ঢাকা ১ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হলেন বঞ্চিত ১১৭ কর্মকর্তা

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০১:৩২ এএম
পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হলেন বঞ্চিত ১১৭ কর্মকর্তা

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদোন্নতিবঞ্চিত ১১৭ কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের গুরুত্বহীন ও ঢাকার বাইরে কর্মরত ছিলেন। 

প্রজ্ঞাপনে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিজ নিজ ব্যাচমেটদের পদোন্নতির তারিখ ধরে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির কথা উল্লেখ রয়েছে। পদোন্নতির তারিখ থেকেই তারা সরকারের আর্থিক সুবিধা পাবেন বলেও জানানো হয়েছে। 

শেখ হাসিনা সরকারের গত দেড় দশকের শাসনামলে প্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা করা হয়। গত ৯ আগস্ট পর্যন্ত চার দিনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক অন্তত ২৫০ জন কর্মকর্তার নামের তালিকা জমা পড়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

পরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার সম্মতিসাপেক্ষে বঞ্চিতদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পদোন্নতির জন্য সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)।

গত ৬ আগস্ট সচিবালয়ে বৈঠক করেন পদোন্নতিবঞ্চিত অন্তত ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সভায় জ্যেষ্ঠতাসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি জানান তারা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে দীর্ঘদিন গুরুত্বহীন দপ্তরে থাকা ২৮ জন কর্মকর্তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। এরপর প্রশাসনে কর্মরত বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করে সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, তালিকায় অন্তত ২৪৪ জনের নাম ছিল। এর মধ্যে বিসিএস ১১তম ব্যাচের ৪ জন, ১৩তম ব্যাচের ৮ জন, ১৫তম ব্যাচের ২১ জন, ১৭তম ব্যাচের ৮ জন, ১৮তম ব্যাচের ২২ জন, ২০তম ব্যাচের ২১ জন, ২১তম ব্যাচের ১০ জন, ২২তম ব্যাচের ৮১ জন, ২৪তম ব্যাচের ১২ জন, ২৫তম ব্যাচের ১২ জন, ২৭তম ব্যাচের ১৩ জন, ২৮তম ব্যাচের ১০ জন এবং ২৯তম ব্যাচের ২২ জন রয়েছেন। 

এই তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা সিনিয়র সহকারী সচিব ও যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও দুদকের মামলা নেই প্রথম দফায় তাদের ১১৭ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। 

এমএ/

বিআইজিডির জরিপ: সংস্কার সম্পন্ন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চায় ৮১ শতাংশ মানুষ

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
বিআইজিডির জরিপ: সংস্কার সম্পন্ন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চায় ৮১ শতাংশ মানুষ
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) একটি জরিপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে ৮৪ শতাংশ মানুষ মতামত দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার এ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ অবস্থায় দেশের শতকরা ৮১ ভাগ মানুষ চাইছে সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করুক।

অন্যদিকে ১৩ শতাংশ মানুষ মনে করে অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) একটি জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ‘পালস সার্ভে-২০২৪: জনগণের মতামত অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক জরিপটি গত ২২ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিআইজিডির উদ্যোগে ‘অভ্যুত্থানের চল্লিশ দিন: মানুষ কী ভাবছে?’ শীর্ষক সভায় ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান জরিপের তথ্যগুলো তুলে ধরেন।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরার পর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য মামুন আব্দুল্লাহিল ও ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমীন, বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।

