ঢাকা ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নির্বাচনের জন্য ২ হাজার মানুষ জীবন দেয়নি: সারজিস আলম

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পিএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
নির্বাচনের জন্য ২ হাজার মানুষ জীবন দেয়নি: সারজিস আলম
ছবি : খবরের কাগজ

শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।

শনিবার (৯ নভেম্বর) জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে সিলেটের শহিদ পরিবারের সদস্যদের চেক বিতরণ শেষে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট কথা, শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি, অর্ধলাখ মানুষ রক্ত দেয়নি। এই মানুষগুলো বিগত ১৬ বছর ধরে বিরক্ত হতে হতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল করাপটেড সিস্টেমগুলোর জন্য। এই ১৬ বছরে একটি ব্যর্থ সিস্টেম ছিল এই নির্বাচন কমিশন। তাহলে ওই নির্বাচন কমিশনেরও সংস্কার প্রয়োজন। আপনি নির্বাচন কমিশনে যাদেরকে ভোটার তালিকা দিলেন, নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় জনবল সেট করে দিয়ে আপনি তালিকা পাঠালেন, এভাবে তো কোনোদিন সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন কোনোদিনও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে না। পুরো দেশে একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন সেটাকে স্ট্যাবল অবস্থায় আসতে হবে। তা না হলে আপনি নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে জবরদখল দেখবেন। এই জবরদখল আমরা দেখতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনকেন্দ্রিক ইস্যুগুলোকে নিয়ে যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয় এগুলোর জন্য তো বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজন। এই বিচার ব্যবস্থারও সংস্কার প্রয়োজন। আমরা এখনো দেখছি হাইকোর্টে এমন কিছু দুসর ফ্যাসিস্টরা বসে আছে যারা তাদের যোগ্যতা বলে সেখানে যায়নি। তারা সেখানে গিয়েছে তোষামোদ ও তেলবাজী করে, দলের চাটুকারিতা করে। তাদেরকে ওই জায়গাগুলো থেকে অপসারণ হওয়া প্রয়োজন। এবং যারা ওই জায়গাগুলোর জন্য যোগ্য তাদের সেই জায়গাগুলোতে যাওয়া প্রয়োজন। তাহলে আমি নূন্যতম যদি চিন্তা করি এই ১৬ বছর ধরে বা বিগত ৫৩ বছর ধরে যে সংবিধান এই বাংলাদেশকে এই দেশের মানুষকে ৫ বছরের জন্য জনতার সরকার উপহার দিতে পারেনি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ নেতা বলেন, ‘প্রতি ৫ বছরে দেখেছি অনেক বড় বড় ইশতেহার দিয়ে নির্বাচন করে। পরে ক্ষমতায় আসার কয়েক সপ্তাহ পর তারা ভুলে যায় কি ইশতেহার দিয়েছিল। তারা ভুলে যায় তারা জনতার সরকার। সেই জায়গা থেকে যে সংবিধান আমার সাংবিধানিক অধিকারগুলো রক্ষা করতে পারেনি সেখানে আমাদের জায়গা থেকে আমরা পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এবং তাদের প্রতিনিধি হিসেবে মনে করি সাংবিধানিক সংস্কার প্রয়োজন।’ 

নির্বাচন নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কখনো বলছি রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে তারপর নির্বাচনে যান? আমরা কখনো বলছি না আপনি পাঁচ-ছয় বছর এই সংস্কার করে যান। কিন্তু মিনিমাম একটা স্ট্যান্ডার্ড সময় লাগবে। কোনো বিবেকবান তার জায়গা থেকে এটি চিন্তা করতে পারবে না যে এক বছরের মধ্যে সবকিছু সংস্কার হয়ে যাবে। ১৬ বছর ধরে এই সিস্টেমকে ধীরে ধীরে ভেঙে শেষ করা হয়। সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি এই সিস্টেমগুলো একটি যৌক্তিক সংস্কার হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত।’

সংবিধান সংস্কারের অধিকার নিয়ে সারজিস বলেন, ‘এই অভ্যুত্থান কিছু লোক দিয়ে হয়নি। যেই ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ১৬ বছরে বাংলাদেশের নামিদামি বড় বড় দলগুলো মিলে তার টনক বিন্দুমাত্র নড়াতে পারেনি। সেই শেখ হাসিনা কিছু লোকের জন্য এই দেশ ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে যায়নি। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে নেমেছিল বলেই এই অভ্যুত্থান ঘটেছে এবং শেখ হাসিনা পালিয়েছে। এই অন্তর্বর্তী সরকার ২১ জনের সরকার না। এই অন্তর্বর্তী সরকার এই অভ্যুত্থানে যারা অংশগ্রহণ করেছিল সমর্থন দিয়েছিল তাদের সবার সরকার। এবং এত জীবনের বিনিময়ে এত রক্তের বিনিময়ে এত মানুষের সমর্থনে অভ্যুত্থান হয়ে এই সরকার এসেছে। এটি বাংলাদেশের সরকার। সেই জায়গা থেকে এই সরকারের ওই অধিকার নৈতিকভাবে আইনগতভাবে অবশ্যই রয়েছে।

