ছবি: খবরের কাগজ
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, জনভোগান্তি, হতাহতের ঘটনা, ও দুর্নীতি উদঘাটনে অবিলম্বে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি এসেছে নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবিদদের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল জলাধার ধ্বংস করে এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্পের ফ্লাইওভার বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ১০০তম দিনে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিবের সঞ্চালনায় ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিআইপি সভাপতি অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, পান্থকুঞ্জ প্রভাতী সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুদ্দিন তুহিন, একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার, প্রাণ প্রকৃতি প্রতিবেশ পরিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটির মুখপাত্র ইবনুল সৈয়দ রানাসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নাঈম উল হাসান বলেন, ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের মূল প্রকল্পটি ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য একনেকে অনুমোদন পায়। তবে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, স্বেচ্ছাচারিতা ও দূর্নীতির কারণে তিন বছরের এই প্রকল্প এক যুগ পার হলেও সম্পন্ন করা যায়নি। এতে এই প্রকল্প ঢাকাবাসীর জন্য জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পের পাশাপাশি সাপোর্ট টু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নাম দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ইউটিলিটিস স্থানান্তর এবং পরামর্শক সেবার বড় একটা খরচ আলাদা করে ফেলা হয়েছে। নামে পিপিপি প্রকল্প হলেও প্রকৃতপক্ষে এই প্রকল্পের প্রায় ৫২ দশমিক ৯ ভাগ আর্থিক বিনিয়োগ হচ্ছে জনগণের করের টাকায়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ের ১২৮ একর জমির বর্তমান বাজার মূল্য ৬ হাজার কোটি টাকা হিসাব করলে এই প্রকল্পের সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ ৬০ শতাংশ পার হয়ে যায়।
বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন এর সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় আইন ও পরিকল্পনার ব্যত্যয় করে পরিবেশ ও জলাশয় ধ্বংসকারী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক এর পূর্ণাঙ্গ কারিগরি নকশা, অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন ও সামগ্রিক লাভক্ষতির উপযোগিতা বিশ্লেষণ, পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদন, পরিবহনগত সমীক্ষা প্রতিবেদন ও সামাজিক প্রভাবগত বিশ্লেষণ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জনগণ এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত সাপেক্ষে পুরো প্রকল্পের পূনর্মূল্যায়ন করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে পান্থকুঞ্জ রক্ষায় ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেন পরিবেশবিদরা।
জয়ন্ত সাহা/মাহফুজ