ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আ.লীগের ১৫ বছরের প্রতিটি গুম-খুনের বিচার হবে: মজনু

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০১:২১ পিএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
আ.লীগের ১৫ বছরের প্রতিটি গুম-খুনের বিচার হবে: মজনু
ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গত ১৫ বছরে প্রতিটি গুম-খুনের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু।

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো বৈষম্যের ঠাঁই নাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ আওয়ামী লীগের শাসনামলের প্রতিটি খুন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি, লুটপাটের বিচার হবে। গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ তাদের নেতা-কর্মীরা ঢাকাসহ সারা দেশে যত খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি করেছে সব তদন্ত করে অপরাধীর বিচার করতে হবে।’

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেট, ঢাকা স্টেডিয়াম, মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম এলাকায় বসবাসরত সব শ্রেণির নাগরিক ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন তিনি। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিক কর্মসূচির আওতায় এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘ছাত্রদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। এই নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। কেউ যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। সবাই বাংলাদেশি। কেউ হিন্দুদের বাসাবাড়ি, মন্দির, দোকানপাটে আক্রমণ করলে তো আওয়ামী লীগের মতোই কাজ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করবে, চাঁদাবাজি করবে, তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরবে। কেউ রেহাই পাবেন না। তারা যদি দলের কেউ হয়, দলও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের মধ্য দিয়ে এখন থেকে দেশে আর কোনো চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাট চলবে না।’

আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও তাদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মজনু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নামে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। এ আওয়ামী লীগ আজ দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত দল। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে তারা জুলুম, নির্যাতন ও সম্পদ লুটপাট করেছে বলেই জনগণ তাদের এখন চরম ঘৃণা করে।’

যারা ‘নব্য বিএনপি’ হতে চাইছে তাদের ব্যাপারে সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের কিছু দুষ্কৃতকারী নিজেদের রক্ষা করতে ‘নব্য বিএনপি’ হতে চেষ্টা করছে। তাদের দুর্নীতি, অনাচার, লুটপাট আর মানুষের ওপর অত্যাচারকে আড়াল করতে তারা এ কৌশল নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী যেন দলের মধ্যে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ, এস কে সিকান্দার কাদির, সাবেক সদস্য আব্বাস, কাউন্সিলর নাসরিন জাহান পুতুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, শ্রমিক দলের সদস্যসচিব বদরুল আলম সবুজসহ শাহবাগ থানা, পল্টন থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা।

শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

দুই দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত
গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি

অন্তর্বর্তী সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা সবাই মিলে দেখেছি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনে ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব। এখানে যদি দুই-একটা সংযোজন করার প্রয়োজন হয়, সেগুলোও আলোচনার মাধ্যমে আগামী দিনে সংযোজন করবো। ৩১ দফা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরব।’

আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি, কারণ জাতি রক্তপাতের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে। এই সরকার যাতে দ্রুত তাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে এবং নির্বাচনি কার্যক্রমের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একটি স্বৈরাচারী প্রথা থেকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশে নির্বাচন হয়- এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ঐকমত্য হয়েছি।’

বিএপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনের পর আন্দোলনরত সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবেন। যার মাধ্যমে এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ।’ 

বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো সহযোগিতা করবে। আর এই সরকার কতদিন থাকবে, সেটা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন হয়। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, এতদিন আমরা ৪২টি দল মৌলিক দাবিতে একমত হয়ে আন্দোলন করেছি। যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো সরকারের যৌক্তিক সময় দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে।’

বিএনপি লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ও লিয়াঁজো কমিটি প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিটির সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সংগঠনের আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাটের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়। এদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চারজন সমন্বয়কও ছিলেন। পরে বিকাল সোয়া ৫টায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

 

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা
আওয়ামী লীগ

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান এই প্রতিবাদ জানান। 

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিশেষ নিরাপত্তা আইন পুনর্বহাল করার জোর দাবিও জানিয়েছেন।

‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’
দাবি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট

রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখাসহ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাম জোটের ‘দাবি দিবস’ উপলক্ষে বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তারা এসব দাবি জানান। 

জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, রেশনিং চালু, খেলাপি ঋণ ও পাচারের টাকা উদ্ধার, দুর্নীতিবাজ-ঋণখেলাপি-অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিও জানান। 

বাম নেতারা বলেন, ‘প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সবখানেই সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকলে এবং জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না। এক দখলবাজের পরিবর্তে আর এক দখলবাজ নয়; সাম্প্রদায়িক হামলা ও নিপীড়নও আমরা চাই না।’

তারা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট, দেশের টাকা পাচার, দিনের ভোট রাতে নয়- এটাই দেশের গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের রূপরেখা হাজির করতে হবে। ফ্যাসিবাদী শাসক উচ্ছেদের পর এখন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ প্রয়োজন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারই যথেষ্ট নয়, দুর্নীতি এবং পাচারকৃত টাকা উদ্ধার করতে হবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক ও বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির
জাতীয় প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাকের পার্টি

সারা দেশে মাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াসহ প্রতিটি মাজারে নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে জাকের পার্টি। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাকের পার্টির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।

লিখিত বক্তব্যে দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার অভিযোগ করেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বিজয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং সামগ্রিক অর্জনকে নস্যাৎ করার অনভিপ্রেত দুরভিসন্ধিমূলক ঘটনার অবতারণা চলছে। মাজারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।’ 

আওয়ামী লীগ বা বিএনপি জোটে জাকের পার্টি নেই বলে উল্লেখ করে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘মাজারবিরোধীরা আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকের পার্টির মাজারে হামলা করার গোপন পরিকল্পনা করেছে।’ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম
শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিতর্কের দায়ে নয়, দুর্নীতি-দুঃশাসন ও শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্যই আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, এই কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় মহিলা পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনে কোনো রাজনৈতিক দলের কৃতিত্ব নেই। অনেক দল তো নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, পেরেছিল কি? অনেক দল নির্বাচনে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারই তাদের নামে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রেখেছিল। তবে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়নি, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে তাদের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য। শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে।’

দশম থেকে দ্বাদশ- প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে নানা মহলে। জাতীয় পার্টি প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হওয়ায় দলটিকে নিয়েও সমালোচনার অন্ত নেই। এ প্রসঙ্গে সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচনে নিয়েছে। এতে জাতীয় পার্টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি কি মন্ত্রী হতে নির্বাচনে গিয়েছি? আমি তো ২০০৮ সালে মন্ত্রী ছিলাম। তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছিলাম। আমি কখনো মন্ত্রিত্বের জন্য রাজনীতি করি না।’

২০১৪ সালে জাপার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও তার ভাই জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নেতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জি এম কাদের বলেন, ‘তখন আওয়ামী লীগ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির আরও একটি গ্রুপ বানিয়ে লাঙল মার্কা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। এই ধারাবাহিকতায় বজায় থাকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও।’  

জি এম কাদের বলেন, ‘জোর করে নির্বাচনে নেওয়ার কারণে আমাদের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন বর্জন করতে পারিনি। আওয়ামী লীগের পতন না হলে আমাদের দল বিলীন হয়ে যেত। আওয়ামী লীগের পতন না হলে কোনো দলই বাংলাদেশে থাকত না। শুধু আওয়ামী লীগ থাকত।’ 

সমালোচকদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি চেয়াম্যান বলেন, ‘আমরা কখনো আওয়ামী লীগের দোসর ছিলাম না। আমরা সব সময় জনগণের দোসর ছিলাম। তবে জাতীয় পার্টিকে সব সময় ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টি নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।’

জাতীয় পার্টি কখনো আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল না বলেও দাবি করেন দলটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে দানব বানিয়েছি। কোনো দল যদি দানব হয়ে থাকে তাহলে তারা নিজেদের দোষেই দানব হয়েছে। আবার কোনো দল সুযোগ পেলে যে দানব হবে না তা কি বলা যায়। তা ছাড়া এখন যারা বড় বড় কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের আমলে কতজন কথা বলতে পেরেছেন? আওয়ামী লীগকে নিয়ে থা বলার পরে যদি আওয়ামী লীগ পরের দিন আপনাকে আবার সেই কথার উল্টা কথা বলতে বলত, না বলে পারতেন? আমরা আমাদের কথা বলে গেছি, আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলেছি। আমাদের বিরোধীদল করা হয়েছিল, আমরা ইচ্ছেমতো সরকারের সমালোচনা করতে পেরেছি।’

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মনিরুল ইসলাম মিলন, মাসরুর মওলা, পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নী, মহিলা পার্টির নেতা ডা. সেলিনা খান, জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, তাসলিমা আক্তার রুনা, সীমানা আমির, ফরিদা সিকদার, মিথিলা রওয়াজাসহ আরও অনেকে।

জয়ন্ত সাহা/সালমান/