ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধা

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৩ পিএম
৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধা
ছবি : খবরের কাগজ

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোর ৬টা। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়ি এবং তার প্রতিকৃতি ঘিরে গোটা এলাকায় আছে কাঁটাতারের বেড়া। তবে ওই সড়কের মূল গেট, মেট্রো শপিংমলের সামনের অংশ, পশ্চিম পাশের গেটসহ আশপাশের সব রোডে ছোট ছোট লাঠি, বাঁশ, পাইপ নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। রাসেল স্কয়ার থেকে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এবং প্রতিকৃতির দিকে যাওয়া দূরের কথা, কাঁটাতারের বেড়ার দিকেও কাউকে যেতে দিচ্ছেন না তারা।

এর আগে বঙ্গবন্ধু ভবনের পশ্চিম পাশের রোড হয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মূল গেটের দিকে যাওয়ার পথেও ছাত্র-জনতার বাধার মুখে পড়তে হয়। অন্তত প্রায় ১০ জনকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলতে হয় আমি সাংবাদিক। তার পরও মূল গেটের পাশে যাওয়া সম্ভব হলো না। তবে মূল সড়কের ফুটওভার পাসে ওঠার সময় এ প্রতিবেদককে একজন বললেন কোনো ভিডিও ও ছবি তুলতে পারবেন না। পরে সেখানে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সহকর্মীদের। কিছুক্ষণ পর বিক্ষুব্ধদের পক্ষ থেকে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়- ‘কোনো ছবি তোলা যাবে না, ভিডিও করা যাবে না।’ সড়কে ছাত্র-জনতার অবস্থানের ছবি তোলার সময় ডেইলি স্টারের এক সাংবাদিকের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করতে বাধ্য করা হয়। সাংবাদিকদের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের আশপাশের বাসিন্দাদেরও ছবি-ভিডিও না তুলতে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দেন তারা। মূল গেট ও সড়কের উভয় পাশই ছিল ছাত্র-জনতার দখলে। তাদের কঠোর বাধার কারণে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা গেল না।

বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্ন বা ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সেখানে অবস্থানকারী ছাত্র-জনতা ওই সব নেতা-কর্মীর মোবাইল ফোন তল্লাশি করেন। অনেককে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গও করে দেন। শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ধরে পাশের নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে আসে এবং তাদের উদ্ধার করে নিরাপদে চলে যেতে সহযোগিতা করে। এ ছাড়া দলটির ২২ নেতা-কর্মীকে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এর আগে সকাল ৭টার দিকে ওই বাড়িতে প্রবেশের সময়ই বাধার মুখে পড়েন বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তার গাড়িসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধরা। অপর গাড়িটি এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল না দিয়েই তাকে ফিরে যেতে হয়। আর গাড়ি ফেলেই পালিয়ে যান ওই নেতা। এ ছাড়া ওই বাড়ির পাশের সব রোডেই যিনি বা যারাই গেছেন, তাদের কেউই ভেতরে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। 

এর আগে শোক দিবসকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২ নম্বর’ কর্মসূচি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে তাদের ওই কর্মসূচিকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে তা ঠেকাতে ১৪ আগস্ট দিবাগত মধ্যরাত থেকেই ওই বাড়ি ঘিরে চারপাশ দখল করে রাখেন ছাত্র-জনতা। ফোক গান বাজিয়ে তাদের উল্লাস করতে দেখা যায়। 

কেমন ছিল আগের শোক কর্মসূচি

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোয় এবার অন্য রকম এক শোক দিবস উদযাপন করতে হলো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও ভক্তদের। কর্মসূচি পালনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী এলেও দেখা যায়নি কোনো নেতাকে। অথচ প্রতিবছর এই দিনকে ঘিরে ভোররাত থেকেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে দেখা যেত শোকের মিছিল। আবাসিক এলাকার দিক থেকে প্রবেশ করতেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সিনিয়র নেতারা। তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে চলে যাওয়ার পর রাসেল স্কয়ারের প্রবেশ পথটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হতো। এরপর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হতো। 

বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন

তবে রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের মানুষ। 

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে আওয়ামী সভানেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান। 

জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগ, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। 

এ ছাড়া গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানান। 

নারায়ণগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মেয়র আইভীর শ্রদ্ধা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। 

