ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাসে শাহবাগ ছাড়লেন অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাসে শাহবাগ ছাড়লেন অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী রবিবার (৯ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাসে রাজধানীর শাহবাগ ছেড়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের স্বজনরা। যার ফলে দীর্ঘ সোয়া ৭ ঘণ্টা পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপরও যদি তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হয় ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে খবরের কাগজকে এমনটা জানিয়েছেন শহিদ আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীর ভাই আবদুল্লাহ আল মারুফ।

তিনি বলেন, ‘আমরা সেই সোয়া এগারোটা থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলাম। পরে সাড়ে ৬টার দিকে আমরা অবরোধ তুলে নেই। এর আগে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, আগামী রবিবার তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের নিয়ে যাবেন। এর আগে আমরা আমাদের দাবি ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসবো। সব মিলিয়েও যদি আমরা আমাদের দাবির ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সাড়া না পাই, ফের আমরা আন্দোলনের নামবো।’

এদিকে বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে উপস্থিত হন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার না করা হলে তা হবে এই সরকারের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা। প্রয়োজনে আবার জীবন দিয়ে হলেও তার বিচার নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি শহিদ পরিবারের সঙ্গে ছাত্র প্রতিনিধিরা আলোচনার মাধ্যমে তাদের সকল যৌক্তিক দাবি উপদেষ্টাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’

উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কিন্তু প্রতিফলন দেখিননি উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া সবার যৌক্তিক দাবি বুঝিয়ে দিতে হবে।’

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে— প্রতিটি হত্যার বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের ১০ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে হবে; শহিদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে; শহিদ পরিবারের দ্রুত পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া শহিদ পরিবারের ন্যায্য সম্মানী শহিদ পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রদান করতে হবে; শহিদ পরিবারের মাসিক সম্মানীর দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে এবং শহিদদের বীরের মর্যাদা দিতে হবে।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব
কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারের আগে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এটি সেই জায়গা, যেখানে বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের সহায়তা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে জরুরি।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত, কারণ এই মানুষগুলো ইতোমধ্যে অসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করছে।

শুক্রবার উখিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। এ সময় গুতেরেসের পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এদিকে ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

পবিত্র রমজান মাসে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যে তারা যেন শুধু কথায় নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ ও কার্যকর সহায়তার মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। ঘোষিত অর্থের সহায়তা হ্রাসের কারণে, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪০ শতাংশ পাওয়া যাবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করবে। এটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে।’ তিনি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানুষ এখানে কষ্ট পাবে, মারা যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে শরণার্থী শিবিরে পৌঁছালে রোহিঙ্গারা হাত নেড়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। উভয় নেতা সাদরে হাত নেড়ে তাদেরও অভিবাদন জানান।

জানা গেছে, ইফতারের মেন্যুতে ছিল ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি, বেগুনি, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। এই খাবারের তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, এই আয়োজনে সাধারণ মানুষ এবং অতিথিদের জন্য সহজ, স্থানীয় ও পরিচিত ইফতার পরিবেশন করা হয়।

ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।

সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

গুতেরেসের ক্যাম্প পরিদর্শন

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

শুক্রবার কক্সবাজারের বালুখালী-১৮ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারি যে এটি (সংকট) এড়াতে আমরা সবকিছু করব এবং তহবিল প্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করতে পারে- এমন সব দেশের সঙ্গে আমি কথা বলে যাব।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের কথা ভুলে যাবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি জানান, (রোহিঙ্গাদের বিষয়ে) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি সোচ্চার হয়ে কথা বলবেন।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জরুরি ভিত্তিতে আরও সহায়তা প্রয়োজন। (শরণার্থী শিবিরে) এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করার জন্য এ সহায়তার খুবই প্রয়োজন।’

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মায়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকারকে সম্মান জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবকিছু করা জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। আগামীকাল রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০০৯ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে এটি প্রায় দুই লাখের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৪৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। এর মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে বহুবার জরিমানা করা হয়েছে। পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, নির্ধারিতের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি, ওজনে কারচুপি, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করা, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, ভেজাল পণ্য বিক্রি, খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর দ্রব্য মেশানোসহ বিভিন্ন ধারায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, শনিবার (১৫ মার্চ) বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগামীকাল দিবসটি পালিত হবে। তবে অন্য বছরে বাংলাদেশে দিবস পালন করা হলেও এবার তা হচ্ছে না। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে প্রায় দিন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এসব অভিযানে জেল-জরিমানাও করা হয়। ভোক্তা আইনে অনধিক তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর প্রয়োগ বিরল।
 
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের মাঝে অতি মুনাফার প্রবণতা বাড়ছে। এ জন্য ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে ভোক্তারা কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের এই কষ্ট লাঘবের জন্যই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দিন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে অতি মুনাফালোভীরা ধরা পড়ছে। তারপরও ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রমে কেউ খুশি না হলে বা ব্যবসায়ীদের কঠোর শান্তি চাইলে আমাদের সহযোগিতায় আদালতে মামলা করতে পারেন।’

এক প্রশ্নের উত্তরে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ‘সমাজের অধিকাংশ মানুষ অনৈতিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। এটার জন্য সামাজিক প্রতিকার দরকার, তা ছাড়া চিরস্থায়ী সমাধান সম্ভব না। ভেজাল ও নকল পণ্য, মানুষের জীবন বিপন্নকারী ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে আমরা বিভিন্ন ধারায় অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছি।’

ভোক্তা দিবস পালন না করা প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘যেকোনো দিবস পালন করতে টাকার দরকার হয়। হয়তো সেদিক বিবেচনা করে উপদেষ্টা পরিষদ এবার জাতীয় দিবসে দিনটি তালিকায় রাখেনি। এ জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশে ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করা হবে না। তবে ঈদের পর একটা বড় সেমিনারের অয়োজন করা হবে।’

