হবে বলেও মন্তব্য এসেছে সংগঠনের এক আলোচনা সভা থেকে।
শনিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ ‘সন্ত্রাস-সংঘাত-সহিংসতা নয়, চাই শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক নাট্যজন পীযূষ বন্দোপধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালণায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসু দেব ধর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভান্তে বুদ্ধানন্দ মহাথেরো, খ্রিস্টী ধর্মযাজক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইউসুফ রাজ, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) আফিজুর রহমান।
আলোচনা সভায় সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য ও সাংবাদিক আলী হাবিব ও ফরহাদ মাহমুদের লেখা মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এই যে এত সহিংসতা, সংঘাত, নৈরাজ্য, মৃত্য- এর দায় কে নেবে? দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কি কোনো দায় নেই? রাজনীতি কেন এত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবে? এতে লোকসানটা কার? দেশেরই তো।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের বাতাবরণে নতুন প্রজন্মকে রাজনীতিবিমুখ করে তোলা হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় প্রবন্ধে। তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের মধ্যে অপরাজনীতি ঢুকিয়ে দেশের একটি প্রজন্মকে রাজনীতির প্রতি তো বটেই, রাজনীতিকদের প্রতিও বীতশ্রদ্ধ করে তোলা হয়েছে৷ এর ফল কী হবে? রাজনীতিবিমুখ হবে আগামী প্রজন্ম। মেধাবী একটি প্রজন্ম রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তার বদলে সামাজিক দুষ্কৃতিরা হয়তো নিজেদের স্থায়ী আসন করে নেবে রাজনীতিতে। রাজনীতি চলে যাবে নষ্টদের দখলে। বুদ্ধিবৃত্তির বদলে পেশিশক্তি স্থায়ী হবে। সেই দৈন্যও কি দেখতে হবে আমাদের?’
দেশে এক আস্থাহীনতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে স্যোশাল ট্রমা। সমাজে একটি ভীতি ঢুকে গেছে৷ এই ক্ষত সারাবে কে?’
পরে আলোচকরা বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্ত্রাস-সহিংসতা ও সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জয়ন্ত সাহা/এমএ/