সকাল ১০টায় নগরীর ২ নম্বর রেলগেট আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন মেয়র আইভী। 

এ সময় তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর নামে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

ফরিদপুরে সীমিত পরিসরে শোক দিবস পালিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় সীমিত পরিসরে পালিত হয়েছে শোক দিবস। তবে জেলা শহরে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি আওয়ামী লীগ। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতা-কর্মীরা। 

ফরিদপুরের মধুখালীতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সকাল ৯টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে আখচাষি কল্যাণ সংস্থা ভবনের সামনে জাতীয়, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে কালো ব্যাজ ধারণ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন-পরবর্তী সংক্ষিপ্ত র‌্যালি করা হয়। 

শরীয়তপুরে শোক দিবস পালিত

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে শোক দিবস পালিত হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মোবারক আলী সিকদারের নেতৃত্বে জাজিরায় কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে শোক র‌্যালি বের করা হয়। পরে মোবারক আলী সিকদারের বাড়িতে দোয়া ও গণভোজের আয়োজন করা হয়। 

এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ শরীয়তপুর শহরের দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়। পরে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।

একাই শ্রদ্ধা জানালেন সুনামগঞ্জের পৌর মেয়র

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে একাই পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত। 

এদিন দুপুরে একাই জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্বা জানান তিনি। শ্রদ্ধা জানানোর পর ধুলা জমে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি তিনি হাত দিয়ে মুছে দেন। 

গাইবান্ধায় শোক দিবস পালিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় শোক র‌্যালি বের করে আওয়ামী লীগ। সকাল ৮টার দিকে শহরের রেলগেটে দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে জাতীয়, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। পরে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি শোক র‌্যালি পৌর পার্ক হয়ে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ পিএম
সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী গ্রেপ্তার
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা আছে।

তৌফিক-ই-ইলাহী বর্তমানে ডিবি কার্যালয়ে আছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

তুলি/সালমান/

সাম্প্রতিক বিপ্লবের মূলে ছিল প্রকৃত গণতন্ত্রের অভাব: ড. কামাল

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ পিএম
সাম্প্রতিক বিপ্লবের মূলে ছিল প্রকৃত গণতন্ত্রের অভাব: ড. কামাল
ড. কামাল হোসেন

সংবিধান প্রণেতা ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মূলে ছিল দেশে প্রকৃত গণতন্ত্রের অভাব। কাজেই যেকোনো দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তাগিদ দিয়েছেন তিনি। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদের জন্মদিন উপলক্ষে ‘আবুল মনসুর আহমদের সংবিধান চিন্তার প্রাসঙ্গিকতা’ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন ঐতিহাসিক মোড়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছি। একাত্তরে আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত অধিকার নিয়ে এই সংবিধান রচনা করেছিলাম। যেখানে বৈষম্য নিরসন ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের আন্দোলন পুনরায় বৈষম্য নিরসনকে সামনে নিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার কোনো সুযোগ যাতে না থাকে সেই আলোকে সংবিধান সংশোধনে সুপারিশ তৈরি করতে হবে বলে আমি মনে করি। সংশোধিত সংবিধানের কাঠামো এমন হতে হবে, যাতে দেশে কোনো নাগরিকের সঙ্গে অন্যায় অবিচার আর ঘটতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ ছিলেন একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তি। বর্ণাঢ্য তার জীবন-অভিজ্ঞতা। গণতন্ত্রের প্রতি সবসময় তিনি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন, বিশ্বাস করতেন প্রকৃত গণতন্ত্র ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আবুল মনসুর আহমদের সংবিধান চিন্তাকে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম এই প্রণেতা।’

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ আরিফ খান। এ ছাড়া আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন গবেষক এবং সেন্টার ফর পার্লমেন্টারি স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. জালাল ফিরোজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, লেখক ডা. জাহেদ উর রহমান ও সারোয়ার তুষার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি এবং ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ। অনুষ্ঠানে আবুল মনসুর আহমদের সংবিধান চিন্তা একটি সংকলন প্রকাশ করা হয়। 

৭ দিনে ১১১ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫১

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
৭ দিনে ১১১ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫১
পুলিশ সদর দপ্তর

