অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় চলমান প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই বড়। এগুলোতে অর্থায়ন বন্ধ হবে না। চালু থাকবে।’ শুধু তা-ই নয়, উভয় দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় আরও প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সাক্ষাতের পর অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আমাদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় অর্থায়ন করা প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়নে উদ্বেগের মধ্যে এ তথ্য জানালেন তিনি।
উল্লেখ্য, এলওসির আওতায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তিন দফা চুক্তি সই হয়। প্রথম এলওসি চুক্তি হয় ২০১০ সালের আগস্ট মাসে, অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি ছিল ২০০ কোটি ডলারের, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে তা সই হয়। ২০১৭ সালের মার্চে ভারতের সঙ্গে চুক্তি হয় ৪৫০ কোটি ডলারের।
প্রতিবেশী দেশ এ পর্যন্ত সড়ক ও মহাসড়ক, রেলপথ ও নৌপরিবহন, বিদ্যুৎ, আইসিটি, টেলিযোগাযোগ, বেসামরিক বিমান চলাচলসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট ৪২টি প্রকল্পে এলওসির আওতায় ৭৩৬ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এলওসির আওতায় প্রায় ২০০ কোটি ডলার ছাড় করেছে ভারত।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারত বড় প্রতিবেশী দেশ। বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ যে একটা ভালো জায়গা, তাকে (প্রণয় ভার্মা) সে কথা জানানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য তাদের সহযোগিতা অক্ষুণ্ন থাকবে।
বৈঠকে এলওসির তিনটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষেত্র আছে। এগুলো কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সে বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।’
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এলওসির প্রকল্পগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখেই সেগুলো হাতে নেওয়া হয়েছিল। এসব প্রকল্প বন্ধ হবে না।’
ভারতীয় হাইকমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারত আরও গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য নেবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা খাতেও ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকরা ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার কাছে বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চান। প্রণয় ভার্মা অর্থ উপদেষ্টার মতোই বলেন, ‘এলওসির প্রকল্পগুলো বড় এবং সেগুলো বন্ধ হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আমরা যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, বৈঠকই তার প্রমাণ। দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিতে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়িত হবে এবং ভারত এ ব্যাপারে ইতিবাচক।’