ঢাকা ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিক্ষোভে উত্তাল সারাদেশ

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:০২ এএম
আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪৪ এএম
বিক্ষোভে উত্তাল সারাদেশ
ছবি : খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গতকাল শনিবার উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী। এরই মধ্যে এবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এ ঘোষণা দেন। পাশাপাশি তিনি রবিবার (৪ আগস্ট) থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। 

এদিকে জেলায় জেলায়ও বিক্ষোভ হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুরে সংঘর্ষ চলাকালে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে বিক্ষোভ মিছিল থেকে চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি ও একজন এমপির অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় ৫ ছাত্র গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া সেখানে এসি ল্যান্ডের গাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। রাজশাহীতে পুলিশকে মারধর, স্থাপনা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বরিশালে পুলিশের গাড়িতে হামলা হয়েছে। পটুয়াখালীতে সেনা সরকার দাবিতে স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। 

ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্যুরো, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো বিস্তারিত খবর: 

ঢাকা: পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। আসেন অভিভাবক, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শহিদ মিনার এলাকা। এ সময় তারা ‘পদত্যাগ পদত্যাগ, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো এক সাথে’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শহিদ মিনার থেকে চানখাঁরপুল, শেখ রাসেল টাওয়ার এবং জগন্নাথ হল পর্যন্ত লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক দফা দাবির কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘জনগণকে মুক্ত করতে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এতদিন ধরে আমাদের ৯ দফা দাবি ছিল, এখন দফা এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শুধু শেখ হাসিনা নন, মন্ত্রিসভাসহ পুরো সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অসহযোগ আন্দোলন চলবে, এর পাশাপাশি চলবে রাজপথে বিক্ষোভ কর্মসূচি। জেলায় জেলায়, মহল্লায় মহল্লায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করুন। অতি শিগগির আমরা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

এদিকে, নাহিদ ইসলামের পক্ষে গণমাধ্যমকে পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে, ‘আজ রবিবারের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল খুলে না দিলে শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে হলে প্রবেশ এবং সর্বদলীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদ ও জাতীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হবে। একই সঙ্গে সর্বস্তরের নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই ক্ষমতা হস্তান্তরের জাতীয় রূপরেখা হাজির করা হবে।’

গতকাল রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকা প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা সায়েন্স ল্যাব আংশিক অবরোধ করে রাখলেও সোয়া ১২টার দিকে পুরো সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রাখেন। সেখানে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে শহিদ মিনারের উদ্দেশ্য মিছিল নিয়ে আসেন। কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বিস্কুট ও পানি পাঠানো হয় পুলিশের কাছে। শুরুতে অস্বীকৃতি জানালেও, পরে তা গ্রহণ করেন। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, পুলিশ আমাদের শত্রু না। 

রাজধানীর অন্য এলাকার মতো প্রগতি সরণি, বসুন্ধরা গেটের সামনে মূল সড়কে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। 

এদিকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘মৃত্যু এত সহজ কেন’ শীর্ষক ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন অভিভাবকরা। এতে গুলিবিদ্ধ, আহত, আটক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বক্তব্য দেন।

‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ ব্যানারের অন্যতম সমন্বয়ক রাখাল রাহা বলেন, ‘অভিভাবক হিসেবে আজ রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। আজকে আমরা দাঁড়িয়েছি মানে আজকে থেকেই এটা শেষ নয়। আমার সন্তানরা তাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে যত দিন রাজপথে থাকবে আমরাও তত দিন তাদের পাশে থাকব।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নামেন নারী উদ্যোক্তারা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যানারসহ নারী উদ্যোক্তারা সমবেত হন। এ সময় নারী উদ্যোক্তারা বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা অধিকার আদায় করতে গিয়ে রাজপথে শহিদ হয়েছে। তাই আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনি। রাজপথে চলে এসেছি। আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন চাই। একটা নিরাপদ বাংলাদেশ আমাদের দাবি। যে বাংলাদেশে আর বাসার ছাদে খেলতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শিশুদের মৃত্যু হবে না।’

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শত শত মানুষ সমবেত হন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। এরপর আসে সরকারের পদত্যাগ চেয়ে ওই এক দফার ঘোষণা। 

গাজীপুরে ব্যবসায়ী নিহত:
গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে সংঘর্ষ চলাকালে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান।

