
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য একটি টার্গেটও সংস্থাগুলোকে দেওয়া হবে। এ টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হলে সংস্থাগুলোকে জবাবদিহি করতে হবে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পরিদর্শনের পর বহদ্দারহাটে বারইপাড়া খাল খনন কার্যক্রম এবং আশপাশের খাল-নালার পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে তিন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টারা এবং সিটি মেয়র জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় ৪ জন উপদেষ্টার সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম কাজ করছে।
ব্রিফিংকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। এটা প্রাকৃতিক বন্যা নয়। ময়লা ফেলে আমরা নগরবাসী খাল ভরাট করছি। নগর প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনে যারা এতদিন দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের নীরব কিংবা সরব সম্মতিতে এই কাজটি হয়েছে। আমরা এসেছি আগামী বর্ষার আগে কী কী করা যায় তা দেখতে। যাতে একটা দৃশ্যমান উন্নতি হয়। এত বছর হয়ে গেছে। এটার সমাধান হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। প্রকল্পের কার্যক্রমে বাধা হিসেবে অনেক মামলা আছে উল্লেখ করে বলেন, মামলার তালিকাগুলো নেব। জমি অধিগ্রহণের কিছু ব্যাপার আছে। কোথায় জমি অধিগ্রহণ করা যায় তাও দেখব। আমরা একটা কর্মপরিকল্পনা ঠিক করব। তা সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। মার্চের মধ্যে যারা কাজ করতে ব্যর্থ হবে তাদেরকে তার দায় নিতে হবে। এর খেসারত তাদেরকে দিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, ওয়াসা, চট্টগ্রাম বন্দর আছে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভূমি অফিসের সঙ্গে যোগসাজশে অনেক খাল ব্যক্তিমালিকানাধীন হয়ে গেছে। যেখানে বড় বড় বহুতল ভবন হয়ে গেছে। পাহাড় কাটার কারণে মাটি খালে নেমে আসছে। তৃতীয় সমস্যা হচ্ছে পলিথিন আর প্লাস্টিক। বাপ-দাদারা যেভাবে বাজার করেছে আমরাও সেভাবে করব। তাহলেই পলিথিন বন্ধ হবে। আমাদেরকে বুঝতে হবে এই বছর কি হবে, পরের বছর কী হবে। প্রকল্পটি মানুষের কাজে লাগছে কি না তা দেখতে হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেন, কাজের প্রতিবন্ধকতা সরেজমিনে দেখেছি। চট্টগ্রাম নিয়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে তাদের পরামর্শ নেব। সর্বোপরি সহযোগিতা নেব নগরে বসবাসকারীদের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।