ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ধানমন্ডি ৩২ ও আ.লীগ অফিসে ভাঙচুর-আগুন

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৮ পিএম
ধানমন্ডি ৩২ ও আ.লীগ অফিসে ভাঙচুর-আগুন
ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত নানা সামগ্রী নিয়ে যান ও পুরো ভবনে অগ্নিসংযোগ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা হয়। ভবনটির বিভিন্ন তলায় ও রুমে ভাঙচুর করা হয়। পরে পুরো ভবনে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভবনের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভাঙচুর করা হয়েছে। আশপাশের ভবনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি।

সুধা সদনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ : ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত বাসভবন সুধা সদনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সুধা সদন ভাঙচুর করে তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বের করে যে যার মতো নিয়ে যান। বাড়ির ভেতরেও আগুন দেওয়া হয়েছে। 

বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাঙচুর : অন্যদিকে রাজধানীর বিজয় সরণিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একদল মানুষকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার বিজয় সরণিতে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য’ উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
 
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়সহ ৩ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড : এদিকে, সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। পরে পরিস্থিতি বুঝে তারা বেরিয়ে যান। বেলা ৩টার দিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা হয়। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করেন। তারা নিচতলা থেকে সাততলা পর্যন্ত উঠে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। অন্যদিকে এদিন বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩/এ সড়কে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা হয়। এ সময় সেখানে দলটির কোনো নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন না। তবে কার্যালয়টির তিনজন কর্মচারী থাকলেও হামলার কয়েক মিনিট আগে তারা বেরিয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টাফ জানান, অনেক মানুষ এসে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা করেছেন। তারা ভাঙচুর করে দুটো ভবনেই আগুন ধরিয়ে দেন। আমরা তিনজন স্টাফ দ্রুত বের হয়ে এসেছি।

একইভাবে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

ঢামেক হাসপাতালে কয়েদির মৃত্যু

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
ঢামেক হাসপাতালে কয়েদির মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোহাম্মদ স্বপন (৩৬) নামে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে কারারক্ষীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কারারক্ষী মো. মেহেদী হাসান জানান, স্বপন কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদি হিসেবে ছিলেন। তার বাবার নাম ইদু মিয়া। তবে কী মামলায় আটক ছিলেন তা জানা যায়নি।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আল-আমিন/সালমান/

সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অন্তরায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অন্তরায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

সীমান্ত হত্যাকাণ্ডকে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো করার অন্তরায়।’ 

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা নিয়ে ভারতকে উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে অনেকদিন ধরেই। এর পরও তা বন্ধ হয়নি। সবশেষ আজ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামের এক কিশোর বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। এ সময় ওই কিশোরের বাবা মহাদেব সিংহ ও আরেকজন আহত হন।

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে স্বর্ণা দাস নামে এক কিশোরী নিহত হন। 

এই ঘটনার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। 

অমিয়/

গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের কারিগর এলজিইডি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের কারিগর এলজিইডি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও অগ্রগতিবিষয়ক পর্যালোচনা সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান কার্যালয়ে এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও অগ্রগতিবিষয়ক পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে এই পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. শের আলী খান এবং মো. নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

হাসান আরিফ বলেন, বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করা এখন একান্ত জরুরি। সাম্প্রতিক বন্যায় রাস্তাঘাটের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্যোগের সময় একটি গোষ্ঠী খুশি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব গোষ্ঠীর হয়তো দুর্নীতির নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু এসবকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।

দেশের রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যাধিক - এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যাধিক কিন্তু এর স্থায়ীত্ব কম। এমন অভিযোগ প্রায়ই আসে। এলজিইডির দুর্নীতির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে হবে। ছাত্র, কৃষক-শ্রমিক জনতার অভ্যূত্থানের মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হলো তার একমাত্র লক্ষ্য রাষ্ট্র সংস্কার। এই সংস্কার করতে দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নে এলজিইডিকে সহায়ক ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এলজিইডি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে থাকে। এই গ্রামে গ্রামে চলমান কর্মযজ্ঞে মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে হবে।

বাসস/অমিয়/

বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ পিএম
বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট
ছবি : সংগৃহীত

সিলেটে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে দিনে রাতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লোডশেডিং। ভাদ্র মাসের অসহনীয় নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে এই লোডশেডিং। কিন্তু এই লোডশেডিং সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারছে না সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

সিলেট নগরীর একাদিক বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিলেটের এই লোডশেডিংয়ে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো হাত নেই। কারণ গ্রিড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি) থেকে। এই এনএলডিসি থেকে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় এটা সঠিক নয়। কারণ যখন বিদ্যুতের চাহিদা পরিমাপ করা হয় তখন এনএলডিসি থেকে বলা হয়, কোনো কিছু বন্ধ করা যাবে না। এই চালু অবস্থায় যখন লোড পরিমাপ করে তখন সর্বোচ্চ চাহিদা ৩০ শতাংশ কম থাকে। কারণ তখন গ্রাহকদের ফ্রিজ, আইপিএস, ব্যাকআপ লাইট, চার্জিং ফ্যান লোড নেয় না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকে না তখন আইপিএস, ফ্রিজ, চার্জিং লাইট ফ্যান লোড নেবে। যার ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বেড়ে যায়। কিন্তু এনএলডিসি বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেয় স্বাভাবিক সময়ের অনুপাতে। যার ফলে লোডশেডিং হয়ে যায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। কিন্তু কাগজে পত্রে এনএলডিসি দেখায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ লোডশেডিং।  

অপরদিকে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, সারাদেশের নয়টি জোনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কোনো লোডশেডিং দেয় না এনএলডিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিলেটসহ কয়েকটি জোনে স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। 

গত ৪ সেপ্টেম্বরের এনএলডিসির সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, ঢাকা জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ১২২৩.৯ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি ঢাকা জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১২২৪ মেগাওয়াট। চট্টগ্রাম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৮৮২.০ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি চট্টগ্রাম জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ৮৮২ মেগাওয়াট। 

পক্ষান্তরে ওইদিন সিলেট জোনে বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয় ২১৫.৪ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি সিলেট জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১৭৮ মেগাওয়াট। এবং স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে সিলেটে ৩৭.৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে বলা হয়।

এনএলডিসি এর এই বৈষম্যমূলক লোড বরাদ্দ দেওয়া প্রায় বছর দেড়েক ধরে চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে তুলনামূলক অনেক কম চাহিদা থাকার পরও অদৃশ্য কারণে সিলেটে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বরাদ্দ দিচ্ছে না এনএলডিসি। একদিকে তাদের সঠিক লোড পরিমাপ না করা এবং ক্রটিপূণভাবে যে লোডের চাহিদা নেওয়া হয় সেটাও পুরোপুরি না দেওয়ায় সিলেট জোনের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ২৬ লাখ। ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার থেকে চাহিদার থেকে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে পিক আওয়ারে লোডশেডিং করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধরা হয় ডে-পিক আওয়ার। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্তও থাকে পিক আওয়ার। 

এদিকে এই পিক আওয়ারের হিসেবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ১১ ঘন্টা লোডশেডিং করতে হয় সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের। অপরদিকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

অনেক সময় দায়িত্বরত প্রকৌশলী, অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধরও করেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। অনেকেই আবার ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালিও করেন বলে জানান সিলেটের বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)  সিলেট বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই লোড মেনেজন্টে করে এনএলডিসি। তারা আমাদের বলে আজ লোড মাপা হবে। আজ কোনো লাইন বন্ধ করবেন না। সব চালু  থাকবে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য ছিল মিটারে ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ লোড রেকর্ড হওয়া আছে। আপনার এই ডিমান্ড থেকে লোড দেন। কিন্তু তারা এটা থেকে নেয় না। মনে করেন আপনার বাসায় সারাদিন বিদ্যুৎ থাকলে বাসার এসি, ফ্রিজ, আইপিএস, লাইট ফ্যান সব চার্জ হয়ে থাকবে। তখন তারা কোনো লোড নেবে না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এসব বিদ্যুৎ নেওয়া শুরু করবে। তাহলেতো চাহিদা বেড়ে যাবে। ওই গ্যাপটা কারো নজরে আসতেছে না। আমরা চাচ্ছি সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে। আমরা আগেও এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি যারা ভিজিট করতে আসে তাদের মিটিং, ডিসি অফিসের মিটিংয়েও আমি এই লোড বরাদ্দের বিষয়টা নিয়ে বলেছি কিন্তু তৎকালীন ডিসি সাহেব ধমক দিয়ে আমাকে চুপ করিয়ে দেন। উনি বলতেন বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছে সিলেট।’

এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্ট আমাদের হাতে নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগতও করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অথচ এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। তারপরও জনগণের ক্ষোভের শিকার আমরাই হই।’

সিলেটে বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে বৈষম্যের ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের সিস্টেম অপারেশন অফিসের প্রধান প্রকৌশলী ও ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম মিজানুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত দুদিন থেকে আমরা ঢাকাতেও লোডশেড দিচ্ছি। যেহেতু এখন আমাদের বিদ্যুতের ক্রাইসিস বেড়েছে সেজন্য সব জোনে লোডশেড সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ঢাকাতেও কিছু লোডশেড দেওয়া হয়েছে।’

সারা বাংলাদেশে একই অনুপাতে লোডশেড করতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটাই ইমপ্লিমেন্ট করার চেষ্টা করছি। পার্সেন্টিজ অনুযায়ী লোডশেড করার পরিকল্পনা হচ্ছে। আমাদের বর্তমানে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ লোডশেডিং আছে।’

কাগজে কলমে আর গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং চিত্র ভিন্ন কেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। এই ক্রাইসিস থাকবে না। আগামী ১৫ তারিখ পর এই ক্রাইসিস কমে যাবে।

অমিয়/

২৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
২৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

দেশের ২৫টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হোসনা আফরোজ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি হওয়া এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

প্রজ্ঞাপনে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জে নতুন ডিসি নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। 

এর আগে গত ২০ আগস্ট এসব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে বদলি করা হয়।

জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানভীর আহমেদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পি কে এম এনামুল করিম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. ফরিদুর রহমান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব মুফিদুল আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব তরফদার মাহমুদুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারহানা ইসলাম, দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব মো. অহিদুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।

তাছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হোসনা আফরোজা, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত উপসচিব ফরিদা খানম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সংযুক্ত উপসচিব খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাফিসা আরেফীন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আমিরুল কায়সার, বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম এবং ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান নিয়োগ পেয়েছেন।

অমিয়/