ওসি জানান, গতকাল মাওনা চৌরাস্তায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় মাথায় আঘাত পেয়ে জাকির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হন। হয়তো পড়ে গিয়ে বা কোনো কিছুর সঙ্গে মাথায় চোট পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম জাকির হোসেন। বাড়ি সাতক্ষীরায়।

চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ি ও এমপির অফিস ভাঙচুর, পুলিশ বক্সে আগুন
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাড়ি ও সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া টাইগারপাসে পুলিশ বক্সে আগুন এবং সাতকানিয়ায় বিজিবির গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। 

বেলা ২টা থেকে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অভিভাবক, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষও অংশ নেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বদলে যায় নিউ মার্কেটের চিত্র। মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। সরকারবিরোধী স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে। নিউ মার্কেট, আমতল, সদরঘাট, রেলস্টেশন, কোতোয়ালিসহ আশপাশের এলাকা দখলে নেন তারা। 

নিউ মার্কেট এলাকা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার লম্বা মিছিলটি বহাদ্দারহাটে গিয়ে শেষ হয়। 

এদিকে চট্টগ্রামের ষোলশহরের ২ নম্বর গেটের চশমা হিল এলাকায় অবস্থিত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির বাইরের গ্লাস, সিসিটিভি ক্যামেরা, মন্ত্রীর বাড়ির দুটি গাড়ি ও ফটক ভাঙচুর করা হয়। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষামন্ত্রীর মা হাসিনা মহিউদ্দিন। 

অন্যদিকে নগরের ওয়াসা মোড়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় ওই অফিসের গ্লাস, ফটকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। নগরের লালখান মোড়ের বটতলে স্থানীয় কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল হাসনাত বেলাল ও মহিলা কাউন্সিলর আনজুমান আরার আড্ডাস্থলও ভাঙচুর করা হয়েছে। নগরের টাইগারপাস মোড় এলাকায় নগর পুলিশের একটি বক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিকেলে নিউ মার্কেট থেকে আসা মিছিল থেকে এ হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সাতকানিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল থেকে একটি পুলিশ বক্সে আগুন ও বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। 

দুপুরের পর উপজেলার বার আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ ও আশপাশের এলাকা থেকে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী বের হয়ে পদুয়া বটতলী বাজারে এসে জড়ো হন। পরে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে পদুয়া থেকে ঠাকুরদীঘি পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলটি আমিরাবাদ স্টেশনের দিকে যায়। সেখানে বিজিবির একটি গাড়িতে হামলার চেষ্টা করা হয় এবং একটি পুলিশ বক্সে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) তারেক আজিজ বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেব।’ 

বিএনপির চার নেতার বাসায় হামলা
এদিকে গতকাল রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, নগর কমিটির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনসহ চার নেতার বাসায় পাল্টা হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাসার নিচে থাকা গাড়ি। বিএনপির নেতাদের দাবি, ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলায় জড়িত।

কুমিল্লায় যুবলীগের হামলা, ৫ ছাত্র গুলিবিদ্ধ
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে সকাল থেকেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। 

কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা, দাউদকান্দি, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। সকালে কুমিল্লা জিলা স্কুলের সামনে থেকে মিছিল পুলিশ লাইনসের দিকে যাচ্ছিল। রেসকোর্স এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও ২৫ জন। গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) আবদুল করিম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা ছয়জনের মধ্যে দুজন ছররা গুলিবিদ্ধ। তবে সবাই আশঙ্কামুক্ত।

এসি ল্যান্ডের গাড়িতে আগুন
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলাকালে চান্দিনায় উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার (এসি ল্যান্ড) গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এসি ল্যান্ড সৌম্য চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন গাড়িটির ভেতরেই ছিলেন। 

রাজশাহীতে পুলিশকে মারধর, স্থাপনায় ভাঙচুর, আগুন
পুলিশকে মারধর, তিনটি পুলিশ বক্সসহ সরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিনটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ সমন্বয়ক অর্ণবকেও পিটিয়ে আহত করেন বিক্ষোভকারীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এসব ঘটনা ঘটানো হয়। 