এর আগে সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে জুলাই শাহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সিলেটের ১৮ জন শহিদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়। 

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ জানান, সিলেটে সর্বমোট শহিদের সংখ্যা ৩২ জন। আমরা ৩২ জনকেই চেক দেব। কিন্তু ১৮ জনের কাগজপত্র সম্পন্ন হওয়ায় তাদেরকে আজকেই চেক দিতে পেরেছি। বাকি ১২ জনের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। যারা বাকি আছেন তাদেরকেও শিগগিরই চেক দেওয়া হবে। আমাদের জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে সবাইকে ৫ লাখ করে টাকা দেওয়া হচ্ছে। 

শাকিলা ববি/জোবাইদা/অমিয়/

বাংলাদেশে আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ এএম
বাংলাদেশে আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট
পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চার দিনের সফরে আগামী ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। শনিবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রেসিডেন্টের সফরে দুই দেশের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র। 

সফরকালে ১৫ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রেসিডেন্ট হোর্তা। বৈঠক শেষে তারা যৌথ প্রেস কনফারেন্স করবেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি ও ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হবে। এর আগে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

পরদিন ১৬ ডিসেম্বর সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন তিনি। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এদিন বিকেলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করতে বঙ্গভবনে যাবেন। পরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রেসিডেন্ট হোর্তা। সফর শেষে ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি। পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। ১০ বছরের ব্যবধানে এটি তার বাংলাদেশে দ্বিতীয় সফর।

সমন্বয়ের অভাবে কমছে না ভয়াবহ বায়ুদূষণ

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ এএম
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ পিএম
সমন্বয়ের অভাবে কমছে না ভয়াবহ বায়ুদূষণ
ফাইল ছবি

বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে নির্মাণকাজ, যানবাহন, শিল্প কারখানা ও নগর ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা। এই সব উৎসের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন। ফলে আন্তমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় না হলে পরিবেশ মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের পক্ষে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের পক্ষ বড় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন তারা।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা পরিবেশ অধিদপ্তরের নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতায় যত নির্মাণকাজ হয় সবগুলোতেই বায়ুদূষণ হচ্ছে। তারা তাদের দায়িত্ব ভুলে বসে আছেন। প্রতিটা মন্ত্রণালয় যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে, বায়ুদূষণ কমানো পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। সত্যিকার অর্থে যদি বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে চাই তাহলে আন্তমন্ত্রণালয়ের কো-অর্ডিনেশন খুবই দরকার।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুর মান ব্যবস্থাপনা শাখার উপপরিচালক বেগম শাহনাজ রহমান খবরের কাগজকে বলেন, আগে বিধিমালা ছিল। এখন সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান করা হচ্ছে। এখানে সবার দায়িত্ব নির্ধারণ করা আছে। সেই অনুযায়ী সবাই মিলে কাজ করলে বায়ুদূষণ কমানো সম্ভব।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (আইকিউএয়ার) বায়ুর মান নিয়ে লাইভ স্কোর প্রকাশ করে থাকে। 

স্কোর অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ুর মান অধিকাংশ দিনই খুবই অস্বাস্থ্যকর কিংবা দুর্যোগপূর্ণ থাকছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার স্কোর ছিল ২২৯, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই স্কোর ভোররাত পর্যন্ত আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে দেখানো হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের করা গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বায়ুর মানে ঢাকার স্কোর ছিল ২৮৭। শুধু ঢাকা নয়, দেশের অন্যান্য শহরেও বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। এই সূচকে নারায়ণগঞ্জের স্কোর ছিল ৩৬৬, রাজশাহীর স্কোর ২৩৩, সাভারের স্কোর ৩১১ এবং কুমিল্লার ২২০। আর দূষণের উপাদান হিসেবে অধিকাংশ শহরে পিএম ২.৫ এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে যা বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তুকণা বুঝায়। গত ৫ ডিসেম্বর ঢাকার স্কোর ছিল ৩৪১।

তথ্য অনুযায়ী, যদি স্কোর ৫০-এর মধ্যে থাকে তাহলে বায়ুর মান ভালো হিসেবে ধরা হয়। আর ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে সহনীয়, ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে থাকলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে থাকলে অস্বাস্থ্যকর এবং ২০০-৩০০ এর মধ্যে থাকলে খুবই অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। ৩০০ ছাড়ালে দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবেশ মন্ত্রণালয় জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বাসার বাইরে গেলে মাস্ক পরা এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুইবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া সৃষ্টিকারী যানবাহন রাস্তায় বের না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অপরদিকে সময় যত গড়াচ্ছে বায়ুদূষণের মাত্রা তীব্র হচ্ছে। ক্যাপসের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, গত আট বছরে (২০১৬-২৩) নভেম্বরে দূষণের পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আগে ঢাকার বায়ু মানের গড় স্কোর ছিল ১৭৬ দশমিক ৬৬ যা ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১৯৫। বায়ুদূষণের পেছনে সুষ্ঠু নগর পরিকল্পনার অভাবকেও দায়ী করেন অনেকে। ২০২৩ সালে বিআইপি প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ বছরে রাজধানী ঢাকার সবুজ এলাকা কমে মাত্র ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জলাভূমি নেমে এসেছে মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশে। অথচ একটি আদর্শ শহরে ২৫ শতাংশ সবুজ এলাকা এবং ১০-১৫ শতাংশ জলাশয় বা জলাধার থাকার কথা। একদিকে যেমন সবুজের পরিমাণ কমেছে আবার অন্যদিকে কংক্রিটের পরিমাণ বেড়েছে। ১৯৯৯ সালে যেখানে কংক্রিটের পরিমাণ ছিল ৬৪ দশমিক ৯৯ ভাগ, তা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ। বাতাস চলাচলের করিডর সংকুচিত হওয়ায় নগরীতে তৈরি হচ্ছে হিট আইল্যান্ড বা তপ্ত দ্বীপ।

