ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৫ আগস্ট কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামবে আ.লীগ

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৫ এএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৩ এএম
১৫ আগস্ট কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামবে আ.লীগ
আওয়ামী লীগ

আগামী ১৫ আগস্ট ঘিরে মাঠে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। ওই দিন বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণ দিবস ও জাতীয় শোক দিবসে ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে কর্মসূচি পালন করবেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। সেই লক্ষ্যে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলটির নেতা-কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। দলীয় একাধিক সূত্রে এমন খবর জানা গেছে। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১৫ আগস্ট মাঠে নামলেই এটাই হবে আওয়ামী লীগের প্রথম রাজনৈতিক মাঠে জানান দেওয়া। শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার এক সপ্তাহের বেশি সময় রাজনৈতিক মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ ও দলের সব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দলটির প্রায় অর্ধেকের বেশি নেতা এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত দলের শীর্ষ কোনো নেতা প্রকাশ্যে আসেননি। কিন্তু আগামী ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক’ দিবসে দলের নেতা-কর্মীরা রাজনৈতিক মাঠে আসতে চাইছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায় থেকে নেতারা কর্মীদের ১৫ আগস্টে শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে নামার বার্তা দিয়েছেন। 

এদিকে ‘জাতীয় শোক’ দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে উপদেষ্টা পরিষদ। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সরকারিভাবে পালন করা হতে পারে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় দলের অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ঢাকা ও আশপাশের নেতা-কর্মীদের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রাঙ্গণে সমাগত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সারা দেশে নেতা-কর্মীরা স্ব স্ব এলাকায় কর্মসূচি পালন করবেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা, মৌন মিছিল, মোমবাতি প্রজ্বালন, মিলাদ-দোয়া মাহফিল, শোক মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির এক নেতা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছি। নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানানো শেষে দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন। কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াবেন না তারা।’ একই কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর আরেক নেতাও। সাবেক ছাত্রনেতারাও ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। তাদের একাধিক নেতা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানা গেছে। 

এদিকে ১৫ আগস্টের বিষয়ে গত রবিবার রাতে নিজের ফেসবুকে এসে কথা বলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যে বঙ্গবন্ধু আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, এই ১৫ আগস্ট আপনাদের প্রতি আহ্বান- শান্তিপূর্ণভাবে ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসুন। দোয়া করবেন বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতনার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য।’ বঙ্গবন্ধু একটি দলীয় বিষয় না উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হচ্ছে জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু না থাকলে আজকে আমরা বাংলাদেশ হতাম না। পাকিস্তান হয়ে থাকতাম।’ 

তবে ১৫ আগস্ট দলীয় কর্মসূচি পালনের বিষয়ে অনুমতি চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ- এমন একটি খবর একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে হানিফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টিকে ‘ফেক নিউজ’ বলে জানান। 

১৫ আগস্ট শোক দিবসে একাধিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল সাড়ে ৭টায় শোক র‌্যালি (ধানমন্ডি ৩২ থেকে কলাবাগান মাঠ), ৮টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। ঢাকা মহানগর যুবলীগের দুই নেতা জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের ‘বার্তা’ পাঠিয়ে দিয়েছেন। নেতা-কর্মীরা ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে হাজির হয়ে কর্মসূচি পালন করবেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ধানমন্ডির কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। শ্রদ্ধা জানানো হবে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের প্রতি।

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। ধানমন্ডি ও গোপালগঞ্জের কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে। 

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এর মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করা হবে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জমায়েত বড় করতে নেতারা ইতোমধ্যে কাজ করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ১৫ আগস্ট ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি পালন করবেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। সাংস্কৃতিক অঙ্গন, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি সহানুভূতিশীল এমন সাধারণ নাগরিকদের এ কর্মসূচিতে যোগদানের আহ্বান জানানো হবে।

