ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দেশজুড়ে নজিরবিহীন নৈরাজ্য, নিহত ৮২

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০১:১৬ এএম
দেশজুড়ে নজিরবিহীন নৈরাজ্য, নিহত ৮২
ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (৫ আগস্ট) সারা দেশে নজিরবিহীন নৈরাজ্য হয়েছে। এ নৈরাজ্য-সহিংসতায় অন্তত ৮২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকায় নিহত হয়েছেন ৫৩ জন। এ ছাড়া দেশের ৯টি জেলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক শ। আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর:

ঢাকায় নিহত ৫৩ 

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নিহত হয়েছেন ৪০ জন। যাত্রাবাড়ীতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা থানা ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে সেখানে ১৫০ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যান। এ ছাড়া উত্তরায় ১০ জন ও মিটফোর্ড হাসপাতালে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন রাসেল (২৮), সুমন (৩৩), সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন (২৪), তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান (২২), অজ্ঞাতনামা (২৭), সাইফুল ইসলাম তন্ময় (২২), প্রবাসী আবু ইসহাক (৫২), আজমত মিয়া (৪০), পূবালী ব্যাংকের স্টাফ মানিক মিয়া (২৭), অজ্ঞাতনামা (২৫), আশিকুর রহমান (১২), সোহেল (৪৫), আজাদ হোসেন (২৩), আকবর হোসেন (৩৩), আরমান মিয়া (২০), মমিন হোসেন (২৩)। অন্যদের নাম জানা যায়নি। এ ছাড়া গতকাল ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৭৬ জন। এর মধ্যে ৫১ জন ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর থানায় উত্তেজিত লোকজন ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পুলিশ তাদের বারবার সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলে তারা যাননি। এতে সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রায় ৬০ জন আহত হন। 

পরে আহতদের সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় দুপুর ১টার দিকে কারফিউ ভঙ্গ করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি করে। এতে সেখানে ৭০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সাইনবোর্ড এলাকায় পুলিশের রাবার বুলেট ও গুলিতে ৪০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। যাত্রাবাড়ীর তিনটি স্পটের মোট ৪০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকায় গোলাগুলিতে একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির বয়স ৩০। তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালে মারা গেছেন। এ ছাড়া গতকাল দুপুর ১২টার দিকে উত্তরার আজমপুর এলাকায় ও উত্তরা পশ্চিম থানায় গোলাগুলিতে ১৯ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

রাজধানীর পল্টন, খিলক্ষেত, ভাটারা, মিরপুর, আদাবর, উত্তরা পূর্ব থানা, যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। বাড্ডা থানার মধ্য থেকে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে ভাঙচুর করার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, যাত্রাবাড়ীতে গোলাগুলিতে অনেক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

বরিশালে সাদিক আব্দুল্লাহর বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত্যু তিনজনের

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর পোড়া বাসভবন থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনে পুড়ে চেহারা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় লাশের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ারম্যান মো. বশির উদ্দিন। তিনি বলেন, দুপুরে সাদিক আব্দুল্লাহ বাসভবনে একদল দুর্বৃত্ত আগুন দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মায়নাতদন্তের জন্য শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সময় সাদিক আব্দুল্লাহ সেখানে ছিলেন কি না, নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হবিগঞ্জে নিহত ৬, থানায় আগুন

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। তাদের মধ্যে অন্তত আটজনের অবস্থা গুরুতর।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বড় বাজার থেকে থানার দিকে আসতে থাকে। ঈদগাহের সামনে মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। কিন্তু গণজোয়ারের মুখে পুলিশ পিছু হটে। পরে আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করেন। ডাকবাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন বানিয়াচংয়ের যাত্রাপাশা মহল্লার সানু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (১২), মাঝের মহল্লা গ্রামের আব্দুর নূরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (১৭), পাড়াগাঁও মহল্লার মোজাক্কির মিয়া (৪০), কামালহানি মহল্লার নয়ন মিয়া (১৮), যাতুকর্ণপাড়া মহল্লার তোফাজ্জল (১৮) ও পূর্বঘর গ্রামের সাদিকুর (৩০)।

হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন নূরুল হক বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
খুলনায় বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত্যু আ.লীগ নেতার 

বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মহসিন রেজাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত অন্য দুজন হলেন জি এম মহসিন রেজার গাড়িচালক আলমগীর ও ব্যক্তিগত সহকারী মফিজুল ইসলাম। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। 

শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ও দেশত্যাগের খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা জি এম মহসিন রেজার বাসভবনে হামলা করেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত পিস্তল দিয়ে সাতটি গুলি করেন। এতে সাতজন গুলিবিদ্ধ হন।

পরে বিক্ষুব্ধ জনতা জি এম মহসিন রেজার বাসায় ঢুকে তাকে ব্যাপক মারধর ও মালপত্রে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে রেজার মৃত্যু হয়। একই সময় ঘটনাস্থলে থাকা তার আরও দুই সহযোগী নিহত হন। 

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

রাজশাহীতে শিক্ষার্থী নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩০

রাজশাহীতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে সবুজ নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুর ১টার দিকে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হন। সবুজ বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি নগরীর রানীনগর এলাকায়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকে নগরীর তালাইমারীসংলগ্ন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে আসেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এদিকে নগরীর আলুপট্টি মোড়ে সশস্ত্র অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি সাগরপাড়া মোড়ে পৌঁছলে তারা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেন। মিছিল থেকে ককটেল ছুড়ে মারা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। এরপর পুলিশ এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। গুলি ছোড়েন নেতা-কর্মীরা। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবুজ পালিয়ে শাহ মখদুম কলেজের পাশে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই বাড়িতে ঢুকে সবুজকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪০ জনের মধ্যে ৩৭ জন এসেছেন রাজশাহী মহানগর থেকে। তিনজন এসেছেন জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে। ভর্তি ৪০ জনের মধ্যে ৩০ জনই গুলিবিদ্ধ। 

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, সংঘর্ষে হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। 

ফরিদপুরে থানায় আগুন, নিহত ১ 

ফরিদপুর সদর থানায় আগুন ও অস্ত্রাগার লুট করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার সন্ধ্যার আগে তারা থানাটি দখলে নিয়ে নেন। এর আগে পুলিশ থানা থেকে বের হয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে বের হয়ে যায়। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম সামসু বলে জানা গেছে।

টাঙ্গাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

টাঙ্গাইল সদরে দুজন এবং ধনবাড়ী উপজেলায় একজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল সদর থানা এবং বিকেলে ধনবাড়ী থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সোহেল। বাড়ি ভূঞাপুরে। সে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। 

পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) নাহিদ আরেফিন জানান, গুলিবিদ্ধ দুজনের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

এ ছাড়া ধনবাড়ীতে থানায় হামলা করার সময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। 

চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ নেতার বাসায় আগুন, ৪ জনের মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গা শহরের সিনেমা হলপাড়ায় যুবলীগের সাবেক নেতা আরেফিন আলম রঞ্জুর ভবনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আটজনকে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনা ঘটে।

পরে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভবনের চতুর্থ তলা থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘নিচ থেকে চারতলা পর্যন্ত আগুন লেগেছিল। আমরা এসে নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে ভবনের চতুর্থ তলা থেকে আটজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। এখন চারজনের লাশ পাওয়া গেছে।’

এদিকে গাজীপুরে ছয়জন ও সাতক্ষীরায় চারজন নিহত হয়েছেন।

ছিদ্দিকের নিয়োগ বাতিল, মেট্রোরেলের নতুন এমডি রউফ

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম
ছিদ্দিকের নিয়োগ বাতিল, মেট্রোরেলের নতুন এমডি রউফ
এম এ এন ছিদ্দিক

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা এম এ এন ছিদ্দিকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। 

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তার নিয়োগটি বাতিল করা হয়। 

এ ছাড়া অপর এক অফিস আদেশে তার জায়গায় চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-৫) অতিরিক্ত সচিব ও অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফকে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব শরন কুমার বড়ুয়া স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে এম এ এন ছিদ্দিকের নিয়োগ বাতিল করা হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। 

অপর এক আদেশে বলা হয়, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-৫) অতিরিক্ত সচিব ও অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (অর্থ ও প্রসাশন) মোহাম্মদ আব্দুর রউফকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হলো। তিনি তার বর্তমান পদে আহরিত বেতন ভাতা পাবেন।

