ঢাকা ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

‘নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দিন’

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫১ পিএম
‘নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দিন’
রবি ও গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। 

রবিবার (৩ নভেম্বর) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে মোবাইল অপারেটর রবি এবং গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার একটা পরিবর্তনকালীনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই সময়টা সফলভাবে পার করতে পারলে দেশ ঘুরে দাঁড়াবে এবং সম্ভাবনার নতুন নতুন দরজা খুলে যাবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। যেহেতু আন্দোলন শুরু হয়েছিল কর্মসংস্থানকে কেন্দ্র করে, তাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য।’ 

যুবসমাজের আগ্রহ ও প্রত্যাশাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মোবাইল কলরেট কমানো এবং ইন্টারনেটের মেয়াদবিহীন প্যাকেজ চালুর আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে এখন কাজ করার উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার জনসমর্থিত, তাই দেশ ও দেশের মানুষের উপকার হয় এমন যেকোনো কাজ করতে আমরা আগ্রহী। টেলিকমিউনিকেশন খাতে উন্নতির জন্য সরকার কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘আগে টেলিযোগাযোগ খাতের কোনো অফিসে গিয়ে কথা বলার মতো পরিবেশ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে পরিবেশ পরিবর্তন হয়েছে। এখন কথা বলা যাচ্ছে এবং ফিডব্যাকও পাওয়া যাচ্ছে। এটা টেলিকমিউনিকেশন খাতের জন্য খুবই ইতিবাচক।’

রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব শেঠী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে টেলিকমিউনিকেশন খাতে কমিশন বেজড বিভিন্ন লেয়ার তৈরি হয়েছে, যার ফলে মোবাইল অপারেটররা মুনাফা বঞ্চিত হচ্ছেন।’

বৈঠকে রবি আজিয়াটা পিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মো. শাহেদুল আলম, গ্রামীণফোনের নতুন চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানে ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই অখুশি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ পিএম
বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানে ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই অখুশি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই অখুশি। এ কারণে দেশটির গণমাধ্যম প্রমাণ করতে চাইছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তবে এ ধরনের অপপ্রচার দুই দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশৃঙ্খলা-অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। তবে সেটা ছিল খুবই অল্প সময়ের জন্য। খুব দ্রুতই বর্তমান সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর এ কাজটি দ্রুত পুলিশ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছিল। পরে পুলিশ এলে শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে যায়। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর সাড়ে তিন মাসে সরকার অনেক কিছু অগ্রগতি ঠিকমতো করেছে।

তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থান হওয়ায় গণমাধ্যম, বিশেষ করে ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই অখুশি। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই এখন সংঘবদ্ধভাবে প্রোপাগান্ডা (অপপ্রচার) চালানো হচ্ছে। তারা (ভারতীয় গণমাধ্যম) প্রমাণ করতে চাচ্ছে যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, তালেবান ঘরানার সরকার আসতে যাচ্ছে ইত্যাদি, যা খুবই অন্যায্য বা লাগাম ছাড়া। এর নেতিবাচক দিক হলো এসবে কোনো পক্ষই ভালো কিছু পাবে না। এসব বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না, ভারতের জন্যও ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সম্মাননীয় ফেলো ও বোর্ডসদস্য ফারুক সোবহান, সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের পরিচালক ডার্ক উইলেম তে ভেলডি, ইউনান একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সের সাবেক সভাপতি রেন জিয়া, ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজের মহাপরিচালক শচীন চতুর্বেদি, দ্য সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শ্রীধর ক্ষত্রি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার দোসরদের ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার দোসরদের ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলয়ের সাবেক মন্ত্রীসহ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে যুক্তরাজ্যে

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলয়ের সাবেক মন্ত্রীসহ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির আবাসন খাতে তাদের লগ্নি করা সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ৪০ কোটি পাউন্ড (৬ হাজার কোটি টাকা) বা আরও অনেক বেশি হতে পারে। 

ব্রিটিশ দৈনিক অবজারভার ও বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এই অনুসন্ধান নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনা-ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তির নামে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে।

অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা এই সম্পত্তির অনেকটির মালিকানায় রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যরা। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে মাঝারি মানের ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে সুবিশাল অট্টালিকা (ম্যানশন) পর্যন্ত রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও দেশটির বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (অফশোর কোম্পানি) নামে সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বর্তমানে বাংলাদেশে কারাবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে। সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সালমানের পরিবারের সদস্যদের লন্ডনের মেফেয়ার এলাকার গ্রোসভেনর স্কয়ারে সাতটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানা বা মালিকানায় অংশীদারত্ব রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা। এর মধ্যে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন সালমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান। সেখানে ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ডে কেনা তার একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। ২০২২ সালে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা লন্ডনে শায়ান রহমানের একটি বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন বলে খবর বেরিয়েছিল।

গ্রোসভেনর স্কয়ারে এবং এর কাছাকাছি এই পরিবারের আরেক সদস্য আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের ২ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড মূল্যের আরও চারটি সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছে। এ বিষয়ে শায়ান রহমান ও শাহরিয়ার রহমানের আইনজীবীরা বলেছেন, মানি-লন্ডারিং আইনসহ আর্থিক বিধিবিধান পুরোপুরি মেনেই সম্পত্তিগুলো কেনা হয়েছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের ৩০০টির বেশি সম্পদ রয়েছে। এগুলোর মূল্য অন্তত ১৬ কোটি পাউন্ড। কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা গত সেপ্টেম্বরে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বৈশ্বিক সম্পত্তি নিয়ে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে তার আনুমানিক ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে।

বিএফআইইউ বাংলাদেশে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে। তার ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সরকার সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ওপর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনীতিকদের বাইরে বাংলাদেশের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদেরও যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সারে এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের সদস্যদের দুটি সম্পত্তি রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড দিয়ে অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে এ সম্পত্তি কেনা হয়েছে। অবজারভার এলাকাটিতে পরিদর্শনে গিয়ে আহমেদ আকবর সোবহানের এক ছেলের মালিকানাধীন একটি অট্টালিকারও সন্ধান পেয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার গত ২১ অক্টোবর আহমেদ আকবর সোবহানসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের ওপর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে বিএফআইইউ। এ বিষয়ে গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও আহমেদ আকবর সোবহানের ছেলে সাফওয়ান সোবহান। তিনি বলেন, তার পরিবার তাদের বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।

সিআইডি নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে। তার সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে। লন্ডনের কেনসিংটনে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা কীভাবে ৩ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডের পাঁচটি সম্পত্তি কিনেছেন তা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে নজরুল ইসলাম মজুমদারের ঘনিষ্ঠ সূত্র তিনি এসব সম্পত্তি অবৈধ উপায়ে কেনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলে জানায়।

তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ব্যাংক খাত থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তার পরিমাণ আরও বেশি।’

রবিবার (১ ডিসেম্বর) জমা দেওয়া শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে অর্থনীতির প্রতিটি খাত ধরে ধরে আলাদা বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে উন্নয়নের গল্প সাজাতে কিভাবে পরিসংখ্যানকে ম্যান্যুপুলেট করা হয়েছে। উন্নয়নের গল্প শোনানো হলেও ভেতরে ভেতরে চলেছে লুটতরাজের এক মহাযজ্ঞ। তথ্যসূত্র বাসস। 

 

জনপ্রশাসন নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ অসন্তুষ্ট: আবদুল মুয়ীদ

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
জনপ্রশাসন নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ অসন্তুষ্ট: আবদুল মুয়ীদ
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

জনপ্রশাসন নিয়ে মানুষের মূল্যায়ন কি- এমন এক প্রশ্নের জবাবে দেশের বেশির ভাগ মানুষ অসন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। 

রবিবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘আমলাদের ওপরে আমলারাই বেশি জুলুম করে। তাই জনপ্রশাসনের কাঠামোগত পরিবর্তনের সুপারিশ করবে এই কমিশন, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। এ ছাড়া ক্যাডার ও জেলা প্রশাসক এ ধরনের শব্দগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। এক দিনে পরিবর্তন আনা সম্ভব না। তবে আমাদের সুপারিশ থাকবে।’

মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক মানুষ সন্তুষ্ট নয় বলেই সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের অগ্রাধিকারটা বোঝার চেষ্টা করছে কমিশন। 
ইতোমধ্যে কমিশন একটা প্রশ্নমালা তৈরি করে জনপ্রশাসন সংস্কারে অগ্রাধিকার বিষয়ে বিভিন্ন পেশার নাগরিকদের অভিপ্রায় ও অভিমত জানার চেষ্টা করছে, জনমত সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে।’