ওই জরিপে উঠে আসে, ৩৮ শতাংশ মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার তিন বছর বা তার বেশি সময় থাকা উচিত; ৯ শতাংশ দুই বছর; ৩৫ শতাংশ মানুষ এক বছর বা তার বেশি সময় থাকা উচিত। জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করে রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সঠিক দিকে যাচ্ছে; অর্থনীতি সঠিক দিকে যাচ্ছে মনে করে ৬০ শতাংশ মানুষ। ৪০ শতাংশ মানুষ দেশের প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক (মুদ্রাস্ফীতি/ব্যবসায়িক অস্থিতিশীলতা), ১৫ শতাংশ বন্যা, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ৭ শতাংশ ল অ্যান্ড অর্ডারের অবনতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিআইজিডির জরিপের ফলাফল অনুযায়ী দেশের ৭২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করে সাধারণ সময়ের তুলনায় আগস্ট মাসে অপরাধ বাড়েনি, ২৫ শতাংশ মনে করে সাধারণ সময়ের তুলনায় অপরাধ বেড়েছে; আগস্ট মাসে সাধারণ সময়ের তুলনায় সহিংসতা বাড়েনি মনে করে ৭৫ শতাংশ মানুষ, বিপরীতে ২৩ শতাংশ সহিংসতা বেড়েছে মনে করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে ৮৪ শতাংশ মানুষ মতামত দিয়েছে; বিপক্ষে মত দিয়েছে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করে ৮১ শতাংশ মানুষ; সমর্থন করে না ১৪ শতাংশ মানুষ। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন দলনিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন আছে, যেটা ২০২২ সালে করা। এর মাধ্যমে সরকার যাকে চায়, তারাই কমিশনার হন। তারা হন অনুগ্রহদুষ্ট অথবা পক্ষপাতদুষ্ট; এভাবে হয়ে আসছে। এরা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। তিনি বলেন, ‘এখনো দাপ্তরিকভাবে কমিশন হয়নি, তবে আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কিছু ভাবনা জানাচ্ছি। কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে। এই কমিটি হবে ইনক্লুসিভ। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দল, তৃতীয় বৃহত্তম দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, তরুণ প্রতিনিধি, নারীদের প্রতিনিধি থাকতে পারে।’

বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, ‘এর আগেও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে সেটি রাজনৈতিক দলগুলো অনুসরণ করেনি। ফলে আমরা সংস্কার করছি। কিন্তু এটি যদি ফলাফল না দেয়, তাহলে লাভ নেই। তাই কমিশন গঠন হলে আমরা অনেকের মতামত নেব। এর মাধ্যমে সংস্কার সুপারিশকে আমরা প্রতিনিধিত্বমূলক করতে চেষ্টা করব।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেটি ১/১১-এর পরে বাস্তবায়ন হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। কাজেই সংস্কার বললেই হবে না, সেটি আলোর মুখ দেখতে হবে। আমরা পরিবর্তন চাচ্ছি, তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে কি না, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কারের পাশাপাশি যারা অন্যায় করেছেন, নির্বাচনি অপরাধ করেছেন, বিচার হতে হবে। অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে হবে না।’

জরিপে দেশের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৭৭৩ জনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৬৩ জনের জরিপ করা হয়েছে, যা মোট নমুনার ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত ৪৩:৫৭। উত্তরদাতাদের ৬৭ শতাংশ গ্রামের এবং ৩৩ শতাংশ শহরের বাসিন্দা। বিআইজিডির পূর্বের চারটি ভিন্ন গবেষণা থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- এশিয়া ফাউন্ডেশন ও বিআইজিডি সার্ভে-২০২৪, ইয়ুথ সার্ভে-২০২১, মাদ্রাসা সার্ভে-২০২০ এবং ছাত্র পোল-২০২৪। এতে সমাজের নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের নানা পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইলিশ ও সার চোরাচালান প্রতিরোধের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পিএম
ইলিশ ও সার চোরাচালান প্রতিরোধের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নাবিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

নৌপথে ইলিশ ও সার চোরাচালান প্রতিরোধে কোস্টগার্ডকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ডের সদর দপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নাবিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, নিজস্ব চাহিদা বিবেচনায় সরকার এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে না। তাছাড়া বিদ্যমান ডলার সংকটের মধ্যেও সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ সার আমদানির মাধ্যমে সারের জোগান অব্যাহত রেখেছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশসমূহে ইলিশ ও সারের চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কোস্টগার্ডের মূল দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমুদ্র ও নৌপথে ইলিশ ও সারসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। 

তিরি আরও বলেন, বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে নৈতিকতার ক্ষেত্রে স্খলন দেখা দিলেও কেবলমাত্র কোস্টগার্ড নৈতিকতা বিচ্যুত হয়নি এবং অর্পিত দায়িত্বের ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। সেজন্য তাদেরকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
 
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়াল অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী প্রমুখ।

