ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

দুবাই যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫০ পিএম
দুবাই যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আগামী ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র রফিকুল আলম। 

তিনি বলেন, ‘আগামী ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান উপস্থিত থাকবেন।’

সামিটে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক আমির শাইখ মুহাম্মাদ বিন রাশিদ আল মাখতুম গত ১৩ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ পাঠান। 

‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শাইখ মুহাম্মাদ বিন রশিদ আল মাখতুমের নেতৃত্বে ২০১৩ সালে গঠিত সরকারগুলোর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম। এক দশক ধরে প্ল্যাটফর্মটি ১৪০টি দেশের আন্তর্জাতিক সংস্থা, চিন্তাবিদ, বৈশ্বিক সিদ্ধান্তগ্রহীতা এবং বেসরকারি নেতাদের একত্রিত করার মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের রূপরেখা প্রণয়নে কাজ করে যাচ্ছে। 

রফিকুল আলম জানান, এবারের সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সরকারগুলোর মধ্যে কার্যকরী অংশীদারত্ব ও বৈশ্বিক মতবিনিময় এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে, যা সরকার ও জনগণের মধ্যকার সেতুবন্ধ সৃষ্টিতে প্ল্যাটফর্মটির উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে। 

তিনি বলেন, দুবাইয়ের সঙ্গে টেক্সটাইল, কৃষিপণ্য এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ক্রমবর্ধমান। উভয় দেশ জাতিসংঘ ও ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করছে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশের অবকাঠামো, স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করছে। 

রফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এই সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে বৈশ্বিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে তার চিন্তা এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। 

যৌথ বাহিনীর অভিযানে এক সপ্তাহে গ্রেপ্তার ৩৮৩

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ এএম
যৌথ বাহিনীর অভিযানে এক সপ্তাহে গ্রেপ্তার ৩৮৩
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী, ডাকাত, সন্ত্রাসীসহ মোট ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ী। ৬ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত সাত দিন অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান অভিযানে গত সাত দিনে যৌথ বাহিনী ওই সব অপরাধে জড়িত অভিযোগে ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময়ে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি পিস্তল, একটি রিভলবার, দুটি শুটারগান, গোলাবারুদ, ককটেল বোমা, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র, পাসপোর্ট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক, এনআইডি, মোবাইল ফোন, সিমকার্ড ও নগদ অর্থ। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৬ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীনস্থ ইউনিটগুলো অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ওই যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।

সরকার যে সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে: তথ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:০০ এএম
সরকার যে সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে: তথ্য উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের ছারছীনা দরবার শরিফের ১৩৫তম মাহফিলের শেষ দিনে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজের আগে সেখানে আলোচনায় অংশ নেন তিনি। 

মাহফুজ আলম বলেন, ‘দেড়শতাধিক বছর ধরে ছারছীনা সিলসিলার খেদমত এই উপমহাদেশে অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের কাছে দোয়া চাই, সরকার যেসব সংস্কারের দায়িত্ব হাতে নিয়েছে তা যেন শেষ করতে পারে। আমরা বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে এবং দেশকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যেন আমাদের অর্পিত দায়িত্ব শেষ করতে পারি। বিশেষ করে আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আপনাদের সন্তান হিসেবে এ দেশের খেদমত করতে পারি।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ছারছীনা দরবার শরিফের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার মাদ্রাসা তৈরি করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইসলামি শিক্ষা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। তারা শিক্ষা দিচ্ছে ইসলাম শান্তির ধর্ম।’

মাহফুজ আলম বলেন,  ‘আমার পরিবার ছারছীনা দরবার শরিফের মুরিদ ছিল। আজ আমি এখানে এসেছি পীর সাহেবের কাছে আমার ও দেশের জন্য দোয়া চাইতে। এখানে আসার মাধ্যমে ছারছীনা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা শাহ সূফী নেছার উদ্দিন আহমদের (রহ.) উপমহাদেশে দীনি সংস্কার সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পেরেছি।’

আখেরি মোনাজাতে ছারছীনা শরিফের পীর সাহেব আলহাজ হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমাদ হুসাইন দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে তিন দিনব্যাপী মাহফিলের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। 

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান, বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন, পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 
এর আগে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ছারছীনা দরবার শরিফের মরহুম পীরদের কবর জিয়ারত করেন।

দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ দশম

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ এএম
দূষিত বাতাসের শহরে ঢাকা আজ দশম
ছবি: খবরের কাগজ

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) স্কোরে দূষিত বাতাসের শহরে সারা বিশ্বের মধ্যে ঢাকা আজ দশম স্থানে রয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৪২।

একই সময়ে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর কিনশাসা ১৮১ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, নেপালের কাঠমান্ডু ১৭০ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই কাঠামান্ডুর সমান একিউআই স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

যখন কণাদূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘসময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

একিউআই মান ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।

সুমন/

অগ্নিঝরা মার্চ কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় এলেন ইয়াহিয়া

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১০:২৭ এএম
কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় এলেন ইয়াহিয়া
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আজ অগ্নিঝরা ১৫ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পূর্ব পাকিস্তানে অসহযোগ আন্দোলন তীব্র হয়। এই উত্তাল-অগ্নিগর্ভ আন্দোলনের মধ্যে কড়া নিরাপত্তায় ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। বিমানবন্দরে গভর্নর লে. জেনারেল টিক্কা খান তাকে স্বাগত জানান। কোনো সাংবাদিক ও বাঙালিকে এ সময় বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

