‘দুর্নীতি ও রাষ্ট্রপতি বা সংস্কার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। ছবি: সংগৃহীত
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, তবে জনগণকে উপেক্ষা করে। আমরা অভ্যুত্থানের পরও জনগণকে উপেক্ষা করি, এটা অদ্ভুত ব্যাপার। এতগুলো মানুষ শহিদ হয়ে গেল, এতগুলো মানুষ পঙ্গু হয়ে পড়ে আছে, তার পরও কিন্তু আমরা জনগণকে উপেক্ষা করেছি।’
শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত ‘দুর্নীতি ও রাষ্ট্রপতি বা সংস্কার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘অনেকে বলেন বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম করতে হলে ফরহাদ মজহারকে নাকি কতল (হত্যা) করতে হবে। আমি কিন্তু বিষয়টি জেনে গেছি। আমাকে যেখানে বলবেন আমি যাব, আমাকে কতল করে ফেলবেন। আমাকে কতল করলে যদি ইসলাম কায়েম হয়, তবে ইন্শাআল্লাহ আল্লাহর নামে কতল হয়ে যাব। আমাকে ভয় দেখাবেন না। কিন্তু ফ্যাসিজমকে ইসলাম বলে প্রচার করবেন না। আপনারা কোথা থেকে আসেন, সেটা আমরা জানি।’
সংবিধান ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘আপনি যাদের (আওয়ামী লাগী) পাকিস্তানের গঠনতন্ত্র বানানোর জন্য ভোট দিয়েছেন, তারাই ফিরে এসে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করল। তারা শাসন করতে যেটা চেয়েছে, সেটাই করেছে। তারা সমাজতন্ত্র ঢুকিয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা ঢুকিয়েছে। ওদের যে মতাদর্শ, যেটাকে আমরা ফ্যাসিজম বলি। এটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এতটা বছর শাসন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বোঝানোর চেষ্টা করেছে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধারণ করেছি। অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার।’
রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটা রাষ্ট্র চাই, যেটা আমাদের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করবে। আমার জীবন, ব্যক্তির স্বাধীনতা ও মর্যাদা হরণ করতে পারবে না। একটা গঠনতন্ত্র তৈরি করা খুব কঠিন কাজ না।’
রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘বিএনপি কেন চুপ্পুকে ক্ষমতায় রাখতে চায়, আমি কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। এটার কোনো সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক যুক্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যখন আমাদের বললেন তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র নেই। তিনি (রাষ্ট্রপতি) তখনই আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার ওই পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।’