ঢাকা ২৪ কার্তিক ১৪৩১, শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

গুমসংক্রান্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন আয়নাঘর ছিল

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
আয়নাঘর ছিল
আয়নাঘর নিয়ে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি সংবাদ সম্মেলনে করে। ছবি: সংগৃহীত

আয়নাঘর ছিল। দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া যাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেআইনিভাবে মানুষকে জোর করে তুলে নিয়ে অপহরণ করে গোপন বন্দিশালায় গুম করে রাখত। অপহরণকারীরা সেসব বন্দিশালার নাম দিয়েছে আয়নাঘর। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেই আয়নাঘরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি গুম সংস্কার কমিশন সেই আয়নাঘর পরিদর্শন করেছে। ডিজিএফআইয়ের জেআইসিতেই এমন ২২টি গোপন সেল (বন্দিশালা) পাওয়া গেছে। এসব সেলের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই তথ্য ও গোপন সেলে বন্দিজীবন কাটিয়ে ফেরা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পর্যালোচনা করে আয়নাঘরের নির্মম নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তবে গুম কমিশনের পরিদর্শনের আগেই অনেক আলামত নষ্ট করা হয়েছে। আয়নাঘরের কর্তারা আলামত নষ্ট করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আয়নাঘরে বন্দি রেখে নির্যাতন চালানোর ঘটনায় জড়িত রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), গোয়েন্দা বিভাগ (ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ-ডিবি) প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে বেশি।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গুম কমিশনের সভাপতি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে জানান, কমিশনের কার্যক্রম শুরুর পর গত ১৩ কর্মদিবসে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। ৭৫ জন ভুক্তভোগী সশরীরে কমিশন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। অনেকে ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। অনেকে ই-মেইলে অভিযোগ দিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযোগ নেওয়ার সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে। তিন মাসে তদন্ত শেষ হবে কি না, সেটা বোঝা যাবে আরও পরে।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী আমরা প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে গিয়ে গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছি। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলটি (জেআইসি) ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের ভেতরেই। দোতলা ওই ভবনে ২২টি গোপন সেল আছে। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাদের গুম করেছিল, তাদের অভিযোগগুলো নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদেরও আমরা ডাকব। বক্তব্যের জন্য সমন দেব। অভিযুক্তরা না এলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা ২৫ সেপ্টেম্বর ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শন করেছি। ১ অক্টোবর আমরা ডিবি ও সিটিটিসি পরিদর্শন করেছি। তবে সেখানে কোনো বন্দি আমরা পাইনি। সম্ভবত ৫ আগস্টের পর এসব বন্দিশালা থেকে সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” 

কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগীর পরিচয় দিয়ে তাকে আলাদা করব না। প্রতিটি অভিযোগ আমরা শুনতে চাই। কী হয়েছিল তা জানতে চাই। কীভাবে আইন না মেনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল তা বুঝতে চাই।’

কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস বলেন, ‘৪০০ অভিযোগের মধ্যে অনেকটি ঘটনাই প্রথম সামনে এসেছে। এর আগে কেউ কখনো এসব ঘটনায় গুম নিয়ে কথা বলেননি। থানায় তাদের জিডিও নেওয়া হয়নি। আমরা সবাইকে কমিশনে আসতে আহ্বান জানাই। আমরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে চাই। ঢাকার বাইরে থেকেও অনেক অভিযোগ আসছে। কেউ আসতে না পারলে ডাকযোগে, ই-মেইলে অভিযোগ পাঠাতে পারবেন। আমরা সেগুলোও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখব। কেউ ফোন করলে আমরা তার কথাও শুনব।’

কমিশনের আরেক সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ভিজিটের সময় ডিজিএফআইয়ের যে আয়নাঘর দেখেছি, তার সঙ্গে ভুক্তভোগীদের বর্ণনার মিল পেয়েছি। তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ (এভিডেন্স) তারা নষ্ট করেছে। বিশেষ করে দেয়ালের লেখাগুলো পেইন্ট করে মুছে দেওয়া হয়েছে। আমরা মৌখিকভাবে তাদের বলেছি এবং লিখিতভাবেও তাদের জানিয়েছি যেন যে অবস্থায় আমরা আয়নাঘর দেখে এসেছি, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার কোনো পরিবর্তন যেন না হয়।’ 

