
অবৈধ উপায়ে প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন, প্রায় ৫৯ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও প্রায় ৫৮ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অন্য আসামিরা হলেন বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আকতার, ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও মেয়ে শেখ রাফা হাই। তারা পরস্পর যোগসাজশে মোট ১৪৮ কোটি ২৫ লাখ ২৯ হাজার ৮৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে তারা বিদেশে পাচার করেছেন ৫৭ কোটি ৭৯ লাখ ৩ হাজার ৭৯৯ টাকা এবং দুদকে জমা দেওয়া হিসাব বিবরণীতে ৫৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৮ হাজার ৭৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একটি মামলায় শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ১২৪ কোটি ৯৩ লাখ ৬ হাজার ২৭৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ২৬০ টাকার তথ্য গোপন করে বিদেশে পাচার করেছেন।
শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও বিদেশে অর্থ পাচারের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় মোট ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ১ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
রাফা হাইয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪২ কোটি ২ লাখ ৫১ হাজার ৬২৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ১ কোটি ১৬ লাখ ৬ হাজার ৪৬২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৬২ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চুকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালে ৫৯টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। তবে আট বছর পর অধিকতর তদন্তে আব্দুল হাই বাচ্চুর নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ৫৯টি মামলার মধ্যে ৫৮টিতে নতুন আসামি হিসেবে আব্দুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়ার নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এ ছাড়া রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট বাজারের ৩০ দশমিক ২৫ কাঠা জমি কেনা দেখিয়ে লুটপাট করা প্রায় ৯৫ কোটি টাকা গোপন করার চেষ্টা ও সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী-সন্তান ও ভাই এবং হোটেল লা মেরিডিয়ানের মালিক আমিন আহমেদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত বছরের এপ্রিলে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।