নতুন আরও দুটি প্রশ্ন ১০ দিনের জন্য সবার কাছে পাঠাব উল্লেখ করে কমিশনের প্রধান বলেন, ‘আমরা জানতে চাইছি, কোনো সেবাপ্রার্থী যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে থাকেন তবে তার অভিজ্ঞতা কি? এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিও রয়েছে এমন আরেকটি প্রশ্ন।’

এ সময় কমিশনের সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কয়েকটি অফিস সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা রয়েছে। এর মধ্যে এসিল্যান্ড, রেজিস্ট্রেশন অফিস সম্পর্কে মানুষের ধারণা বাজে। সবাই সেখানে দিচ্ছে, নিচ্ছে। তারা এটাও বলে, আগের স্যারের থেকে কম নিচ্ছেন।’ 

উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এই কমিশনকে তখন ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারির ফল ১২ ডিসেম্বর

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ পিএম
বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারির ফল ১২ ডিসেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের ফল লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আগামী ১২ ডিসেম্বর এই ফল প্রকাশ করা হতে পারে।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল খবরের কাগজকে এসব তথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, ভর্তির আবেদনের সময় নতুন করে আর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়নি।

মাউশি সূত্র জানায়, গত ১২ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া হয়। এতে মোট ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৭০৪ জন আবেদন করে। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৯০৪ জন। আর বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী। সারা দেশে বিদ্যালয়ে ভর্তিযোগ্য শূন্য আসন ১১ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৩টি। এর মধ্যে সরকারি স্কুলে আসনের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬২টি। বেসরকারিতে শূন্য আসন ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭১টি। সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য আসনের তুলনায় ৬ গুণ বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করে। অন্যদিকে বেসরকারি বিদ্যালয়ে আসনের চেয়ে সাত লাখ আবেদন কম পড়েছে।

২০১৮ সালে ইজতেমা মাঠে হামলার তদন্ত-বিচার চায় ওলামা মাশায়েখ

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ পিএম
২০১৮ সালে ইজতেমা মাঠে হামলার তদন্ত-বিচার চায় ওলামা মাশায়েখ
ছবি : সংগৃহীত

২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে মাওলানা সাদপন্থিদের হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এই হামলায় আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। 

রবিবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ কর্তৃক ‘১ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ওলামা-তোলাবা ও তাবলিগের নিরীহ সাথিদের ওপর সাদপন্থিদের নগ্ন হামলার বিচারের দাবিতে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা। 

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা আমানুল হক। তিনি বলেন, ‘দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারী ওয়াসিফুল ইসলাম ও নাসিম গংয়ের কথায় ময়দানের প্রস্তুতিতে শুরায়ি নেজাম তথা ওলামায়ে কেরামের কর্মরত নিরীহ-নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লি তাবলিগের সাথিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নৃশংস আক্রমণে অন্তত পাঁচ হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লি আহত হয়েছিলেন। একজন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তাদের সাথিরা সেদিন পূর্ণভাবে আমল করে আসছিলেন, হাতে হাতেও তসবিহ ছিল। তাদের থেকে টঙ্গী ময়দানের পশ্চিম-উত্তর কোণে অবস্থিত কোমলমতী ছাত্র-শিক্ষকদের কেউই রেহাই পাননি।’

তিনি বলেন, ‘ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও হেলমেট বাহিনীর হাতে ধারালো অস্ত্রের পাশাপাশি সবার বাহুতে সাংকেতিক ব্যাজ ছিল। সাদপন্থিরা সেদিন মসজিদ-মাদ্রাসা ও ৫০টি গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ও তৎকালীন গাজীপুর পুলিশ প্রশাসন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ন্যক্কারজনক হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের কথা জানালেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার এই হামলার যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত ন্যায়বিচার করবে।’ 

মাওলানা আমানুল হক বলেন, ‘আমাদের দাবি, সারা দেশ থেকে কীভাবে হাজার হাজার সাদপন্থি সন্ত্রাসী ঢাকায় জড়ো হলো? এবং কীভাবে টঙ্গীতে একত্র হলো? জনগণের এই সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশরে মাধ্যমে অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থিদের নৃশংস হামলা ও হতাহতের ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করবে। অপরাধীদের শনাক্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ 

আল মানহাল মাদ্রাসার পরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতউল্লাহ আজহারীর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুল হামীদ পীর মধুপুর, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাজাহারী, মুফতি মাসুদুল করিম, মুফতি বশিরউল্লাহ প্রমুখ।