মাহফুজ/

আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০৭ পিএম
আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়ি দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুরের পাশাপাশি বাড়ির গাছে কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। ধর্ষক হিটু শেখ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়িতে শুক্রবার (১৪ মার্চ) দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুর চলে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শিশুটির প্রথম জানাজা শেষে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির সব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। বাড়িটি ভেঙে সেখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আর সেই মসজিদ বা মাদ্রাসার নামকরণ চান আছিয়ার নামে। নিষ্পাপ শিশুটির এমন করুণ মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়াদের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি পরিবারটিকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন। প্রকশ্যে ফাঁসি দাবি করেন অভিযুক্ত ধর্ষকের। শিশুটি মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

এদিকে সরেজমিনে গতকাল সকালে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কেউ ঘরের ওপরে উঠে খুলছেন চালের টিন, কেউবা বাড়ির পাশে থাকা গাছগুলো কাটছেন করাত দিয়ে। কয়েকজন সেগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য কোথাও। 

স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘মাগুরাকে দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী একসময় চিনতেন সাকিব আল হাসানের নামে। আর এখন চিনছেন শিশু আছিয়ার নামে। আমরা চাই এই ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি। তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হোক। এ ছাড়া তার বাড়িটি ভেঙে এই জায়গায় একটি মসজিদ অথবা মাদ্রাসা নির্মাণ করা হোক। যেটির নাম দেওয়া হোক আছিয়ার নামে। কেননা, এই জায়গায় যে পাপ কাজ হয়েছে, সেটি মোচন করতে হলে এখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা প্রয়োজন।’ 

অপর ব্যক্তি বলেন, ‘এখানে শিশুটির নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হলে সেটি দেশবাসী জানবেন। মনে রাখবেন, এখানে একটি শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল, যা দেখে অন্যরা ধর্ষণ করার আগে চিন্তা করবে।’

ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি আফরোজা আব্বাসের
এদিকে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস আছিয়াদের বাড়িতে যান। শিশুটির পরিবারকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। মহিলা দলের নেত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা মহিলা দলের নেতারা ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান।

এ সময় জনসমক্ষে প্রকাশ্যে ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করে আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘তিন মাস পরে বা ছয় মাস পরে একটা বিচার হলো, ফাঁসি হলো- আমরা সেটি চাই না। আমরা চাই জনসমুক্ষে দৃশ্যমান ফাঁসি হোক। সেটা আপনারা, আমরা, জনগণ সবাই দেখবেন। আমরা সে রকম একটা ফাঁসি চাই। এ রকম একটা ফাঁসি কার্যকর হলে অপরাধীরা ধর্ষণ করার আগে দশবার ভাববে।’
 
ঢাকায় মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ মিছিল
আছিয়া ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে মৌন প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। গতকাল মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ব্যানারের স্লোগান ছিল, ‘আমরা বিক্ষুব্ধ, আমরা শোকাহত, প্রতিবাদ জানাই, প্রতিরোধ চাই।’

মিছিলে অংশ নেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস রত্না, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগমসহ কেন্দ্রীয় কমিটি, সম্পাদকমণ্ডলী, ঢাকা মহানগর কমিটি, নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্য, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসহ সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা।

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া নিজনান্দুয়ালী গ্রামে তার বোনের বাড়ি বেড়াতে যায়। ৫ মার্চ গভীর রাতে ভগ্নিপতির সহায়তায় তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যার চেষ্টাও চালানো হয়। পরদিন ৬ মার্চ সকালে পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা নির্যাতিত আছিয়াকে প্রথমে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। হাসপাতালে শিশুটি অচেতন অবস্থায় থাকে। ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

আমরা ভাগ্যবান আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
আমরা ভাগ্যবান আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি শুধু একটি পর্যটন শহরই নয় বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।’

নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’

তিনি লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে।

তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন।

স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।’

তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।

খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন 
কক্সবাজারের খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প গতকাল পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়। প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ডিসেম্বর ২০২৬ সালের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। সূত্র: বাসস

মসজিদে বিচারকের জুতা চুরির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম
মসজিদে বিচারকের জুতা চুরির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার জজ কোর্ট জামে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর বিচারক মো. রেজাউল করিমের জুতা চুরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জোহরের নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, জুতা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই মসজিদেই নামাজ পড়তে আসা মো. সুমন নামে একজনের কাছ থেকে চুরি হওয়া জুতা উদ্ধার হয়। এ সময় সুমনকে আটক করেন মুসল্লিরা। পরে তাকে কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জুতা চুরির এ ঘটনায় ঢাকা স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর স্টেনোগ্রাফার রাসেল মিয়া কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এ মামলায় মো. সুমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

ঘটনা নিশ্চিত করে শুক্রবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার বলেন, জুতাসহ মো. সুমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর বিচারক মো. রেজাউল করিম নিয়মিত ঢাকা জজ কোর্ট জামে মসজিদে জামাতের সঙ্গে জোহর, আসর ও ক্ষেত্রবিশেষে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন।

গত ১৩ মার্চ দুপুরে ওই মসজিদের তৃতীয় তলায় জোহরের নামাজ শেষে অফিসে আসার সময় মসজিদে রাখা তার ব্যবহৃত ১ হাজার ৮৫০ টাকা মূল্যের এক জোড়া চামড়ার কালো জুতা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কিছুক্ষণ পর অজ্ঞাতনামা এক মুসল্লি মো. সুমনকে তার ডান হাতে পলিথিন ব্যাগে জুতা দেখে সন্দেহ করে তৃতীয় তলায় নিয়ে আসা হয়। তখন বিচারক তার জুতাজোড়া শনাক্ত করেন। এ সময় সুমনকে আটক করা হয়।