গত ১৫ বছরে দেশে-বিদেশে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ঘটনা ছিল সরকারের প্রশ্রয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেআইনি আটক, অপহরণ করে আয়নাঘরে বন্দি রেখে বছরের পর বছর নির্যাতন চালানো। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। এমনকি যারা এ ধরনের গুমের শিকার হয়েছেন এবং কোনোভাবে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছেন, তারাও কাউকে কিছু জানাতে পারেননি। সরকার পরিবর্তনের পর তারা এখন মুখ খুলেছেন। নির্যাতনের ভয়ানক বর্ণনা দিয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন। অনেকেই গুমসংক্রান্ত সংস্কার কমিশনে উপস্থিত হয়ে বর্ণনা দিচ্ছেন তার জীবনে ঘটে যাওয়া লোহর্ষক ঘটনার। 

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা এসব সংস্থার সদস্যদের হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট গুমসংক্রান্ত ‘কমিশন অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে সরকার। অপর সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টি কর্তৃক ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, বলপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান এবং জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে কমিশন।

যেসব কাজ করবে তদন্ত কমিশন
ক. ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টি কর্তৃক ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করা এবং সে উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা।
খ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা এবং এ বিষয়ে সুপারিশ দেওয়া।
গ. জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা।
ঘ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা।
ঙ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ দেওয়া।
চ. জোর করে গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ দেওয়া এবং
ছ. ওপরে বর্ণিত উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট যেকোনো কাজ করা।

কমিশনের কাজের পরিধি
১. তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব করতে ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

২. তদন্ত কমিশন কমিশনস অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ অনুসারে তদন্তকাজ সম্পন্ন করে এই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

৩. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। এ ছাড়া কমিশনকে সহায়তার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিতে পারবে।

৪. তদন্ত কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।

এলএনজি আমদানি দেশের জন্য আর্থিক বোঝা: আনু মুহাম্মদ

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
এলএনজি আমদানি দেশের জন্য আর্থিক বোঝা: আনু মুহাম্মদ
জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি এবং এলএনজির আমদানি দেশের জন্য আর্থিক বোঝা এবং প্রাণ-প্রকৃতির বিনাশের সঙ্গে জড়িত।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন। ধরা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মার্কেট ফোর্সেস এবং ফসিল ফ্রি চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলারের এলএনজি প্রকল্পের ব্যয় ও একটি টেকসই ভবিষ্যৎ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনটি হয়।

আনু মুহাম্মদ বলেন, বিগত সরকার যে এনার্জি পরিকল্পনা তৈরি করেছে তা অনিবার্য ছিল না। এর পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রযুক্তিগত বিকাশ দামে সস্তা। জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জলবায়ু বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বিগত সরকারের এই জ্বালানি মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। নীতিগত জায়গা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে এই মহাপরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। পিএসসিসহ অন্যান্য সব নীতির পরিবর্তন না হলে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গঠন করা যাবে না। এজন্য বাংলাদেশি পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করতে হবে আর বিদেশিদের দিয়ে প্রস্তুত সব পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ধরার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদাদের সভাপতিত্বে এবং ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মার্কেট ফোর্সেসের এশিয়া অ্যানার্জি অ্যানালিস্ট মুনিরা চৌধুরী। 

মার্কেট ফোর্সেস, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কর্তৃক প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্প এবং আমদানি টার্মিনালগুলির জন্য বাংলাদেশকে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। এই প্রকল্পগুলোর কারণে দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে, একই সাথে দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব যেমন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যুৎ খরচের চাপে রয়েছে এবং ব্যয়বহুল আমদানি করা এলএনজির ওপর নির্ভরতা অব্যাহত থাকলে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নতুন বিশ্লেষণে আরও প্রকাশিত হয়েছে যে, যখন দেশটি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বিদ্যুতের চাহিদার সংকটে রয়েছে, এলএনজির ওপর ৫০ বিলিয়ন ডলারের এ বিনিয়োগের পরিবর্তে বাংলাদেশ ৬২ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, যা দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার দ্বিগুণ।

ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, এই গ্যাস ও এলএনজি প্রকল্পগুলো আমাদের জনগণের সম্পদ দখল করে গড়ে উঠেছে। 

মার্কেট ফোর্সেসের এশিয়া এনার্জি বিশ্লেষক এবং প্রতিবেদনটির লেখক মুনিরা চৌধুরী বলেছেন, অন্যায্যভাবে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে দূষণকারী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে নির্ভরশীল করার চেষ্টা করছে, যা কোটি মানুষের স্বাস্থ্য ও পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক এবং ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, জাইকা এবং আইইইজে কর্তৃক প্রণীত ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) অবশ্যই সংশোধন করা উচিত, কারণ এটি বাংলাদেশকে এলএনজির ওপর নির্ভরশীল করার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।

