ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

অপারেশন ডেভিল হান্ট: সারা দেশে গ্রেপ্তার ১৩০৮

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৮ পিএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৯ পিএম
অপারেশন ডেভিল হান্ট: সারা দেশে গ্রেপ্তার ১৩০৮
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের প্রথম দিন রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরসহ সারা দেশে ১ হাজার ৩০৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিভিন্ন মামলার আসামি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ অপরাধীরা রয়েছেন। 

পুলিশ সদর দপ্তর খবরের কাগজকে জানিয়েছে, শনিবার রাতে অভিযান শুরুর পর থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে মেট্রোপলিটন বা মহানগর এলাকায় ২৭৪ জন ও রেঞ্জের অধীনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১ হাজার ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো এ-সংক্রান্ত খবর-

গাজীপুরে আ.লীগ নেতা-কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৭৫

গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানায় ৪০ জন ও মহানগরের আট থানা এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের ৪২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজীপুর জেলা ও মহানগর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। 

গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টে এখন পর্যন্ত (সকাল ৯টা) ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। তবে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারকৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

গাজীপুর মহানগরের আটটি থানায় ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর মধ্যে গাজীপুর মহানগরের পুবাইল থানায় ২ জন, মেট্রো সদর থানায় ১৬, বাসন থানায় ৭, টঙ্গী পূর্ব থানায় ৭, গাছা থানায় ৫, কোনাবাড়ী থানায় ২ ও কাশিমপুর থানা এলাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার ২০

চট্টগ্রামে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার এসআই ইমরান হোসেন। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রাসু, সৌরভ, জোবায়ের হোসেন রানা, সিফাইতুল্লাহ আজম ওয়াছি, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহসম্পাদক আরাফাত রহমান, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মো. ইসমাইল, তন্ময় সেন শিবু, এমরান হোসেন মনির, জাবেদ উদ্দিন সাজু, দিলু মিয়া, রাজিবুর রহমান রুবেল, রেখা আলম চৌধুরী, কামরান উদ্দিন, হানিফ, কায়েস, আরিফ হোসেন, গাফফার হোসেন, আক্তার জালাল বাবু, সোহেল, রাসেল আহমেদসহ ২০ জন। 

এদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।

গুইমারায় ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার 

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা হলেন গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক এলাকার সোহাগ মিয়া, মো. সেলিম, আবদুর রহিম ও মো. আজিজুল। 

এদের বিরুদ্ধে জেলার গুইমারা থানায় মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী।

হাতিয়ায় সাত আ.লীগ নেতা আটক

নোয়াখালীর হাতিয়ায় সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আজাদ, হাতিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাদ্দাম হোসেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালাম বিটু, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের আজিম উদ্দিন, তমরুদ্দি ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ রাকছান, আবদুল মাজেদ পলাশ ও আব্দুল জাহের। 

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নারায়ণগঞ্জে দুই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস হাওলাদার ও সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মামুন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

কুমারখালীতে ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার মোবিন হাসান প্রান্ত ও উপদপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক হৃদয়। 

রবিবার ভোরে উপজেলার পদ্মপুকুরঘাট এলাকা থেকে মেজবাউল হক হৃদয়কে ও দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা মোড় থেকে খন্দকার মোবিন হাসান প্রান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ।

শেরপুরে ছাত্রলীগ-ওলামা লীগের তিনজন গ্রেপ্তার

শেরপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা ও জেলা ওলামা লীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

গতকাল শনিবার রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার হাসলিগাঁও এলাকা থেকে ছাত্রলীগের দুই নেতা ও শেরপুর শহরের নিজ বাসা থেকে ওলামা লীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হক রুবেল ও ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম। একই দিন জেলা ওলামা লীগের সভাপতি নুরুল ইসলামকে শেরপুর শহরের বাগরাকসার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সদর থানায় নাশকতা মামলা ছিল। 

সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম ও ঝিনাইগাতী থানার ওসি আল-আমিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজাকে পুলিশে দিলেন জনতা

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের ভাতিজা সাব্বির হোসেনকে স্থানীয় জনতা আটক করে হাতীবান্ধা থানা পুলিশে সোপর্দ করেছেন। 

রবিবার দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের নতুন বাজারে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশে দেন। 

নাগেশ্বরীতে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মুকুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে নেওয়াশী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নাগেশ্বরী থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বাঁশখালীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাবেক ইউপি সদস্য আবদুর রহিম ওরফে রহিম মেম্বার ও যুবলীগ নেতা মো. রহিম। 

বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

হবিগঞ্জে দুই আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর হলেন নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক কামরুজ্জামান আল রিয়াদ।

খোকসায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৩

কুষ্টিয়ার খোকসায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস শকিব খান টিপু, পৌরসভার হেলালপুর গ্রামের এনামুল হক ও রাধানগর গ্রামের শাহিন খান (৫১)। 

খোকসা থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, এদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ে ১৫ জন গ্রেপ্তার

ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এর মধ্যে সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের মো. শামছুল হক, দেহন গ্রামের মো. শাহাদৎ আলী, দানার হাট গ্রামের মো. মেহেদী হাসান, হরিনারায়ণপুর গ্রামের মো. আব্দুল আউয়ালসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পীরগঞ্জের পশ্চিম রঘুনাথপুর গ্রামের ঋত্বিক রোশন রাব্বি, সনগাঁও গ্রামের মো. সাগর আলী, রুহিয়ার আসাননগর গ্রামের মো. তাহেরুল ইসলাম, কশালগাঁও গ্রামের মো. সাদেকুল ইসলাম, রানীশংকৈলের কলেজপাড়া বন্দর গ্রামের মো. স্বাধীন বসাক, দোশিয়া গ্রামের মো. লুৎফর রহমান, বালিয়াডাঙ্গীর বড়বাড়ি রূপগঞ্জ গ্রামের মো. সাজিদুর রহমান, মো. জয়নুল হক, মমিনটলা গ্রামের মো. শাহেদ আলী, বোবরা গ্রামের মো. জিন্নাহ আলী ও মো. মাহাবুব আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

রাঙামাটিতে আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩

রাঙামাটি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আলীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। অন্য দুজন হলেন সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি শাহ জালাল মাঝি ও পৌর শ্রমিক লীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলা মিয়া। 

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। 

বরিশালে আ.লীগ নেত্রী গ্রেপ্তার

মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন সোমাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

রবিবার দুপুরে নগরীর পুলিশ লাইন রোড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ছগির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

কুমিল্লায় আ.লীগ-ছাত্রলীগের তিন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন মুরাদনগর উপজেলার ৫ নম্বর পূর্বধইর (পশ্চিম) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জীবন মিয়া, দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য আলাউদ্দিন অজি ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদর দক্ষিণ উপজেলার একটি ইউনিয়নের সদস্য ফয়সাল তানভীর তামিম।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল শনিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসুন: জাতিসংঘ মহাসচিব
কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারের আগে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এটি সেই জায়গা, যেখানে বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে, বিশেষ করে যাদের সহায়তা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে জরুরি।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত, কারণ এই মানুষগুলো ইতোমধ্যে অসীম কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করছে।

শুক্রবার উখিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস শরণার্থী শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। এ সময় গুতেরেসের পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এদিকে ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

পবিত্র রমজান মাসে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যে তারা যেন শুধু কথায় নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ ও কার্যকর সহায়তার মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের বাংলাদেশি আশ্রয়দাতাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।

অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। ঘোষিত অর্থের সহায়তা হ্রাসের কারণে, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪০ শতাংশ পাওয়া যাবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করবে। এটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে।’ তিনি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানুষ এখানে কষ্ট পাবে, মারা যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিটে শরণার্থী শিবিরে পৌঁছালে রোহিঙ্গারা হাত নেড়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। উভয় নেতা সাদরে হাত নেড়ে তাদেরও অভিবাদন জানান।

জানা গেছে, ইফতারের মেন্যুতে ছিল ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, জিলাপি, বেগুনি, শরবতসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার। এই খাবারের তালিকা থেকে স্পষ্ট যে, এই আয়োজনে সাধারণ মানুষ এবং অতিথিদের জন্য সহজ, স্থানীয় ও পরিচিত ইফতার পরিবেশন করা হয়।

ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন আগামী বছর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে গিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও গুতেরেসকে বহনকারী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটের দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান।

সফরের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

গুতেরেসের ক্যাম্প পরিদর্শন

এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের দুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিতে সংস্থাটি সম্ভাব্য সবকিছু করবে।

শুক্রবার কক্সবাজারের বালুখালী-১৮ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিতে পারি যে এটি (সংকট) এড়াতে আমরা সবকিছু করব এবং তহবিল প্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করতে পারে- এমন সব দেশের সঙ্গে আমি কথা বলে যাব।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের কথা ভুলে যাবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি জানান, (রোহিঙ্গাদের বিষয়ে) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি সোচ্চার হয়ে কথা বলবেন।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জরুরি ভিত্তিতে আরও সহায়তা প্রয়োজন। (শরণার্থী শিবিরে) এই জনগোষ্ঠীর মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করার জন্য এ সহায়তার খুবই প্রয়োজন।’

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘মায়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকারকে সম্মান জানাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবকিছু করা জরুরি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। আগামীকাল রবিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
অভিযান বাড়লেও বেপরোয়া অসাধু ব্যবসায়ীরা: ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০০৯ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে এটি প্রায় দুই লাখের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৪৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। এর মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে বহুবার জরিমানা করা হয়েছে। পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, নির্ধারিতের চেয়ে বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি, ওজনে কারচুপি, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করা, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, ভেজাল পণ্য বিক্রি, খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর দ্রব্য মেশানোসহ বিভিন্ন ধারায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, শনিবার (১৫ মার্চ) বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগামীকাল দিবসটি পালিত হবে। তবে অন্য বছরে বাংলাদেশে দিবস পালন করা হলেও এবার তা হচ্ছে না। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে প্রায় দিন বাজারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এসব অভিযানে জেল-জরিমানাও করা হয়। ভোক্তা আইনে অনধিক তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর প্রয়োগ বিরল।
 
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের মাঝে অতি মুনাফার প্রবণতা বাড়ছে। এ জন্য ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে ভোক্তারা কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের এই কষ্ট লাঘবের জন্যই ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় দিন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে অতি মুনাফালোভীরা ধরা পড়ছে। তারপরও ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রমে কেউ খুশি না হলে বা ব্যবসায়ীদের কঠোর শান্তি চাইলে আমাদের সহযোগিতায় আদালতে মামলা করতে পারেন।’

এক প্রশ্নের উত্তরে ভোক্তার মহাপরিচালক বলেন, ‘সমাজের অধিকাংশ মানুষ অনৈতিক বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। এটার জন্য সামাজিক প্রতিকার দরকার, তা ছাড়া চিরস্থায়ী সমাধান সম্ভব না। ভেজাল ও নকল পণ্য, মানুষের জীবন বিপন্নকারী ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে আমরা বিভিন্ন ধারায় অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছি।’

ভোক্তা দিবস পালন না করা প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘যেকোনো দিবস পালন করতে টাকার দরকার হয়। হয়তো সেদিক বিবেচনা করে উপদেষ্টা পরিষদ এবার জাতীয় দিবসে দিনটি তালিকায় রাখেনি। এ জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশে ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করা হবে না। তবে ঈদের পর একটা বড় সেমিনারের অয়োজন করা হবে।’

মাহফুজ/

আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:০৭ পিএম
আছিয়ার ধর্ষকের বাড়ি ভেঙে মসজিদ নির্মাণের দাবি
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়ি দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুরের পাশাপাশি বাড়ির গাছে কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। ধর্ষক হিটু শেখ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার ভগ্নিপতির বাড়িতে শুক্রবার (১৪ মার্চ) দ্বিতীয় দিনের মতো ভাঙচুর চলে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর শিশুটির প্রথম জানাজা শেষে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির সব গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। বাড়িটি ভেঙে সেখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আর সেই মসজিদ বা মাদ্রাসার নামকরণ চান আছিয়ার নামে। নিষ্পাপ শিশুটির এমন করুণ মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়াদের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। তিনি পরিবারটিকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন। প্রকশ্যে ফাঁসি দাবি করেন অভিযুক্ত ধর্ষকের। শিশুটি মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

এদিকে সরেজমিনে গতকাল সকালে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কেউ ঘরের ওপরে উঠে খুলছেন চালের টিন, কেউবা বাড়ির পাশে থাকা গাছগুলো কাটছেন করাত দিয়ে। কয়েকজন সেগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য কোথাও। 

স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘মাগুরাকে দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী একসময় চিনতেন সাকিব আল হাসানের নামে। আর এখন চিনছেন শিশু আছিয়ার নামে। আমরা চাই এই ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি। তাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হোক। এ ছাড়া তার বাড়িটি ভেঙে এই জায়গায় একটি মসজিদ অথবা মাদ্রাসা নির্মাণ করা হোক। যেটির নাম দেওয়া হোক আছিয়ার নামে। কেননা, এই জায়গায় যে পাপ কাজ হয়েছে, সেটি মোচন করতে হলে এখানে মসজিদ বা মাদ্রাসা প্রয়োজন।’ 

অপর ব্যক্তি বলেন, ‘এখানে শিশুটির নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হলে সেটি দেশবাসী জানবেন। মনে রাখবেন, এখানে একটি শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছিল, যা দেখে অন্যরা ধর্ষণ করার আগে চিন্তা করবে।’

ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি আফরোজা আব্বাসের
এদিকে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস আছিয়াদের বাড়িতে যান। শিশুটির পরিবারকে অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। মহিলা দলের নেত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা মহিলা দলের নেতারা ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান।

এ সময় জনসমক্ষে প্রকাশ্যে ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করে আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘তিন মাস পরে বা ছয় মাস পরে একটা বিচার হলো, ফাঁসি হলো- আমরা সেটি চাই না। আমরা চাই জনসমুক্ষে দৃশ্যমান ফাঁসি হোক। সেটা আপনারা, আমরা, জনগণ সবাই দেখবেন। আমরা সে রকম একটা ফাঁসি চাই। এ রকম একটা ফাঁসি কার্যকর হলে অপরাধীরা ধর্ষণ করার আগে দশবার ভাববে।’
 
ঢাকায় মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ মিছিল
আছিয়া ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে মৌন প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। গতকাল মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে ব্যানারের স্লোগান ছিল, ‘আমরা বিক্ষুব্ধ, আমরা শোকাহত, প্রতিবাদ জানাই, প্রতিরোধ চাই।’

মিছিলে অংশ নেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস রত্না, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগমসহ কেন্দ্রীয় কমিটি, সম্পাদকমণ্ডলী, ঢাকা মহানগর কমিটি, নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্য, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসহ সংগঠনের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা।

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আছিয়া নিজনান্দুয়ালী গ্রামে তার বোনের বাড়ি বেড়াতে যায়। ৫ মার্চ গভীর রাতে ভগ্নিপতির সহায়তায় তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে হত্যার চেষ্টাও চালানো হয়। পরদিন ৬ মার্চ সকালে পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা নির্যাতিত আছিয়াকে প্রথমে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। হাসপাতালে শিশুটি অচেতন অবস্থায় থাকে। ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

আমরা ভাগ্যবান আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
আমরা ভাগ্যবান আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি শুধু একটি পর্যটন শহরই নয় বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।’

নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’

তিনি লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রপ্তানি করার সক্ষমতা রয়েছে।

তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন।

স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।’

তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান। মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।

খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শন 
কক্সবাজারের খুরুশকুল জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প গতকাল পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়। প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ ডিসেম্বর ২০২৬ সালের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। সূত্র: বাসস

মসজিদে বিচারকের জুতা চুরির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম
মসজিদে বিচারকের জুতা চুরির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার জজ কোর্ট জামে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর বিচারক মো. রেজাউল করিমের জুতা চুরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জোহরের নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, জুতা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই মসজিদেই নামাজ পড়তে আসা মো. সুমন নামে একজনের কাছ থেকে চুরি হওয়া জুতা উদ্ধার হয়। এ সময় সুমনকে আটক করেন মুসল্লিরা। পরে তাকে কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জুতা চুরির এ ঘটনায় ঢাকা স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর স্টেনোগ্রাফার রাসেল মিয়া কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এ মামলায় মো. সুমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

ঘটনা নিশ্চিত করে শুক্রবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার বলেন, জুতাসহ মো. সুমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা স্পেশাল জজ আদালত-১০-এর বিচারক মো. রেজাউল করিম নিয়মিত ঢাকা জজ কোর্ট জামে মসজিদে জামাতের সঙ্গে জোহর, আসর ও ক্ষেত্রবিশেষে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন।

গত ১৩ মার্চ দুপুরে ওই মসজিদের তৃতীয় তলায় জোহরের নামাজ শেষে অফিসে আসার সময় মসজিদে রাখা তার ব্যবহৃত ১ হাজার ৮৫০ টাকা মূল্যের এক জোড়া চামড়ার কালো জুতা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কিছুক্ষণ পর অজ্ঞাতনামা এক মুসল্লি মো. সুমনকে তার ডান হাতে পলিথিন ব্যাগে জুতা দেখে সন্দেহ করে তৃতীয় তলায় নিয়ে আসা হয়। তখন বিচারক তার জুতাজোড়া শনাক্ত করেন। এ সময় সুমনকে আটক করা হয়।