বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা ও হতাহতের ঘটনায় তিন জেলায় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে ২টি, মৌলভীবাজার ও খাগড়াছড়িতে একটি করে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতসহ আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষকে আসামি করা হয়।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া ১৬৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১৫ আগস্ট) রাতে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলা দুটি করেন নিহত কলেজছাত্র সাদ আল আফনানের বিধবা মা নাছিমা আক্তার ও নিহত কলেজছাত্র মো. সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন।
দুই মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর শহরের তিতাখাঁ মসজিদ থেকে তমিজমার্কেট পর্যন্ত এবং মাদাম ব্রিজ এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে মাদাম ব্রিজের সামনে আফনান ও তিতাখাঁ মসজিদের পাশে সাব্বির নিহত হন।
আফনান হত্যা মামলায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামি করা হয়। অন্যদিকে সাব্বির হত্যা মামলায় ৯২ জনের নাম উল্লেখ ও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে একেএম সালাউদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করে ৭১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে সদর থানা পুলিশ।
মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে ছাত্র আন্দোলনে বাধা ও হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে সাবেক ২ এমপিসহ ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ ও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
গতকাল বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক আব্দুল কাদির তালুকদার বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় এ মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক এমপি জিল্লুর রহমান, সাবেক এমপি নেছার আহমদ, মেয়র ফজলুর রহমানসহ অন্যরা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট দুপুরের দিকে মৌলভীবাজারের চৌমোহনা, কোর্টরোড, সেন্ট্রালরোড, শমশেরনগর রোড ও চাঁদনীঘাট এলাকায় শিক্ষার্থী ও জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অভিযুক্তরা হামলা চালান। এ সময় শিক্ষার্থী আহত হন।
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বৃস্পতিবার সকালে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলাটি করেন।
এতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ ও আট শতাধিক জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট সকালে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। দুপুরের দিকে এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে হামলা করে তারা। এ সময় তারা আশপাশের কয়েকটি বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।