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি তালাইমারী ও কাজলা ঘুরে রাবির প্রধান ফটকের সামনে এসে সমাবেশে রূপ নেয়। কর্মসূচিতে রাবি, রুয়েট ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ ছাড়া রাবি ও রুয়েটের শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসের সামনে থেকে আবারও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তালাইমারী মোড়ে এসে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর ভদ্রার দিকে এগুলোতেই নর্দার্ন মোড়ে ছাত্রলীগের একটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। ভদ্রা মোড় ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে থাকা আওয়ামী লীগের আরও দুটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর তিন-চার হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে (পূর্বের বিন্দোর মোড়) যায়। সেখানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করেন ও ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ সময় পাশেই রেললাইনের ধারে অবস্থিত রেলওয়ের গার্ডরুমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় কাঠের খড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। 

বরিশালে পুলিশের গাড়িতে হামলা, আহত ৪ 
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ঢাকা- বরিশাল মহাসড়ক অবেরোধ করেন। এ সময় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মারধরের শিকার হন। পাশাপাশি পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ও পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা।

আহতরা হলেন এপিবিএনের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নেয়ামত হোসেন খান, কনস্টেবল সিফাত, হাসনাত ও রিয়াজ হোসেন। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

ইবিতে বিক্ষোভ, ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন শেখপাড়া বাজার হয়ে প্রধান ফটকে এসে মিলিত হয়। এ সময় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। 

পরে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাদের সঙ্গে মিলিত হন। এ সময় শিক্ষকরা অতিসত্বর শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেন। এদিকে আন্দোলন চলমান অবস্থায় আন্দোলনকারীদের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করে এবং শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল’-এর ‘দেশরত্ন’ শব্দটি মুছে দিয়ে ‘স্বৈরাচার’ লিখে দেয়।

হাজারও ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট
সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকা নগরীর কেন্দ্রস্থল। চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কের একাংশে পড়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। ২০১৩ সালের ফেরুয়ারিতে ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ যেভাবে অবস্থান নিয়েছিল, চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত ঠিক একই রূপে গতকাল সকাল থেকে দেখা গেছে সিলেটের এই কেন্দ্রস্থলকে। ছাত্র-জনতার অবস্থান ঘিরে পুরো সতর্ক ছিলেন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

দুপুর ১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও চৌহাট্টায় জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অনেক অভিভাবক। 

সুনামগঞ্জে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মাঠে ছিল আ.লীগ
সুনামগঞ্জে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মাঠে সরব ছিল আওয়ামী লীগও। তবে পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুপুরে শিক্ষার্থীরা শহরের ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে জমায়েত হলে সেখানে পুলিশ অবস্থান নেয়। এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও মিছিল করেন। তারা একপর্যায়ে শহরের আলফাত স্কয়ারে অবস্থান নেন। পৌর শহরের হুসেন বখত চত্বরে আরেক দল নেতা-কর্মী অবস্থান নেন।

সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ 
সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আশপাশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন। দুপুর ১টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরি গেটে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশকে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগের ধাওয়া
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের হয়। শিক্ষকরাও মিছিলে যোগ দেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

লক্ষ্মীপুরে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল
লক্ষ্মীপুরে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। গতকাল বেলা ১১টা থেকে সড়কে অবস্থান নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। 

শেরপুরে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি
গতকাল বিকেলে পৌর শহরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কয়েকটি দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা।

রংপুরে বিক্ষোভে শিক্ষক ও অভিভাবকরাও 
গতকাল সকাল থেকে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিলা স্কুল মোড়ে সমাবেশ করে। সেখানে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। 

ফরিদপুরে পুলিশ ও আ.লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ 
ফরিদপুরে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রসহ আহত হন বেশ কয়েকজন। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ‌

পাবনা শহরে হাজারও শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের মূল ফটকের সামনে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাফিক মোড় গোল চত্বরে সামনে এসে অবস্থান নেন। 

সখীপুরে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ১৫ 
টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল সকালে কাজী নজরুল সরণি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করেন। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এদিকে সখীপুর উপজেলায় আন্দোলনকারীদের ওপর উপজেলা ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

ধামরাইয়ে মহাসড়ক অবরোধ 
ঢাকার ধামরাইয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে থানা বাসস্ট্যান্ড হয়ে ঢুলিভিটা এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। অবরোধ করে রাখেন মহাসড়ক। প্রায় ৩ ঘণ্টা অবস্থান করে চলে যান শিক্ষার্থীরা।

পটুয়াখালীতে সেনা সরকার দাবিতে স্লোগান
পটুয়াখালীর শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সেনা সরকারের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। সকালে জেলার লেবুখালীস্থ শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা ৯ দফা দাবিসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ করে সেনাবাহিনী সরকারের দাবি তোলেন। 

কুমিল্লায় যুবলীগের হামলা, পাঁচ ছাত্র গুলিবিদ্ধ 
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে সকাল থেকেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। 

কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা, দাউদকান্দি, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। 

সকালে কুমিল্লা জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। স্কুলের সামনে থেকে মিছিলটি পুলিশ লাইনসের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি রেসকোর্স এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও ২৫ জন। গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

এর আগে নগরীর পূবালী চত্বর এলাকায় জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করলে সেখানেও ধাওয়া দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

কুমিল্লা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) আবদুল করিম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা ছয়জনের মধ্যে দুজন ছররা গুলিবিদ্ধ। তবে সবাই আশঙ্কামুক্ত।

রংপুরে বিক্ষোভে শিক্ষক ও অভিভাবকরাও 
গতকাল সকাল থেকে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিলা স্কুল মোড়ে সমাবেশ করে। সেখানে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং আন্দোলন চলাকালে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তিসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় দেখা যায় 

ফরিদপুরে পুলিশ ও আ.লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ 
ফরিদপুরে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রসহ আহত হন বেশ কয়েকজন। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ‌

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের দিক থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের দিকে রওনা হন। তারা শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায় পৌঁছলে সেখানে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের একদল নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। পরে তারা সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আন্দোলনকারীরা পিছু হটে আবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ভেতরে অবস্থান নেন। 

পাবনা শহরে হাজারও শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের মূল ফটকের সামনে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্রাফিক মোড় গোল চত্বরে সামনে এসে অবস্থান নেন। 

এ সময় নানা স্লোগান দেন তারা। এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যরা সংযত অবস্থায় ছিলেন। 

সখীপুরে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ১৫ 
টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল সকালে কাজী নজরুল সরণি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করেন। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। 
এদিকে সখীপুর উপজেলায় আন্দোলনকারীদের ওপর উপজেলা ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

ধামরাইয়ে মহাসড়ক অবরোধ 
ঢাকার ধামরাইয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরল কেন, জবাব চাই জবাব চাই’। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতেও নানা স্লোগান দেন। এ সময় পুলিশ থানা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে। পরে পুলিশের উপস্থিতি দেখে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন তারা। 

দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে থানা বাসস্ট্যান্ড হয়ে ঢুলিভিটা এলাকায় সড়কের মাঝখানে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। অবরোধ করে রাখেন মহাসড়ক। প্রায় ৩ ঘণ্টা অবস্থান করে চলে যান শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহীতে পুলিশকে মারধর, স্থাপনায় ভাঙচুর, আগুন 
পুলিশকে মারধর, তিনটি পুলিশ বক্সসহ সরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিনটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। 

এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ সমন্বয়ক অর্ণবকেও পিটিয়ে আহত করেন বিক্ষোভকারীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এসব ঘটনা ঘটানো হয়। 

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি তালাইমারী ও কাজলা ঘুরে রাবির প্রধান ফটকের সামনে এসে সমাবেশে রূপ নেয়। কর্মসূচিতে রাবি, রুয়েট ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ ছাড়া রাবি ও রুয়েটের শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন। 

কর্মসূচিতে ‘এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বৈরাচারের পদত্যাগ’, ‘নয় ছয় বুঝি না, কবে যাবি হাসিনা’, ‘আবু সাঈদ মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’- এমন নানা স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।

