ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন নতুন সূচি রবিবার থেকে

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন নতুন সূচি রবিবার থেকে
হাইকোর্ট

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশ থাকবে। প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের দীর্ঘ অবকাশকালে আপিল বিভাগের অফিসের সময়সূচি রবিবার হতে বৃহস্পতিবার (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি ব্যতীত) নির্ধারণ করে দিয়েছেন। 

রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার কার্যকাল সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত।

অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের ভেকেশন জজ মনোনীত করার কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত কোর্টের অবকাশকালে আপিল বিভাগের মামলাসংক্রান্ত জরুরি বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য ভেকেশন জজ হিসেবে বিচারপতি মো. রেজাউল হককে মনোনীত করেছেন।

বিচারপতি মো. রেজাউল হক সেপ্টেম্বর মাসে ৯, ১১, ১২, ১৮, ১৯, ২৩, ২৪ ও ৩০ তারিখ এবং অক্টোবর মাসে ২, ৭, ৮, ১৬ ও ১৭ তারিখ বেলা ১১টা থেকে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন।

এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগে জরুরি মামলাসংক্রান্ত বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার দিয়ে কয়েকটি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। খবর বাসসের।

বাড়তে পারে বাঘের সংখ্যা, সুন্দরবনে বাঘশুমারির ফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
বাড়তে পারে বাঘের সংখ্যা, সুন্দরবনে বাঘশুমারির ফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর
ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে। ১ হাজার ২০০-এর বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাব। আশা করি, এবার বাঘ বাড়বে। বাঘ সুন্দরবনসহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে। সচেতনতার কারণেই বাড়ছে বাঘের সংখ্যা। তবে প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরও উপকৃত হবে।’ 

পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংগঠন বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘খুলনা ফরেস্ট অফিস ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে। ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরে বাঘ গণনা ও সংরক্ষণবিষয়ক দুটি মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আমরা জেনেছি সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনার জন্য কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গণনা করলে সুন্দরবনের ওপর চাপ কমবে।

সুন্দরবন পশ্চিম বনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এর আগে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হলেও এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘকে রক্ষার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি। সূত্র: ইউএনবি

 

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ৩১৭ জন

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, আক্রান্ত ৩১৭ জন

ডেঙ্গুতে শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৭ জন রোগী। তবে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। 

হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ ডা. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের হাসপাতালে ৩১৭ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ২৭৩ জন সরকারি হাসাপাতালে এবং ৪৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সব মিলিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭৩ জন। গত ১ অক্টোবর থেকে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন, মৃত্যুর সংখ্যা ১৭৭ জন। ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৭৮৮ জন। 

অন্যদিকে ঢাকা মহানগরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি ১৬৪ জন। গত ১ অক্টোবর থেকে আক্রান্ত সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৭ জন। মৃত্যু ১২৩ জন। ছাড়পত্রপ্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮ জন। বর্তমানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫৬ জন।

শহিদ মিনারে সংখ্যালঘুদের গণসমাবেশ ৮ দফা দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৪ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
৮ দফা দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গণসমাবেশ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট। দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও মন্দিরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ এবং পূর্বঘোষিত আট দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) গণসমাবেশ বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। 

সমাবেশে বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ ক্রান্তি দে বলেন, ‘আমাদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে তা বন্ধের দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য দেশকে অস্থিতিশীল করা নয়। আমরা কেবল অধিকারের জন্য এসেছি। আমরা এ দেশে নিরাপদে বাঁচতে চাই। সেই সঙ্গে অবিলম্বে আমাদের আট দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত প্রামাণিক বলেন, ‘যতদিন আমাদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হবে, অপরাধীদের শাস্তির আওতায় না আনা হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা ভয় নিয়ে থাকব।’

অ্যাডভোকেট সুশান্ত অধিকারী বলেন, ‘সরকার পতনের পর থেকেই যেভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, লুটপাট শুরু হয়েছে তাতে বোঝা যায় এ দেশের সংখ্যালঘুরা কতটা অনিরাপদ! অনতিবিলম্বে বৈষম্য নিরসন করে আট দফার বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ দেখতে চাই।’

অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সনাতনী অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার বলেন, ‘পূর্বঘোষিত আট দফা দাবি না মানলে এবং দুর্গাপূজায় নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

সমাবেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আট দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো: সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য ‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল’ গঠন; ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা; সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন; সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন; সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত ও বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা; দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ; সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ, প্রতিটি হোস্টেলের প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ ও সংস্কৃত পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রধান প্রধান ধর্মীয় উৎসবের প্রয়োজনীয় ছুটি প্রদান।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ পাবেন ১৮ হাজার কর্মী

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম
মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ পাবেন ১৮ হাজার কর্মী
ছবি: পিআইডি

সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও টিকিট জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

শুক্রবার (৪ অক্টেবর) বিকেলে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর ইউএনবি ও বাসসের।

এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য দেশের সব মানুষের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। একই সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও আন্তর্জাতিক সমাধানের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর আগে এদিন বেলা ২টায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষে প্রথম ধাপে ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিকের মালয়েশিয়ায় প্রবেশের বিষয়ে অবিলম্বে মনোযোগ দেবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা পুরো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমাদের শ্রমিক দরকার, তাদের আধুনিক দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না; তারা বাংলাদেশ বা অন্য দেশের যেখানেই আসুক না কেন। আমি এখানকার মতো আগেও প্রকাশ্যে এ কথা বলেছি।’ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বাংলাদেশকে সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি বা বিদেশি- কারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দেন।

আসিয়ান সংলাপে অংশীদার হতে মালয়েশিয়ার সমর্থন চান ড. ইউনূস

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার সমর্থন চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালে আসিয়ানের আসন্ন সভাপতি পদে মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকার অপেক্ষায় রয়েছি।’

দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের সফর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দুই মাস আগে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই সফর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মালয়েশিয়ার সমর্থনের স্বীকৃতি। দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা উভয়েই দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলোকে জোরদার করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আলোচনায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিপ্লব নজিরবিহীন গণ-আন্দোলন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাধীনতা ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়বিচারপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ মালয়েশিয়ার অবিচল সমর্থন ও সহযোগিতার প্রশংসা করি।’ অভিন্ন মূল্যবোধ, আস্থা ও জনগণের কল্যাণের স্বীকৃতির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস জানান, তারা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা মায়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন করার বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধানের জন্য তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি আসিয়ান ফোরামে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় চতুর্থ যৌথ কমিশনের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর জোর দেন। তিনি জানান, তারা কৃষি, জ্বালানি, যোগাযোগ, সুনীল অর্থনীতি, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার ও সংকল্প ব্যক্ত করেছি।’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে আনুমানিক আট লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বসবাস ও কাজ করেন। এর মধ্যে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার লাখ অভিবাসী হয়েছেন। 

‘পুরোনো বন্ধু’ ইব্রাহিমকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেন। এ সময় অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি তার পুরোনো বন্ধুকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে পেরে ‘অত্যন্ত আনন্দিত’, কারণ তারা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে একে অপরকে চেনেন। ড. ইউনূস ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লব, ছাত্র ও জনগণের আত্মত্যাগ এবং পূর্ববর্তী সরকারের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর নেতাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথাও বলেন। তারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকস্থলে যাওয়ার জন্য একই গাড়িতে ওঠেন।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরটি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর এবং টেকসই বন্ধুত্বের অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ‘কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’-এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার কোম্পানি ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর সমস্যা দ্রুত সমাধান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

আরও জনশক্তি রপ্তানিতে সহযোগিতা চাইলেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় যাতে আরও জনশক্তি যেতে পারে, সে ব্যাপারে মালয়েশিয়ার সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই সহযোগিতা চান।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অর্থনীতি সংস্কার’ কর্মসূচিতেও মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতারও অনুরোধ জানান রাষ্ট্রপতি। 

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক, কারিগরি সহযোগিতা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন। 

বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের চারজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সচিব, বাংলাদেশের নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠক শেষে একটি পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

লাল গালিচা সংবর্ধনা

দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে অতি সংক্ষিপ্ত সরকারি সফরে আনোয়ার ইব্রাহিম গতকাল শুক্রবার দুপুর ঢাকায় পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বেলা ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি কয়েক ঘণ্টা কাটান। অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে হাই টি-এর আয়োজন করেন। মালয়েশিয়া বাংলাদেশে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি কোম্পানিসহ মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে এবং এখন শিক্ষাসহ আরও বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।

সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ

বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে গতকাল সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা ত্যাগ করেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত বৈঠক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত বৈঠক
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ড. ইউনূস বলেছেন, পুরোনো বন্ধুকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লব, ছাত্র ও জনগণের আত্মত্যাগ এবং পূর্ববর্তী সরকারের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর নেতাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথাও বলেন ড. ইউনূস।

এরপর তারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে একই গাড়িতে উঠে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ভেন্যুর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।  

এর আগে দুপুর ২টার দিকে সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় পৌঁছান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সূত্র : ইউএনবি

সালমান/