এদিকে মহিলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন- ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে উপস্থিত হওয়ার। গতকাল সোমবার ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা জেগে উঠব এই ধ্বংস থেকে। জেগে উঠব আগুনে পোড়া ৩২-এর এই ঘর থেকে। জেগে উঠব নিভে যাওয়া ছাই থেকে। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ভেবেছ সব সাহস পুড়েছে? পুড়েছ তোমরা! আমরা বাঙালি এই ছাইভস্ম থেকেই উঠব আবার আগুন হয়ে জেগে! জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’

এদিকে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ জি এম সাহাবুদ্দীন আজম।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া বিকল্প নেই। নেত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন। উনি শুধু রক্তপাত বন্ধে মানুষের কথা চিন্তা করে দেশ ছাড়তে রাজি হয়েছেন। তিনি দেশ ছাড়তে চাননি, তিনি টুঙ্গিপাড়ায় আসতে চেয়েছেন। তাকে জোর করে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন।’

১৫ আগস্ট কর্মসূচির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে সাহাবুদ্দীন আজম বলেন, ‘নেত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। নেত্রী জাতীয় শোক দিবসে কর্মসূচি পালনের জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। গোপালগঞ্জ থেকে কাউকে ঢাকা যেতে বলা হয়নি। ঢাকা ও আশপাশের এলাকার নেতা-কর্মীরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে যাবেন। আমরা গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাব, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। এসব কর্মসূচিতে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।’

দুই দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত
গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি

অন্তর্বর্তী সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা সবাই মিলে দেখেছি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনে ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব। এখানে যদি দুই-একটা সংযোজন করার প্রয়োজন হয়, সেগুলোও আলোচনার মাধ্যমে আগামী দিনে সংযোজন করবো। ৩১ দফা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরব।’

আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি, কারণ জাতি রক্তপাতের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে। এই সরকার যাতে দ্রুত তাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে এবং নির্বাচনি কার্যক্রমের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একটি স্বৈরাচারী প্রথা থেকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশে নির্বাচন হয়- এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ঐকমত্য হয়েছি।’

বিএপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনের পর আন্দোলনরত সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবেন। যার মাধ্যমে এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ।’ 

বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো সহযোগিতা করবে। আর এই সরকার কতদিন থাকবে, সেটা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন হয়। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, এতদিন আমরা ৪২টি দল মৌলিক দাবিতে একমত হয়ে আন্দোলন করেছি। যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো সরকারের যৌক্তিক সময় দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে।’

বিএনপি লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ও লিয়াঁজো কমিটি প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিটির সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সংগঠনের আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাটের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়। এদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চারজন সমন্বয়কও ছিলেন। পরে বিকাল সোয়া ৫টায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

 

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা
আওয়ামী লীগ

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান এই প্রতিবাদ জানান। 

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিশেষ নিরাপত্তা আইন পুনর্বহাল করার জোর দাবিও জানিয়েছেন।

‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’
দাবি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট

রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখাসহ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাম জোটের ‘দাবি দিবস’ উপলক্ষে বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তারা এসব দাবি জানান। 

জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, রেশনিং চালু, খেলাপি ঋণ ও পাচারের টাকা উদ্ধার, দুর্নীতিবাজ-ঋণখেলাপি-অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিও জানান। 

বাম নেতারা বলেন, ‘প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সবখানেই সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকলে এবং জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না। এক দখলবাজের পরিবর্তে আর এক দখলবাজ নয়; সাম্প্রদায়িক হামলা ও নিপীড়নও আমরা চাই না।’

তারা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট, দেশের টাকা পাচার, দিনের ভোট রাতে নয়- এটাই দেশের গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের রূপরেখা হাজির করতে হবে। ফ্যাসিবাদী শাসক উচ্ছেদের পর এখন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ প্রয়োজন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারই যথেষ্ট নয়, দুর্নীতি এবং পাচারকৃত টাকা উদ্ধার করতে হবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক ও বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির
জাতীয় প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাকের পার্টি