আল-আমিন/অমিয়/

মামলার তদন্ত সাপেক্ষে আসামি গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
মামলার তদন্ত সাপেক্ষে আসামি গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার
ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

মামলার তদন্ত সাপেক্ষে আসামি ধরা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান। ঢাকায় পুলিশ হত্যা, থানায় অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলা হবে। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ক্রিমিনাল ইভেন্ট কখনো তামাদি হয় না। পুলিশ হত্যা এবং থানার লুটপাটের ঘটনায়ও মামলা হবে।’ গণহারে মামলা ও এজাহারে সাংবাদিকদের নাম দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করতে হবে বিষয়টা এ রকম না। সামষ্টিক তদন্ত করে তারপর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে সব মামলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশের ১৭৭টি যানবাহন ও অনেক স্থাপনা ক্ষতি হয়েছে। সেসব ঠিক করার কাজ চলছে। দুই-এক সপ্তাহের ভেতরে সব থানা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে। ট্রাফিকব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ এখন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছে। ধীরে ধীরে আরও উন্নতি হবে। এ ছাড়া ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ আরও সক্রিয় হবে। পুলিশের টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’ 

পুলিশের মনোবল চাঙ্গা করতে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি নিয়ে লোকজন রাস্তায় নেমে অবরোধ করে যানজট সৃষ্টি করছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা প্রধান সড়কে উঠে যাচ্ছে। পুলিশ এসব নিয়ে কাজ করছে। রাস্তা ও ফুটপাত হকারমুক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।’

ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ডিএমপির পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক এমপি সাদেক খান ও ফারুকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
সাবেক এমপি সাদেক খান ও ফারুকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান
সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান ও গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। ছবি: খবরের কাগজ

অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান ও পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই ধরনের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মুনাজ আহমেদ নুরের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের নিয়মিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের দেওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কমিশন এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবরের কাগজকে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম। 

দুদকের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, সংসদ সদস্য থাকার সময় সাদেক খান ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি অবৈধ উপায়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান মুরগি মার্কেট, সাদেক খান শুঁটকি মার্কেট, সাদেক খান ইট মার্কেট, সাদেক খান বালি মার্কেট, সাদেক খান বস্তি ও পেট্রলপাম্পের মালিক হয়েছেন। মোহাম্মদপুর এলাকায় হিন্দু সম্পত্তি দখল করে তিনি এসব স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। তার দাখিল করা নির্বাচনি হলফনামায় নিজ নামে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকার অকৃষি জমি ও যৌথ নামে ১ কোটি ৩১ লাখ ৫২ হাজার টাকার জমি দেখিয়েছেন। তিনি ৫০ শতাংশ অংশীদার, ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকার অ্যাপার্টমেন্ট, বাড়ি, ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবহন ও অন্যান্য সম্পদ দেখিয়েছেন। স্ত্রীর নামে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার গাড়ি, ১ কোটি ১২ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের জমি ও অন্যান্য সম্পদ দেখিয়েছেন। হলফনামায় মোট ৫২ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং জমিসহ দুটি একক বাড়ি ও একটি যৌথ বাড়ি, যার মূল্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। তবে হলফনামার বাইরেও সাদেক খান, তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য উঠেছে দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।

পাবনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় মোট সম্পদ দেখিয়েছিলেন ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় সম্পদ দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থিতি ৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৩ টাকা। শেয়ার কেনা ৪ লাখ ৯০ টাকার। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩ কোটি টাকা। বাস-ট্রাক ও মোটরগাড়ি কেনা ৭৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৫ টাকা। হলফনামার বাইরে দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে গোলাম ফারুক খন্দকারের নামে দেশ-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, অধ্যাপক মুনাজ দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৯ সালের মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ডাটা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যানালাইটিকস প্রোগ্রাম বিভাগ চালু হওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠানটি ডাটা ল্যাব স্থাপন করে। ওই ডাটা ল্যাব স্থাপনে ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৬৪ হাজার ২০২ টাকা খরচ দেখানো হয়। যদিও ল্যাব স্থাপনে মানা হয়নি কোনো নীতিমালা। নিয়মের তোয়াক্কা না করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে ডাটা সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প সঠিকভাবে প্রাক-মূল্যায়ন না করে জেভি অব বিএমআইটি সলিউশনস লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেওয়ার জন্য আই থিসিক্সটি বাংলাদেশ লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়, যা বিধিবহির্ভূত।