যৌথ বাহিনীর অভিযানে গত ৭ দিনে ১১১টি অস্ত্র উদ্ধার ও ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর হতে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এগুলো উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে ৭টি রিভলবার, ৩০টি পিস্তল, ৯টি রাইফেল, ১৫টি শটগান, ৩টি পাইপগান, ১৬টি শুটারগান, ৫টি এলজি, ১৫টি বন্দুক, ১টি একে-৪৭, ১টি গ্যাসগান, ১টি চাইনিজ রাইফেল, ১টি এয়ারগান, ৩টি এসবিবিএল, ৩টি এসএমজি এবং ১টি টিয়ার গ্যাস লঞ্চার রয়েছে। এসব অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মোট ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। 

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার আগে ও পরের তিন দিনে রাজধানীসহ দেশের প্রায় ৫০০ থানায় হামলা চালানো হয়। ওই সময় লুটপাট করা হয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় থানা, পুলিশের যানবাহনসহ নানা স্থাপনা। এসব ঘটনায় পুলিশের প্রায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও দায়িত্ব নেওয়ার পর আস্তে আস্তে চালু হতে থাকে সব থানার কার্যক্রম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে লুট হওয়া অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অস্ত্র জমার শেষ দিন ছিল গত ৩ সেপ্টেম্বর। এরপর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে নেমেছে। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্র উদ্ধারে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্টগার্ড ও র‌্যাবের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। অস্ত্র জমা দেওয়াসংক্রান্ত জারি করা নির্দেশনার মধ্যে যেমন রয়েছে বিভিন্ন থানা থেকে লুটপাট করা অস্ত্র, তেমনি রয়েছে বৈধ অস্ত্রও। তার মধ্যে গত ১৫ বছরে বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রাষ্ট্রপতির দপ্তরকে ইসির চিঠি এনআইডি স্বরাষ্ট্রে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আইন বহির্ভূত

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ পিএম
এনআইডি স্বরাষ্ট্রে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আইন বহির্ভূত
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি)

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্ত ‘আইন বহির্ভূত’ বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব। এ কারণে সরকার প্রণীত ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩’ বাতিল করে এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির দপ্তরকে আধা সরকারি পত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন সংস্থাটির সচিব মো. শফিউল আজিম। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি দপ্তরের জন বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির কাছে ওই পত্রটি পাঠানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭-০৮ সালে দলমত নির্বিশেষে সবার আস্থার জায়গা থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনডিপিসহ ৯টি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রায় ৮ দশমিক ১০ কোটি নাগরিকের ডেমোগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয়ভাবে ভোটার ডেটাবেজ গড়ে তোলা হয়। 

সর্বশেষ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুসারে, এ ডেটাবেজে প্রায় ১২ দশমিক ১৯ কোটি নাগরিকের তথ্য রয়েছে। ইউএনডিপির সমীক্ষা অনুসারে, ভোটারদের এই সংগৃহীত ডেটা ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ সঠিক মর্মে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০’ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের একই জনবল দ্বারা বিগত ১৭ বছর ধরে নিবন্ধিত নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশব্যাপী নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব অবকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে।

চিঠিতে জানানো হয়, তৎকালীন সরকার সুশীলসমাজ, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্যসমৃদ্ধ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনসংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যস্তকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু বিগত সরকার ‘রুলস অব বিজনেস-১৯৯৬’এর এলোকেশন অব বিজনেস এবং ডিফারেন্ট মিনিট্রিরিজ অ্যান্ড ডিভিশনে সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ অন্তর্ভুক্ত করে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়েই নির্বাচন কমিশনের মতামত নেওয়া হয়নি। কিন্তু সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯(১)-এ স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা, তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত থাকবে।’ 

জাতীয় স্বার্থে অমূল্য এ তথ্যভাণ্ডারকে সুসংহত রেখে অব্যাহত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্তকরণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিলের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে আবেদন জানানো হয়। 

খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজি হলেন আব্দুল খালেক

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পিএম
খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজি হলেন আব্দুল খালেক
খাদ্য অধিদপ্তর

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল খালেককে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। 

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মো. ফাহিমুল ইসলামকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গতকাল জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তাকে (মো. ফাহিমুল ইসলাম) ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে জ্যেষ্ঠতা প্রদান করা হলো এবং তিনি অতিরিক্ত সচিব পদে ভূতাপেক্ষিকভাবে বিধিমোতাবেক আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন।