ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ: গণতন্ত্র মঞ্চ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী সমঝোতা প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ: গণতন্ত্র মঞ্চ
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সঙ্গে একতরফা দেশ স্বার্থ বিরোধী সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছে ৬ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার বিনিময় হিসেবে এইসব সমঝোতায় স্বাক্ষর করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে ‘ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ও নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টিকারী সমঝোতা স্বাক্ষরের  প্রতিবাদে’ বিক্ষোভ সমাবেশ নেতারা এসব কথা বলেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন নেতাকর্মীরা। 

ভাসানী অনুসারী পরষিদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এবং দলের সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিম পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র সহ সভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ। 

সমাবেশের নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ট্রানজিটের নামে রেল করিডোর প্রদান, বন্দর ব্যবহার, যৌথ স্যাটেলাইট, সামরিক খাতে সহযোগিতাসহ সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা বাংলাদেশের অগ্রাধিকার নয়। এসব একপেশে ও ভারসাম্যহীন সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের পরিচালনায় ভারতের কর্তৃত্ব আরও বাড়িয়ে তুলবে। মূলত ‘ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কি হচ্ছে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তারা বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বের সক্ষমতা হারিয়ে কেবল গদি রক্ষার স্বার্থে সবকিছুতে রাজি হচ্ছে সরকার। সেজন্যে আজ বাংলাদেশের স্বার্থ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা বন্ধ কিংবা বিপুল বাণিজ্য ঘাটতিতে অশুল্ক বাধা দূর করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ কোনটিই যথার্থ কোন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠে না। 

'বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে ভারতের কোন আপত্তি নেই' পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রী কোন দেশ সফর করবেন, সেটা অন্য দেশের অনুমতির অপেক্ষা রাখে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য দেশের সার্বভৌম মর্যাদার বাস্তব পরিণতি কোথায় দাঁড়িয়েছে সে গোমর ফাঁস করে দিয়েছে। ভোটবিহীন এই সরকারের কাছে বাংলাদেশের সার্বভৌম মর্যাদা যে বিপর্যস্ত সেটা আবার নতুন করে সামনে এল।

কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান ছাত্রদের আন্দোলন এবং বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে দাবি মেনে নেওয়া আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, অবৈধ সরকার যে কোন আন্দোলনে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আন্দোলনকে বিরোধীদলের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা সরকারের প্রলাপ বকা ছাড়া আর কিছুই নয়।

সমাবেশে বক্তাগণ স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশ টিকে থাকতে হলে এই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর দরকার। বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের মধ্য দিয়েই বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হতে হবে। আর এর প্রথম পদক্ষেপ হলো জনসম্মতিহীন অবৈধ ডামি সরকারের বিদায় ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন। নেতৃবৃন্দ স্বৈরতন্ত্র হটিয়ে সেই পথে বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামকে বিজয়ী করতে জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ পিএম
উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন: ওবায়দুল কাদের
ছবি : সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন পরিহার করে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে রায় প্রদান করবেন। শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, তার মূল চালিকাশক্তি হলো মেধাবী জনগোষ্ঠী। শিক্ষিত, দক্ষ, স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রয়োজন।’

সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উচ্চ আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা আইনসিদ্ধ নয়। আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে নিশ্চয়ই একটা চূড়ান্ত রায় দেবেন। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত সবার অপেক্ষা করা উচিত। কোনো ধরনের উত্তেজনা, রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি অনুচিত। বিশেষত এইচএসসি পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের অসুবিধা হয় যে কর্মসূচিতে, সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা দরকার।’ 

২০১৮ সালের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের উচ্চ আদালত কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করেছেন। সরকারপক্ষের আইনজীবী এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করেছেন। সরকার কোটা বাতিলের দাবির প্রতি আন্তরিক বলেই অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল করেছেন। এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল, সেখানকার প্রথম সারির ৩১ জন নেতা কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এটার হিসাব সাংবাদিকরা নিতে পারেন।’

এ সময় চলমান আন্দোলনে সরকারবিরোধীদের রাজনৈতিক উপাদান যুক্ত হয়ে গেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের বিভক্ত ও মেরুকরণের রাজনীতি এখানে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ বিএনপি প্রকাশ্যে এবং তাদের সমমনারা এই কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা সমর্থন করেছে প্রকাশ্যেই। এখানে কারা কারা যুক্ত আছে, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, সেটা আন্দোলনের গতিধারার মধ্যেই বোঝা যাবে।’

যেকোনো আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, ইউনিয়ন কর্মীরা অংশ নিলেও নেতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে কেন?- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক দল পৃথিবীর কোন দেশে আন্দোলনে শামিল হয়েছে? এটা বিচারাধীন। কোনো রাজনৈতিক দল পারে না এভাবে।’ 