জয়ন্ত সাহা/সালমান/

ঢামেক হাসপাতালে কয়েদির মৃত্যু

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
ঢামেক হাসপাতালে কয়েদির মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোহাম্মদ স্বপন (৩৬) নামে এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে কারারক্ষীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কারারক্ষী মো. মেহেদী হাসান জানান, স্বপন কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদি হিসেবে ছিলেন। তার বাবার নাম ইদু মিয়া। তবে কী মামলায় আটক ছিলেন তা জানা যায়নি।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আল-আমিন/সালমান/

সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অন্তরায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অন্তরায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

সীমান্ত হত্যাকাণ্ডকে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো করার অন্তরায়।’ 

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা নিয়ে ভারতকে উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছে অনেকদিন ধরেই। এর পরও তা বন্ধ হয়নি। সবশেষ আজ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামের এক কিশোর বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। এ সময় ওই কিশোরের বাবা মহাদেব সিংহ ও আরেকজন আহত হন।

এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে স্বর্ণা দাস নামে এক কিশোরী নিহত হন। 

এই ঘটনার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। 

অমিয়/

গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের কারিগর এলজিইডি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের কারিগর এলজিইডি: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও অগ্রগতিবিষয়ক পর্যালোচনা সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গ্রামবাংলার রূপ পরিবর্তনের প্রধান কারিগর বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান কার্যালয়ে এলজিইডির আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও অগ্রগতিবিষয়ক পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে এই পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. শের আলী খান এবং মো. নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।

হাসান আরিফ বলেন, বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করা এখন একান্ত জরুরি। সাম্প্রতিক বন্যায় রাস্তাঘাটের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত করতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্যোগের সময় একটি গোষ্ঠী খুশি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব গোষ্ঠীর হয়তো দুর্নীতির নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়। কিন্তু এসবকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।

দেশের রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যাধিক - এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাস্তাঘাট নির্মাণ ব্যয় অত্যাধিক কিন্তু এর স্থায়ীত্ব কম। এমন অভিযোগ প্রায়ই আসে। এলজিইডির দুর্নীতির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে হবে। ছাত্র, কৃষক-শ্রমিক জনতার অভ্যূত্থানের মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হলো তার একমাত্র লক্ষ্য রাষ্ট্র সংস্কার। এই সংস্কার করতে দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নে এলজিইডিকে সহায়ক ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এলজিইডি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে থাকে। এই গ্রামে গ্রামে চলমান কর্মযজ্ঞে মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে হবে।

বাসস/অমিয়/

বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ পিএম
বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে এনএলডিসির বৈষম্যের শিকার সিলেট
ছবি : সংগৃহীত

সিলেটে একদিকে তীব্র গরম অপরদিকে দিনে রাতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লোডশেডিং। ভাদ্র মাসের অসহনীয় নগরীর বাসিন্দাদের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে এই লোডশেডিং। কিন্তু এই লোডশেডিং সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারছে না সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

সিলেট নগরীর একাদিক বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিলেটের এই লোডশেডিংয়ে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো হাত নেই। কারণ গ্রিড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি) থেকে। এই এনএলডিসি থেকে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় এটা সঠিক নয়। কারণ যখন বিদ্যুতের চাহিদা পরিমাপ করা হয় তখন এনএলডিসি থেকে বলা হয়, কোনো কিছু বন্ধ করা যাবে না। এই চালু অবস্থায় যখন লোড পরিমাপ করে তখন সর্বোচ্চ চাহিদা ৩০ শতাংশ কম থাকে। কারণ তখন গ্রাহকদের ফ্রিজ, আইপিএস, ব্যাকআপ লাইট, চার্জিং ফ্যান লোড নেয় না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকে না তখন আইপিএস, ফ্রিজ, চার্জিং লাইট ফ্যান লোড নেবে। যার ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বেড়ে যায়। কিন্তু এনএলডিসি বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেয় স্বাভাবিক সময়ের অনুপাতে। যার ফলে লোডশেডিং হয়ে যায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। কিন্তু কাগজে পত্রে এনএলডিসি দেখায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ লোডশেডিং।  

অপরদিকে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, সারাদেশের নয়টি জোনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কোনো লোডশেডিং দেয় না এনএলডিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিলেটসহ কয়েকটি জোনে স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। 

গত ৪ সেপ্টেম্বরের এনএলডিসির সারাদেশের জোনভিত্তিক বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ এবং লোডশেড শিটে দেখা যায়, ঢাকা জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ১২২৩.৯ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি ঢাকা জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১২২৪ মেগাওয়াট। চট্টগ্রাম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ৮৮২.০ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি চট্টগ্রাম জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ৮৮২ মেগাওয়াট। 