মার্কেট ফোর্সেসের এশিয়া এনার্জি বিশ্লেষক মুনিরা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, এই ৫০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে এলএনজি আমদানি টার্মিনাল এবং ৪১টি নতুন এলএনজি পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ। যার সম্মিলিত ক্ষমতা দেশের বিদ্যমান বিদ্যুৎ উৎপাদন বহরের চেয়ে বেশি।’

তিথি/এমএ/

রাজধানীর হোটেল কক্ষ থেকে ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম
রাজধানীর হোটেল কক্ষ থেকে ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মিরপুরের রোজ হ্যাভেন রেসিডেন্সিয়াল হোটেলের একটি কক্ষ থেকে আকবর আলী মন্ডল (৩৮) নামে এক ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। 

নিহতের বন্ধু ফারজু মন্ডল জানান, আমরা ৬ বন্ধু মিলে ভারত থেকে বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য আসি। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় মিরপুর-১০ নম্বরের রোজ হেভেন রেসিডেন্সিয়াল হোটেলে আমরা সবাই ওই হোটেলে উঠি। হঠাৎ রাতে ঘুমের মধ্যে আকবর আলী চিৎকার দিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে আমরা তাকে অচেতন অবস্থায় দ্রুত তাকে মিরপুর-২ নাম্বার হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, নিহতের বাড়ি ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলা ডোমকল থানার কাটা কোপরা এলাকার মো. আমির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে ভারতীয় এক নাগরিকে অচেতন অবস্থায় ঢামেকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।

আল-আমীন/এমএ/

‘বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা পরিকল্পনার বাইরে’

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পিএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ পিএম
‘বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা পরিকল্পনার বাইরে’
বিআইপির সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির সেমিনার কনফারেন্স হলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা এখনো স্থানিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাইরে রয়েছে বলে জানা গেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপির) এক গবেষণায়।
 
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির সেমিনার কনফারেন্স হলে ‘সমগ্র দেশের পরিকল্পনা করি, বৈষম্যহীন সুষম বাংলাদেশ গড়ি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন।
 
বিআইপির সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে জাতীয় সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, থাইল্যান্ডের অ্যাশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ইমিরেটাস অধ্যাপক এ টি এম নুরুল আমিন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইপির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। 

সেমিনারে সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের ৮৫ ভাগ এলাকা এখনো স্থানিক উন্নয়ন পরিকল্পনার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা দুর্যোগপূর্ণ। এই বিশাল এলাকা এখনো পরিকল্পনার বাইরে থাকার মূল কারণ হল, আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর দুর্বলতা। শহর ও গ্রামীণ পরিকল্পনার মধ্যেও বিস্তর ব্যবধান রয়ে গেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনায় দেখা যায়, ২০ বছর আগে অ্যাজেন্ডা নেওয়া হয়, এরপর ওই এলাকাটি যখন পুরান ঢাকার মতো হয়ে যায় তখন তারা এলাকাটিকে পৌরসভা বানাতে চান। স্থানিক পরিকল্পনায় রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রশাসনের পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। এটি বড় চ্যালেঞ্জ।’

রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ডিটেইল অ্যারিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নিয়ে রাজউক এখন অনেক চাপে আছে। বিগত দিনে ড্যাপে বিশেষ কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এসে বলেছেন, সংশোধিত ড্যাপ প্ল্যান বাদ দেন, ২০০৮ সালের আগে ফিরে যান। এ ছাড়া ড্যাপ অ্যারিয়াতে যাদের জমি পড়েছে, তারা এখন জমি ছাড়তে নারাজ।’ 

উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজধানীর পূর্বাচলে আবাসন অবকাঠামোর অনেক কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে আইনি দিকটি সমাধান হলে পূর্বাচলের পাশাপাশি উত্তরা, ঝিলমিলে রাজউকের প্রকল্প এলাকায় ৫০ লাখ নাগরিককে আবাসন সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
 
ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ড্যাপ বাস্তবায়নের পথে নগরীর চারটি নদী পাড়ের এলাকায় বিশেষ গুরুত্ব দেবে রাজউক। নদী পাড়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নগরের মধ্যভাগে জনঘনত্ব কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে ড্যাপের খসড়ায়।’ 

রাজউক চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে নগরীর জলাভূমি সুরক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে করে বলেন, ‘জলাভূমি দখল করে কেউ পার পাবেন না।’ 

তুরাগের ওপাড়ে যারা বালু তুলে জলাভূমি ভরাট করছে তাদের হুশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে রাজউক সেই বালু তুলে বিক্রি করে দেবে।’

জয়ন্ত/পপি/

আইসিএসসির সদস্য হলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম
আইসিএসসির সদস্য হলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত

আন্তর্জাতিক সিভিল সার্ভিস কমিশনের (আইসিএসসি) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দুটি শূন্য আসনের জন্য বাংলাদেশ, চীন ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও চীনের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

শনিবার (৯ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশকে ২.০ নির্বাচিত করেছে এবং এর মাধ্যমে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও অবদানের স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এটি বিশ্বাস ও আস্থার প্রমাণ।’

তিনি ২০২৫ সাল থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চার বছরের জন্য আইসিএসসির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আইসিএসসি হলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রতিষ্ঠিত একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ সংস্থা যা ১৫ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত।

এটি জাতিসংঘের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিপূরণ ও এনটাইটেলমেন্ট সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সুপারিশ করার জন্য বাধ্যতামূলক প্রধান সংস্থা।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত মুহিত ২০২২ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন।

তিনি বর্তমানে ইউএনজিএর দ্বিতীয় কমিটি (অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটি) চেয়ারম্যান হিসেবে এবং ২০২৪ সালের জন্য ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

রাষ্ট্রদূত মুহিত ২০২২ সালে জাতিসংঘ পিসবিল্ডিং কমিশনের চেয়ারম্যান, ২০২৩ সালে ইউএন পিসবিল্ডিং কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে যথাক্রমে ইউএন-ওমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

বাসস/অমিয়/

শিক্ষাঙ্গন নিরাপদে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
শিক্ষাঙ্গন নিরাপদে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
ছবি : খবরের কাগজ

শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করার জন্য সবাইকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের মতো অন্য কেউ যেন দানবের ভূমিকা নিতে না পারে সেজন্য জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে ‘শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 

নিরাপদ বাংলাদেশ চাই সংগঠনের আয়োজনে এতে ‘ছাত্রলীগের ক্যাম্পাস সন্ত্রাস : ছাত্র রাজনীতির অন্ধকারাচ্ছন্ন এক যুগ’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির পিএইচডি স্কলার শাহাদাৎ স্বাধীন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে। তারা যেন বিশ্বের যেকোনো একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এটার জন্য আমাদের আদর্শ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ক্যাম্পাসগুলো যেন কোনোভাবেই সন্ত্রাসীদের আড্ডার আখড়া বানাতে দেওয়া না হয়। সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। সামনে যে সরকারই আসুক না কেন, এটা চেষ্টা করবে। এর জন্য আমদের সবাইকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা বাংলাদেশকে যেন গড়ার অনুপ্রেরণা ক্যাম্পাস থেকে পায়। ক্যাম্পাসগুলোকে আইডিয়াল ডিবেটের জায়গা হতে হবে। একটা মহৎ আন্দোলন এই ক্যাম্পাসের ছেলে-মেয়েরা করেছে। বাংলাদেশে এই রকম মহৎ আন্দোলন কয়টা হয়েছে? এটার যে ব্যপ্তি, মানুষকে নাড়া দেওয়া। তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেল পুরো পৃথিবীর কাছে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে ফ্যাসিবাদের মূল ফোর্স (চালিকা শক্তি) উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদের বয়ান তৈরি করেছে। পুরো জাতিকে ছাত্রলীগের ছেলে-মেয়েরা একটা জিম্মি অবস্থায় রেখেছিল। আন্দোলনে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে মারল, এদের অনেকের ব্যাকগ্রাউন্ড ছাত্রলীগ। ভয়ানক একটা পুলিশি রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল। এটার মূল উপাদানটা ছিল ছাত্রলীগ। বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে হলে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে। সবাই মিলে করতে হবে।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, শিক্ষাঙ্গনকে আমরা নিরাপদ কীভাবে করব, এটা নিয়ে ডিবেট হওয়া উচিত। কীভাবে করলে আরেকটা ছাত্রলীগ তৈরি হবে না। এটার জন্য গ্রামেগঞ্জে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই ধরনের মনস্টার (দানব) আমরা সোসাইটিতে চাই না। বাংলাদেশ যেন নিরাপদ হয়, সেটা আমরা চাই। আমরা শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে চাই। আমাদের ডরমিটরি (আবাসিক হল) যেন সন্ত্রাসমুক্ত থাকে এ ব্যাপারে জনমত গড়তে তুলতে হবে। রাষ্ট্র মেরামতের বড় অংশ শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে। শুধুমাত্র সংবিধান, জুড়িশিয়ারি সংস্কার করে হবে না। সোসাইটিতে যারা সন্ত্রাস করে, তারা যেন এটা না করতে পারে সেই ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।

কবির/অমিয়/