
বৈধ সম্পদের মামলায় কারাবন্দি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর) চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে অভিযান চালিয়ে তার রাজধানী ধানমন্ডির বাসা থেকে অন্তত ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। দুদক পরিচালক সাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম এই অভিযান চালায়।
দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী এবং মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। পরে গত ১৪ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সহায়তায় দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে। ওই দিনই তাকে আদালতে হাজির করা হয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। আলোচিত পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের মার্চে এস কে সুরকে তলব করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকার সময় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) সহযোগিতা দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক। জবানবন্দিতে তিনি জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরসহ ব্যাংক পরিদর্শন কর্মকর্তাদের নিয়মিতভাবে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে ঘুষ দিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা করে ঘুষ দেওয়া হতো। নিয়মিত ঘুষের বিনিময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি ‘ম্যানেজ’ করতেন এস কে সুর চৌধুরী।