এ সময় রাবির প্রধান ফটকের সামনে সাদাপোশাকে থাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা সদস্য (সিটিএসবি) সাইফুল ইসলাম আন্দোলনের অবস্থা দেখছিলেন। হঠাৎ করে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তার মাথা ফেটে গেলে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে আন্দোলনকারীরা সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসের সামনে থেকে আবারও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তালাইমারী মোড়ে এসে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর ভদ্রার দিকে এগুলোতেই নর্দার্ন মোড়ে ছাত্রলীগের একটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। ভদ্রা মোড় ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে থাকা আওয়ামী লীগের আরও দুটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর তিন-চার হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর শহিদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বরে (পূর্বের বিন্দোর মোড়) যায়। সেখানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করেন ও ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এ সময় পাশেই রেললাইনের ধারে অবস্থিত রেলওয়ের গার্ডরুমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় কাঠের খড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে রাজশাহীর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বিতর্কিত’ নেতা অর্ণবকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। তিনি গত ১৮ জুলাই রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সেখানে গিয়ে আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গতকাল বিক্ষোভ চলাকালে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 
আন্দোলনরত রাবি শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনে জীবন দেওয়া আমাদের ভাইগুলোর রক্তের দাগ বাংলার জমিনে এখনো শুকায়নি। কী দোষ ছিল তাদের! তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারের কথা বলেছিল। আজ আমাদের আন্দোলনের দাবি একটা, স্বৈরাচার সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।’ 

রুয়েট শিক্ষার্থী তানভীর হাসান বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থীসমাজ আর ঘরে ফিরবে না। এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই।’ 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেওয়া রাবির কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, ‘আর কত ঘরে বসে আমার ছেলেদের রক্ত দেখব। আজ থেকে এ আন্দোলনে গুলি চালালে সেই গুলি আগে শিক্ষকদের গায়ে লাগবে, তারপর আমাদের ছাত্রদের।’ 

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম নামের সিটিএসবির একজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি পুলিশ বক্সে হামলা চালানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।

পটুয়াখালীতে সেনা সরকার দাবিতে স্লোগান
পটুয়াখালীর শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সেনা সরকারের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। সকালে জেলার লেবুখালীস্থ শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা ৯ দফা দাবিসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ করে সেনাবাহিনী সরকারের দাবি তোলেন। 

এ সময় বক্তব্য রাখেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র শান্ত। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আজ আমরা এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি। গত ১৬ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আন্দোলনকারীদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে।’

বরিশালে পুলিশের গাড়িতে হামলা, আহত ৪ 
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ঢাকা- বরিশাল মহাসড়ক অবেরোধ করেন। এ সময় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মারধরের শিকার হন। পাশাপাশি পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ও পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা।

আহতরা হলেন এপিবিএনের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নেয়ামত হোসেন খান, কনস্টেবল সিফাত, হাসনাত ও রিয়াজ হোসেন। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

দুপুর ১২টার দিকে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নগরীর চৌমাথা এলাকায় আসেন। তারা সেখানে অবস্থান করে নানা স্লোগান দেন। এপিবিএনের দায়িত্বরত সদস্যদের খাবার নিয়ে একটি গাড়ি যাচ্ছিল। গাড়িটি চৌমাথা এলাকায় পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা ঘিরে ধরেন। গাড়িতে থাকা পুলিশকে নামিয়ে মারধর করা হয়। গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। এপিবিএনের এএসআই নেয়ামত খান জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা এপিবিএন সদস্যদের উদ্ধার করে মারকাজ মসজিদে নিয়ে যান। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ইবিতে বিক্ষোভ, ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন শেখপাড়া বাজার হয়ে প্রধান ফটকে এসে মিলিত হয়। এ সময় কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। 

পরে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাদের সঙ্গে মিলিত হন। এ সময় শিক্ষকরা অতিসত্বর শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়করা বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আর কোনো আলটিমেটাম দিতে চাই না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হল খুলে দিতে হবে, তা না হলে আমরা আমাদের মতো ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’

এদিকে আন্দোলন চলমান অবস্থায় আন্দোলনকারীদের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করে এবং শাখা ছাত্রলীগের কার্যালয় ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল’-এর ‘দেশরত্ন’ শব্দটি মুছে দিয়ে ‘স্বৈরাচার’ লিখে দেয়।

হাজারও ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে উত্তাল সিলেট
সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকা নগরীর কেন্দ্রস্থল। চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার সড়কের একাংশে পড়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। ২০১৩ সালের ফেরুয়ারিতে ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ যেভাবে অবস্থান নিয়েছিল, চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত ঠিক একই রূপে গতকাল সকাল থেকে দেখা গেছে সিলেটের এই কেন্দ্রস্থলকে। 

ছাত্র-জনতার অবস্থান ঘিরে পুরো সতর্ক ছিলেন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

দুপুর ১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও চৌহাট্টায় জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অনেক অভিভাবক। 

শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’- এসব স্লোগান দেন। 

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল-গালিব বলেন, ‘আরও কিছুক্ষণ আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। পরবর্তী নির্দেশনা এলে আমরা ফিরে যাব। তবে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। রবিবার থেকে আমরা অসহযোগ আন্দোলন শুরু করব।’ 

সুনামগঞ্জে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মাঠে ছিল আ.লীগ
সুনামগঞ্জে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মাঠে সরব ছিল আওয়ামী লীগও। তবে পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুপুরে শিক্ষার্থীরা শহরের ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে জমায়েত হলে সেখানে পুলিশ অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে। এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহরের ডিএস রোড, আলফাত স্কয়ার, স্টেশন রোড হয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে সমাবেশ করে। মিছিলের সঙ্গে সঙ্গে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ছিলেন। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারের মদদে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার, সব বন্দির মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও হয়রানি বন্ধ না হলে আন্দোলন চলবে। 

এদিকে দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও মিছিল করেন। তারা একপর্যায়ে শহরের আলফাত স্কয়ারে অবস্থান নেন। পৌর শহরের হুসেন বখত চত্বরে আরেক দল নেতা-কর্মী অবস্থান নেন।

সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ 
সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আশপাশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন। দুপুর ১টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরি গেটে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশকে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘আজকে আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাভার অঞ্চলের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবং পেশাজীবী মানুষ একত্রিত হয়েছেন। বিশেষ করে শিক্ষকরাও আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে আছেন। গতকালও সারা দেশে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ আন্দোলন করার চেষ্টা করেছেন। সেখানে আবার পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আমাদের ওপর হামলা করেছে, গুলি চালিয়েছে। আমরা ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ আর ৯ দফায় থাকতে চায় না। সাধারণ মানুষের এখন প্রাণের দাবি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বৈরাচার সরকার নিপাত যাক।’

শরীয়তপুরে ছাত্রলীগের ধাওয়া
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের হয়। শিক্ষকরাও মিছিলে যোগ দেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া দেন। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

শরীয়তপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রহমত উল্লাহ নেহাল বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’

লক্ষ্মীপুরে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল
লক্ষ্মীপুরে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। গতকাল বেলা ১১টা থেকে সড়কে অবস্থান নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে নানা স্লোগান দেন তারা। এর আগে শহরের উত্তর তেমহুনী এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা হাতে লাঠি ‍নিয়ে মিছিল বের করলে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। মিছিলটি সড়ক প্রদক্ষিণ শেষ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখে। আগের দিন আন্দোলকারীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। এ সময় একজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। 

শেরপুরে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি
গতকাল বিকেলে পৌর শহরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কয়েকটি দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা।

এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় চালানো হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ও শিক্ষার্থীদের গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আমরা কর্মসূচি পালন করছি। আমরা আমাদের ভাই-বোন হত্যার বিচার চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত বিচার না পাব, আমরা আমাদের প্রতিবাদ করেই যাব।’ 

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, নরসিংদী, সিলেট, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, বরগুনা, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পিএম
আরব আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় দণ্ডিত হয়েছিলেন ৫৭ বাংলাদেশি। পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান তাদের বিশেষ ক্ষমা করেন। এদের মধ্যে ১৪ জন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন। 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন।

এর আগে শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ বিষয়টি জানানো হয়। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ক্ষমা পাওয়াদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে ১২ জন একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন। তারা রাত ১০টায় চট্টগ্রামে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয়। পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছিলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের। সেখানে বড় অংশজুড়ে ছিল ৫৭ জনের শাস্তি মওকুফের বিষয়টি। প্রধান উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টকে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট তার কথা রেখেছেন।’

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। এর মধ্যে ৩ জনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি ১ জনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

৪৮ নাগরিকের বিবৃতি জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি ধৃষ্টতাপূর্ণ

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি ধৃষ্টতাপূর্ণ
নাগরিক বিবৃতি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পতনের পর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয় সংগীতসহ জনসাধারণের আবেগ ও অনুভূতি নিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৪৮ নাগরিক। 