সারা দেশে মাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াসহ প্রতিটি মাজারে নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে জাকের পার্টি। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাকের পার্টির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।

লিখিত বক্তব্যে দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার অভিযোগ করেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বিজয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং সামগ্রিক অর্জনকে নস্যাৎ করার অনভিপ্রেত দুরভিসন্ধিমূলক ঘটনার অবতারণা চলছে। মাজারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।’ 

আওয়ামী লীগ বা বিএনপি জোটে জাকের পার্টি নেই বলে উল্লেখ করে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘মাজারবিরোধীরা আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকের পার্টির মাজারে হামলা করার গোপন পরিকল্পনা করেছে।’ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম
শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিতর্কের দায়ে নয়, দুর্নীতি-দুঃশাসন ও শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্যই আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, এই কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় মহিলা পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনে কোনো রাজনৈতিক দলের কৃতিত্ব নেই। অনেক দল তো নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, পেরেছিল কি? অনেক দল নির্বাচনে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারই তাদের নামে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রেখেছিল। তবে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়নি, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে তাদের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য। শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে।’

দশম থেকে দ্বাদশ- প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে নানা মহলে। জাতীয় পার্টি প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হওয়ায় দলটিকে নিয়েও সমালোচনার অন্ত নেই। এ প্রসঙ্গে সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচনে নিয়েছে। এতে জাতীয় পার্টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি কি মন্ত্রী হতে নির্বাচনে গিয়েছি? আমি তো ২০০৮ সালে মন্ত্রী ছিলাম। তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছিলাম। আমি কখনো মন্ত্রিত্বের জন্য রাজনীতি করি না।’

২০১৪ সালে জাপার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও তার ভাই জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নেতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জি এম কাদের বলেন, ‘তখন আওয়ামী লীগ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির আরও একটি গ্রুপ বানিয়ে লাঙল মার্কা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। এই ধারাবাহিকতায় বজায় থাকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও।’  

জি এম কাদের বলেন, ‘জোর করে নির্বাচনে নেওয়ার কারণে আমাদের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন বর্জন করতে পারিনি। আওয়ামী লীগের পতন না হলে আমাদের দল বিলীন হয়ে যেত। আওয়ামী লীগের পতন না হলে কোনো দলই বাংলাদেশে থাকত না। শুধু আওয়ামী লীগ থাকত।’ 

সমালোচকদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি চেয়াম্যান বলেন, ‘আমরা কখনো আওয়ামী লীগের দোসর ছিলাম না। আমরা সব সময় জনগণের দোসর ছিলাম। তবে জাতীয় পার্টিকে সব সময় ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টি নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।’

জাতীয় পার্টি কখনো আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল না বলেও দাবি করেন দলটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে দানব বানিয়েছি। কোনো দল যদি দানব হয়ে থাকে তাহলে তারা নিজেদের দোষেই দানব হয়েছে। আবার কোনো দল সুযোগ পেলে যে দানব হবে না তা কি বলা যায়। তা ছাড়া এখন যারা বড় বড় কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের আমলে কতজন কথা বলতে পেরেছেন? আওয়ামী লীগকে নিয়ে থা বলার পরে যদি আওয়ামী লীগ পরের দিন আপনাকে আবার সেই কথার উল্টা কথা বলতে বলত, না বলে পারতেন? আমরা আমাদের কথা বলে গেছি, আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলেছি। আমাদের বিরোধীদল করা হয়েছিল, আমরা ইচ্ছেমতো সরকারের সমালোচনা করতে পেরেছি।’

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মনিরুল ইসলাম মিলন, মাসরুর মওলা, পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নী, মহিলা পার্টির নেতা ডা. সেলিনা খান, জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, তাসলিমা আক্তার রুনা, সীমানা আমির, ফরিদা সিকদার, মিথিলা রওয়াজাসহ আরও অনেকে।

জয়ন্ত সাহা/সালমান/