ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

বরিশাল জেলা সমিতি ও ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটির সমঝোতা স্মারক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
বরিশাল জেলা সমিতি ও ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটির সমঝোতা স্মারক
ছবি: খবরের কাগজ

বরিশাল জেলা সমিতি ও ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ঢাকার কার্যালয়ে এই স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।  

চুক্তি অনুযায়ী বরিশাল জেলা সমিতির পৃষ্ঠপোষকতায় ও ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের কারিগরি সহযোগিতায় এবছর শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বেশ কিছু টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে।

টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্যারা ক্রিকেট, প্যারা ব্যাডমিন্টন, প্যারা টেবিল টেনিস ও দাবা। এছাড়াও খেলোয়াড় ও কোচদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশ বরিশাল সমিতিকে ঢাকায় প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি বিশেষ স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদান করা হবে।

বরিশাল জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিক সোহেল ও ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. মাকসুদুর রহমান স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এসময় বরিশাল জেলা সমিতির সভাপতি ও গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডক্টর এনায়েত করিম এবং ন্যাশনাল প্যারা অলিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম উপস্থিত থেকে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বরিশাল জেলা সমিতির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল লতিফ, এম জহিরুল আলম ইকবাল, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, ট্রেজারার মো. হাফিজুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

মাহফুজ

সরকার যে সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে: তথ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ এএম
সরকার যে সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে: তথ্য উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের ছারছীনা দরবার শরিফের ১৩৫তম মাহফিলের শেষ দিনে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজের আগে সেখানে আলোচনায় অংশ নেন তিনি। 

মাহফুজ আলম বলেন, ‘দেড়শতাধিক বছর ধরে ছারছীনা সিলসিলার খেদমত এই উপমহাদেশে অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের কাছে দোয়া চাই, সরকার যেসব সংস্কারের দায়িত্ব হাতে নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে। আমরা বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে এবং দেশকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যেন আমাদের অর্পিত দায়িত্ব শেষ করতে পারি। বিশেষ করে আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আপনাদের সন্তান হিসেবে এ দেশের খেদমত করতে পারি।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ছারছীনা দরবার শরিফের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মাদ্রাসা তৈরি করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। তারা শিক্ষা দিচ্ছে ইসলাম শান্তির ধর্ম।’

মাহফুজ আলম বলেন,  ‘আমার পরিবার ছারছীনা দরবার শরিফের মুরিদ ছিল। আজ আমি এখানে এসেছি পীর সাহেবের কাছে আমার ও দেশের জন্য দোয়া চাইতে। এখানে আসার মাধ্যমে ছারছীনা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা শাহ সূফী নেছার উদ্দিন আহমদের (রহ.) উপমহাদেশে দীনি সংস্কার সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পেরেছি।’

আখেরি মোনাজাতে ছারছীনা শরিফের পীর সাহেব আলহাজ হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমাদ হুসাইন দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। 

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান, বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন, পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 
এর আগে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ছারছীনা দরবার শরিফের মরহুম পীরদের কবর জিয়ারত করেন।

দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ দশম

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ এএম
দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ দশম
ছবি: খবরের কাগজ

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) স্কোরে দূষিত বাতাসের শহরে সারা বিশ্বের মধ্যে ঢাকা আজ দশম স্থানে রয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৪২।

একই সময়ে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর কিনশাসা ১৮১ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, নেপালের কাঠমান্ডু ১৭০ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই কাঠামান্ডুর সমান একিউআই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

যখন কণাদূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘসময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

একিউআই মান ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।

সুমন/

অগ্নিঝরা মার্চ কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় এলেন ইয়াহিয়া

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:২৭ এএম
কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় এলেন ইয়াহিয়া
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আজ অগ্নিঝরা ১৫ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন তীব্র হয়। এই উত্তাল-অগ্নিগর্ভ আন্দোলনের মধ্যে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। বিমানবন্দরে গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান তাকে স্বাগত জানান। কোনো সাংবাদিক ও বাঙালিকে এ সময় বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

পূর্ব পাকিস্তানের অফিস-আদালতে পূর্ণ কর্মবিরতি চলে। রাজধানী ঢাকায় দিনব্যাপী সভা ও শোভাযাত্রা হয়। সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং যানবাহনে কালো পতাকা ওড়ে। এদিন কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে নারীদের সভা হয়। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বেতার ও টিভি শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন।

পাকিস্তানি সামরিক শাসক ও পিপিপির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অধিকার নিয়ে যথারীতি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখেন। নির্বাচনে বিজয়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা যাতে না যায়, সে জন্য উর্দুভাষী সামরিক শাসকদের সঙ্গে হাত মেলান ভুট্টো। 

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ তার ‘আওয়ামী লীগ: যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘১৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন, গণমাধ্যম ও স্বার্থান্বেষী মহল প্রদেশে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখা দিয়েছে; তিনি কী বলতে চেয়েছেন তা সাধারণ মানুষ ঠিকই বুঝতে পেরেছে।’

মহিউদ্দিন আহমদ আরও লিখেছেন, ‘১৫ মার্চ করাচির নিশতার পার্কে এক জনসভায় ভুট্টো দাবি করেন, জাতীয় পরিষদের ৩ মার্চের অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, সংবিধান তৈরির আগে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার যে দাবি শেখ মুজিব করেছেন, তা হতে হবে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে। দেশের দুটি অংশ- পশ্চিম পাকিস্তানে পিপলস পার্টি এবং পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। সারা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে, যদি আওয়ামী লীগ ছয় দফা দাবি থেকে সরে আসে।’

এদিন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে গণসংগীত পরিবেশন ও পথনাটক মঞ্চায়ন করেন। নতুন সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে সভার আয়োজন করে। সভায় ছাত্রনেতারা অবিলম্বে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান।

দেশবাসীকে অধিকার বঞ্চিত করার প্রতিবাদস্বরূপ শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা তাদের খেতাব বর্জন অব্যাহত রাখেন। শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবদিনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সাংবাদিক-সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন ও অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী তাদের রাষ্ট্রীয় খেতাব বর্জন করেন। 

খুলনার হাদিস পার্কের জনসভায় জাতীয় লীগপ্রধান আতাউর রহমান খান বলেন, বাংলার প্রত্যেক মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর (শেখ মুজিবুর রহমান) পেছনে একতাবদ্ধ। রেডিও, টিভি, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, সেক্রেটারিয়েট প্রভৃতি আজ আওয়ামী লীগপ্রধানের আজ্ঞাবাহী। এদিন নেত্রকোনায় সুইপার ও ঝাড়ুদাররা ঝাড়ু, দা, লাঠি এবং কোদাল নিয়ে মিছিল করেন। 

এ ছাড়া বগুড়া, খুলনা, রংপুর, কুমিল্লা, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার পক্ষে মিছিল-সমাবেশ হয়।

১৯৭১ সালের ১৫ মার্চের আরও কয়েকটি ঘটনা সম্পর্কে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘বাংলাদেশের তারিখ’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইস্তিকলাল পার্টির প্রধান আসগর খান পেশোয়ার আইনজীবী সমিতির সভায় বলেন, ‘এই মুহূর্তে শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দু’অংশকে একত্রে ধরে রেখেছেন। সংখ্যাগুরু দলের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক এবং এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রসম্মত।’

সাংবাদিকদের কাছে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান খান ওয়ালি বলেন, ‘নির্বাচিত পার্লামেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। বাস্তবক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের আর অস্তিত্ব নেই। ১ জুলাই থেকে এখানে চারটি পৃথক প্রদেশ হয়েছে।’

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব
কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারের আগে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এটি সেই জায়গা, যেখানে বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের সহায়তা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে জরুরি।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত, কারণ এই মানুষগুলো ইতোমধ্যে অসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করছে।

