বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচিতে সপ্তাহের প্রথম দিন সকালে সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।
রবিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর প্রগতি সরণি, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, রোকেয়া সরণি, মিরপুর রোড ও জনসন রোড এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ফোনে খবরের কাগজকে সড়কের এই চিত্রের কথা জানান।
রামপুরা কাঁচাবাজার এলাকা থেকে সকাল ৯টার দিকে পূর্বাচল যাচ্ছিলেন সৌম্যদীপ বসু। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে তিনি বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছি। সড়কে বাস নেই বলতে গেলে। তুরাগ, রাইদা পরিবহনের দুই-একটা বাস দেখলাম। সড়কের আশপাশে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ।’
জনসন রোড এলাকা থেকে অন্বেষা মজুমদার বলেন, ‘পুরান ঢাকা কেমন যেন থমথমে। পণ্যবাহী কিছু ট্রাক চলাচল করছে, আর জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজছেন। তবে রিকশা চলাচল করছে বেশ।’
শ্যামলী শিশুমেলা থেকে সাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কে বাসের দেখা মেলেনি। সকাল ৮টা থেকে ৮টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। পরে তিনজন মিলে একটা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করেছি। অনেক বলে-কয়ে মতিঝিল অবধি যেতে রাজি করালাম।’
সড়কে বাস চলাচলের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়কে বাস চলাচলের বিষয়ে আমরা কোনো বাস মালিক বা চালককে নির্দেশনা দেইনি। অবরোধকারীরা সড়কে বাস চলতে দিচ্ছে না। জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। কোনো বাস মালিক সড়কে বাস নামাতে না চাইলে কী করা যাবে! দূরপাল্লার বাসের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তবে দেশের যা অবস্থা, যাত্রীরা এখন দূরে জার্নি করতে চাইবেন না।’
এদিকে দুদিন স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচলের পর আজ থেকে আবার ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘শনিবার রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মহোদয়ের কাছ থেকে একটা নোটিশ পেয়েছি। তাতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’
এদিকে রেলওয়ের পূর্বের এক চিঠিতে বলা হয়, অনিবার্য কারণবশত রবিবার সব ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি পণ্যবাহী, তেলবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার রাতে রেলওয়ে ঢাকা অফিস থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৭ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে টানা ১৪ দিন বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। মাঝে একদিন চালু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। গত ১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ কয়েকটি শহর থেকে আশপাশের গন্তব্যে মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
জয়ন্ত সাহা/ইসরাত চৈতী/অমিয়/