ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

কবি হেলাল হাফিজ আর নেই

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
কবি হেলাল হাফিজ আর নেই
হেলাল হাফিজ

কবি হেলাল হাফিজ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। 

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) শাহবাগে এক হোস্টেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।

হেলাল হাফিজের মৃত্যুর বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী।

তিনি বলেন, কবি হেলাল হাফিজ শাহবাগে যে হোস্টেলে থাকেন সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। 

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায় হেলাল হাফিজের জন্ম। ১৯৬৫ সালে নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

পরে ১৯৭২ সালে দৈনিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতা শুরু করেন হেলাল হাফিজ। পূর্বদেশ ও দৈনিক দেশ পত্রিকায় তিনি সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল দৈনিক যুগান্তর।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কবিকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরপর বইটির ৩৩টির বেশি সংস্করণ বেরিয়েছে। এর ২৬ বছর পর ২০১২ সালে আসে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। তার অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র দুটি পঙ্‌ক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ পাঠকের মুখে মুখে উচ্চারিত হয়ে থাকে।

হেলাল হাফিজ ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

অমিয়/

ভোটার তালিকা হালনাগাদ বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ সোমবার থেকে

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৮ পিএম
বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ সোমবার থেকে
ছবি: সংগৃহীত

ভোটার তালিকা হালনাগাদে আগামী সোমবার (২০ জানুযারি) থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই কার্যক্রম চলবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সম্প্রতি ইসির জারি করা একটি পরিপত্রে এসব তথ্য জানানো হয়। 

ইসি সূত্র জানায়, হালনাগাদকালে যাদের জন্ম ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবেন ইসির মাঠকর্মীরা। এ ছাড়া বিগত দিনে বাদ পড়াদের অন্তর্ভুক্ত, মৃত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়াসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ের কাজ করা হবে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধন কেন্দ্রে নাগরিকদের বায়োমেট্রিক গ্রহণের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন গ্রহণ, মৃত ভোটারদের নাম কর্তনের তথ্যাদি এবং নতুন ভোটারের তথ্য আপলোড করা হবে। আইন অনুযায়ী, এসব নতুন ভোটারের তথ্য আগামী ২০২৬ সালের ২ জানুয়ারি তালিকায় যুক্ত হবে। এরপর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী বছরের ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে ইসি।

এসব বিষয়ে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের এই কার্যক্রমে ইসিকে ল্যাপটপ, স্ক্যানারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করবে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। আজ রবিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে সরঞ্জামগুলো হস্তান্তর করবে সংস্থাটি। তাদের ল্যাপটপ ও স্ক্যানার দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের ছবি তুলতে ও চোখের আইরিশ এবং ১০ আঙুলের ছাপ নিতে কাজে লাগানো হবে।

এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে ইসির কী ধরনের সহায়তা লাগবে, সে বিষয়ে বৈঠক করে নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, মাঠকর্মীরা ভোটারদের যেসব তথ্য আনবেন, সেসব তথ্য কাস্টমাইজেশনে ইসিকে সহায়তা করবে ইউএনডিপি। এ ছাড়া এই কাজে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, যোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা করবে সংস্থাটি। এর আগেও প্রায় ২০ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও নির্বাচনি সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করে আসছে ইউএনডিপি। এই সময়ে এ দেশের অনুষ্ঠিত হওয়া সব নির্বাচনে (৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন) আর্থিক ও কারিগরিসহ নানা কাজে উন্নয়ন সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে ইউএনডিপি।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজের জন্য ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা, সুপারভাইজার ও তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ দেয় নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ কাজের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মোট ৬৬ হাজার জনকে। তাদের মধ্যে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা ও সহকারী উপজেলা এবং অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ১৮ জন।

প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ তালিকায় নতুন ১৮ লাখ ভোটারকে যুক্ত করা হয়। এর ফলে দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জনে।

‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ’ হৃদয়ে লালন করতে হবে: সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩০ পিএম
‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ’ হৃদয়ে লালন করতে হবে: সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী
সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ও গবেষক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ও গবেষক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’ মানব সৃষ্টির মহান উদ্দেশ‍্য প্রতিপালনে ‘দেশকে গড়তে হলে সবার আগে নিজকে গড়ো’। পরকালের কথা চিন্তা করে দেশের এ ক্রান্তিকালে দুর্নীতি নির্মূল করতে, দেশের জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা, জাতীয় নিরাপত্তা, বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ, প্রকৃত গণতন্ত্র ও স্বচ্ছ ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটি সৎ-সাহসী দেশপ্রেমিকদের নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে ইনশাআল্লাহ।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৪টি থানার আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাড. হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া।

তিনি জরুরি ভিত্তিতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সৎ-সাহসী নির্মোহ ১০ জন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ ও মালয়েশিয়ার মাহাথির বিন মোহাম্মদের অনুকরণে প্রতিটি অফিস আদালতের দুর্নীতি নির্মূলের ব‍্যবস্হা গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আবারও অনুরোধ করেন।

সভায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক ডক্টর লুৎফর রহমান, কর্নেল (অব.) ডক্টর প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ মো. শামছুদ্দীন, ডক্টর আব্দুল হক তালুকদার, ডক্টর শফিকুল ইসলাম কানু, কাদের মন্ডল, হালিম শরীফ, এস কে ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মাহফুজা আক্তার, জান্নাতুল করিম খোকন, উইং কমান্ডার আমিনুল ইসলাম (অব.) প্রফেসর ড. জহিরউদ্দিন মাহমুদ, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, অ্যাড. হারুন উর রশিদ ভূঁইয়া, অধ‍্যাপক ইউনুস হাসান, স্কোয়ার্ডন লিডার শামস জামান, কাজী সারোয়ার হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, কবির হোসেন, তালুকদার মনিরুজ্জাম মনির, কাজী আলম, নাফিজ মাহবুব প্রমুখ। 

এমএ/

সীমান্তে উত্তেজনা জিরো পয়েন্ট এড়িয়ে চলার আহ্বান বিজিবির

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৯ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
জিরো পয়েন্ট এড়িয়ে চলার আহ্বান বিজিবির
বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। ছবি: ইউএনবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে উত্তেজনার পর জিরো পয়েন্টে না যেতে দেশের নাগরিকদের প্রতি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক ও বিএসএফ সদস্য। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সীমান্তে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয়রা। ফলে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এ সময় দুই দেশের নাগরিকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ সদস্যরা হঠাৎ করেই কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ৫ শতাধিক ভারতীয় নাগরিক নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় একাধিক ককটেলও ফাটান তারা। পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন বিএসএফ সদস্যরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশের ভেতরে লাগানো বেশ কিছু আম গাছ কেটে নষ্ট করা হয়েছে।

এ খবরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন বিজিবি সদস্যরা। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বাংলাদেশিদের আম গাছ কাটা নিয়ে সীমান্তের দুই পাশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তবে এই সময়ে বাংলাদেশি সাধারণ নাগরিকদের সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে না যেতে আহ্বান জানান তিনি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিএসএফ সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, যাতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হয়েছে। এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি বিজিবির উচ্চপর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিকরা যে আম গাছ কেটে ফেলেছে, এজন্য বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।’

এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি চৌকা সীমান্তে আইন অমান্য করে বিএসএফের পক্ষ থেকে শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করলে বিজিবি বাধা দেয়। এতে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর দশ দিন যেতে না যেতেই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। সূত্র: ইউএনবি

এমএ/

আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের ৬৫ শতাংশই টিনএজ

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের ৬৫ শতাংশই টিনএজ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

দেশে গত বছর ৩১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা করা এসব শিক্ষার্থীর শতকরা ৬৫ শতাংশই ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী। আর পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় নারী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৬১ শতাংশ নারী, ৩৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গ ও ট্রান্সজেন্ডার।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে আঁচল ফাউন্ডেশন। ‘২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা: সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ গলায় ফাঁস দিয়ে, ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বিষপানে এবং ৪ দশমিক ৬ শতাংশ অন্যভাবে আত্মহত্যা করেছে।

আত্মহত্যার শীর্ষ কারণগুলোর মধ্যে অভিমানে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ, রোমান্টিক সম্পর্কের কারণে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ, একাডেমিক চাপ সহ্য করতে না পেরে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং মানসিক অস্থিরতায় আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে আত্মহত্যা একটি ক্রমবর্ধমান সামাজিক সমস্যা হয়ে উঠেছে। সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে আত্মহত্যাকে নিষিদ্ধ এবং ঘৃণার চোখে দেখা হলেও প্রতিবছরই আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ অপসংস্কৃতির প্রভাব খুব বেশি। প্রতিবছরের মতো এ বছরও আঁচল ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিটের সদস্যরা দেশের জাতীয় ও স্থানীয় ১০৫টিরও বেশি সংবাদপত্রে প্রকাশিত আত্মহত্যার সংবাদের তথ্য খুঁজে পান।

সংবাদ সম্মেলনে আঁচল ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিটের টিম লিডার শেখ রফিকউজ্জামান বলেন, ‘২০২২ সালে দেশে আত্মহত্যাকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৩২ জন এবং ২০২৩ সালে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ৫১৩ জন এবং ২০২৪ সালে ৩১০ জন। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আত্মহত্যা-সম্পর্কিত খবর গণমাধ্যমে কম এসেছে বলেই আমাদের গবেষকরা মনে করছেন। নারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত আত্মহত্যার ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মানসিক স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সহযোগিতা নারীদের জন্য আরও বেশি প্রয়োজন।’

প্রতিবেদনে দেখা যায়, আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে প্রাথমিকে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৪৬ দশমিক ১ শতাংশ, উচ্চমাধ্যমিকে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ এবং স্নাতক পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়া স্নাতকোত্তরে ১ দশমিক ৯ শতাংশ, ডিপ্লোমায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ এবং সদ্য পড়াশোনা শেষ করা শিক্ষিত তবে বেকার শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।

শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যা প্রবণতা নিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট নিয়ে পরিবার, সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও সচেতন নয়। প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলেও আমরা তত গুরুত্বের সঙ্গে নিই না, যার কারণে আত্মহত্যার হার কমছে না।’

বেসরকারিভাবে কিছু কাজ হলেও সরকারিভাবে খুব বেশি কাজ হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার নিজেরাই মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না। সরকারের কাছে আবেদন জানাই, দ্রুত গতিতে যেন দেশব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।’

আত্মহত্যা প্রতিরোধে আঁচল ফাউন্ডেশন ১৪টি সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো মানসিক স্বাস্থ্য অ্যাম্বাসেডর প্রোগ্রাম, বন্ধু সহযোগিতা গ্রুপ গঠন, লাইফ স্কিলস ওয়ার্কশপ আয়োজন, গেমিফিকেশন টেকনিক, ফিলিংস অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করা, পারিবারিক কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম, সৃজনশীল থেরাপি ক্লাস, ডিজিটাল মেন্টাল হেলথ ক্যাম্পেইন, রিভারসাইড হেলথ রিট্রিট পরিকল্পনা, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির স্কলারশিপ, আত্মহত্যা প্রতিরোধ গবেষণা তহবিল, জীবন সংরক্ষণ প্রতিশ্রুতি দিবস, কৃতজ্ঞতা চর্চা সেশন ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপেন হেল্প লাইন চালু করা।

শেখ হাসিনাকে বিচারের সম্মুখীন করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব: প্রেস সচিব

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম
শেখ হাসিনাকে বিচারের সম্মুখীন করা সরকারের প্রধান দায়িত্ব: প্রেস সচিব
ইবিতে ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা। আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে এনে বিচার করা হবে। জাস্টিস অ্যান্ড একাউন্টিবিলিটি নিশ্চিতে গুম, খুন, গণহত্যার বিচারের কাজ চলমান রয়েছে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ইবিসাস) যৌথভাবে আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে তার বাবার খুনিদের খুঁজে-খুঁজে দেশে এনেছে, আমরাও সেভাবে জুলাই আন্দোলনের খুনিদের দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করব। জুলাই বিপ্লবের জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রত্যাশিত রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রেস সচিব বলেন, আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই ইমেজ বিশ্বকে জানাতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে কাজ করতে হবে। এখনও বিশ্ববিদ্যালয়য়ের যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম স্বৈরাচারের নামে রয়ে গেছে সেগুলো পরিবর্তন করে শহিদদের নামে করার আহ্বান জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রেস সচিব বলেন, দেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ করার বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে। জুলাই আন্দোলনের ফসল কমিশনের রিপোর্ট। আপনারা এগুলো পড়ুন ও ক্যাম্পাসে এসব নিয়ে বিতর্ক করুন।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাংগীর আলম, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসাইন আল মামুন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বিশেষ সংবাদদাতা এস এম রাশিদুল ইসলাম।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজমুল হক জায়িম। সূত্র: বাসস

এমএ/