পক্ষান্তরে ওইদিন সিলেট জোনে বিদ্যুতের চাহিদা দেওয়া হয় ২১৫.৪ মেগাওয়াট। এই চাহিদার প্রেক্ষিতে এনএলডিসি সিলেট জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছে ১৭৮ মেগাওয়াট। এবং স্থানীয় ঘাটতি দেখিয়ে সিলেটে ৩৭.৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে বলা হয়।

এনএলডিসি এর এই বৈষম্যমূলক লোড বরাদ্দ দেওয়া প্রায় বছর দেড়েক ধরে চলছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে তুলনামূলক অনেক কম চাহিদা থাকার পরও অদৃশ্য কারণে সিলেটে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বরাদ্দ দিচ্ছে না এনএলডিসি। একদিকে তাদের সঠিক লোড পরিমাপ না করা এবং ক্রটিপূণভাবে যে লোডের চাহিদা নেওয়া হয় সেটাও পুরোপুরি না দেওয়ায় সিলেট জোনের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ২৬ লাখ। ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার থেকে চাহিদার থেকে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে পিক আওয়ারে লোডশেডিং করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধরা হয় ডে-পিক আওয়ার। বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্তও থাকে পিক আওয়ার। 

এদিকে এই পিক আওয়ারের হিসেবে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কমপক্ষে ১১ ঘন্টা লোডশেডিং করতে হয় সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের। অপরদিকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

অনেক সময় দায়িত্বরত প্রকৌশলী, অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধরও করেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। অনেকেই আবার ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালিও করেন বলে জানান সিলেটের বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। 

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)  সিলেট বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই লোড মেনেজন্টে করে এনএলডিসি। তারা আমাদের বলে আজ লোড মাপা হবে। আজ কোনো লাইন বন্ধ করবেন না। সব চালু  থাকবে। কিন্তু আমাদের বক্তব্য ছিল মিটারে ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ লোড রেকর্ড হওয়া আছে। আপনার এই ডিমান্ড থেকে লোড দেন। কিন্তু তারা এটা থেকে নেয় না। মনে করেন আপনার বাসায় সারাদিন বিদ্যুৎ থাকলে বাসার এসি, ফ্রিজ, আইপিএস, লাইট ফ্যান সব চার্জ হয়ে থাকবে। তখন তারা কোনো লোড নেবে না। কিন্তু যখন বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এসব বিদ্যুৎ নেওয়া শুরু করবে। তাহলেতো চাহিদা বেড়ে যাবে। ওই গ্যাপটা কারো নজরে আসতেছে না। আমরা চাচ্ছি সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে। আমরা আগেও এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি যারা ভিজিট করতে আসে তাদের মিটিং, ডিসি অফিসের মিটিংয়েও আমি এই লোড বরাদ্দের বিষয়টা নিয়ে বলেছি কিন্তু তৎকালীন ডিসি সাহেব ধমক দিয়ে আমাকে চুপ করিয়ে দেন। উনি বলতেন বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছে সিলেট।’

এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্ট আমাদের হাতে নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগতও করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অথচ এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। তারপরও জনগণের ক্ষোভের শিকার আমরাই হই।’

সিলেটে বিদ্যুতের লোড বরাদ্দে বৈষম্যের ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের সিস্টেম অপারেশন অফিসের প্রধান প্রকৌশলী ও ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বি এম মিজানুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত দুদিন থেকে আমরা ঢাকাতেও লোডশেড দিচ্ছি। যেহেতু এখন আমাদের বিদ্যুতের ক্রাইসিস বেড়েছে সেজন্য সব জোনে লোডশেড সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ঢাকাতেও কিছু লোডশেড দেওয়া হয়েছে।’

সারা বাংলাদেশে একই অনুপাতে লোডশেড করতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটাই ইমপ্লিমেন্ট করার চেষ্টা করছি। পার্সেন্টিজ অনুযায়ী লোডশেড করার পরিকল্পনা হচ্ছে। আমাদের বর্তমানে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ লোডশেডিং আছে।’

কাগজে কলমে আর গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং চিত্র ভিন্ন কেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। এই ক্রাইসিস থাকবে না। আগামী ১৫ তারিখ পর এই ক্রাইসিস কমে যাবে।

অমিয়/