
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি ও সহসভাপতি এবং কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিম বখ্শ। তিনি দাবি করেন মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। যা অসত্য, ভুল ও উদ্দেশ্যমূলক।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলের প্রধান কর্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে এই সংস্থার গাড়ি ব্যবহারসংক্রান্ত অসত্য তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে।’ আঞ্জুমান মুফিদুলের এ ট্রাস্টি বলেন, ‘আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে সুনাম ও মর্যাদা নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এ অপপ্রচার, যা সম্পূর্ণভাবে অনৈতিক ও অনভিপ্রেত।’
আজিম বখ্শ বলেন, ‘সংস্থাটির নিয়ম অনুযায়ী আমাকে এই পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। আমি যথাযথ নিয়ম মেনে সততা, নিষ্ঠা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। স্বার্থান্বেষী মহল অবৈধ সুবিধা আদায় করতে না পেরে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মতো একটি অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতে এমনটা করছে। আমার সততার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিকভাবে আক্রমণের লক্ষ্যে এ ধরনের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে।’
আজিম বখ্শ আরও বলেন, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম তার দীর্ঘ পথচলায় সেবামূলক কাজ পরিচালনায় বরাবরই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা পেয়ে আসছে। তিনি বলেন, ‘আমি আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের একজন নির্বাচিত ট্রাস্টি। ১৯৯০ সাল থেকে টানা ৩৪ বছর স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি। অতি সম্প্রতি বেশ কিছু গণমাধ্যম ও টেলিভিশনে আমাকে ও আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কার্যক্রম নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেছে, যা উদ্দেশ্যমূলক ও মানহানিকর।’ ইতোমধ্যে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে মিথ্যা প্রচারণার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এর পরও নিজের বিবেকের তাড়না থেকে, কিছু বিষয়ে আমাকে জড়িয়ে যে ধরনের অসত্য বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে তা নিরসনে তিনি এই বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণই মিথ্যা ও ভুল প্রচারণা বলে দাবি করেন আজিম বখ্শ।
অপপ্রচার সম্পর্কে বক্তব্য
প্রতিষ্ঠানটির গাড়ি ব্যবহারের একটি রীতি আছে। শুধু সংস্থার কাজের প্রয়োজনেই গাড়ি ব্যবহার করা যায়। বিশেষত কোনো প্রকল্প পরিদর্শন বা আঞ্জুমান পরিচালিত কোনো কার্যক্রম পরিদর্শনকালে সেই গাড়ি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গাড়ি কোথায় যাচ্ছে? কী কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে? গাড়ির ব্যবহার সঠিকভাবে হচ্ছে কি না? তার জন্য মনিটরিং সেল রয়েছে। ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য এই সংস্থার কোনো গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘মাওলা বখ্শ সরদার দাতব্য চক্ষু হাসপাতাল এবং ঢাকা কেন্দ্র আমাদের পারিবারিক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ চার দশক ঢাকার দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় এই সংস্থা কাজ করে আসছে। মাওলা বখ্শ সরদার মেমোরিয়াল ট্রাস্ট পারিবারিক অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর আঞ্জুমানের সেবামূলক কার্যক্রম এবং মাওলা বখ্শ সরদার দাতব্য চক্ষু হাসপাতাল দুটি ভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।’
তাছাড়া ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাড়ি ব্যবহার নিয়ে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। তখন রোগী ও লাশ পরিবহনে দায়িত্বরত গাড়ি ব্যবহার বন্ধ ছিল না। গাড়ি পরিচালনা ও ব্যবহারের দায়িত্ব ট্রান্সপোর্ট কমিটির। এর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ছাড়া ঢাকায় ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে আঞ্জুমানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে দেওয়া হয়ে থাকে যার যার এলাকায়। সে ক্ষেত্রে আমার এলাকার জন্য বরাদ্দ করা ত্রাণ আমি আমার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করে থাকি, যা অনৈতিক এবং নীতিবহির্ভূত নয়।’