পূর্ব পাকিস্তানের অফিস-আদালতে পূর্ণ কর্মবিরতি চলে। রাজধানী ঢাকায় দিনব্যাপী সভা ও শোভাযাত্রা হয়। সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং যানবাহনে কালো পতাকা ওড়ে। এদিন কবি সুফিয়া কামালের সভাপতিত্বে তোপখানা রোডে নারীদের সভা হয়। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বেতার ও টিভি শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন।

পাকিস্তানি সামরিক শাসক ও পিপিপির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অধিকার নিয়ে যথারীতি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখেন। নির্বাচনে বিজয়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা যাতে না যায়, সে জন্য উর্দুভাষী সামরিক শাসকদের সঙ্গে হাত মেলান ভুট্টো। 

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ তার ‘আওয়ামী লীগ: যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘১৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন, গণমাধ্যম ও স্বার্থান্বেষী মহল প্রদেশে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখা দিয়েছে; তিনি কী বলতে চেয়েছেন তা সাধারণ মানুষ ঠিকই বুঝতে পেরেছে।’

মহিউদ্দিন আহমদ আরও লিখেছেন, ‘১৫ মার্চ করাচির নিশতার পার্কে এক জনসভায় ভুট্টো দাবি করেন, জাতীয় পরিষদের ৩ মার্চের অধিবেশন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, সংবিধান তৈরির আগে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার যে দাবি শেখ মুজিব করেছেন, তা হতে হবে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে। দেশের দুটি অংশ- পশ্চিম পাকিস্তানে পিপলস পার্টি এবং পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। সারা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে, যদি আওয়ামী লীগ ছয় দফা দাবি থেকে সরে আসে।’

এদিন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে গণসংগীত পরিবেশন ও পথনাটক মঞ্চায়ন করেন। নতুন সামরিক বিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে সভার আয়োজন করে। সভায় ছাত্রনেতারা অবিলম্বে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান।

দেশবাসীকে অধিকার বঞ্চিত করার প্রতিবাদস্বরূপ শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরা তাদের খেতাব বর্জন অব্যাহত রাখেন। শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবদিনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সাংবাদিক-সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন ও অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী তাদের রাষ্ট্রীয় খেতাব বর্জন করেন। 

খুলনার হাদিস পার্কের জনসভায় জাতীয় লীগপ্রধান আতাউর রহমান খান বলেন, বাংলার প্রত্যেক মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর (শেখ মুজিবুর রহমান) পেছনে একতাবদ্ধ। রেডিও, টিভি, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, সেক্রেটারিয়েট প্রভৃতি আজ আওয়ামী লীগপ্রধানের আজ্ঞাবাহী। এদিন নেত্রকোনায় সুইপার ও ঝাড়ুদাররা ঝাড়ু, দা, লাঠি এবং কোদাল নিয়ে মিছিল করেন। 

এ ছাড়া বগুড়া, খুলনা, রংপুর, কুমিল্লা, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার পক্ষে মিছিল-সমাবেশ হয়।

১৯৭১ সালের ১৫ মার্চের আরও কয়েকটি ঘটনা সম্পর্কে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘বাংলাদেশের তারিখ’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইস্তিকলাল পার্টির প্রধান আসগর খান পেশোয়ার আইনজীবী সমিতির সভায় বলেন, ‘এই মুহূর্তে শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দু’অংশকে একত্রে ধরে রেখেছেন। সংখ্যাগুরু দলের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক এবং এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রসম্মত।’

সাংবাদিকদের কাছে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রধান খান ওয়ালি বলেন, ‘নির্বাচিত পার্লামেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। বাস্তবক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানের আর অস্তিত্ব নেই। ১ জুলাই থেকে এখানে চারটি পৃথক প্রদেশ হয়েছে।’

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব
কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারের আগে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এটি সেই জায়গা, যেখানে বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের সহায়তা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে জরুরি।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত, কারণ এই মানুষগুলো ইতোমধ্যে অসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করছে।

শুক্রবার উখিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। এ সময় গুতেরেসের পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এদিকে ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

পবিত্র রমজান মাসে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যে তারা যেন শুধু কথায় নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ ও কার্যকর সহায়তার মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। ঘোষিত অর্থের সহায়তা হ্রাসের কারণে, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪০ শতাংশ পাওয়া যাবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করবে। এটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে।’ তিনি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানুষ এখানে কষ্ট পাবে, মারা যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে শরণার্থী শিবিরে পৌঁছালে রোহিঙ্গারা হাত নেড়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। উভয় নেতা সাদরে হাত নেড়ে তাদেরও অভিবাদন জানান।

জানা গেছে, ইফতারের মেন্যুতে ছিল ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি, বেগুনি, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। এই খাবারের তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, এই আয়োজনে সাধারণ মানুষ এবং অতিথিদের জন্য সহজ, স্থানীয় ও পরিচিত ইফতার পরিবেশন করা হয়।

ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।

সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

গুতেরেসের ক্যাম্প পরিদর্শন

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

শুক্রবার কক্সবাজারের বালুখালী-১৮ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারি যে এটি (সংকট) এড়াতে আমরা সবকিছু করব এবং তহবিল প্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করতে পারে- এমন সব দেশের সঙ্গে আমি কথা বলে যাব।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের কথা ভুলে যাবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি জানান, (রোহিঙ্গাদের বিষয়ে) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি সোচ্চার হয়ে কথা বলবেন।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জরুরি ভিত্তিতে আরও সহায়তা প্রয়োজন। (শরণার্থী শিবিরে) এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করার জন্য এ সহায়তার খুবই প্রয়োজন।’

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মায়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকারকে সম্মান জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবকিছু করা জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। আগামীকাল রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।