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পিএম
বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

ক্ষুধা নিবারণে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তবুও ক্ষুধা নিবারণে বাংলাদেশে মাঝারি মাত্রার ঝুঁকি বিরাজ করছে বলে ‘বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক-২০২৪’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ওই প্রতিবেদন যৌথভাবে প্রকাশ করে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯ দশমিক ৪ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশ ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে। এ সূচকে ভারত ২৭ দশমিক ৩ স্কোর নিয়ে ১০৫তম এবং পাকিস্তান ২৭ দশমিক ৯ স্কোর নিয়ে ১০৯ম স্থানে রয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ক্ষুধা মোকাবিলায় অগ্রগতি অর্জন করলেও এখনো মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা বিরাজ করছে। সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দুই দেশ নেপাল ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

সূচকে শ্রীলঙ্কা ১১ দশমিক ৩ স্কোর নিয়ে ৫৬তম এবং নেপাল ১৪ দশমিক ৭ স্কোর নিয়ে ৬৮তম স্থান দখল করেছে। 

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে ‘ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের পথে বাধা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘অনিরাপদ কৃষি চর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না।’ মাছসহ বাংলাদেশে যে রকম প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য আছে তা রক্ষার ওপর জোর দেন তিনি। খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর লোকজ জ্ঞানকেও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি। এ ছাড়া অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড খাদ্যব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ড. মিশেল ক্রেজা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বহু খাতভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। দরিদ্র মানুষ অনেক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। তাই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দরিদ্রসহ অন্যান্য বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে আরও অগ্রাধিকার দিয়ে সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে। 

স্বাগত বক্তব্যে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুধা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, কিন্তু ২০২৪ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের দিকে তাকালে দেখা যায়, এখনো গুরুত্বপূর্ণ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ক্ষুধার চক্রকে ভাঙতে আমরা কমিউনিটিভিত্তিক কর্মসূচি, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা ও জলবায়ু সহনশীলতার শক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন সরকারের নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন অংশীদার, নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়নকর্মীরা। তারা ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূর করতে কার্যকর সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন।

তারা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টির কারণে সাধারণত নারী ও কন্যাশিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা আবহাওয়ার চরম অবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবেও বেশি ভোগান্তির শিকার হয়।

হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হলো আবু সাঈদের অসুস্থ বাবাকে

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হলো আবু সাঈদের অসুস্থ বাবাকে
সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের অসুস্থ বাবা মকবুল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আনা হয়েছে। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হয়। 

মকবুল হোসেন হৃদরোগ, কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানানো হয়, গত ৭ ডিসেম্বর জ্বর এবং পেটের পীড়া নিয়ে রংপুরের সিএমএইচে ভর্তি হন মকবুল হোসেন। পরে হৃদযন্ত্রের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখান থেকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে আর্মির হেলিকপ্টারে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ১৬ জুলাই গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তিনি আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। গত ২৮ নভেম্বর আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের হাতে শহিদ আবু সাঈদ ফাউন্ডেশনের সনদ তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মেহেদী

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৪৪

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪৪৪
ডেঙ্গু (খবরের কাগজ গ্রাফিকস)

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে ৫৩৬ জনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া একই সময়ে মশাবাহিত এই প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৪৪ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৬০৩ জন। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে ১ জন, ঢাকা উত্তর সিটির হাসপাতালে ২ এবং দক্ষিণ সিটির হাসপাতালে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন পুরুষ ও তিনজন নারী। এ নিয়ে চলতি মাসে এ পর্যন্ত মৃত্যু হলো ৪৮ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা উত্তরে ৮৪ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৭৮, ঢাকা বিভাগে ৯৬, বরিশাল বিভাগে ২৩, চট্টগ্রামে ৭৩, খুলনায় ৪৫, ময়মনসিংহে ১৩, রাজশাহীতে ২৭, রংপুরে ৩ এবং সিলেটে ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ১৩৪ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫১৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে ৯৫ হাজার ১৫১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে নভেম্বর মাসে, ১৭৩ জন। গত মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার ৬৫২ জন। আর এর আগের মাস অক্টোবরে এই বছরের সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ৮৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই মাসে মারা গেছেন ১৩৪ জন। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ২০২৩ সালে। এ বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মারা যান। 

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });