ভারতের বেঙ্গালুরুতে নাজমা নামের বাংলাদেশি এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে হত্যার কারণ অনুসন্ধান ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
বিক্ষোভ মিছিলে তারা ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘আমাদের ধমনিতে, আবরার-আবু সাঈদের রক্ত’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, নাজমা-ফেলানী হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার বোন মরল কেন, ভারত তুই জবাব দে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘ভারত কখনো জুলাই অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেনি। জুলাই অভ্যুত্থানকে ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী কাজ হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক মহল ও তাদের দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ঘৃণা সৃষ্টি করেছে। তারা শুধু উগ্রতাই ছড়িয়েছে। গত শুক্রবার ভারতে আমাদের বোন নাজমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এটা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও উগ্রতা ছড়ানোর ফলাফল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতকে অবশ্যই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। হাইকমিশনারকে ডেকে জবাবদিহি করতে হবে, যেন আগামীতে এমন কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি নাজমা হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণ সেটা মেনে নেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা কলেজের আহ্বায়ক আফজাল হোসেন রাকিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডাকা হয়নি। এই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কোনো জবাব চাওয়া হয়নি। আমরা চাই না আর নতজানু হয়ে চলতে। আমরা চাই, নতজানু না হয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’
সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাবেক সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মঈনুল ইসলাম, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ, ঢাবি শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হোসাইন সাদাত প্রমুখ। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ভারতের কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রামমূর্তি এলাকার কালকেরে লেকের কাছ থেকে নাজমার লাশ উদ্ধার করা হয়। ভারতের পুলিশের ধারণা, নাজমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
মেহেদী/