আগামী দিনে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অডিটরিয়ামে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপি নেতা ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, 'অচিরেই দেশের ঐক্যবদ্ধ জাতি সসম্মানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশে আছেন। অথচ আরেক নেত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আল্লাহ কাউকে ছাড় দেন না। আগামী দিনে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ভালো কাজের মাধ্যমে ধানের শীষের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে হবে।'
তিনি বলেন, 'শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি কোনো ধরনের বৈষম্য বা বিভাজনে বিশ্বাস করে না। এ কারণেই শহীদ জিয়া দিয়ে গেছেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।'
স্বাধীনতার পর যাদের দায়িত্ব ছিল গণতন্ত্র রক্ষা, তারাই মাত্র ১১ মিনিটে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল মন্তব্য করে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, 'মাত্র চারটি পত্রিকা রেখে দেশের সব সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা মুখে বলে এক কথা, করে তার উল্টোটা। আওয়ামী লীগ আত্মগোপন ও পলায়নের দল। লঙ্গরখানা ও কম্বল চোরের দল। দেশের ১৭ লাখ কোটি টাকা লুণ্ঠনকারী দল আওয়ামী লীগ। তারা পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। মায়ের পেটের বাচ্চাকে হত্যা করেছে। রাজনীতি করতে হলে আওয়ামী লীগকে জাতির কাছে ক্ষমতা চাইবে। এদেশে স্বৈরাচারের পুনর্বাসন আর হবে না। এদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে।'
তিনি বলেন, 'মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ঘরে বসে থাকেননি। তিনি জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বিএনপি ছিল না। সেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি থেকে মুক্ত করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছিল দেশের জনগণ। এরপর মাত্র সাড়ে চার বছরের মধ্যে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশকে স্বনির্ভর বাংলাদেশে রূপ দিয়েছিলেন মেজর জিয়া। দেশের মানুষকে উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতা পদক, একুশে পদকসহ সব ধরনের পদক প্রবর্তন করেছিলেন তিনি। সার্ক প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল মেজর জিয়ার। তিনি ছিলেন আধুনিক কৃষির জনক। তারপর বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নারী শিক্ষার উন্নয়ন করেছেন। যুবকদের উন্নয়ন, ৭৫ এর কালা কানুন বাতিলসহ দেশের জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।'
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকবে সমানে সমান। দুই দেশের সর্ম্পকে লাভও হবে সমান। সমান সর্ম্পক না হলে বিএনপি কোনো সর্ম্পক মেনে নেয় না। বিএনপি কোনো কিছু ভাঙে না, বিএনপি গড়তে জানে।'
পতিত সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তার দোসররা রয়ে গেছে। তাদের কাছে আছে পর্যাপ্ত অবৈধ টাকা এবং অস্ত্র। এখনো যারা ষড়যন্ত্র করছেন, তারা সাবধান হয়ে যান। দেশের মানুষ সজাগ আছে, অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করছে। বিএনপি আন্দোলনে ছিল, আছে এবং থাকবে। এখনো অনেক পথ যেতে হবে। সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি।'
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো. শাহজাজান।
এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাকৃবির উপাচার্য প্রফেসর ড. একে ফজলুল হক ভুইয়া, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মুস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, সাবেক এমপি শাহ নুরুল কবির শাহীন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ একেএম শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, অ্যাডভোকেট এমএ বারী, ড্যাব নেতা ডা. ওয়ালিউল্লাহ, ডা. একেএম মুসা শাহীন, অ্যাডভোকেট নুরুল হক, শিক্ষক নেতা ড. একেএম আজাদ, এসএম রফিকুল ইসলাস বাচ্চু, ডা. খায়রুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজিজ টুটুল, প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাসুদ তানভীর তান্না, অধ্যক্ষ শেখ ইউসুফ লিটন প্রমুখ।
কামরুজ্জামান মিন্টু/জোবাইদা/