
বাংলাদেশে সম্ভাব্য নির্বাচনের আগে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ অনুরোধ জানান তারা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘের অফিস অব দ্য হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস এক বিস্তারিত প্রতিবেদনে বলেছে, ‘রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ থেকে বিরত থাকুন যা দেশে প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরে আসাকে ব্যাহত করে এবং কার্যকরভাবে বাংলাদেশি ভোটারদের বড় একটি অংশকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে।’
হাসিনা সরকারের পতনের পর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের একটি দল বাংলাদেশ সফর করে। অন্তর্বতী সরকার এখনো নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেনি। তারা এর আগে জানিয়েছে নির্বাচন আগামী বছর পর্যন্তও পিছিয়ে যেতে পারে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর ১১৪ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে জানায়, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের মধ্যকার সময়ে ১ হাজার ৪০০ মতো মানুষ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১২ শতাংশ শিশু। প্রতিবেদনে বিচার বিভাগ ও পুলিশ বাহিনী সংস্কারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী নেতা, অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের অনুরোধও জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ন্যায্য, পক্ষপাতহীন এবং বড় পরিসরের তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে সব অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য, বিশেষ করে নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়ের জন্য উপযুক্ত বিশেষ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি শাসনব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের প্রভাবের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার জোরদার করার জন্য নাগরিক-নেতৃত্বাধীন অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থার আহ্বানও জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলো মানবাধিকার নীতি মেনে চলছে কি না তা নিশ্চিতে দলগুলোর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া হিসাব অনুসারে, জুলাই অভ্যুত্থানে প্রায় ১ হাজার মানুষ মারা গেছেন এবং ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি