সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সুন্দরবনে ২০২৪ সালে বাঘের সংখ্যা ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ সালে সুন্দরবনের জাতীয় পশু বাঘ জরিপে ১২৫টি বাঘ পাওয়া গেছে। প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ২ দশমিক ৬৪। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বাঘের সংখ্যা ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালের তুলনায় ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সুন্দরবন বাঘ জরিপ ২০২৪’-এর ফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ ছিল, আর ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ১৭। ২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায়, আর ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ৫৫। ২০১৮ সালে বাঘের সংখ্যা ৮টি বেড়েছিল এবং বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।
তাছাড়া, ২০২৩-২৪ সালের জরিপে ২১টি বাঘে শাবকের ছবি পাওয়া গেছে, তবে শাবকদের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ ছোট বয়সে শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ২০১৫ ও ২০১৮ সালে মাত্র ৫টি শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, জরিপের ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এ কাজে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়। জরিপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হয়। সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রিডে এক হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন রেখে দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৩৬৮টি গ্রিডে বাঘের ছবি পাওয়া যায়। প্রায় ১০ লক্ষাধিক ছবি ও ভিডিও থেকে সাত হাজার ২৯৭টি বাঘের ছবি পাওয়া যায়। এত বেশিসংখ্যক বাঘের ছবি এর আগে পাওয়া যায়নি।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির এই খবর দেশের সবার জন্য আনন্দের জানিয়ে তিনি বলেন, বাঘ সংরক্ষণে সরকার ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ বন রক্ষিত এলাকা ঘোষণা, ৬০ কিলোমিটার নাইলন ফেন্সিং, ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, ক্ষতিপূরণ ও পুরস্কার প্রদান এবং ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপনস টিম গঠনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমএ আজিজ, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো এবং প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন প্রমুখ।
অমিয়/