তিনি বলেন, ‘এটা তো আদালতের রায়, তারা যে আন্দোলন করছে (কোটা বাতিল) এই সিদ্ধান্তই ছিল সরকারের। সরকারই আবার আপিল করেছে। আদালত রায় দিয়েছেন, এখানে সরকারের দোষ কোথায়? এখানে যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার, সে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা তো আইনসিদ্ধ নয়। আমরা সেটাই বলছি।’ 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরকারের কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না?- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারপক্ষ তো আপিল করেছে। এখনো আদালত চূড়ান্ত রায় দেননি। আদালতের রায় হোক, তারপর দেখা যাবে।’

এ সময় সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে ভুল-বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও আছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বসা হয়নি। সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। এখানে আমরা সুপিরিয়র, না শিক্ষক সুপিরিয়র- এ বিতর্কে যাব না। যার যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে আমরা যাব, যেটা বাস্তবসম্মত, সেটায় যাব।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কোটা চালু করতে চায় সরকার: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম
আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কোটা চালু করতে চায় সরকার: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম

আওয়ামী লীগ সরকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে ভূলুণ্ঠিত করে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে আবার কোটা প্রথা চালু করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। 

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। কিন্তু কোটা চালুর মাধ্যমে সরকার বৈষম্য ফেরানোর চেষ্টা করছে। সত্যিকারের মেধাবীদের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে কম যোগ্যতাসম্পন্ন ও স্বল্প মেধাবীরা কোটা প্রথার কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাচ্ছে।’

সোমবার (৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

রেজাউল করীম বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও নারী কোটা থাকলেও তা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের বেশি নয়। উন্নত সব দেশে মেধার ভিত্তিতেই চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর ব্যতিক্রম একমাত্র বাংলাদেশ। দেশের বেকারত্বের হার দিন দিন বাড়ছে। এমতাবস্থায় ৫০ শতাংশের অধিক কোটার কারণে বেকারত্ব যেভাবে বাড়বে একই সঙ্গে দেশ থেকে মেধা পাচার হয়ে যাবে।’ 

তিনি বলেন, ‘ছাত্রসমাজের আন্দোলনের মাধ্যমে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বহাল রেখে মেধাবীদের অবমূল্যায়ন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এমতাবস্থায় সরকারকে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বাতিল করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোটাব্যবস্থার কারণে এভাবে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীদের সরকারি চাকরি থেকে লাগাতারভাবে বঞ্চিত করা হলে প্রশাসনে একসময় নিশ্চিতভাবেই স্থবিরতা নেমে আসবে। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের নিজ স্বার্থেই কোটা পদ্ধতির আমূল সংস্কার করে যোগ্যতার ভিত্তিতে মেধানুসারে চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে।’ 

শিক্ষার্থীদের কোটা প্রথা বাতিলের দাবি যৌক্তিক ও ন্যায্য বলে মনে করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সব দাবি সরকারকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান চরমোনাই পীর।

বন্যা-নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা রাষ্ট্রের কাঠামোগত নির্যাতনের শিকার: এবি পার্টি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম
বন্যা-নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা রাষ্ট্রের কাঠামোগত নির্যাতনের শিকার: এবি পার্টি
ছবি : সংগৃহীত

বন্যা ও নদীভাঙনে যারা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত ও ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে তারা সবাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয় বরং রাষ্ট্রের কাঠামোগত নির্যাতন ও খুনের শিকার বলে মন্তব্য করেছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।

দলটি বলছে, ‘বন্যা ও নদীভাঙন জাতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, নতুন করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আলোকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের মেরামত ও বিনির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। অধিকারের রাজনীতি ফিরিয়ে দিতে হবে।’ 

সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বিজয় নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘সিলেট, ময়মনসিংহসহ উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নদীভাঙনসহ জনগণের নানামুখী দুর্ভোগ, উদ্বেগ ও সংকট’ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এবি পার্টির নেতারা।

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান প্রমুখ। 

লিখিত বক্তব্য ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাচ্ছে সিলেট অঞ্চলের হাওরসহ প্রতিটি জনপদ। অন্যদিকে সারা বছর পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকার পানি নানা খাল দিয়ে প্রত্যাহার করে নিলেও ভারত অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যার সময় সব বাঁধের গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে প্লাবিত করে আসছে বছরের পর বছর। মূলত সুরমা ও কুশিয়ারা নদী দিয়ে কিন্তু এ ধরনের আকস্মিক বন্যা আগে দেখা যায়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘পরিবেশবিদরা বলছেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে নদীমুখে বিভিন্ন পয়েন্টে পলি, বালু জমে নদীর গভীরতা কমে গিয়ে এবং শহরে বসবাসরত মানুষের সব ধরনের বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, দেশব্যাপী চলমান বর্জ্য অব্যবস্থাপনার ফলে নদীগর্ভে প্লাস্টিক জমে প্রায় নদীর গভীরতা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত- নদীর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন খাল, বিল, পুকুর, দিঘি অবৈধভাবে ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা। তৃতীয়ত- ৮৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জের ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইনের ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ অল-ওয়েদার সড়ক। হাওরের বুক চিরে মিথ্যে উন্নয়নের নামে রাস্তা তৈরি করে পরিবেশের সঙ্গে খেলতে নামার এক আলোক যেটাতে মানবজাতি কোনোদিন বিজয়ী হতে পারবে না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের একমাত্র বন্ধুরাষ্ট্রের সময়ে-অসময়ে দেওয়া অতিরিক্ত পানির প্লাবন।’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বন্যার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা, যমুনা ও তিস্তায় এখন শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। যার ফলে প্রতিদিন বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এত কিছুর পরেও জনসমর্থনহীন ফ্যাসিবাদী সরকার বরাবরের মতোই নীরব, মনে হচ্ছে তেমন কিছুই যেন তাদের করার নেই।’ 

সরকারের উদাসীনতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘৪০ লাখ পানিবন্দি ও ভাঙনকবলিত হাজার হাজার মানুষের জন্য ১০-১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখে মনে হচ্ছে যেন সরকার অনেক বড় সাহায্য করে ফেলেছে। অথচ দেশে ৫ লাখ শিশুকে সাঁতার শেখানোর জন্য ২৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, সুন্দরবনের পশু গণনার জন্য ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, ২০টি সিনেমা তৈরির জন্য ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়!’ 

সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘সরকার বিনা রশিদে জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করছে। সেই ট্যাক্সের টাকা আওয়ামী লীগের লুটেরাশ্রেণি লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। জাতির দুর্ভাগ্য এই ধরনের চোর-বাটপার যারা জনগণের টাকা লুট করছে তারা সরকারের সর্বত্র দখল করে আছে। এই জবরদখলকারী সরকারকে বিদায় না করতে পারলে জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়।’ 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বগুড়ায় রথযাত্রায় মৃত্যু : প্রশাসনের গাফিলতি দেখছে সিপিবি

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম
বগুড়ায় রথযাত্রায় মৃত্যু : প্রশাসনের গাফিলতি দেখছে সিপিবি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)

বগুড়ায় রথযাত্রার অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো শোক বার্তায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এ মন্তব্য করেন। 

সিপিবির দুই শীর্ষ নেতা বলেন, বগুড়ায় ইসকন আয়োজিত রথযাত্রার অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। তবে এই ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়। এর পেছনে প্রশাসনের চরম গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনা দায়ী। ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।

এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান সিপিবি নেতারা।  

জয়ন্ত সাহা/সালমান/

কোটা নিয়ে সরকার ও আদালতের ইচ্ছা কীভাবে এক হয়, প্রশ্ন রিজভীর

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:১২ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:১২ পিএম
কোটা নিয়ে সরকার ও আদালতের ইচ্ছা কীভাবে এক হয়, প্রশ্ন রিজভীর
ছবি: সংগৃহীত

কোটা নিয়ে সরকারের ইচ্ছা ও আদালতের ইচ্ছা এক হয় কীভাবে এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যে কোটা আন্দোলনে সরকার কোটা বাতিল করেছিল সেটি তখন কোর্টও রায় দিয়েছিলো। তাহলে এখন আবার আদালতকে দিয়ে সেটি পুনর্বহাল করা হয়েছে। আসলে শেখ হাসিনা মেধা চান না। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন যৌক্তিক ও ন্যায্য। অবিলম্বে ছাত্রদের দাবি মেনে নিন। না হলে পরিস্থিতি ভয়ানক হবে।

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

গুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় কুরআন খতম ও দোয়া মোনাজাতের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল। এসময় খালেদা জিয়াসহ দলের অসুস্থ নেতাকর্মীদের সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, একটি মেধাবী গোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এটাই গোটা বিশ্বের নীতি। কিন্তু শেখ হাসিনা সেই প্রক্রিয়াটি নষ্ট করেছেন আদালতকে দিয়ে। আদালতের রায় সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন। শেখ হাসিনার মনে ক্ষোভ রয়ে গেছে। যেমন তিনি ক্ষোভের কারণে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি করে রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সরকার ঋণ পাচ্ছে না। সরকারের ভুল ও লুটেরা নীতির কারণে চীনসহ কোনো দেশ শেখ হাসিনার সরকারকে আর ঋণ দিচ্ছে না। আজকে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকেরা লুটপাট দুর্নীতি করে ফুলে ফেঁপে উঠছে। 

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি ধুঁকছেন। আল্লাহ যেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দ্রুত সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাজী মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সম্পাদক আবদুল বারী ড্যানি, অর্থনৈতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক, সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী, যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, যুবদলের সাবেক নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের ডা. তৌহিদুর রহমান আওয়ালসহ ওলামা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। 

শফিক/এমএ/