শুধু আঞ্চলিক সংযোগের মাধ্যম হিসেবেই নয়, কৌশলগত ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। তাই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মহাপরিকল্পনা পুনর্গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি সচিবালয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় 'জাইকার' কারিগরি সহায়তা প্রত্যাশা করে উপদেষ্টা বলেন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যুটি বিবেচনা করতে হবে। সরকার এখানে একটি আন্তর্জাতিকমানের ডক-ইয়ার্ড নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বন্দরগুলোর কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় ও গতিশীলতা আনাতে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
জাহাজভাঙা শিল্পের পরিবেশগত মান যাচাইয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ কমিটি শিপ রিসাইকেলিং ইয়ার্ডগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে সরকারকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিবে।
তিনি আরও বলেন, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। মাতারবাড়ি বাংলাদেশের একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাজেন্সি 'জাইকার' আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি। এর মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের নির্মাণ কাজ শেষ হলে কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে।
এ সময় ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব বলে আশা করেন উপদেষ্টা।
এ ছাড়া বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলোর উন্নয়নে জাপান সরকারের পেশাগত ও কারিগরি সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব-সম্পদ ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নে পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় জাপান বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। জাপানের স্বেচ্ছাসেবীরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম চালাচ্ছে। জাইকা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কার্যক্রম সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর।
এ সময় সকলের সহযোগিতায় যথাসময়ে বন্দরের কার্যক্রম শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশের জাহাজভাঙা শিল্পে সহযোগিতার আগ্রহও প্রকাশ করেন।
আনিসুর রহমান তপন/মেহেদী/এমএ/