
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু বাজেটের সর্বোত্তম ব্যবহারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থ বরাদ্দের গাইডলাইন হালনাগাদ করা হয়েছে এবং এবার সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে প্রাপ্ত জলবায়ু ফান্ডের অর্থও যথাযথভাবে ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে। কোন কোন খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তা নির্ধারণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব না হলে, আরও অর্থ ব্যয় করেও বৈশ্বিক ক্ষতি রোধ করা যাবে না।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইএসএস) আয়োজিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনা: বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নদী ও খাল ভরাট হলে অভিযোজন কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না। উন্নয়ন পরিকল্পনা নতুন করে সাজাতে হবে এবং ভোগবাদী জীবনযাত্রা পরিত্যাগ করতে হবে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা শিগগিরই কাজ শুরু করবে। দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার এখন সহিষ্ণুতা বাড়ানো, অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করা এবং বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত ও সমতাভিত্তিক আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শুনতে হবে এবং উন্নত দেশগুলোর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইএসএস-এর চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসাল আজম সরকার। বক্তব্য রাখেন বিআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস, ড. সুফিয়া খানম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, বিআইএসএস; ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন; অধ্যাপক শারমিন নীলর্মি, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাডভোকেট এম হাফিজুল ইসলাম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য, ইউএনএফসিসিসি-এর ওয়ারসো ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজম ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ।
সেমিনারে নীতিনির্ধারক, গবেষক, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং কূটনীতিকরা বৈশ্বিক জলবায়ু কূটনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি, লস অ্যান্ড ড্যামেজ মেকানিজমের অগ্রগতির ধীরগতি এবং বড় নির্গমনকারী দেশগুলোর শক্তিশালী প্রশমন লক্ষ্য নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উঠে আসে।
আনিসুর রহমান তপন/এমএ/