‘ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মিস ইনফরমেশন (ভুল তথ্য) দেওয়া হয়েছিল। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে সংখ্যালঘু ইস্যুতে এমন মন্তব্য করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তিনি একজন রিপাবলিকান নেতা হিসেবে কথাগুলো বলেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে গত ১৫-১৬ বছরে বাংলাদেশে কী হয়েছে আর এখন পরিস্থিতি কী আছে তা জানতে পারবেন। আমি আশা করি, এতে তার আগের ধারণার পরিবর্তন হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়বে।’
বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীরও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সে এক পোস্টে বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্পের আগের মনোভাব কি পাল্টাবে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব ওপরের কথাগুলো বলেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সদ্য বিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ট্রাম্পের নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের তরফ থেকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা মনে করি ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও উচ্চতায় যাবে।জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে'
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতোমধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। তবে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর এই সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রায় এসেছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র চায় পৃথিবীর সব দেশে গণতন্ত্র থাকুক, সবাই গণতন্ত্রের চর্চা করুক। গত ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশে একটি স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় ছিল, সেই জায়গা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটানো। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে এখন কাজ করা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র উত্তরণে কাজ করছে। আমরা মনে করি গণতন্ত্র উত্তরণের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পও চাইবেন সারা পৃথিবীতে গণতন্ত্রের বিস্তার ঘটুক। তাই আমরা আশা করছি, ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ হবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও রিপাবলিকান পার্টি উভয় দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। এই দুই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বর্তমান সরকারের সময়ে কেমন আছে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘এবারে দুর্গাপূজার সময়ে এ দেশে শাস্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। আমরা প্রতিটি পূজার মণ্ডপে বিশেষ ধরনের অ্যাপ দিয়েছিলাম। সারা দেশে কোনো ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের সমস্যার সমাধানে অত্যন্ত আন্তরিক। এবারে পূজার ছুটি বাড়ানো হয়েছিল।’
শিক্ষা খাতে সংস্কারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কী ভাবছে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, শিক্ষা খাতেও সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে কমিশন গঠন করা হবে।