তারা বলেছেন, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী গত ৩ সেপ্টেম্বর সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সাম্প্রদায়িক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। আমরা তার এ বক্তব্যের নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এমনকি জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তোলার ধৃষ্টতা দেখাতে পরিকল্পিত প্রচার শুরু করেছে। মাত্র কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির জাতিকে অতীতের সবকিছু ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অনুমান করা যায়, অতীত বলতে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সেই সময়ে তার দলের ভূমিকার কথাই বুঝিয়েছেন। তিনি যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই বোঝাতে চেয়েছেন, তা আরও পরিষ্কার হলো জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী গত ৩ সেপ্টেম্বর সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা থেকে। আমরা তার এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সাম্প্রদায়িক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অর্থ এই নয়, যেখানে যা খুশি তাই বলা। যে উদ্দেশ্যে তিনি ৩ সেপ্টেম্বরের সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন, এর বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের মূলনীতির প্রতি কটাক্ষ করে তিনি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আবেগের জায়গায় আঘাত করেছেন।

এতে বলা হয়, সবার মনে রাখা দরকার, ১৯৭১ সালে তরুণ, ছাত্র, কৃষক-শ্রমিক-সেনা-পুলিশ সদস্যসহ সর্বস্তরের বিভিন্ন ধর্ম-জাতি-বর্ণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষ জীবনপণ লড়াইয়ে ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধে চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামের আমাদের এই প্রিয় দেশটিকে স্বাধীন করেছিলেন। এর জন্য বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর জামায়াতসহ বিভিন্ন দলীয় ঘাতক বাহিনীর অবর্ণনীয় বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার শিকার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষ নারী-পুরুষ, ছাত্র-শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী-লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের অগণিত ব্যক্তি ও পরিবারকে। সেই ইতিহাস এই দেশের প্রজন্মের পর প্রজন্মের মানুষ মনে রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও মনে রাখবে। এই ইতিহাস ভুলে যাওয়ার কথা বলার অধিকার কিংবা দুঃসাহস কারোরই থাকার কথা নয়। আর জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গেয়েই বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনপণ লড়াইয়ের শপথ নিয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন। তাদের অনেকে শহিদ হয়েছেন, অনেকে শারীরিক পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা যে যুদ্ধ করেছেন, জাতীয় সংগীত ছিল তাদের প্রেরণার সার্বক্ষণিক উৎস। তাই জাতীয় সংগীতটি কার্যত যুদ্ধের মধ্য দিয়েই লাখো শহিদের রক্তে নতুনভাবে আমাদের প্রাণের সংগীত হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একে নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা। একে কোনোভাবেই এই দেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা গুমের শিকার হয়ে রাষ্ট্রীয় সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গোপন আটক কেন্দ্র ‘আয়নাঘর’-এ দীর্ঘ আট বছর বন্দি ছিলেন। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্তিসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন এজেন্সির দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের দাবিতে আমরা বরাবরই সোচ্চার ছিলাম, এখনো আছি। আমরা চাই সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তাসহ যারা ‘আয়নাঘর’-এ আটক ছিলেন, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা সবাই ন্যায়বিচার যেন পান। আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ন্যায়বিচারের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করবে। কিন্তু তার সঙ্গে জাতীয় সংগীত কিংবা মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা নিতান্তই উদ্দেশ্যমূলক। তাই যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কিংবা জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেষ্টা করছেন কিংবা অসত্য তথ্য প্রচার করছেন, তাদের এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আরও বৃহৎ কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।

এতে বলা হয়, শত শত শিক্ষার্থী, শিশু, কিশোরী-কিশোর ও জনতার প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতন্ত্রের যে বিজয় অর্জিত হলো, তাকে সংকীর্ণ দলীয় ও গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলের জন্য কোনো সাম্প্রদায়িক অথবা অন্য গোষ্ঠী যাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য আমাদের সবাইকে সদা সতর্ক, সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি উপাচার্য পারভীন হাসান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসেন, আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ঈশানী চক্রবর্তী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহা মির্জা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ল্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. সাদাফ নুর, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ড. নূর মোহম্মদ তালুকদার, নতুন দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম বাবলা, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি এ এস এম কামালউদ্দিন, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিদুর রহমান লাল্টু, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, এমএসএফের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহদাত আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এম খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজিজুল্লাহ ইমন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রিন্স আল মাসুদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শায়লা শারমীন, মানবাধিকার কর্মী তাপসী রাবেয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আজমীর হোসেন, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, মানবাধিকার কর্মী ও সংগীতশিল্পী বাপ্পী মাশেকুর রহমান, আদিবাসী অধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, সাঙ্গাত’র কোর গ্রুপ মুক্তাশ্রী চাকমা ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।

 

সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা
ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের সদরঘাট টার্মিনাল, টার্মিনাল কাউন্টার, লঞ্চের পন্টুন এবং ওয়াইজঘাট-সিমসনঘাটের খেয়াঘাট পরিদর্শন করেছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এসব পরিদর্শন করেন তিনি। 

এ সময় বন্দর কর্মকর্তা কবীর হোসেন ঢাকা নদীবন্দরের বিভিন্ন কাজের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে তুলে ধরেন। 

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ঢাকা নদীবন্দরের ঘাটের রাজস্ব বাড়াতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে তাগিদ দেন। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত রাজস্ব আদায় কার্যক্রম সচল করার উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দেন। প্রতিটি ঘাট-পয়েন্টে সরকার নির্ধারিত রেট চার্ট দৃশ্যমান স্থানে স্থাপনের জন্যও নির্দেশনা দেন। এ প্রেক্ষিতে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা আগামী সাত দিনের মধ্যে রেট চার্ট স্থাপন করা হবে বলে জানান। 

ঢাকা নদীবন্দরের সার্বিক কার্যক্রম দেখে নৌপরিবহন উপদেষ্টা সন্তুোষ প্রকাশ করে বন্দরের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থেকে নৌ-সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় নিয়মাগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে এবং লঞ্চের  রুট পারমিট ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআইডব্লিউটিকে দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন।

এ সময় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং ঢাকা নদীবন্দরের বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সালমান/

লুট হওয়া ৫৩ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২৫

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পিএম
লুট হওয়া ৫৩ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২৫
পুলিশ সদর দপ্তর

সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ৫৩টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশসহ যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে এই অস্ত্র উদ্ধার করেছে। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো হলো রিভলবার ২টি, পিস্তল ১৮টি, রাইফেল ২টি, শটগান ১১টি, পাইপগান ১টি, শুটারগান ৬টি, এলজি ৩টি, বন্দুক ৩টি, একে ৪৭ ১টি, গ্যাসগান ১টি, চায়নিজ রাইফেল ১টি, এয়ারগান ১টি ও এসবিবিএল ৩টিসহ মোট ৫৩টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এ সময় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলবে। যাদের কাছে চোরাই অস্ত্র পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

রাঘববোয়ালদের ধরতে কঠোর অবস্থানে সরকার : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
রাঘববোয়ালদের ধরতে কঠোর অবস্থানে সরকার : অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আর্থিক খাতের রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটা আরও দৃশ্যমান হবে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (বিআইজিএম) এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এটা প্রাথমিক উদ্যোগ। এর পরে এ নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে দোষ পেলে তাদের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দ্রুততম সময়ে এসব কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি কালোটাকা সাদা করার সুযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করেছে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘কালোটাকা সাদা করার সুযোগ না থাকায় এনবিআর অর্থ লোপাটকারীদের সহজে ধরে ফেলবে। যাদেরই অপ্রদর্শিত আয় আছে, তাদের ধরবে।’

বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা 

বাজারে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চ দাম নিয়ে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দাম যে একেবারে কমেনি, তা নয়। চট করে তো সমাধান হবে না। আস্তে আস্তে কমে আসবে। ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আলু ও পেঁয়াজের শুল্ক কমানো হয়েছে। বাজার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার জন্য। আশা করি, চাঁদাবাজ কমলে নিত্যপণ্যের দাম কমবে। দাম শুধু কারওয়ান বাজারে দেখলে হবে না, অন্য বাজার দেখতে হবে। কারওয়ান বাজারে চারবার হাতবদল হয়, এটা বন্ধ করা হবে। এ জন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হবে। তবে পণ্যের উৎপাদনকারীরা যেন ন্যায্যমূল্য পান, তা দেখা প্রয়োজন।’

বিভিন্ন তৈরি পোশাকশিল্প কারখানায় কয়েক দিন ধরে অস্থিরতা চলছে। শিল্প-কারখানা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘পোশাক খাতের অস্থিরতা কমাতে মালিক, শ্রমিক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুত এটা সমাধান হবে।’ 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা ইউনিট আগে চালু হোক। এরপরে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শুরু হবে।’