শুক্রবার উখিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। এ সময় গুতেরেসের পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এদিকে ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

পবিত্র রমজান মাসে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যে তারা যেন শুধু কথায় নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ ও কার্যকর সহায়তার মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। ঘোষিত অর্থের সহায়তা হ্রাসের কারণে, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪০ শতাংশ পাওয়া যাবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করবে। এটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে।’ তিনি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানুষ এখানে কষ্ট পাবে, মারা যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে শরণার্থী শিবিরে পৌঁছালে রোহিঙ্গারা হাত নেড়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। উভয় নেতা সাদরে হাত নেড়ে তাদেরও অভিবাদন জানান।

জানা গেছে, ইফতারের মেন্যুতে ছিল ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি, বেগুনি, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। এই খাবারের তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, এই আয়োজনে সাধারণ মানুষ এবং অতিথিদের জন্য সহজ, স্থানীয় ও পরিচিত ইফতার পরিবেশন করা হয়।

ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।

সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

গুতেরেসের ক্যাম্প পরিদর্শন

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

শুক্রবার কক্সবাজারের বালুখালী-১৮ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারি যে এটি (সংকট) এড়াতে আমরা সবকিছু করব এবং তহবিল প্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করতে পারে- এমন সব দেশের সঙ্গে আমি কথা বলে যাব।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের কথা ভুলে যাবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি জানান, (রোহিঙ্গাদের বিষয়ে) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি সোচ্চার হয়ে কথা বলবেন।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জরুরি ভিত্তিতে আরও সহায়তা প্রয়োজন। (শরণার্থী শিবিরে) এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করার জন্য এ সহায়তার খুবই প্রয়োজন।’

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মায়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকারকে সম্মান জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবকিছু করা জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। আগামীকাল রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০০৯ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে এটি প্রায় দুই লাখের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৪৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। এর মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে বহুবার জরিমানা করা হয়েছে। পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, নির্ধারিতের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি, ওজনে কারচুপি, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করা, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, ভেজাল পণ্য বিক্রি, খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর দ্রব্য মেশানোসহ বিভিন্ন ধারায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, শনিবার (১৫ মার্চ) বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগামীকাল দিবসটি পালিত হবে। তবে অন্য বছরে বাংলাদেশে দিবস পালন করা হলেও এবার তা হচ্ছে না। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে প্রায় দিন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এসব অভিযানে জেল-জরিমানাও করা হয়। ভোক্তা আইনে অনধিক তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর প্রয়োগ বিরল।
 
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের মাঝে অতি মুনাফার প্রবণতা বাড়ছে। এ জন্য ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে ভোক্তারা কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের এই কষ্ট লাঘবের জন্যই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দিন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে অতি মুনাফালোভীরা ধরা পড়ছে। তারপরও ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রমে কেউ খুশি না হলে বা ব্যবসায়ীদের কঠোর শান্তি চাইলে আমাদের সহযোগিতায় আদালতে মামলা করতে পারেন।’

এক প্রশ্নের উত্তরে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ‘সমাজের অধিকাংশ মানুষ অনৈতিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। এটার জন্য সামাজিক প্রতিকার দরকার, তা ছাড়া চিরস্থায়ী সমাধান সম্ভব না। ভেজাল ও নকল পণ্য, মানুষের জীবন বিপন্নকারী ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে আমরা বিভিন্ন ধারায় অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছি।’

ভোক্তা দিবস পালন না করা প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘যেকোনো দিবস পালন করতে টাকার দরকার হয়। হয়তো সেদিক বিবেচনা করে উপদেষ্টা পরিষদ এবার জাতীয় দিবসে দিনটি তালিকায় রাখেনি। এ জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশে ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করা হবে না। তবে ঈদের পর একটা বড় সেমিনারের অয়োজন করা হবে।’

মাহফুজ/