বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদতবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আবৃত্তিশিল্পীদের অনেকে ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের বিধ্বস্ত ভবনে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী শিল্পীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সেসব পরিস্থিতি নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ্।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আবৃত্তিশিল্পী নুৎফা বিনতে রাব্বানী, শিরিন ইসলাম ও সিফাত সালাম আলাদাভাবে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা তাদের পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। নুৎফা বিনতে রাব্বানীকে দুজন মেয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনিসহ বাকিদের পরে ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আহকাম উল্লাহ্ বলেন, আহত অবস্থায় মেয়েদের রিকশায় তুলে দেন পথচারীরা। উচ্ছৃঙ্খল তরুণরা তখনো তাদের ধাওয়া দেয়। পরে তাদের ধানমন্ডি থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখানে ডিউটি অফিসার ‘ওসি সাহেব নেই বলে’ বেলা ৩টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখেন। পরে নুৎফার মা এসে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নেন।
আহতদের মধ্যে নুৎফা বিনতে রাব্বানীর শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে জানান আহকাম উল্লাহ। অন্যদের সুস্থ হতে সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বেদম মারধরের শিকার হয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল।
আহকাম উল্লাহ বলেন, আমি সবাইকে নিষেধ করেছিলাম যে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যেন না যান। পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। নিরাপদে ঘরে থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি, ১৫ আগস্টে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলেছিলাম ব্যক্তিগত পরিসরে। এখন সংস্কৃতিকর্মীদের আবেগ তো রুখতে পারি না। তারা সেখানে যান। তারপর কারা তাদের মারধর করেছে, তাদের পরিচয় তো সবাই জানি এখন।
বাংলাদেশ আবৃত্তিশিল্পী সমন্বয় পরিষদ শোকাবহ আগস্ট মাসে ‘শ্রাবণের শোকগাথা’ শিরোনামে একটি আবৃত্তি অনুষ্ঠান গত ২৩ বছর ধরে এটি করে আসছে। এবারও সেটি আয়োজন করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টে সরকার পতনের পরে তা ভেস্তে যায়। আহকাম উল্লাহ্ জানান, এই আয়োজনটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত হবে।
জয়ন্ত সাহা/এমএ/