মাজারে হামলা না চালানোর আহ্বান সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারির

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ পিএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পিএম
মাজারে হামলা না চালানোর আহ্বান সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারির
জশনে জুলুসে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ইমাম আন্জুমানের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমেদ মাইজভান্ডারি। ছবি: ইন্দ্রজীৎ কুমার ঘোষ

অলি আউলিয়ার মাজার, খানকাহ, দরগাহ শরীফে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো গর্হিত কাজ থেকে উগ্রবাদীদের বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ইমাম আন্জুমানের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমেদ মাইজভান্ডারি। 

তিনি বলেন, মাজারে হামলা করে সুন্নি সূফিবাদী জনতাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। 

আর যেন উগ্রবাদীরা দেশের একটি মাজারেও হামলা করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার উদ্যোগে রাজধানীতে শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। 

এরপর শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন্ আহমদ আল্-হাসানীর মাইজভান্ডারি নেতৃত্বে বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জশনে জুলুস রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

শোভাযাত্রায় নবীপ্রেমিক জনতার বিভিন্ন ইসলামিক হামদ, নাত ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজপথ।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অংশগ্রহণকারীদের হাতে কলেমা তৈয়াবা, জাতীয় পতাকা, আন্জুমানের পতাকা এবং বিভিন্ন বাণী ও শ্লোগান লিখিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়।

শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশ সাইফুদ্দীন আহমেদ মাইজভান্ডারি বলেন, আমরা সুন্নি সূফিবাদী জনতা নবীপ্রেমিক উদার মুসলিম। আমরা উগ্রতা ও হটকারীতায় বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি ইসলাম কায়েম হয়েছে উদারতায়। সূফী সংস্কৃতি ও মাজারসমূহ হলো ইসলামের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক। অলি আউলিয়াগণই খানকাহর পাশাপাশি মাদরাসা ও মসজিদ নির্মাণ করে ইসলাম প্রচারে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন। আমি মনে করি একশ্রেণির উগ্রবাদীরা ধর্মের নামে উগ্রতা প্রদর্শন করে মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মানুষকে ধর্মবিমূখ ও নাস্তিক্যবাদকে উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, মাজার ভেঙে; সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা করে ধর্মকে অবমাননা করা হচ্ছে। সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যার যার মতকে প্রাধান্য দিন। কারো ভিন্ন মতের উপর জুলুম কিংবা জোর জবরদস্তি থেকে বিরত থাকুন।

ইসলাম মানুষকে সত্য, সুন্দর, শান্তি ও কল্যাণের পথ দেখায় বলেও উল্লেখ করেন।

অন্তবর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারী বলেন, সারাদেশে যে সমস্ত মাজার, খানকাহ ভাঙা হয়েছে সেগুলো পূনঃনির্মাণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা এই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, মহানবীর (দ.) এই দুনিয়ায় শুভাগমন সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ। ইসলাম ধর্মেই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার সুখ-সমৃদ্ধি শান্তি কামনা করা হয়েছে। এমন কোনো কাজ করতে বলা হয়নি যাতে করে ইসলামের অবমাননা করা হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, কারও ওপর জোর জবরদস্তি করে যেন ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া না হয়। কারও ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন বিনষ্ট না হয়।

সমাবেশে ও শোভাযাত্রা আরও উপস্থিত ছিলেন- গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান খান মিয়াজি, অধ্যাপক ড. শহীদ মনজু, আন্জুমান সাধারণ সম্পাদক খলিফা মো. আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা মূফতী খাজা বাকীবিল্লাহ আল-আযহারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, মূফতী মাওলানা মাকসুদুর রহমান, শাহ্জাদা সৈয়দ মাহবুব-এ-মইনুদ্দীন, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, বিএসপি মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ সরকার, অতিরিক্ত মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ, সাজ্জাদানশীন পীর, ওলামা-মাশায়েখ, আন্জুমান ও মইনীয়া যুব ফোরামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/